তাবলীগ, সালাফি, ওয়াহাবী নজদি : কিছু বিক্ষিপ্ত ভাবনা।
লিখেছেন: ' আল মাহমুদ' @ শুক্রবার, জানুয়ারি ২৫, ২০১৩ (২:২২ পূর্বাহ্ণ)
বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহ, ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা রসুলিল্লাহ।
বহুদিন পরে এদিকে টু মেরে দেখলাম সেই পুরানো চর্বিত চর্বনেই কাটছে সময়। তো জাবর কাটার মতো আবারো কিছু নুতন করে লেখা।যদিও অনেক সাইমুম ঝড় অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে আমার নিজের অনেক সাজানো কুঠির। ওদিকে কত প্লাবন বয়ে গেল চারদিকে আর আমরা পড়ে আছি আমাদের ছেলেখেলায়। মুলত ব্লগের কটা পোস্ট পড়েই এই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এখানে সময় দেয়া প্রয়োজন যদিও তেমনটা দিতে পারছি না। যা হোক প্রথমেই আসা যাক তবলিগ জামাত নিয়ে : একজন ব্লগার যতসামান্যই চেষ্টা করেছেন তাবলীগ জামাতের কার্য্যক্রমকে কোরান সুন্নাহের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করতে। আবার কমেন্টে দেখলাম অনেকে সমালোচনা ও করেছেন। এসব দেখে এক মিশরি ভাইয়ের কথা মনে পড়ে গেল: ” জোরে জোরে আমীন বলা, আর শস্তায় নেট ফেট, সিডি ঘেটে, কিছু সহি- জাল বলতে আমারো ইচ্ছে করে কিছু রিয়াল কামাই করি… নিজের পকেটের টাকা পুড়ে এভাবে আর কতকাল ইসলাম প্রচার করি..!! ”
সালাফিদের এই তবলীগ জামাতের কার্যক্রম নিয়ে এত গাত্রদাহের অন্যতম কারন আরব বিশ্বের ধর্মপ্রান মুসলিমদের জাগরণ, যা সম্রাজ্যবাদিদের দোসর রাজবংশগুলোর জন্য চরম হুমকী। এই মিসরের কথাই বলি, যেখানে কদিন আগেও দাড়ি-হিজাব-নেকাব ছিল রাস্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু এমনো পরিবারকে চিনি যারা তাদের মেয়েদের পর্দা করার জন্য কলেজে পাঠায় নি, যারা সুন্নতি লেবাস সুরতের জন্য ডিফেন্সের চাকরী করেনি। কই তখন তো কোন ইসলামের কর্ণধাররা মিশরের এসব সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে নাক গলায় নি, যেদিন মুবারক বিরোধী আন্দোলন শুরু হল সেদিন সৌদির সালাফি গোষ্ঠীর নুতন ফতোয়া শোনা গেল। শোনা গেল দেশে ফেতনা ফাসাদ সৃষ্টিকারী এমন কোন নাশকতামুলক আন্দোলন হারাম!!! ধিক এসব রিয়াল আর দিনার দেরহামে কেনা আলেম গোষ্ঠীর।
সৌদি আরব সহ গালফের সকল ক্ষমতাসীন এবং আমাদের এ অঞ্চলের রাজনীতি জীবিরা সকলেই পাশ্চাত্যের গোলাম। ইংরেজ এই গোলামীর ভবিষ্যদ্বানী করে গেছে আরো দুশো বছর আগে। আর সামনেও কত সময় এই গোলামী চলবে তা বলা যায়না। এর জন্য দীর্ঘমেয়াদি সবর ও সর্বাত্মক জিহাদের প্রয়োজন রয়েছে যাতে রাষ্ট্রীয় নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা যায়। আফগান,সোয়াত ও মধ্য আফ্রিকা এবং সম্প্রতি আরব বিশ্বের মিসর- সুদানে এই নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারছে। এবং ইসলামী সঠিক মুল্যবোধের জাগরনে প্রতিটি মুসলিম দেশেই বড় আকারে সম্রাজ্যবাদ বিরোধী শক্তির জাগরন উদ্ভাসিত। তবে মধ্যপ্রাচ্যের এবং ভারতীয় উপমহাদেশের এই রাজনৈতিক নির্ভরশীলতার এর অর্থ এই নয় যে, আপনার এই রাজনৈতিক চরিত্রের কারনে বেসিক্যাল ঈমান আক্বীদা সব গেল।
” আব্দুল ওয়াহ্হাব নজদী” ইরাক থেকে সৌদি আ্শ্রয় নিয়েছিলেন, যেমনি ইবনে তাইমিয়া রহ: এমন অনেক ব্যাক্তিত্ব, নিজ দেশের ফিৎনার সময় হেজাযে আশ্রয় চেয়েছেন। বর্তমান সৌদি আরবের ঐতিহাসিক নাম হেজায, নজদ নয়। নজদ ইরাক অঞ্চল। নজদের ব্যাপারে যেমন উক্ত হাদীস পেশ করছেন, তেমনি আবার বিপরীতমুখী হাদিস ও পাবেন। ইমাম আবু হানিফা ইরাকের। পারস্য অঞ্চলের সালমান ফারসী রযি এর গোষ্ঠীর ব্যাপারে জ্ঞান দ্বীনের ইলমের কথা বহু হাদীসে আছে। সুতরাং এসব আঞ্চলিকতা ইসলাম সমর্থন করে না।
আল্লামা ইকবাল এর লেখায় এবং তার দেখায় আব্দুল ওয়াহ্হাব নজদী সাহেবের ব্যাপারে ভাল ধারনাই পাওয়া যায়, দি রোড টু মক্কার লেখক ইহুদী থেকে মুসলিম হওয়া মুহাম্মদ আসাদের বক্তব্য ও পড়তে পারেন, এরা সালাফি ঘরনা লেখক নয়, এবং এরা দুজনই নজদীকে দেখেছেন।
তবে এ কথা সত্য যে, কথিত সালাফি গোষ্ঠি ইবনে তাইমিয়া ও নজদীর নাম করে সৌদি আরবের বিশেষ পরজীবি সুবিধা ভোগ করে,, আর সৌদি রাজ পরিবার ও এ গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে “জিহাদ” কিত্বাল” বিরোধী বিতর্কিত স্বার্থ জড়িত ফতোয়া ও স্টীম চালিয়ে যায়। সম্রাজ্যবাদের বিরোধী কোন জিহাদী জাগরণকেই এরা সহ্য করতে পারেনা।
মালির মুসলিম মিলিশিয়াদের উপর ফ্রান্স ও আফ্রিকান আলিয়াসের অভিযানের দুদিন পরেই বিশ্বের পঞ্চম ধনীদেশ ফ্রান্সকে ৫০০ মিলিয়নের সহায়তা দিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দু্বাইর শেখ। এ অর্থ দিয়ে ফ্রান্স কী করবে? ওদিকে খাদ্যের অভাবে হাবশী মুসলিম আরব সোমালীয়রা মাটি পাথর খেয়ে জীবন ধারন করে।