এক তাবলীগি ভাই এর আত্মপোলব্ধি (১ম উসুল: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ -পর্ব ২)
লিখেছেন: ' abdullah al Mamun' @ বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২, ২০১০ (৭:৫৮ অপরাহ্ণ)
১ম উসুল: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (পর্ব ২)
Part 1: here
শিরক:
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর ব্যাপারে আরো পড়ে দেখলাম, আল্লাহ বলেছেন,
“তাদের অধিকাংশ আল্লাহর উপর ঈমান আনায়ন করে, তবে (ইবাদতে) শিরক করা অবস্থায়। – সূরা ইউসুফ: ১০৬
আবার আল্লাহ বলেছেন, “আমি তোমার কাছে এবং যারা তোমার পূর্বে ছিলো তাদের কাছে এই ওহী পাঠিয়েছি যে, যদি কোন শিরক করো, তবে অবশ্যই তোমার আমল নস্ট হয়ে যাবে আর অবশ্যই তুমি খতিগ্রস্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।” – সূরা যুমার:৬৫
“যদি তারা শিরক করে, তবে তারা যত আমলই করুক না কেন তা নস্ট হয়ে যাবে।” – সূরা আন আম: ৮৮
“তারা তাদের আলেম ও দরবেশদেরকে আল্লাহর পাশাপাশি রব হিসেবে গ্রহন করেছে।” -সূরা তাওবা:৩১
“আর তারা উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কিছুর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না উপকার এবং বলে, ‘এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী’। তুমি বলো, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছো, যে বিষয়ে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে ? তিনি পুতঃ পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে, যা কিছু তোমরা শরীক করছো।” – সুরা ইউনুস: ১৮
চিন্তা করে দেখলাম, শিরক সম্পর্কে আমার জানাশুনা ভাসাভাসা। অথচ সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। পাশাপাশি আমি যাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দেই তাদেরকে শিরক সম্পর্কে না জানানো মানে আসলে তাদেরকে পরিপূর্ণ ঈমানের দাওয়াত না দিয়ে অনেক কিছু গোপন করার মতো।
চিন্তা – ৫। তাই চিন্তা করেছি এখন হতে দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার সময় “১ম উসুল: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এর বর্ননা দেয়ার সময় শিরক এর বিস্তারির আলোচনা করবো। এজন্য কোরআন হাদীসের আলোকে “ছয় উসুল”কে সুন্দরভাবে সাজাবো ইনশাআল্লাহ।
কুফর:
জানতে পারলাম, বড় কুফর করলে ঈমান নস্ট হয়ে যায়। আল্লাহ বলেছেন, “না কখনো না, তোমার রবের কসম, তারা কখনই ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্খন পর্যন্ত তাদের মধ্যে যে বিবাদ হয় তা মীমাংসার ভার তোমার উপর অর্পন না করে, তারপর তাতে নিজেদের মনে কোনরূপ অসন্তুষ্টি প্রকাশ না পায়, এবং তাকে পুরোপুরি গ্রহন করে।” – সূরা নিসা:৬৫
চিন্তা করে দেখলাম, আমি নিজে এবং আমার আশে-পাশের অনেক ভাইরা বিবাদ মীমাংসার সময় সে বিষয়ে রাসুল (সা:) এর ফায়সালা যে কি, তা জানতাম না, না জানলে সেটা মানবো কিভাবে?
” তবে কি তোমরা কিতাবের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন। – সূরা বাকারা: ৮৫
চিন্তা করে দেখলাম, আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে কিতাবের সকল অংশ মানলেও সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাস্ট্রীয় জীবনে কিতাবের কিয়দংশ মানি এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস করি। অর্থাত সুদ ভিত্তিক ব্যাংক এ আমার একাউন্ট ছিলো, আমাদের প্রচলিত কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী ব্রিটিশ আইনকে আমি বেশ মান্য ও শ্রদ্ধা করতাম ইত্যাদি। নিজের অজান্তেই আল্লাহর আইন হতে মানুষের আইনকে বেশী পছন্দ করতাম।
<strong>”আল্লাহ ও তার রাসূল কোন নির্দেশ দিলে, কোন মুমিন পুরুষ বা কোন মুমিন নারী সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকারী ঠাকবে না। যে কেউ আল্লাহ ও তার রাসূলকে অমান্য করলো সে তো পথভ্রস্ট হবে।” – সূরা আহ্ যাব:৩৬
চিন্তা – ৬। তাই চিন্তা করেছি এখন হতে নিজে সকল ধরনের কুফর হতে বেচে থাকবো ও দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার সময় “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এর বর্ননা দেয়ার সময় কুফর এর বিস্তারির আলোচনা করবো। যাতে ঐ ভাই যাকে দ্বীনের দাওয়াত দিচ্ছি তিনি নিজের ঈমান রক্খা করতে পারেন।
“মুহাম্মাদুর রাসুলাল্লাহ”
আল্লাহর রাসুলকে আমি ভালোবসি নিজের থেকে এবং নিজের পরিবার থেকে। কিন্তু দেখলাম আল্লাহ বলেছেন, রসুল(সা:) কে নিজের গোস্টী তথা নিজের জাতি তথা নিজের পছন্দনীয় মত, পথ, তরীকা, নিজের উস্তাদ, নিজের পীর, নিজের মুরব্বী, নিজের শাইখ হতেও বেশী ভালোবাসতে হবে। নিজের পছন্দনীয় মত, পথ, তরীকা, নিজের উস্তাদ, নিজের পীর, নিজের মুরব্বী, নিজের শাইখ এর মত যদি একদিকে হয় কিন্তু যদি রাসুল (সা:) এর মত ওন্যদিকে হয়, তবে সেটাই মানতে হবে।
“বলুন, যদি আল্লাহ, তার রাসূল এবং আল্লাহর পথে জিহাদ থেকে তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই, তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের গোস্টী, তোমাদের অর্জিত সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা-বানিজ্য যার মন্দার আশংকা করো, তোমাদের বাসস্থান যা ভালোবাসো – বেশী প্রিয় হয়, তবে অপেক্খা করো আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত।” – সূরা তাওবা: ২৪
“বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো, তবে আমার অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন আর তোমাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দিবেন …..: -সূরা আলে ইমরান: ৩১
আর রাসুল (সা:) বলেছেন: “আমি শপথ করে বলছি যে, তোমাদের মাঝে আমিই আল্লাহর ভয়ে সবচেয়ে ভীত এবং আল্লাহ সম্পর্কে সবচেয়ে সচেতন। কিন্তু আমি রোযা রাখি এবং তা ভাংগি, সালাত আদায় করি এবং ঘুমাই এবং আমি নারীদের বিবাহ ও করি। আমার সুন্নাহ থেকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয়, সে আমার কেউ নয়। – বুখারী।
“… যদি তোমাদের মধ্যে কেউ বেশীদিন বেচে থাকে, সে তবে সে নানারকম মতবিরোধ দেখবে। তখন তোমার উপর ওবশ্য কর্তব্য এই যে, আমার সুন্নাতকে এবং হেদায়েতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদিন এর সুন্নতকে শক্তভাবে দি্য়ে আকড়ে ধরবে … ” – আবু দাউদ।
আল্লাহ বলেছেন, আল্লাহকে ভালোবাসলে রাসুলের অনুসরণ করতে। রাসুল (সা:) বলেছেন, তার অনুসরণ না করলে, তার উম্মত থাকা যাবে না।
চিন্তা -৭। এখন থেকে নিয়্যত করেছি, নিজে জীবনের সকল ব্যাপারে রাসুল (সা:) এর আদর্শ মেনে চলবো, তা ইবাদতে হোক বা ব্যক্তিগত বা পারিবারিক হোক অথবা অর্থনৈতিক, রাস্ট্রীয় হোক। এবং যাকেই দ্বীনের দাওয়াত দিবো, তাকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবো, নাহলে সে আল্লাহর কথা অনুযায়ী গুমরাহ হয়ে যাবে।
বিদয়াত:
দেখলাম আল্লাহ ঘোষণা করেছেন, “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং আনুগত্য করো রাসুলের এবং তোমাদের দায়িত্বশীলদের। আর কোন ব্যাপারে মতবিরোধ হলে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তোমরা আল্লাহ ও বিচার দিবসে বিশ্বাসী থাকো।” – সূরা আন্ নিসাঃ ৫৯।
তাই কোরাআন ও হাদীস সম্পূর্ণ মেনে চলবো। যে কোন ব্যাপারে আলেমগণের মতভেদ পেলে, সেটা যথাসম্ভব কোরান-হাদীসের মাধ্যমে যাচাই করতে চেস্টা করবো অথবা যে আলিমের মত কোরান-হাদীসের বেশী কাছে, তার মত গ্রহণ করবো।
“জান্নাতের কাছে নিয়ে যায় অথবা জাহান্নাম হতে দূরে নিয়ে যায়, এমন কোন বিষয়ই আমি পরিস্কারভাবে বর্ণনা করতে বাকী রাখিনি।“ – আল মুজাম আল কবীর, আত্ তাবরাণী, আলবানীর মতে সহীহ।
“আমার সমস্ত উম্মতই জান্নাতে যাবে, শুধু যারা অস্বীকার করবে তারা ব্যতীত। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, কে অস্বীকার করবে ? তিনি বললেন, যে আমার আনুগত্য করেছে সে জান্নাতে যাবে, যে আমার আনুগত্য করলো না, সে অস্বীকার করলো।” - বুখারী ও অন্যান্য।
চিন্তা – ৮। যেহেতু জান্নাতের কাছে নিয়ে যায় অথবা জাহান্নাম হতে দূরে নিয়ে যায় এমন কোন জিনিস বর্ণনা করা বাকী নেই, তাই রাসুল (সা:) যে আমল করেন নি অথবা করতে বলেন নি কিংবা যে আমলের ব্যাপারে সাহাবীদেরকে তিনি নিরব সম্মতি দেননি, ঐ সমস্ত আমল সারা জীবনেও করতে যাবো না, আমি কেন নিজেকে অকারণে বিপদে ফেলবো আর বিদয়াত করে রাসুল (সা:) এর হাতে কিয়ামতের দিন হাউসে কাউসার এর পানি পান করা হতে মাহরুম হবো। আমার দাওয়াতে বিদয়াত এর ব্যাপারে ও বিস্তারিত আলোচনা করবো।
জানতে পারলাম: আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) বললেন যে, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের রাতের বেলায় মসজিদে যেতে দিও”। একথা শুনে তাঁর এক ছেলে বললেন যে, তিনি তার স্ত্রীকে রাত্রে মসজিদে যেতে দিবেন না। একথা শুনে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) তাকে শক্তভাবে ভৎর্সনা করলেন এবং তার বুকে ধাক্কা দিয়ে বললেন, ‘আমি তোমাকে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর হাদিস শুনালাম, আর তুমি বললে “না”। এরপর তিনি ঐ ছেলের সাথে আমৃত্যু কথা বলেন নি। – আহমদ; মুসলিম অধ্যায়ঃ ৪ হাদিসঃ ৮৮৮; আবু দাউদ।
একবার আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কয়েকজন সাহাবীর সামনে রাসুল (সাঃ) এর একটি হাদিস বর্ণনা করেন। উপস্থিত সাহাবীরা এ ব্যাপারে আবু বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) যা যা বলেছেন তা বলতে লাগলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) সাথে সাথে তাঁদের দিক হতে মুখ ফিরিয়ে বিপরীত দিকে মুখ করে ফেলেন এবং বললেন “আমার ভয় হয়, আল্লাহ আপনাদেরকে আকাশ হতে পাথর বর্ষণ করে শাস্তি দিবেন। আমি বলছি আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এটা বলছেন আর আপনারা বলছেন, ‘আবু বকর (রাঃ) এই বলেছেন, উমর (রাঃ) এই বলেছেন’।” – মুসনাদে আহমদ।
চিন্তা-৯। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আল্লাহ কিংবা রাসুল (সা) কথার বিরুদ্ধে যায় এমন সকল কথাকে বিনা দ্বিধায় ত্যাগ করবো তা সে যে কোন আলেম, বুজুর্গ, ইমাম কিংবা আউলিয়ার কথা হোক না কেন। এ ব্যাপারে দেখলাম আমাদের ইমাম আবু হানিফা (র:) থেকে শুরু করে সকল ইমামই একমত। যেমন:
ইমাম আবু হানিফা (র:) বলেছেন:
“তোমরা যদি আমার কোন উক্তি প্রকাশ্য কোরআন ও সুন্নাহর প্রতিকুল দেখতে পাও তাহলে কোর’আন ও সুন্নাহর নির্দেশ পালন করিও। এবং আমার উক্তি প্রাচীরের উপর ফেলিয়া দিও।”
- ইবনে আবেদীন, রুদ্দুল মুহ্তার ১/৪৬২ পৃঃ; ময়মনীয়া।
“ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হ’লো, আপনার কোন সিদ্ধান্ত রাসুল (সাঃ) নির্দেশের বিপরীত পাইলে আমরা কি করবো ? তিনি বললেন, রাসুল (সাঃ) এর হাদিসের মোকাবেলায় আমার উক্তি ফেলে দিও। আবার জিজ্ঞেস করা হইলো, আপনার কোন সিদ্ধান্ত সাহাবাগণের সিদ্ধান্তের বিপরীত পাইলে আমরা কি করবো ? তিনি বললেন, সাহাবাগণের উক্তির প্রতিকুল আমার কথা প্রত্যাখ্যান করবে।”
- ইরশাদ পৃঃ ২৬; ইকদুলজিদ পৃঃ ৫৪।
“আলেমগণের ব্যক্তিগত অভিমতের তুলনায় আমার নিকট দুর্বল হাদিসও অধিক প্রিয়।” – ইবনে আবেদিন ইকদুর জওয়াহের গ্রন্থের উল্লেখে স্বীয় ফতোয়ায় এ উক্তি উল্লেখ করেছেন।
“এমন অনেক কিয়াস আছে যেগুলির তুলনায় মসজিদে প্রস্রাব করা ভালো” – মনাকিব ১/৯১ পৃঃ।
“যে ব্যক্তি আমার দলীল অবগত নয়, তার পক্ষে আমার উক্তির সুত্রে ফতোয়া দেয়া উচিৎ নয়।” – ইমাম শারাণী; ইয়াওয়াকীৎ ও জওয়াহের ২/২৪৩ পৃঃ; হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা ১৬২ পৃঃ; ইকদুলজিদ ৮০ পৃঃ; ইকামুল হিমাম ৭২ পৃঃ।
“আমি কোর’আন এ হাদীসের ফতোয়া কোন দলীল বলে দিয়াছি, এটা যে ব্যক্তি জানেনা, তার জন্য আমার ফতোয়া অনুসরণ করা হালাল নয়।” – বহরুর রায়েক ৬/২৯৩ পৃঃ; মিনহাতুল খালেক ২/২৯৩ পৃঃ; উমদাতুর রিআয়া ৯ পৃঃ।
ইমাম শাফেয়ী (র:) বলেন:
একবার এক ব্যক্তি ইমাম শাফেয়ীকে একটি মাসয়ালা জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, এ ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) এর এই নির্দেশ রয়েছে । ঐ ব্যাক্তি বললো, আপনার ফায়সালা কি এটাই ? তিনি একথা শুনে চমকে উঠলেন এবং বিবর্ণ হয়ে গেলেন, যেন শরীরের রক্ত শুকিয়ে গেছে। তিনি বললেন, “ওরে হতভাগা, রাসুল (সাঃ) এর হাদিস বলার পর যদি আমি সে অনুসারে ফতোয়া না দেই তবে কোন জমীন আমার ভার বহন করবে ? কোন আকাশ আমাকে ছায়া দিবে ? হ্যাঁ, হ্যাঁ রাসুল (সাঃ) এর হাদিস আমার মাথা ও চোখের উপর, এটাই আমার মাযহাব।” - ইকাযুল হিমম ১০০ পৃঃ।
এছাড়া ও আমাদের মাজ হাবের ওন্যান্য বড় ইমামরা ও এ ব্যাপারে একমত:
ইমাম আত্ ত্বাহাবী (রহঃ) বলেন, “অন্ধ-ভক্ত ও নির্বোধ ছাড়া কেউ তাক্বলীদ (অন্ধ আনুগত্য অর্থাৎ দ্বীনী ব্যাপারে বিনা দলিলে কারো কথা মেনে নেয়া) করতে পারে না।” – রাসমুল মুফতী ১ম খন্ড ৩২ পৃঃ।
শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী (রহঃ) বলেন, “যখন আমাদের কাছে সেই নিস্পাপ রাসুল (সাঃ) এর হাদীস নির্ভরযোগ্য সুত্র থাকে আসে, যার অনুসরণ করা আল্লাহ কর্তৃক আমাদের উপর ফরজ, আর সেই হাদীস যদি আমাদের মাযহাবের বিপরীত হয়, তখন যদি আমরা হাদীস ছেড়ে দিয়ে ধারনাপ্রসুত বিষয়ের (মাযহাবের) অনুসরণ করি, তাহলে আমাদের থেকে বড় জালিম আর কে হবে ? আর ক্বিয়ামতের দিন, যেদিন মানব জাতি আল্লাহর কাঠগড়ায় দন্ডায়মান হবে সেদিন আমাদের উযর (জবাব) কি হবে ? – হুজ্জতুল্লাহিল বালিগা ১/১৫৫, দেওবন্দ হিন্দুস্থানী ছাপা।
চিন্তা- ১০। এখন থেকে “আল্লাহর হুকুম মানা ও রাসুল (সা:) এর তরীকা” নিজে মানবো এবং নিম্নলিখিত ব্যাপারে সবাইকে তা মানার দাওয়াত দিবো :
“আল্লাহর হুকুম মানা ও রাসুল (সা:) এর তরীকা” মানতে হবে:
– কি কি আক্বীদা রাখবো, সে ব্যাপারে – আল্লাহ সম্পর্কে, রাসুল(সা:) সম্পর্কে, নবীগণ , ফেরেস্তা , কিয়ামত, জান্নাত, জাহান্নাম, ইলমে গায়েব ইত্যাদি সকল ব্যাপারে।
– শিরক, কুফর, বিদয়াত এর ব্যাপারে।
– ইবাদত কি করবো, কিভাবে করবো, সে ব্যাপারে।
– ব্যাক্তিগত জীবনে।
– পারিবারিক জীবনে ।
– সামাজিক জীবনে।
– ওর্থনৈতিক জীবনে।
– রাজনীতি জীবনে।
– আন্তর্জাতিক জীবনে।
আল্লাহ আমাকে ও সকল মুমিনকে তওফীক দিন, আমীন।
————————- ইনশাআল্লাহ চলবে —————————————