ফাজায়েলে আমাল : স্টাডি-২
লিখেছেন: ' ABU TASNEEM' @ বৃহস্পতিবার, মার্চ ৮, ২০১২ (৬:২২ পূর্বাহ্ণ)
আমাদের সমাজে ইসলামের নামে অনেক বিভ্রান্তিমূলক কথা প্রচলিত আছে । এমনকি নবীদের নামেও এমন কথা প্রচলিত আছে যা তাদের মর্যাদার বিপরীত । আজকে এমনই একটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো । আমাদের সমাজে প্রচলিত কথাটি নিম্নরুপঃ
“আদম (আঃ) যখন গুণাহ করে ফেললেন , তখন তাকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেয়া হল । তিনি তিনশ’ বছর কাঁদতে থাকলেন । তবুও ক্ষমা পেলেন না । শেষে একদিন তিনি বললেন : হে আমার প্রভু ! তোমার নিকট মুহাম্মাদকে সত্য জেনে প্রার্থনা করছি । আমাকে ক্ষমা করে দাও । আল্লাহ বললেন হে আদম ! তুমি কিভাবে মুহাম্মাদকে চিনলে , অথচ আমি তাকে সৃষ্টি করিনি ? আদম (আঃ) বললেন : হে আমার প্রভু ! আপনি আমাকে যখন আপনার হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছিলেন এবং আমার মধ্যে আত্মার প্রবেশ ঘটান , তখন আমি আমার মাথা উঁচু করেছিলাম । অতঃপর আমি আরশের গায়ে লিখা দেখেছিলাম লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ । আমি জেনেছি যে , আপনার কাছে সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি ব্যতীত অন্য কাউকে আপনি আপনার নামের সাথে সম্পৃক্ত করবেন না । তখন আল্লাহ বললেন : সত্যই বলেছ হে আদম ! নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ আমার সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি । তার ওসিলায় তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম । ”
ঘটনাটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত , কারণ অনেক বই-পুস্তকে এটি দেখতে পাওয়া যায় । তার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ বইয়ের নাম হচ্ছে ফাযায়েলে আমাল (পৃষ্ঠা নং ১৩০ , ফাযায়েলে জিকির অধ্যায়) , যা প্রায় সবগুলো মসজিদেই তালিমী বৈঠকে পড়া হয়ে থাকে । আসুন আমরা এখন কুরআনের আলোকে ঘটনাটি যাচাই করে দেখিঃ
হযরত আদম (আঃ) কে বলা হয়েছিল “হে আদম ! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং সেখানে খাও যেভাবে যেখান থেকে চাও তৃপ্তি সহকারে । কিন্তু এ গাছের নিকটেও যেও না” সূরা বাকারাঃআয়াত-৩৫ ।
কিন্তু শয়তানের প্ররোচণায় আদম (আঃ) আল্লাহ পাকের এ নিষেধ মানতে পারলেন না । আদম (আঃ) যখন আল্লাহর নিষেধ অমান্য করলেন তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তার কাছে কৈফিয়ত তলব করলেন যেমন করেছিলেন ইবলিশ শয়তানের কাছে । কিন্তু ইবলিশ তখন আল্লাহ পাকের নিকট বিভিন্ন কুযুক্তি পেশ করেছিল । আর তাই সে হয়েছিল অভিশপ্ত শয়তান ।
কিন্তু আদম (আঃ) এর কাছে যখন আল্লাহ পাক কৈফিয়ত তলব করলেন “আমি কি তোমাদের উভয়কে এ গাছ সম্পর্কে নিষেধ করিনি এবং তোমাদেরকে বলিনি যে , নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু ।” সূরা আরাফ : আয়াত-২২
তখন আদম (আঃ) শয়তানের মত কোন কুযুক্তি পেশ করেননি । তিনি আল্লাহ পাকের কাছে খুব লজ্জিত হলেন এবং আল্লাহ পাকের কাছে কিভাবে ক্ষমা চাইবেন তাই মনে মনে খুঁজছিলেন । মহান আল্লাহ পাক তার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে তিনি নিজেই আদম (আঃ) কে ক্ষমা চাওয়ার বাক্য শিখিয়ে দিলেন । যেমন বলা হয়েছে সূরা বাকারা ৩৭ নং আয়াতে
“অতঃপর আদম তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে কিছু বাণী শিখে নিল । তারপর তিনি ক্ষমাপরবশ হলেন তার প্রতি , নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল , অসীম দয়ালু ।”
তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে আদম (আঃ) এর ক্ষমা চাওয়ার বাক্য আল্লাহ পাক নিজে শিখিয়ে দিয়েছিলেন । কি ছিল সেই বাক্য ? সেটা কি উপরের হাদীসে বর্ণিত ঘটনার অনুরুপ ? না তা হতে পারে না , কারণ উপরের হাদীসে আল্লাহ আদম (আঃ) কে প্রশ্ন করছেন তার ক্ষমা চাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে । মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উসিলায় ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চয় তাহলে আল্লাহ পাকের শিখানো নয় । তাহলে কি ছিল আল্লাহ পাকের শিখানো সেই বাক্য যার মাধ্যমে আদম (আঃ) ক্ষমা করা হয়েছিল । আসুন তা জেনে নিইঃ
সেই বাক্যটি ছিল “রব্বানা যলামনা আংফুসিনা , ওয়া ইল্লাম তাগফির লানা , ওয়া তার হামনা , লানা কূ-নান্না মিনাল খসিরিন – হে আমাদের প্রতিপালক ! আমরা আমাদের নিজেদের উপর যুলুম করেছি ; অতএব আপনি যদি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল হয়ে যাব” সূরা আরাফ : আয়াত-২৩
আসলে উপরে বর্ণিত হাদীসটি জাল । আল্লামা নাসির উদ্দীন আলবানী তার যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনার পর বলেন , সম্ভবতঃ এটি ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে এসেছে ।
কোন ব্যক্তির মর্যাদার ওসিলা দিয়ে দোয়া করা ইসলামী শরীয়াতে জায়েজ নয় । হোক সে কোন নবী , সাহাবী , বা ওলী । ইসলামে তিনটি ওসিলায় দোয়া করা জায়েজ ।
১. আল্লাহ তায়ালার নামের ওসিলা ।
২. সৎ কাজের ওসিলা ।
৩. কোন নেক ব্যক্তির দ্বারা দোয়া করিয়ে সেই দোয়ার ওসিলা ।
বিস্তারিত অন্য একদিন । ইনশাআল্লাহ ।
কারো যদি তাবলীগ জামাত সম্পর্কে কিছু বলার থাকে তবে এই পোষ্টগুলোতে বলুন………..
http://www.somewhereinblog.net/blog/ogropothik/29521027
http://www.somewhereinblog.net/blog/ogropothik/29521382
http://www.somewhereinblog.net/blog/ogropothik/29522415
সময়ের অভাবে লিখতে পারছি না। আপনার এই পোষ্টের ব্যাপারে আরো কথা আছে।
তবে আপনার আগের পোষ্টে যে তাবলীগ জামাতের ব্যাপারে যে সকল মনিষির উক্তি দিয়েছিলাম তাদের ব্যাপারে কিছু বললেন না যে…………….
তারাও কি বিদাত ও শিরককে (আপনাদের ভাষায়) সাপোর্ট করেছেন ???
যতদিন মানুষ আকাবিরদের থেকে ইলম শিখবে ততদিন তারা সত্পথে পরিচালিত হবে আর যখন মানুষ আসাগির থেকে ইলম শিখবে তখন তারা গোমরা হয়ে যাবে ।
হাদিসটি হাফেজ ইবন আব্দুল বার ঈবন মাসউদ ও উমর রা থেকে বর্ণনা করেছেন দেখুন মুখ্তাসারু জামিউ বয়ানুল ইলম পৃ ৮৩ ।
৩. কোন নেক ব্যক্তির দ্বারা দোয়া করিয়ে সেই দোয়ার ওসিলা।
ভন্ডামী আর কাকে বলে।
ভন্ডামীর শেষ আছে, তাই এই আহলে হাদিসদেরও ভন্ডামী শেষ হওয়ার সময় এসেছে। এই লোকটি(ABU TASNIM) আহলে হাদিসের লোক। কোন নেক ব্যক্তির দ্বারা দোয়া করিয়ে সেই দোয়ার ওসিলা করে দোয়া করা যায় আর প্রিয় নবীর ওসিলা দিয়ে দোয়া করা যায় না(?)! আহলে হাদিসের ভন্ডামী আর কারে কয়। সে আলবানী এর কথা লিখেছে। অথচ আলবানীর ভন্ডামী নিয়ে তার জন্মস্থানের আলেমরাই ৫০টির বেশি পুস্তক লিখেছে। এসব আহলে হাদীস হতে সাবধান! বর্তমানে মুসলমানদের জঘন্য দুশমন এই সব আহলে হাদীস। আপনাদের পরিচিত সবাইকে এই সব ভণ্ড থেকে সাবধান করবেন। অনেক কথা লেখার ছিল, সময় কম। এই সাইট হতে আহলে হাদিসদের(ABU TASNIM ) সকল পোষ্ট ডিলেট করা উচিত।