ডঃ তারিক রামাদান, তার ‘তথাকথিত প্রগতিশীল চিন্তাধারা’ ও আমাদের ‘সাদা-চামড়া প্রীতি’ !!!
লিখেছেন: ' abdullah al Mamun' @ মঙ্গলবার, অগাষ্ট ২৮, ২০১২ (১১:২৪ অপরাহ্ণ)
নয়াদিগন্ত পত্রিকায় আজকে ডঃ তারিক রামাদান এর উপর একটি লিখা পড়লাম। লিখাটা পড়ার পর এর ডঃ তারিক রামাদানের ব্যাপারে কিছু কথা লিখা ঈমানের নূন্যতম দায়িত্ব মনে করে, ব্যস্ততার মাঝেও লিখতে বসলাম।
মূল প্রবন্ধটি আছে এখানেঃ http://www.dailynayadiganta.com/details/65939
আমি নীচে সেই প্রবন্ধ থেকে কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে দিয়ে সাথে আমার মন্তব্য / প্রশ্ন লিখে দিচ্ছি। বিচারের ভার ঐ সব পাঠকদের হাতে যারা নিজেরা বুদ্ধি-বিবেক খাঁটিয়ে কাজ করতে পারেন।
ডঃ তারিক রামাদানের ভালো দিক
লেখক লিখেছেনঃ [[ তারিক ২০০৩ সালে আমেরিকার ইরাক আক্রমণের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন এবং ইরাকিদের রেজিস্ট্যান্সকে তিনি সমর্থন দিয়েছিলেন; তবে সেখানেও তিনি সুইসাইড বোম্বিং এবং কোনো ধরনের টেররিজমকে সমর্থন করেননি। তিনি ফ্রান্সে সেকুলারিজমের নামে স্কুলে এবং পাবলিক প্লেসে ইসলামি অনুশাসনের ওপর ক্রেকডাউনের ঘোর বিরোধী। এ নিয়ে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট সারকোজির সাথে তার তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। ইসরাইলকে রা করতে মানবাধিকারে ছাড় দেয়ায় তিনি ফরাসি ইহুদি বুদ্ধিজীবীদেরও কঠোর সমালোচনা করেছেন। ]]
এবং [[ একপর্যায়ে তারিক মুসলিম বিশ্বের স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে কঠিন ও কঠোর বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। যার ফলে ২০০৯ সালে তাকে মিসর, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া ও সৌদি আরবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। তারিকের মতো স্বাধীনচেতা তেজি পুরুষ এসবের ধার ধারেন না। তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবাধিকারের একজন বড় প্রবক্তা। মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এমনকি স্বৈরাচারী মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতি তিনি কড়া বক্তব্য রাখতে একচুলও বিচলিত হন না। যার কারণে এসব দেশের সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থা তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করে এবং এখনো করছে। ২০০৪ সালে আমেরিকার বিখ্যাত নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয় তাকে লুস অ্যান্ডাউড চেয়ার অফার করে, কিন্তু মার্কিন ভিসা না পাওয়ায় তিনি এ চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি। ২০০৩ সালে আমেরিকার ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করায় ২০০৪ সালে বুশ প্রশাসন তার ওপর ভিসা অ্যাম্বার্গো দিয়ে রাখে। ]]
মন্তব্যঃ ডঃ তারিক রামাদানের এই ব্যাপারগুলো ভালো। তার ভালো কাজগুলোকে আল্লাহ কবুল করুন। মুসলিম সমাজে জালিম শাসকদের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলেছেন।
আর ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন।
ডঃ তারিক রামাদানের লেখাপড়া
Tariq Ramadan studied Philosophy and French literature at the Masters level and holds a PhD in Arabic and Islamic studies from the University of Geneva. He also wrote a PhD dissertation on Friedrich Nietzsche, entitled Nietzsche as a Historian of Philosophy.
দেখুনঃ উইকিপিডিয়া।
লেখক বলেনঃ [[ তিনি ইউনিভার্সিটি অব জেনেভা থেকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স ও পিএইচডি লাভ করেন। তার স্পেশালিটি হলো সমসাময়িককালের ইসলাম ও ইসলামিক স্টাডিজ। ইসলাম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর লেখাপড়া ও গবেষণার জন্য তিনি কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর।]]
In Cairo, Egypt he received one-on-one intensive training in classic Islamic scholarship from Al-Azhar University scholars (ijazat in seven disciplines).
সুত্রঃ http://www.penguin.co.uk/nf/Author/AuthorPage/0 ,,1000071815,00.html
During his studies, he got a B.A degree in Arts (philosophy), then a PHD in language, literature and Arab civilisation. …… Then, Tariq Ramadan studies Islamic sciences at Al-Azhar University in Cairo (from 1992 to 1993).
সুত্রঃ http://www.assajda.com/en/coran/tariq-ramadan-110.html
মন্তব্যঃ Basically উনার পড়ালেখা হচ্ছে ফিলোসফি। Pure Islamic Sciences পড়েছেন আল-আজহারে শুধুমাত্র এক বছর (১৯৯২ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত)। যদিএ পেঙ্গুইন প্রেস তাদের বই এর কাটতি বাড়ানোর জন্য ৭টি বিষয়ে ইজাজাহ (সনদ) এর কথা বলেছে। ইসলামিক বিষয়ে পড়ালেখার ব্যাপারে যাদের নূন্যতম জ্ঞান আছে তারা সহজেই বুঝতে পারবেন – এক বছরে কিভাবে ৭ টি সাবজেক্টে গ্রাজুয়েট হওয়া যায় !
এ কারণেই বোধকরি, তার লেখায়, বক্তৃতায় ‘আমি মনে করি’ টাইপের ফিলোসফিকাল কথাবার্তা বেশী থাকে than that of আল-কোরআন কিংবা সুন্নাহর রেফারেন্স।
যা হোক, সবাইকে যে ইসলামের মস্ত বড় আলিম হতে হবে এমন নয়। তিনি যে, মধ্য বয়সেও ইসলাম নিয়ে লেখাপড়া শুরু করেছেন, সে জন্য তিনি মোবারকবাদ পাওয়ার যোগ্য।
কিন্তু আল-আজহারে এই এক বছর জ্ঞান অর্জন এবং এর পূর্বে PHD in language, literature and Arab civilization করার পর যখন তিনি নতুন নতুন ইজতিহাদ করা শুরু করেছেন – তখন সেটা রীতিমতো হাস্যকর ও চরম দুঃখজনক!!!!
এই জ্ঞানের দৈন্যতার কারণেই তিনি নব্য-ইজতিহাদ(!!!) করতে পেরেছেনঃ
[[ তিনি সনাতনী ‘দারুল ইসলাম’ (অ্যাবোড অব পিস) ও ‘দারুল হারব’ (অ্যাবোড অব ওয়ার) বলে দ্বিপীয় বিভাজনকে গ্রহণ করেন না। তিনি বলেন, এ রকম কোনো কিছু কুরআনে নেই। তারিকের মতে, এ দুটোর মাঝখানে আরেকটি অবস্থান থাকতে পারে, যাকে তিনি নাম দিয়েছেন ‘দারুল দাওয়া’ (অ্যাবোড অব ইনভাইটেশন)। তিনি ইউরোপ-আমেরিকার মুসলমানদের বৃহত্তর সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং আলাদা না থেকে পাশ্চাত্য সমাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর বেশি জোর দেন। তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা দারুল হারব নয়, দারুল দাওয়াও নয়; বরং এটা ‘দারুল শাহাদাহ’ (অ্যাবোড অব টেস্টিমনি)।]]
আশ্চর্য্য !! ইসলামের এই রকম কোর ইস্যুতে নতুন কোন মত দেয়ার যোগ্যতা তিনি কি PHD in language, literature and Arab civilization এবং এক বছর আল আজহারে থেকে অর্জন করে ফেলেছেন !!!
বোধকরি, পাশ্চাত্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করায় এর প্রতি তার বিশেষ মমতা তৈরী হয়েছে। যদিও অন্য অনেক দায়ী পাশ্চাত্যে থাকলেও তারা সরাসরি বলেন শুধু দাওয়াহ এর জন্য তারা ঐ সকল দেশে আছেন এবং হিজরত করা জরুরী।
যেমনঃ http://www.youtube.com/watch?v=7oSt1wKugaA (আব্দুর রহমান গ্রীনের ৩ মিনিট আলোচনা)
হিজরত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনাঃ www.youtube.com/watch?v=_pjN9ALPM8c
পাশ্চাত্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের ক্ষেত্রে তার বিভ্রান্তি
লেখক লিখেছেনঃ [[ যেমনÑ যেকোনো দেশের নাগরিক হিসেবে মুসলমানদেরও সে দেশের আইন মেনে চলার ওপর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ধর্মের সাথে এর কোনো সঙ্ঘাত নেই। কিন্তু অনেকে জ্ঞানের অভাবে কৃত্রিমভাবে এখানে অযাচিত একটি সঙ্ঘাত সৃষ্টি করে সমস্যায় নতুন মাত্রা যোগ করে থাকেন। তারিক এ ব্যাপারে বিদেশে বসবাসরত সব মুসলমানকে সব সময় সজাগ ও সাবধান থাকতে বলেন। ]]
[[ তারিক মনে করেন, ইউরোপ-আমেরিকায় বসবাসকারী মুসলমানদের উচিত পাশ্চাত্য সংস্কৃতির পরিপ্রেেিত কুরআনের ব্যাখ্যা করে সেইমতো জীবন যাপন করতে। তিনি সনাতনী ‘দারুল ইসলাম’ (অ্যাবোড অব পিস) ও ‘দারুল হারব’ (অ্যাবোড অব ওয়ার) বলে দ্বিপীয় বিভাজনকে গ্রহণ করেন না। তিনি বলেন, এ রকম কোনো কিছু কুরআনে নেই। তারিকের মতে, এ দুটোর মাঝখানে আরেকটি অবস্থান থাকতে পারে, যাকে তিনি নাম দিয়েছেন ‘দারুল দাওয়া’ (অ্যাবোড অব ইনভাইটেশন)। তিনি ইউরোপ-আমেরিকার মুসলমানদের বৃহত্তর সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং আলাদা না থেকে পাশ্চাত্য সমাজের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর বেশি জোর দেন। তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকা দারুল হারব নয়, দারুল দাওয়াও নয়; বরং এটা ‘দারুল শাহাদাহ’ (অ্যাবোড অব টেস্টিমনি)। ]]
“I’m saying it’s exactly the opposite … millions of American Muslims, Canadian Muslims, European Muslims are already Western by culture, Muslim by religion. They abide by the laws of the countries ; they speak the languages of the counties. So the point here is … we should go beyond integration. Now we should speak about contribution. A Muslim citizen should contribute to his or her country — and this is the way forward.”
সুত্রঃ http://www.tariqramadan.com/spip.php?article11125&lang=fr
মন্তব্যঃ কাফির-মুশরিকদের মাঝে বসবাসের ব্যাপারে ইসলামে সুষ্পষ্ট কথা আছে। এই ব্যাপারে আল-কোরআন এবং হাদিসে সুষ্পষ্ট নীতিমালা আছে। শুধুমাত্র দাওয়া, বিশেষ জ্ঞান অর্জন যা অন্য কোন মুসলিম দেশে নেই, বিশেষ চিকিৎসা যা অন্য কোন মুসলিম দেশে নেই এবং ব্যবসার জন্য সাময়িক গমণ জাতীয় কাজে সে সব দেশে ভ্রমণ করার অনুমতি ইসলাম দেয়।
কিন্তু কোন ভাবেই গণহারে বংশ পরপম্পরায় কাফির-মুশরিকদের দেশে বসবাসের অনুমতি ইসলাম আমাদেরকে দেয় না। আল্লাহ বলেছেনঃ
“নিশ্চয়ই যারা নিজেদের জীবনের প্রতি যুলুম করেছিল, ফেরেশতাগণ তাদের প্রাণ হরণ করতে গিয়ে বলবেঃ তোমরা কি অবস্থায় ছিলে? তারা বলবে, আমরা দুনিয়ায় অসহায় ছিলাম। তারা বলবেঃ আল্লাহর দুনিয়া কি প্রশস্ত ছিল না যে, তোমরা তন্মধ্যে হিজরত করতে? অতএব তাদেরই বাসস্থান জাহান্নাম এবং ওটা কত নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থান”। (সূরা নিসা ৪: ৯৭)
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘সেইসব মুসলিমদের কারো সাথে আমার সম্পর্ক নেই যারা মুশরিকদের ভেতরে অবস্থান করে।’’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)
বিস্তারিতঃ
http://salafimedia.com/izharuddeen/hisbah/item/798-hijrah.html
http://www.deen-ul-islam.org/hijrah/
তারিক রামাদান ও আল-ওয়ালা ওয়াল বারা
[[ মুসলিম ব্রাদারহুডের চেয়ে তিনি বেশি গুরুত্ব দেন হিউম্যান ব্রাদারহুডের ওপর। এখানে মুসলমানদের দায়িত্ব হওয়া উচিত বিদেশী সরকারের কাছে প্রটেকশনের দাবি নয়, বরং কনট্রিবিউশনের সুযোগ চাওয়া।]]
[[ তারিক রামাদান ‘আমরা’ বনাম ‘তারা’ (উই ভার্সাস দে) ডকট্রিনে বিশ্বাস করেন না। তার মতে, মুসলিম-অমুসলিম যাই হোক; প্রতিবেশী ও কমিউনিটির প্রতি সঠিকভাবে নাগরিক দায়িত্ব পালনও ইসলাম ধর্মেরই একটি অংশ। ]]
মন্তব্যঃ ইসলামে ভালোবাসা ও ঘৃণার concept (আল ওয়ালা ওয়াল বারা) এর ক্ষেত্রে তারিক রামাদানের চিন্তাধারা সম্পূর্ণ ইসলামের বিপরীত।
ইসলামে মানুষ হিসেবে কাফির-মুশরিকদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য আদায় করতে হয়, তাদের প্রতি ক্ষেত্রে বিশেষে সহমর্মিতাও থাকতে পারে। তবে ইসলাম ও মুসলমানদের সাথে যুদ্ধরত কোন দেশে বসবাস করে ঐ যুদ্ধরত কাফিরদের প্রতি মায়া-দয়া প্রদর্শনের কোন সিষ্টেম ইসলামে নেই।
আর কোনভাবেই সেটা মুসলিম ভ্রাতৃত্বের উপরে যাবে না। আল্লাহ বলেছেনঃ
لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآَخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آَبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ
যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে এমন কোন সম্প্রদায়কে তুমি পাবে না এমন লোকদেরকে ভালোবাসতে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধীতা করে – যদি সেই বিরুদ্ধচারীরা এমন কি তাদের পিতা, পুত্র, ভাই অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয় তবুও। (সূরা মুজাদালা, ৫৮:২২)
তার এসব কথা শুধু অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও পশ্চিমা কাফির শাসকদেরকে খুশী করতে পারবে, ইসলামের সাথে এর কোন মিল নেই।
বিস্তারিত জানতেঃ
http://shorolpoth.wordpress.com/2011/12/24/ মুসলমানের-ভালবাসা/
http://bnislam.com/tag/ আল-ওয়ালা/
কাফির মিডিয়া-বুদ্ধিজীবি কর্তৃক তারিক রামাদান প্রশংসা
One of the world’s top 100 innovators of the 21st Century (one of the world’s top 7th religious leaders) by Time Magazine in 2000।
One of the world’s top 100 most influential intellectuals in the world by Time Magazine in 2004।
An online poll provided by the American Foreign Policy magazine in 2009 and in 2010 placed Ramadan on the 49th spot in a list of the world’s top 100 contemporary intellectuals.
In 2008, an open online poll, Tariq Ramadan was voted the 8th top most intellectual person in the world on the list of Top 100 Public Intellectuals by Prospect Magazine (UK)
সুত্রঃ উইকিপিডিয়া
[[ তারিক রামাদান বর্তমান বিশ্বের সাতজন প্রভাবশালী ধর্মীয় চিন্তাবিদের একজন। ২০০০ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাকে পৃথিবীর সেরা ১০০ জন বুদ্ধিজীবীর অন্যতম মনোনীত করেছে। ২০০৯ ও ২০১০ সালে আমেরিকার ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন তারিককে পৃথিবীর সেরা ১০০ জন চিন্তাবিদের মধ্যে ৪৯তম স্থান দিয়েছে। ওপেন অনলাইন পোলের মাধ্যমে ব্রিটিশ প্রসপেক্ট ম্যাগাজিন পৃথিবীর ১০০ জন পাবলিক চিন্তাবিদের মধ্যে তারিককে অষ্টম স্থানে প্লেস করেছে।]]
মন্তব্যঃ একজন মুসলমান যখন তার ব্যক্তিগত দয়া, মায়া, চরিত্র মাহাত্ব্য ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে বিশেষতঃ তার ইসলামী জ্ঞান ও স্কলার / আলিম হিসেবে কাফিরদের কাছে সম্মানিত হয়, সেটা তার দ্বীনের জন্য খুবই বিপদ সংকেত।
এটা কি কল্পণা করা যায় যেঃ মক্কার কাফিররা কিংবা পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের মিডিয়া কোন সাহাবীকে তাঁর ইসলামী জ্ঞান ও সমসাময়িক বিশ্ব-রাজনীতি নিয়ে তাঁর লেখনী, চিন্তাভাবনার কারণে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবে !!!!!
এখানে দুইটা ideology এর conflict চলছে। কাফিররা চায় তাদের democracy দিয়ে whole world কে rule করতে। আর ইসলাম চায় সারা বিশ্ব থাকুক ইসলামী শরীয়াতের ছায়াতলে। অবশেষে ঈসা (আঃ) ও ইমাম মাহদী (আঃ) এর আগমণের পর পুরো বিশ্ব ইসলামী শরীয়াতের ছায়াতলে আসবে।
সেই ইসলামের ideology এর ধারক কোন আলিমকে অথবা ইসলামী চিন্তাবিদকে কি কাফির বিশ্ব এভাবে সম্মান দিবে??
কই তার নানা হাসান আল বান্না, কিংবা সাইদ কুতুব কিংবা মাওলানা মওদুদীকে তো কাফির বিশ্ব এভাবে সম্মান জানায় নি!! এটা কখনোই হতে পারে না।
এটা তখনই সম্ভব যখন পশ্চিমা-কাফির বিশ্ব কারো কাছ থেকে তারা কোন benefit পাবে। তাদের উদ্দেশ্য সফল করার ক্ষেত্রে তার কোন ইচ্ছাকৃত / অনিচ্ছাকৃ অবদান থাকবে !!!
তিনি যদি সকল প্রকার তাগুতকে পরিত্যাগ করার দাওয়াত দিতেন, তিনি যদি সকল মুসলিম দেশে ইসলামী শরীয়াহ কায়েম করার জন্য কাজ করতেন, তিনি যদি জিহাদের পক্ষে কথা বলতেন, তাহলে কি কাফির বিশ্ব তাকে এসব সম্মাননা দিতো ???
আল্লাহ বলেছেনঃ
وَلَن تَرْضَى عَنكَ الْيَهُودُ وَلاَ النَّصَارَى حَتَّى تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ
ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা কখনই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্মের অনুসরণ করেন। (সূরা আল বাকারাহ ২ : ১২০)
পশ্চিমাদেশের আইন বনাম ইসলাম
লেখক বলেছেনঃ [[ তিনি আরো মনে করেন, নাগরিকত্ব ও নাগরিক অধিকারের চর্চা এবং ধর্ম ও ধর্ম পালন এক নয়। যেমনÑ যেকোনো দেশের নাগরিক হিসেবে মুসলমানদেরও সে দেশের আইন মেনে চলার ওপর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ধর্মের সাথে এর কোনো সঙ্ঘাত নেই। কিন্তু অনেকে জ্ঞানের অভাবে কৃত্রিমভাবে এখানে অযাচিত একটি সঙ্ঘাত সৃষ্টি করে সমস্যায় নতুন মাত্রা যোগ করে থাকেন। তারিক এ ব্যাপারে বিদেশে বসবাসরত সব মুসলমানকে সব সময় সজাগ ও সাবধান থাকতে বলেন। ]]
মন্তব্যঃ এটা ঠিক যে, পাশ্চাত্যের সকল আইন ইসলাম বিরোধী নাও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে এভাবে ঢালাওভাবে কখনোই কি বলা যাবেঃ যেকোনো দেশের নাগরিক হিসেবে মুসলমানদেরও সে দেশের আইন মেনে চলার ওপর বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
শুধু পাশ্চাত্য কেন মুসলিম দেশসমূহের অনেক আইন আছে যা একজন মুসলিম মেনে চলতে বাধ্য তো দূরের কথা খুশী মনে মেনে নিলে ঈমান নষ্ট হতে পারে। এই ক্ষেত্রে সামর্থ অনুযায়ী পরিস্থিতি পরিবর্তন তথা ইসলামী শরীয়াত বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে ফরজ আর সেই সামর্থ না থাকলে তো ঐ স্থান থেকে হিজরত করা ফরজ। ভিজিটিং প্রফেসার হিসেবে কাজ করার জন্য তারিক রামাদান সাহেবদেরকে পাশ্চাত্যের সকল আইন মেনে চলার অধিকার মুহাম্মাদ (সাঃ) এর ইসলাম দেয়নি।
তার এই কথা শুধু পাশ্চাত্যের ইসলামের সাথে যুদ্ধরত ও ইসলামের শত্রু দেশ সমূহ খুশী হবে – কিন্তু বাস্তবে তা ইসলাম থেকে যোজন যোজন দূরের কথা।
আমাদের সাদা-চামড়া প্রীতি
বিশেষত বাংগালী সমাজে এবং সাধারণভাবে মুসলিম বিশ্বে সাদা চামড়ার প্রতি এক ধরনের প্রবল দুর্বলতা, ভক্তি-সম্মান রয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে পাশ্চাত্যে অবস্থানরত মুসলিম দায়ী, আলিম কিংবা ইসলামী চিন্তাবিদদের প্রতিও আলাদা মহব্বত-সম্মান থাকা স্বাভাবিক।
কিন্তু ইসলামের ক্ষেত্রে এসব বিষয়কে বিবেচনায় আনা শুধুমাত্র ভুল নয় রীতিমতো ভীষণ বিভ্রান্তিকর। তাই আমাদেরকে চোখ-কান খোলা রেখে চলতে হবে। আমাদের দেশের আল্লাহর সাথে যুদ্ধরত, সুদখোর ডঃ ইউসুনসকে যেভাবে পাশ্চাত্যের মিডিয়ায় সম্মান দেয়ার বিশেষ কারণ আছে তেমনি পাশ্চাত্য মিডিয়ায় বিশেষ আদর-যত্ন পাওয়া আলিম / স্কলার / ইসলামী চিন্তাবিদদের ব্যাপারে আমাদেরকে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর পছন্দনীয় পথে পরিচালিত করুন এবং ডঃ তারিক রামাদানকে পাশ্চাত্যের পছন্দনীয় ও প্রশংসিত Modernist Islam এর ভ্রান্ত পথ থেকে সঠিক and pure ইসলামের দিকে নিয়ে আসুন।
আমীন।
কই তার নানা হাসান আল বান্না, কিংবা সাইদ কুতুব কিংবা মাওলানা মওদুদীকে তো কাফির বিশ্ব এভাবে সম্মান জানায় নি!!
— কৌশলে আপনি মওদুদীকে বড় এবং সম্মানিত করে ফেলেলেন। মওদুদী কখনওই হাসান আল বান্না, কিংবা সাইদ কুতুব এর সাথে একই সাথে উচ্চারিত হবার মত ব্যক্তি নন। মওদুদীর মৃত্যু আমেরিকাতেই হয়েছে। এখনও এদের কদর আছে লন্ডনে। মওদুদী সম্পর্কে জানতে বেশী কিছু কতে হবে না। উনার একজন শুভাকাঙ্খী ও সহকর্মী মাওলানা মনজুর নুমানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি এর মাওলানা মওদুদীর সাথে “আমার সাহচর্যের ইতিবৃত্ত” কিতাবটি পড়লেই জানতে পারবেন।