রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে অপমানের সময় ধৈর্য্য ধারনের সঠিক ব্যাখ্যা!
লিখেছেন: ' abdullah al Mamun' @ শনিবার, অক্টোবর ৬, ২০১২ (৮:১৫ পূর্বাহ্ণ)
যারা ইসলাম এবং মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অপমান করছে তাদের বিষয়ে অনেকে এটা বলা শুরু করেছেন যে আমাদের উত্তেজিত হওয়া অথবা এর সক্রিয় প্রতিবাদ জানানো উচিত হবে না; আমাদের শুধুমাত্র সবর করা উচিত হবে এবং কোনও কিছু করা উচিত হবে না। তারা আল-কোরআনের এই আয়াতটি ভুলভাবে ব্যবহার করছেন যেখানে আল্লাহ্ পাক বলেছেনঃ
“…অবশ্য তোমরা শুনবে পূর্ববর্তী আহলে কিতাবদেরকাছে এবং মুশরেকদের কাছে বহু অশোভন উক্তি। আর যদি তোমরা ধৈর্য্য ধারণ করএবং পরহেযগারী অবলম্বন কর, তবে তা হবে একান্ত সৎসাহসের ব্যাপার।” (সূরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ১৮৬ )
এইটি খুবই দুঃখজনক যে, এই আয়াতটি ভুলভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যা শয়তানের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শয়তান আমাদেরকে দিয়ে করাচ্ছে – এটা আমাদেরকে নিশ্চুপ রাখছে এবং কিছুই করতে দিচ্ছে না। কিন্তু সাধারন মুসলিম জনগনকে এর জন্য অভিযুক্ত করা যায় না। বরং সেই সকল তথাকথিত আলেমদের অভিযুক্ত করা যায় – যারা তাদেরকে ভুল পথপ্রদর্শন করছে।
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসির আত-তাবারী ও তাফসীর আল-বাগাভীতে ইমাম যুহরী (রঃ) থেকে উদ্বৃতি করা হয়েছে, তিনি বলেছেন এই আয়াতটি কা’ব বিন আশরাফের বিষয়ে নাযিল হয়েছিলো।
কা’ব তার কবিতার মাধ্যমে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুসলিম মহিলাদেরকে অপমান করেছিলো। এটা সাহাবীদেরকে (রাদিআল্লাহু আনহুম) চরমভাবে বিপর্যস্ত করেছিলো। তাই আল্লাহ তাঁদেরকে সবর এবং স্থির থাকতে বলেন (কারণ শীঘ্রই একটি সিদ্ধান্ত আসবে)। তারপর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই সিদ্ধান্তটি জানিয়ে দেন। সহীহ বুখারীর বিশুদ্ধ হাদীসে যা নিন্মরূপে বর্নিত হয়েছেঃ
“কা’ব বিন আল-আশরাফের ব্যবস্থা কে করবে? সত্যিকারভাবেই সে আল্লাহ এবং তাঁর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আঘাত করেছে!” প্রসিদ্ধ সাহাবী মুহাম্মদ বিন মাসলামাহ এর উত্তর দিয়েছেন, “হে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি করবো! আমি তাকে হত্যা করি – এটা কি আপনি পছন্দ করবেন?” রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উত্তরে বলেছিলেন, “হ্যাঁ” (সহীহ আল-বুখারী)
কা’ব নিহত হওয়ার পরের দিন মদীনা থেকে ইহুদীদের একটি জামাত এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট আসে। তারা বলেছিলো কা’ব (যে নিজেও একজন ইহুদী ছিলও) কোনও ধরনের অপরাধ করেনি এবং ভুলবশঃত তাকে হত্যা করা হয়েছে।
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উত্তরে বলেন, “সে আমাদেরকে তার কবিতার মাধ্যমে ক্ষতি করেছে, এবং যতক্ষন পর্যন্ত আমরা তার বিরুদ্ধে তলোয়ার এর মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ না করতাম ততক্ষন পর্যন্ত তোমাদের কেউ কিছুই করতে না”
অতএব আল-কোরআনের এই আয়াতটি ব্যবহার করে অন্যকে এই ধরনের অপমান এর জবাব দান থেকে বিরত করা অথবা কমপক্ষে বিক্ষোভ করা সম্পূর্ণ ভুল এবং আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবী (রাদিআল্লাহু আনহুম) তা করেননি।
আজকের আলেম উলামাদের দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহর রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক বিষয়ে শরীআহর সঠিক বিষয় তুলে ধরা যার ফলে জনগণ সঠিকভাবে সচেতন হবে।