এক তাবলীগি ভাই এর আত্মপোলব্ধি –৪
লিখেছেন: ' abdullah al Mamun' @ মঙ্গলবার, নভেম্বর ২, ২০১০ (৯:০০ পূর্বাহ্ণ)
পর্ব ১: এখানে।
পর্ব ২: এখানে।
পর্ব ৩: এখানে।
-
৬ ষ্ঠ উসুল: (দাওয়াত আত তাবলীগ)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন: “বলো, আমি তো শুধু অহীর ভিত্তিতেই তোমাদেরকে ভয় প্রদর্শন করছি”। – সূরা আম্বিয়া: ৪৫
“বলো, এটিই আমার পথ। আমি স্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে আল্লাহর দিকে আহবান করি এবং আমার যারা অনুসারী”। – সূরা ইউসুফ ১০৮ আয়াত
এই আয়াতগুলি থেকে বুঝা যায় দাওয়াত দিতে হবে, নিশ্চিত স্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে, অনুমানের ভিত্তিতে নয়। যদিও আমরা অনেকেই “রাসুল(সা:) বলেছেন একটি আয়াত হলেও তুমি তা মানুষের কাছে পৌছে দাও” এ কথার দুহাই দিয়ে যে কোন ব্যাপারে না জেনেই/ অর্ধেক জেনে সে ব্যাপারে মানুষকে বলা শুরু করে দেই।
চিন্তা – ১৭। এখন থেকে sure না হয়ে মানুষকে দাওয়াত দিবো না। না জেনে কাউকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেয়ে, দাওয়াত না দিয়ে চুপচাপ বসে থাকা ভালো। বরং কুরআন-হাদীস ভিত্তিক সঠিক স্পষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিবো।
আল্লাহ বলেছেন: “তোমাদের জিহবা দ্বারা মিথ্যা আরোপ করে বলবে না যে, এটি হালাল ও এটি হারাম। এভাবে আল্লাহর নামে মিথ্যা উদ্ভাবন করা হবে। যারা আল্লাহর নামে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা সফল হয় না। “(সূরা নাহল: ১১৬)
“আল্লাহর নামে বা আল্লাহর সম্পর্কে যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে তার চেয়ে বড় জালিম আর কে?” – আনআম : ২১, ৯৩, ১৪৪, আরাফ : ৩৭, ইউনুস : ১৭, হূদ : ১৮, আল কাহফ : ১৫, আনকাবুত : ৬৮, সাফ : ৭
রাসুল (সা:) বলেছেন: “আমি যা বলিনি তা যে আমার নামে বলবে তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম”। – সহিহ বুখারি।
“যে ব্যক্তি আমার নামে কোনো হাদিস বলবে এবং তার মনে সন্দেহ হবে যে, হাদিসটি মিথ্যা হতে পারে, সেও একজন মিথ্যাবাদী”। – সহিহ মুসলিম।
“মিথ্যা হিসেবে মানুষের জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে যা শুনবে তাই বর্ণনা করবে।” – সহিহ মুসলিম।
চিন্তা – ১৮। এখন থেকে জাল-যইফ হাদীস দিয়ে সেটা ফাজায়েলে আমলেরই হোক আর অন্য কোন কিতাবেরই হোক, মানুষকে দাওয়াত দিবো না। আমি অন্যকে দাওয়াত দিতে গিয়ে কেন নিজের জন্য জাহান্নামে জায়গা করে নিবো। আমি অন্যকে দাওয়াত দিতে গিয়ে কেন নিজেকে আল্লাহর কাছে জালিম আর রাসুলের কাছে মিথ্যাবাদী হিসেবে উপস্থিত হবো। আর মুরব্বীদের স্বপ্ন কিংবা বুজুর্গদের কাশফ এর বয়ানের মাধ্যমে দাওয়াত দেয়ার তো প্রশ্নই উঠেনা।
“এবং এভাবেই আমি তৈরী করেছি প্রত্যেক নবীর শত্রু। মানুষ ও জ্বীন শয়তানের মধ্য হতে এরা একে অপরের সাথে গোপনে যোগাযোগ করে। আর সুন্দর করে সাজিয়ে ধোকার সাথে কথা বলে। -সূরা আনআম: ১১.
“এমনিভাবে তাদের পুর্বের লোকদের কাছে যত রাসুলই এসেছিলেন তারা তাদেরকে অবশ্যই বলেছে যাদুকর এবং পাগল। তারা কি একে অপরকে উপদেশ দিত? বরং তারা ছিলো সীমা অতিক্রমকারী দল।” (সূরা যারিয়াত: ৫২-৫৩)
চিন্তা – ১৯। আল্লাহ সকল নবীর সাথে যদি শত্রুতা করা হয়ে থাকে, তাহলে নবী ওয়ালা দাওয়াতী কাজ করলে অবশ্যই আমাদের সাথেও শত্রুতা হওয়ার কথা। আমদেরকেও যাদুগর, পাগল বলার কথা। কিন্তু কই আমাদেরকে তো লোকজন এভাবে বলেনা। বরং দেশের সরকার থেকে শুরু করে এনজিও, আর্মি সবাই আমাদের বিশ্ব ইজতিমায় সাহায্য করে থাকে। তাহলে কি আমরা রাসুল (সা:) থেকে বেশী হিকমত ও কেরামত লাভ করেছি নাকি আমাদের দাওয়াত দেয়ার তরীকা আসলে নবী- ওয়ালা তরীকা নয়?
দাওয়াত দেয়ার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পর্যায়ক্রমিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
আমরা যে কলিমা, নামাযের পরেই এলেম ও যিকির, একরামুল মুসলিমীন ইত্যাদি এর দাওয়াত দিয়ে থাকি নবী(সা:) কি সেভাবে দাওয়াত দিয়েছিলেন? নবী (সা:) এর দাওয়াতে আমরা দেখতে পাই বিশেষ একটি ধারাবাহিকতা ছিলো। উনি প্রথমে মানুষকে আখেরাত, রিসালাত ও তাওহীদের দিকে দাওয়াত দিয়েছেন। মক্কায় ১৩ বছর তিনি এ কাজে ব্যয় করেছেন। মাদানী জীবনেও কাউকে দাওয়াত দিতে গিয়ে তিনি আগে তাওহীদের দিকে ডাক দিয়েছেন। পাশাপাশি শিরক ও কুফরের বিরোধিতা বজায় রেখেছেন।
দ্বিতীয়ত: তিনি তার অনুসরোণের জন্য মানুষকে দাক দিয়েছেন যা আল্লাহ আল-কোর আনে বারবার উল্লেখ করেছেন। যাকে আমরা সুন্নাহ অনুসরনের দাওয়াত বলতে পারি, পাশাপাশি বিদয়াত বর্জন করতে বলেছেন। আর এদুটো ব্যাপার আসে জীবনে আল্লাহর হুকুম-আহকাম পালন করতে গিয়ে।
আল-কোরআনেও আমরা দেখতে পাই, বিষয় অনুযায়ী আয়াতের যে পরিমাণ রয়েছে, তাতে,
(১) আখেরাত, জান্নাত-জাহান্নাম, রিসালাতের আলোচনা:- যা কিনা জীবনে তা্ওহীদ ধারন করা বা না করা এর ফলাফল।
(২) তাওহীদ, শিরক, কুফর এ আলোচনা।:-
(৩) নবীর অনুসরণ করার আলোচনা:-
উপরুক্ত তিন ব্যাপারে আলোচনাতেই আল-কোরআনের বেশীর ভাগ Effort ব্যয় হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদেরকেও বেশী বেশী দাওয়াত দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা আলোচনা করি ঠিকই কিন্তু তা খুবই অল্প। বিশেষত: আমাদের মুসলিম সমাজ যেহেতু তাওহীদ থেকে অনেক দুরে সরে গেছে, সে ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে। তাওহীদের বাস্তব প্রয়োগ কিভাবে হবে তা আলোচনা করতে হবে। দাওয়াতের মধ্যে শিরকের বিরোধিতা প্রচন্ডভাবে থাকতে হবে। সমাজে প্রচলিত কুফর, শিরক, বিদয়াতকে মানুষের সামনে সুস্পস্ট ভাবে তুলে ধরতে হবে যা করেছিলেন নবী (সা:)। যার ফলে চারিদিকে ইসলামের দুশমনরা বিহব্বল হয়ে গিয়েছিলো। সমাজে প্রচন্ড আলোড়ন তৈরী হয়েছিলো। কেন আমাদের দাওয়াতে ইসলামের শত্রুদের ঘুম হারাম হয়ে যায়না? তারা তো আমাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়না, কিংবা দাওয়াতী কাজ করার জন্য জেল-জরিমানা করে না, হত্যা করেনা যা কিনা প্রত্যেক নবী-রাসুলকে সহ্য করতে হয়েছিলো।
চিন্তা – ২০। এখন থেকে সম্পূর্ণ নবী-ওয়ালা তরীকায় দাওয়াত দেয়ার চেস্টা করবো কিন্তু কোন সময় তা আমার সামর্থের বাইরে হলে দাওয়াতী নীতির কোন পরিবর্তন করবো না। প্রয়োজনে নবী-ওয়ালা তরীকায় গোপনে দাওয়াত অব্যাহত রাখবো কিন্তু দাওয়াতের বিষয়বস্তুকে হাল্কা করে কিংবা ইসলামের অর্ধেক পরিচয় মানুষের সামনে তুলে ধরবো না।
(৪) অন্যান্য আহকাম এর আলোচনা:- যার মাঝে রয়েছে সালাত, সিয়াম ইত্যাদি ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নাহ, হারাম ইত্যাদি এর আলোচনা। সালাত এর ব্যাপারে আগেই বলেছি। অন্যান্য ফরজ যেমন যাকাত দিলে যে কি লাভ, না দিলে যে কঠোর শাস্তি তাও আলোচনা করবো, অন্যান্য হারাম বিশেষ করে আমাদের সমাজ যে সুদে ছেয়ে গেছে সে সুদের ব্যাপারে আমার বয়ানে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সুদ কিংবা অন্যান্য হারাম খেলে যে ইবাদত কবুল হয় না সে ব্যাপারেও মানুষকে সতর্ক করবো ইনশাআল্লাহ।
কাফিরদের ব্যাপারে কঠোরতা।
আল্লাহ বলেছেন, “মুহাম্মাদ (সা:) আল্লাহর রসুল ও তার সাথীগন কাফিরদের ব্যাপারে খুবই কঠোর, তারা নিজেদের মাঝে পরস্পর দয়াবান। ” – সূরা ফাতহ , আয়াত:২৯।
আমাদের অনেকে ইউরোপ, আমরিকা যে আমাদের তাবলীগি চিল্লার জন্য ভিসা দেয় তা নিয়ে বেশ গর্ব করেন। কিন্তু উপরের আয়াত অনুযায়ী যদি আমরা আমল করে থাকি তাহলে কি তারা আমাদেরকে এরকম ভিসা দিবে নাকি পরিত্যাগ করবে? নবী (সা:)তো তা’য়েফে দাওয়াত দিতে গিয়ে পাথর পেয়েছিলেন, তাহলে আমাদের কপালে এরকম সহজ ভিসা জুটছে কিভাবে? আল্লাহই ভালো জানেন।
দাওয়াতে পুরস্কার ও ভয়ের কথা দুটোই থাকতে হবে।
খেয়াল করলাম মূলত: সওয়াব তথা আমলে লাভ বেশি বেশি আলোচনায় আমি আভ্যস্থ। যেমন সালাতে কায়েম করলে এত নেকি, কোন জিকির করলে কত নেকী ইত্যাদি। কিন্তু আমল না করলে কি শাস্তি সেটা খুবই কম আলোচনা হয়। কোন কোন ভাই অবশ্য “সহজ করো, কঠিন করো না” এই হাদিসটিকে এই পদ্ধতির জন্য ব্যবহার করতে চান। কিন্তু আল-কোরআনে তো জান্নাত ও জাহান্নামের আলোচনা সমান সংখ্যক বার হয়েছে, পূর্ববর্তী জাতিদের শাস্তির কথা বার বার আলোচনা হয়েছে, নবী (সা:) তো মক্কায় তার প্রথম দাওয়াত “হায় সকাল, হায় সকাল” বলে জাহান্নাম ও পরকালের ভয় দেখিয়েছেন। তাই বুঝা যায় ঐ হাদিসের এই ব্যাখ্যা এভাবে করা ঠিক হবেনা।
সালাত আদায় না করার শাস্তি যে তিন দিন এর মধ্যে তওবা না করলে হত্যা বা Death Sentence যা কিনা ইসলামী হুকুমতের কাজীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে তাও সবাইকে জানানো দরকার। এই শাস্তির ব্যাপারে কোন কোন আলেমের মত হলো, ঐ ব্যক্তি কাফির অবস্থায় মারা যাবে। অনেকে হয়তো জান্নাতের আশায় আমল করবে, আবার অনেকে জাহান্নামের ভয়ে আমল করবে তাইতো আল্লাহ দুটোর ব্যাপারেই আলোচনা করেছেন।
চিন্তা ২১। এখন থেকে দাওয়াত দেয়ার সময় সওয়াব বা লাভ জানানোর পাশাপাশি কোন আমল না করলে শাস্তি পেতে হবে কোন আমল না করলে জাহান্নামে যেতে হবে তাও জানানোর চেস্টা করবো।
- ৩ দিন, ৪০ দিন এর চিল্লা।
আমি খেয়াল করে দেখলাম নবী (সা:) আমাদের মতো এভাবে ৩ দিন কিংবা ৪০ দিনের চিল্লা দিতে বের হতেন না। এমনকি সাহাবী কিংবা তাবেয়ীন বা তাবে-তাবেয়ীগণও এভাবে চিল্লা দিতে বের হতেন না। হ্যা মক্কী জীবনের শেষভাগে নবী (সা:) তায়েফ ও অন্যান্য গোত্রে দাওয়াতের জন্য গিয়েছেন কিন্তু তিনি সেখানে তাদের নেতাদের কাছে ইসলাম কবুল করার এবং তার নিরাপত্তা দানের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছেন। আমাদের মতো তায়েফের রাস্তায় রাস্তায় হেটে একে ওকে নামাজ, জিকির, একরামুল মুসলিমীনের বয়ান তারা করেন নি। তাহলে আমাদএর তরীকা কি নবী ওয়ালা দাওয়াতী তরীকা হলো?
চিন্তা ২২। এখন থেকে আমি নবী (সা:) সুন্নাহর খিলাফ করে এভাবে ৩ দিন ৪০ দিনের চিল্লায় যাবো না, বরং আল-কোরআনে ও নবী (সা:) এর সুন্নাহতে প্রাপ্ত নিয়ম অনুযায়ী দাওয়াত দিবো।
- ১ বছর চিল্লা এবং স্ত্রী-সন্তানদের অধিকার।
খেয়াল করে দেখলাম নবী (সা:) আমাদের মতো এভাবে দাওয়াত দেয়ার জন্য ১ বছরের চিল্লায় বের হতেন না। কিংবা তিনি তা করার জন্য আমাদেরকে নির্দেশও দেন নি। এ সময় আমার স্ত্রী-সন্তানদের যে অধিকার আছে তা কিভাবে আদায় করবো? পরবর্তীতে সাহাবীদের জীবনে জিহাদের জন্য বছর খানেক সময় এর জন্য বের হতে দেখা যায় কিন্তু তা দাওয়াতের জন্য ছিলোনা। অবশ্য পরবর্তী খলিফারা সর্বোচ্চ ৩ মাসের মাঝে জিহাদরত মুসলিমদেরকে তাদের পরিবারের কাছে ছুটি দিয়ে পাঠিয়েছেন।
আমাদের কোন কোন ভাই যদিও “কত জন সাহাবীর কবর মক্কা-মদীনায় আছে?” এ রকম কথা বলে এর দলীল দেয়ার চেস্টা করেন কিন্তু খেয়াল করলাম যে ঐ সব সাহাবীরা আজীবনের জন্য ঐ সব এলাকায় চলে গিয়েছিলেন, হয় পরিবারসহ অথবা সেখানে তারা বিয়ে করেছেন। কিন্তু আমারা তো সেটা করছি না। যার ফলে সমস্যা তৈরী হচ্ছে।
আর “মুসা (আ:) এর তুর পাহাড়ে ৪০ দিন থাকার কথা বলে ৪০ দিন চিল্লার দলীলের” ব্যাপারে চিন্তা করলাম, সেখানে তিনি গিয়েছিলেন আল্লাহর কাছ থেকে সরাসরি ওহী আনতে। আমরা তো ৪০ দিনের চিল্লায় এভাবে ওহী আনতে যাচ্ছি না।
চিন্তা- ২৩। এখন থেকে আমার স্ত্রী-সন্তানদের ধিকার হরন করে ১ বছরের চিল্লায় যাবো না। বরং কখনো দাওয়াত দেয়ার জন্য হিজরত করলে নবী ও সাহাবী-ওয়ালা তরীকায় করবো।
- শিরক-কুফর এর প্রচন্ড বিরোধিতা।
আল্লাহ ইব্রাহিম (আ:) এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ” নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের থেকে ও আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমারা যাদের ইবাদত করো, তাদের থেকে মুক্ত, বিচ্ছিন্ন। আমরা তোমাদেরকে পরিত্যাগ করেছি, আর তোমাদের মাঝে ও আমাদের মাঝে শুরু হলো চিরকালীন শত্রুতা ও ঘৃনা যে পর্যন্ত তোমারা এক আল্লাহর উপর ঈমান আনবে। –সূরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৪।
রাসুল (সা:) বলেছেন, “যখন মানুষ অন্যায় দেখেও তা সংশোধন করবে না, তখন যে কোন মুহুর্তে আল্লাহর শাস্তি তাদের সবাইকে গ্রাস করবে।” – তিরমিজী, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ। সনদ সহীহ।
“তোমাদের কেউ যদি কোন অন্যায় দেখতে পায়, সে যেন হাত দিয়ে তা প্রতিহত করে, সে সামর্থ না থাকলে কথার মাধ্যমে তা পরিবর্তন করবে, সে সামর্থও না থাকলে অন্তর দিয়ে তা পরিবর্তন করবে। এটি হলো ঈমানের দুর্বলতম পর্যায়। – সহীহ মুসলিম।
কিন্তু কি সমাজে হাজারো অন্যায় থাকলেও আমরা তো তার প্রতিবাদ করি না আমাদের কারোই কি কথা দিয়ে অন্যায় পরিবর্তন করার সামর্থ নেই? আমরা কি রাসুল (সা:) বলা সেই গজব থেকে মাফ পাবো?
শিরক-কুফর, মাজর-কবর পুজারীদের সাথে আমাদএর সম্পর্ক কি নবী-ওয়ালা তরীকা অনুযায়ী আছে?
চিন্তা ২৪। ইনশাআল্লাহ এখন থেকে এ ব্যাপারেও নবী ওয়ালা তরীকা মানার চেষ্টা করবো।
- মানুষকে সহজ ইসলামের দাওয়াত দেয়া।
“আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য সম্পূর্ণ করে দিলাম। আর তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পূর্ণ করে ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।” – সূরা মায়েদা, আয়াত : ৩।
দ্বীন যেখানে সম্পূর্ণ সেখানে আমরা কিভাবে নিজে নিজে দ্বীনের আরেকটি সহজ ফর্মুলা বের করি যেখানে ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের বদলে রয়েছে ছয় উসুল এর দাওয়াত দিচ্ছি।
“হে মুমিনগণ, তোমাদের উপরে শুধু তোমাদের নিজেদেরই দায়িত্ব। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তা হলে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করবে না”। -সূরা মায়েদা: ১০৫।
“হে নবী! আপনার রবের নিকট থেকে অবতীর্ণ অহীর অনুসরণ করুন। তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। মুশরিকদের জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না। যদি আল্লাহর ইচ্ছা হতো তবে এরা শিরক করতো না। আমি আপনাকে এদের উপর পাহারাদার নিযুক্ত করিনি। আপনি তাদের উপর কোনো হাবিলদারও নন। – আনয়াম ১০৬-১০৭।
“তোমার রবের দিকে ডাকো হিকমাত ও উত্তম নসীহতের সাথে, আর লোকদের সাথে বিতর্ক করবে উত্তম পন্থায়।” – আন নাহল-১২৫।
চিন্তা ২৫। তাহলে অহীর অনুসরণ করে আমদেরকে দাওয়াত দিতে হবে। মনগড়া ভাবে নয়। আর সবাইকে আমরা হেদায়াতের পথে নিয়ে আসতে পারবো না। রাসুল (সা:) ও তাঁর চাচাকে নিয়ে আসতে পারেন নি। তাহলে নিজেকে বিপদে ফেলে, আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতা করে, নবীর সুন্নাতের বিরোধিতা করে কেন আমরা আলাদা এক সহজ ইসলামের দাওয়াত দিবো? এতে কি মানুষ সঠিক ইসলামকে চিনতে ভুল করবে না?
- এই দাওয়াত দেয়ার এই নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের কি অদৌ কোন প্রয়োজন আছে?
রাসুল (সা:) বলেছেন, ” জেনে রাখো সবচেয়ে উ্ত্তম কথা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। সবচেয়ে উ্ত্তম নির্দেশনা হচ্ছে মুহাম্মাদ (সা:) এর নির্দেশনা। আর সবচেয়ে খারাপ কাজ হচ্ছে নতুন উদ্ভাবিত পন্থা। আর প্রত্যেক নতুন উদ্ভাবিত পন্থাই বিদয়াত, প্রত্যেক বিদয়াতই পথভ্রস্টতা। – সহীহ মুসলিম।
চিন্তা ২৬। তাই বিদয়াত থেকে মুক্ত থাকতে আমি চেস্টা করবো। আল্লাহর রাসুল(সা:) ও সাহাবীদের দাওয়াতী তরীকার বাইরে গিয়ে ৩ দিন/৪০ দিন কিংবা ৬ উসুলের মাধ্যমে দাওয়াত দিবো না।
আল্লাহ আমাকে ও আমাদের সবাইকে তার পছন্দনীয় পথে পরিচালিত করুন। আমীন।
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
“আল্লাহ বলেছেন একটি আয়াত হলেও তুমি তা মানুষের কাছে পৌছে দাও” এ কথার দুহাই দিয়ে যে…”
এই লাইনের বদলে পড়ুন:
“রাসুল (সা:) বলেছেন একটি আয়াত হলেও তুমি তা মানুষের কাছে পৌছে দাও” এ কথার দুহাই দিয়ে যে…”
@abdullah al Mamun, অনুগ্রহ করে মূল লেখাতে edit করুন। আপনার বিস্তারিত effort প্রশংসনীয়। লেখাটি একজন sincere তাব্লীগী ভাই-কে চিন্তা করতে বাধ্য করবে। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।
@your.brother, আমীন।
হোম পেজ কৈ
@monmohajon,
http://www.peaceinislam.com/abdullah-al-mamun/