আল কোরানের আলোক বর্তিকা (৭) কোরানের মুজেযা কি কেবল সাহিত্যগত দিক থেকে? না বিজ্ঞানগত দিক থেকেও। ?
লিখেছেন: ' আল মাহমুদ' @ বুধবার, ডিসেম্বর ৮, ২০১০ (৭:৩২ পূর্বাহ্ণ)
ওলামাদের একদল কোরানের মুজেযাকে কেবল তার সাহিত্য- ও সাবলীলতার জন্যই মনে করেন, অপরদল এ কোরানের পূর্ববর্তি ইতিহাসের অনুপম বর্ণনা ও পরবর্তি সময়ের বাস্তবিক বর্ননাকেও মুজেযা মনে করেন। অপর আরেকটি দল এই কোরানের হুকুম আহকাম ও তাশরীয়াত ও জীবন নির্দেশিকাকেও মুজেযা মনে করেন। আবার কেহ কেহ এই কোরানের অনুপম বিন্যাশ, সূরা ও আয়াতের আশ্চর্য্যজনক যোগফলকেও মুজেযা মনে করেন । আবার অনেকে কোরানে বর্নিত অনেক জ্ঞানের বিস্তৃতিকেও মুজেযা মনে করেন। এভাবে চল্লিশটির মতো বিষয় বিভিন্ন আলেমগন অনুধাবন করেছেন যা অন্য কোন কিতাবে নেই এবং এত ব্যাপক জ্ঞানের বিস্তৃতি কেবল আলকোরানেই রয়েছে।
وقال الشيخ / سعد الحصين حفظه الله :
ولعل أول من وقع في شبهة الإعجاز العلمي في القرآن هو : الغزالي (ت 505 ه ) في ( إحيائه )
إذ أدعى أن القرآن يحوي سبعة وسبعين ألف علم ، بعدد كلماته مضاعفة أربع مرات بإدعائه أن لكل
كلمة ظاهرا وباطنا وحدا ومطلعا ، وفي كتابه ( جواهر القرآن ) يخصص الفصل الخامس لبيان اشتمال
القرآن على جميع العلوم والفنون الدنيوية .
وكما فتح الغزالي الباب للخلط بين التصوف والإسلام ؛ فتحه للخلط بين الفكر والفقه في نصوص
الوحي ، فجاء من بعده الرازي (ت606) فزاد الطين بله ثم استفحل الأمر فجاء ابن أبي الفضل
المرسي (655) فاستخرج الهندسة من قوله تعالى (انطلقوا إلى ظل ذي ثلاث شعب ) والجبر والمقابلة
من الحروف في أوائل السور مثلا .
“শেখ সাদ আল হাসান বলেন: এভাবে ইমাম গাজালী (৫০৫ হি.) রহ: তার ইয়াহয়াউ উলুমুদ্দীনের চার জায়গা আল কোরানের ব্যাপক বিজ্ঞানের দাবী করে বলেছেন ” আল কোরানের সর্বমোট ৭৭হাজার জ্ঞানের সংকলন করেছে।
অতপর ইমাম রাজী রহ: (৬০৬হি:) এসে কোরানকে আরো ব্যাপক জ্ঞানের সংকলন বলে দাবী করলেন ” পৃথীবির সকল জ্ঞানের শাস্ত্র ই আলকোরানে রয়েছে” অতপর ৬৫৫হি. তে ইবনু আবিল ফজল এসে কোরানের (انطلقوا إلى ظل ذي ثلاث شعب ) আয়াতর আলোকে ইন্জিনিয়ারিং, সূরা ও আয়াতে বিন্যাস থেকে আলজেব্রা ইত্যাদি শাস্ত্র আবিষ্কার কলেন। ” সূত্র : (http://mg-vip.com/vb/showthread.php?t=15852)
মোটকথা ওলামাগন যে সকল প্রমান উপাত্তের কারনে কোরানকে মুজেযা হিসেবে দাবী করেছেন তা অত্যান্ত ব্যাপক ও অন্য কোন কিতাবে এত অধিক উপাত্তের সমারোহ ঘটেনি , যার আলোকে এটা প্রমানিত হয় যে কোরান মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ, কোন মানুষের পক্ষে এত ব্যাপক সাহিত্য ও বিজ্ঞানময় কিতাব রচনা করা সম্ভব নয়। কোরান যে যূগে নাজিল হয়েছিল সে যুগ ছিল অন্ধকার ও অসভ্য। বর্তমান কালের এত উচ্চতর বিজ্ঞানের যূগ সে সময়ে ছিল না, কিন্তু বিজ্ঞানের অবিরত গবেষণাও এখন প্রমান করে যে সে যূগের অশিক্ষিত বিজ্ঞান বিমুখ সমাজের জন্য কোরানের অনেক তথ্য তদন্ত করার সুযোগ ছিলনা কিন্তু দীর্ঘ কয়েকশত ও সহস্র বছর পরের অনেক গবেষনা এখন যা বলে সে বিষয়গুলো কোরান বলেছেন সেই অন্ধকার যূগে যা তখন অনেক মানুষের জন্য হাস্যকরই ছিল ।
উদহারণ স্বরুপ কয়েকজন আধুনা পশ্চীমা বিজ্ঞানীদের কথা তুলে ধরবো যারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখেছেন এবং তারা কেউই মুসলিম নয় তবুও কোরনের বিজ্ঞানকে তারা স্বীকার করেছেন:
The Qur’an came several centuries ago, confirming what we discovered. This indicates that the Qur’an is the word of God (Prof. Joly Sumson, Professor in Gynecology and Obstetrics)
প্রফেসর জোলি স্যামসন গাইনো বা প্রসূতি এবং মাতৃবিদ্যা বিশেষজ্ঞ বলছেন :
“কোরান কয়েক শতক আগে এসেও এমনসব তথ্য বলে দিয়েছে যা আজ আমরা আজ অনেক কষ্টকরে আবিষ্কার করেছি। এটাএ প্রমান বহণ করে যে তা আল্লাহর কালাম।” সূত্র: ( http://miraclesofthequran.com/perfection_02.html)
I believe that everything mentioned in the Qur’an 1400 years ago is true and can be proven by scientific methods… This must be by inspiration from God, or Allah, Who knows all science. Thus, I believe that this is the time to say: “There is no god but Allah and Muhammad is the Messenger of Allah.”282 (Prof. Tejatat Tejasen, Head of the Department of Anatomy and Embryology, University of Chiang Mai, Chiang Mai, Thailand)
Certainly, I would like to leave it at that, that what we have seen is remarkable, it may or may not admit of scientific explanation, there may well have to be something beyond what we understand as ordinary human experience to account for the writings that we have seen.280 (Professor Armstrong, Professor of Astronomy serving with NASA)
এ ভাবেই আধুনা বিজ্ঞানের সঠিক সিদ্ধান্তগুলো যূগযূগ ধরে কোরানের সত্যাতার পক্ষে স্বাক্ষী বহন করবে। আর মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন:
سَنُرِيهِمْ آيَاتِنَا فِي الْآفَاقِ وَفِي أَنفُسِهِمْ حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُ الْحَقُّ أَوَلَمْ يَكْفِ بِرَبِّكَ أَنَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ شَهِيدٌ 53
এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ কোরআন সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়? সূরা মুমিন ৫৩।
একদল মুফাস্সীরিন এ আয়াতের আলোকে বর্তমান নুতন নুতন আবিষ্কৃত গ্ল্যক্সী ও মহাকাশ গবেষণা ও মানুষের প্রানীবিদ্যায় মহান আল্লাহর কালাম ও তার সত্যতা প্রমানের কথা বলেন । এবং বাস্তবিকই পৃথীবির অনেক নভোচারী ও প্রানীগবেষকরা তাদর গবেষণায় মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও তার নাজিলকৃত কিতাবের সত্যতা স্বীকার করেন যার কিঞ্চিত উদহারণ উপরে দিয়েছি। এ ধরণের গবেষণা নিয়ে http://miraclesofthequran.com এই ওয়েবে অনেক প্রমানপত্র পাওয়া যাবে।
পরিশেষে বলতে হয় যে, মানবজাতির অস্তিত্ব যতদিন পৃথীবির বুকে বাকি থাকবে ততদিন এই কোরানের তার মুজেযা ও অবিসংবাদিত চ্যালেঞ্জ নিয়েই অবশিষ্ট
থাকবে । বলা বাহুল্য আলকোরান যেমন আল্লাহর কালামা তেমনি অন্যান আসমানী কিতাব যেমন তাউরীত -জাবুর ইন্জিল ইত্যাদিও আল্লাহর কিতবা কিন্তু ঐসকল কিতবের দুটি সংষ্করণ এক জায়গায় করলে দেখা যাবে যে, তার পূর্ববর্তি ভার্স থেকে পরবর্তি ভার্সে শাব্দিক অমিল যেমন রয়েছে তেমনি অমিল রয়েছে তার দাবী ও অর্থে । পূর্বকার কোন কিতাবেরই প্রয়োজনীয়তা যেমন অবশিষ্ট থাকেনি তেমনি তার নাজিলকৃত কপিও অবশিষ্ট থাকেনি যেমনটি রয়েছে আল-কোরানের। মহান আল্লাহ এ কিতবাকে “মাহফুজ” আখ্যাদিয়ে এর কপিরাটিং এর জিম্মাদারী এভাবেই নিয়েছেন :
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সূরা হিজর, ৯ নং আয়াত ।
অতএব কেয়ামত পর্যন্ত মানুষ এ কিতাবের আশ্চার্য্যজনক বিষয়গুলো অনুধাবন করতে থাকবে, ওলামাগন অবিরত এর আলোকে যূগউপযোগী ব্যাখা বিশ্লেষণ করেই যাবেন, বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষনার সঠিক সমাধানে পৌছতে পারলে কোরানের যথার্ততা স্বীকার করে নিবেন। বিদ্রাপকারীরা এর বিকল্প কিতাব প্রনয়নের শত চেষ্টার পরে এ যাবতকাল পর্যন্ত যেমন ব্যার্থ হয়েছে তেমন অনাদিকাল পর্যন্ত ব্যার্থই রয়ে যাবে যদিও তারা পূর্ব পরের সকল বিদ্রুপ ও ব্যাঙ্গকারীদের সমবেত করেও কোরানের বিকল্প কোন কিতাব বা তার সমক্ষ একটি আয়াতও রচনার চেষ্টা করে।
মহান আল্লাহ তালা আমাদে এই কোরানের প্রতি অটল রাখুন। এবং এর উসীলায়া আমাদের দ্বীন-দুনিয়া, ইহকাল ও পরকালের সকল মংঙ্গল নসীব করুন। আমীন।
সুন্দর লিখেছেন । ধন্যবাদ ।
শুকরিয়া, শিক্ষানিয় বিষয়ে লেখার জন্য ।