আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন
লিখেছেন: ' ABU TASNEEM' @ শুক্রবার, এপ্রিল ২৭, ২০১২ (৮:১১ পূর্বাহ্ণ)
অবতরনিকা
‘অতিরঞ্জন’ অর্থ , দ্বীনে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) যে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা অতিক্রম বা লঙ্ঘণ করা । বিশ্বাসে বা আ’মালে অতিরঞ্জন , ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে । আল্লাহ বলেন , “পক্ষান্তরে , যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) এর অবাধ্য হবে এবং তাদের নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘণ করবে , তিনি তাকে আগুনে নিক্ষেপ করবেন । সেখানে সে চিরকাল থাকবে , আর তার জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি” । – সুরা আলে ইমরান : ৩১
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন , “আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন , ধ্বংস তাদের , যারা চরমপন্থা অবলম্বনকারী (দ্বীনে)” । তিনি একথাটি তিনবার বলেছেন । (সহীহ মুসলিম )
সৎকর্মশীল লোকদের সম্মান ও মর্যাদার অতিরঞ্জনই অতীত জাতিগুলির পথভ্রষ্টতার মূল কারণ ছিল । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন , ‘বাড়াবাড়ি থেকে সাবধান হও । তোমাদের পূর্বসূরীগণ ধ্বংস হয়েছিল তাদের বাড়াবাড়ির জন্য’ । (মুসনাদে আহমাদ)
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন (বাড়াবাড়ি) নিষিদ্ধ
আল্লাহর রাসূল সাঃ এর প্রসংশায় বাড়াবাড়ির মধ্যে রয়েছে – তাঁর মর্যাদা আল্লাহ যা দিয়েছেন , তার চেয়ে আরো বাড়িয়ে বলা । আল্লাহর গুণাবলী তাঁর উপর আরোপ করা , তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া , তাঁর নিকট প্রার্থনা করা , তাঁর নামে শপথ করা , ইত্যাদি । আল্লাহর রাসূল সাঃ সতর্ক করেছেন , “খৃষ্টানরা মরিয়ম পুত্রকে যেভাবে প্রশংসা করেছিল , আমাকে সেভাবে প্রসংশা করো না , নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর দাস । কাজেই বলো , আল্লাহর দাস এবং তাঁর রাসূল (সাঃ)” । সহীহ আল বুখারী , ৬ষ্ঠ খন্ড , হাদীস নং ৪৭৮ । এই হাদীস খৃষ্টানদের মত বাড়াবাড়িকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে , (যেমন ঈসা (আঃ) এর প্রসংশায় বাড়াবাড়ি করা হয়েছিল) , মহান আল্লাহ মুহাম্মাদ (সাঃ) কে যে তাঁর পয়গাম্বর ও রাসূল এবং ভালোবাসার পাত্র মনোনীত করেছেন , এতেই সন্তুষ্ট থাকতে বলা হয়েছে ।
আল্লাহ মিরাজ রজনীতে তাঁর রাসূল (সাঃ) কে সর্বোচ্চ আসমানে আরোহণ করিয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন গুলো অবলোকন করিয়েছেন । আল্লাহ তাঁর রাসূল (সাঃ) কে দাস (ইবাদাত কারী) সম্বোধন করে বলেছিলেন . “পবিত্র ও মহামহিম তিনি , যিনি তাঁর দাসকে তাঁর নিদর্শন দেখাবার জন্য রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন , মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় যার পরিবেশ করেছিলেন আশীষপূত ; নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা , সর্বদ্রষ্টা” । সুরাহ আল ইসরা : ১ ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেভাবে বলেছেন , অর্থাৎ , তিনি (রাসূল (সাঃ) আল্লাহর দাস ও রাসূল ; এবং এটাই তাঁর (রাসূল (সাঃ) এর) প্রসংশা করার সর্বোত্তম পন্থা । আল্লাহর বলাটাই সর্বাঙ্গীন সঠিক এবং এতে সীমা অতিক্রম করার কোন উপাদানের উপস্থিতি নেই , বা তাঁর (রাসূল (সাঃ) এর) ন্যায্য অধিকার এবং মর্যাদার কোন অবহেলা করা হয়নি ।
যখন কিছু লোক আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে বললো , “হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) ! আপনি সর্বোত্তম এবং আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তান এবং আমাদের প্রভু এবং আমাদের প্রভুর সন্তান” । তাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বললেন , “হে লোকসকল ! তোমাদের বক্তব্য সোজাসোজি বল , অবৈধ কথা বলে শয়তানকে প্রলোভিত করো না । আমি শুধুমাত্র আল্লাহর দাস এবং রাসূল । মহান আল্লাহ যেভাবে আমার প্রসংশা করেছেন তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদায় উত্তোলন আমি পছন্দ করি না” । মুসনাদে আহমাদ , সুনানে নাসাঈ ।
অন্য এক সময় , যখন ছোট মেয়েরা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) গায়িব জানেন বলে গাইছিল , তখন রাসূল (সাঃ) তাদেরকে এরকম বলতে বাধা দিয়েছিলেন । রাবিয়াহ বিনতে মুয়াজ (রাঃ) বলেন , “আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আমার বিয়ের দিন সকাল বেলা আসলেন । আমার সাথে দুই দাসী বালিকা ছিল । তারা বদরের যুদ্ধে আমার যে আত্মীয়রা শহীদ হয়েছিলেন , তাদেরকে নিয়ে বিলাপ করে গান গাইছিল । তার মাঝে তারা বলছিল , “আমাদের মাঝে এক নবী (সাঃ) আছেন , যিনি জানেন , কাল কি হবে” । তখন নবী (সাঃ) বলেছিলেন , “তোমরা কি বলছো ? তোমরা এটা বলো না ! সর্বশক্তিমান ও মহামহিম আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না কাল কি হবে” । সুনানু ইবনে মাজাহ । সহীহ বুখারীর বর্ণনায় আছে , তিনি (সাঃ) বলেছিলেন , “এটা বন্ধ কর , আগে যা বলছিলে তাই বলো” । সহীহ আল বুখারী , ৯ম খন্ড , হাদীস নং ২০২ ।
ফাজায়েলে আমাল ও আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন
ফাজায়েলে আমালে অতি প্রসংশার অনেক দৃষ্টান্ত আছে । আল্লাহর রাসূল সাঃ এর নিকট অনুনয় করে চাওয়ার অসংখ্য দৃষ্টান্ত ফাজায়েলে আমালে আছে , যা আমরা অন্য একদিন আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ। ফাজায়েলে হাজ্জে আরো একটা অতিরঞ্জিত বর্ণনা আমরা পেয়েছি , যেখানে মাওলানা যাকারিয়া কলেছেন , “তাঁর (রাসূল (সাঃ) এর) ক্ববর পৃথিবীর যে কোন স্থান হতে শ্রেষ্ঠ এবং যে জায়গা নবী (সাঃ) এর দেহ মোবারকের সাথে মিলিত আছে , তা আল্লাহ পাকের আরশ থেকেও শ্রেষ্ঠ , কাবা থেকেও শ্রেষ্ঠ , কুরসী থেকেও শ্রেষ্ঠ ,এমনকি আসমান-জমীনের মধ্যে অবস্থিত যে কোন স্থান হতে শ্রেষ্ঠ” । ফাজায়েলে হাজ্জ , ৯ম পরিচ্ছেদ পৃঃ ১৪৩।
“এবং রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ সালাত পড়বে – এ তোমার জন্য অতিরিক্ত (নফল) কর্তব্য । আশা করা যায় , তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রসংশিত স্থানে (মাকামে মাহমুদে) অধিষ্ঠিত করবেন” । – সুরা ইসরা : ৭৯ । মাওলানা যাকারিয়া এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ফাজায়েলে দরুদে বলেছেন , “আল্লাহ পাক কতৃক তাঁকে (নবী (সাঃ) কে) রোজ কিয়ামাতে আরশের উপর অথবা কুরসীর উপর বসানো হবে , এবং সম্ভাবনা আছে আরশের কুরসীতে বসিয়ে শাফায়াতের অনুমতি দেবেন এবং হামদের পতাকা নবী (সাঃ) এর হাতে দেবেন” । – ফাজায়েলে দরুদ , ২য় পরিচ্ছেদ , পৃঃ ৫৬ ।
মাকামে মাহমুদ (গৌরবান্বিত ও প্রসংশিত স্থান) , যা আল্লাহ সুরাহ ইসরার ৭৯ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন , তার ব্যাখ্যায় উমার (রাঃ) বলেছেন , “হাশরের দিনে সমস্ত লোক নতজানু হয়ে যাবে , প্রত্যেক উম্মাহ তাদের নবী (আঃ) কে বলবে , “হে অমুক ! আমাদের জন্য শাফায়াত করুন , হে অমুক ! আমাদের জন্য শাফায়াত করুন । শাফায়াতের অনুমতি নবী (সাঃ) কে দেয়া হবে এবং তাঁকে গৌরবান্বিত ও প্রসংশিত স্থানে অধিষ্ঠিত করা হবে” । – সহীহ আল বুখারী , ৬ষ্ঠ খন্ড , হাদীস নং ২৪২ ।
একটা বিবরণী পাওয়া গিয়েছিল যে , বাগদাদের এক গল্পকার সুরাহ ইসরার ৭৯ নং আয়াতটির ব্যাখ্যা প্রচার করে বেড়াচ্ছিলেন যে , আল্লাহ নবী (সাঃ) কে তাঁর (আল্লাহর) কুরসীর পাশেই বসাবেন । এই ব্যাখ্যা মুহাম্মাদ ইবনে জারীর আত-তাবরীর (প্রখ্যাত মুফাচ্ছিরে কুরআন , মৃত্যু-৩১০ হিঃ , ৯২২খৃঃ) নিকট পৌঁছেছিল । তিনি এ ব্যাখ্যা প্রচন্ডভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন , এবং তার দরজায় লিখে দিয়েছিলেন , “আল্লাহ , মহামহিমামন্ডিত , তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই , তাঁর কুরসীর পাশে বসার যোগ্যতাও কেউ রাখে না” । এতে বাগদাদের লোকেরা এত উন্মত্ত হয়ে গিয়েছিল যে , তারা পাথর ছুঁড়ে তার (আত-তাবারীর) দরজাটা সম্পূর্ণ ঢেকে দিয়েছিল । – তাহযীর আল খাওয়াছ মিন আহাদীস আল ক্বাসাস ।
মাওলানা জামীর ক্বাসীদাহ
মাওলানা যাকারিয়া ফাজায়েলে দরুদ বইতে বর্ণনা করেন , হযরত মাওলানা জামী এর ক্বাসীদাহ ফার্সি ভাষায় । ক্বাসীদাহ সম্পর্কে তিনি একটি কাহিনী বর্ণনা করেছেন । ‘যখন মাওলানা জামী হজ্জে যান , তিনি আশা করেছিলেন , তার ক্বাসীদাহ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর রওজা শরীফে গিয়ে আবৃত্তি করবেন । কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) স্বপ্নে মক্কার শাসককে বললেন , তাকে (জামীকে) মদীনা যেতে দিওনা । মক্কার শাসক মাওলানা জামীকে মদীনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে নিষেধ করে দিলেন । কিন্তু মাওলানা জামী গোপনে মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আবার স্বপ্নে মক্কার শাসনকর্তাকে বললেন , সে মদীনার দিকে যাত্রা করেছে , তাকে মদীনা যেতে দিও না । এরপর মাওলানা জামীকে ফিরিয়ে আনা হলো এবং কারাগারে আবদ্ধ করা হলো । পূনরায় আল্লাহর রাসূল (সাঃ) স্বপ্নে মক্কার শাসনকর্তাকে বললেন , সে তো অপরাধী নয় , সে আমার উদ্দেশ্যে কিছু ছন্দ রচনা করেছে এবং তা আমার ক্ববর শরীফে আবৃত্তি করতে চাচ্ছে । সে যদি ঐগুলি সেখানে আবৃত্তি করে তবে মোসাফাহা করার জন্য আমার হাত বের করতে হবে , তাতে লোকের মনে ভুল বোঝা-বুঝির সৃষ্টি হবে’ । – ফাজায়েলে দরুদ , নবী (সাঃ) এর নামে আরবী ক্বাসীদাহ ।
মাওলানা যাকারিয়া বলেন , ‘হযরত মাওলানা জামীর ক্বাসীদাহ ফার্সি ভাষায় । আমাদের মাদ্রাসার নাজিম মাওলানা আসাদুল্লাহর ফার্সির প্রতি বিশেষ অনুরাগ আছে , বিশেষ করে ফার্সি কবিতায় । তিনি মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর প্রথম শ্রেনীর খলিফাদের একজন ।’ মাওলানা জামীর মসনবী মাওলানা আসাদুল্লাহ ভাষান্তরিত করেছেন , তার কিছু অংশ নিন্মে উল্লেখ করা হলঃ
হে মনোমুগ্ধকর পুষ্প ! তোমার সুগন্ধ দানে উল্লসিত কর মোদের
সুখ স্বপ্ন থেকে জেগে উঠ তুমি , আলোকিত কর হৃদয় মোদের
হে আল্লাহর প্রত্যাদিষ্ট মানব ! সবুজ গম্বুজ ছেড়ে এস বাহিরে বেড়িয়ে
তব পদযুগল দিয়ে হেঁটে বেড়াও মোদের শিরোপরি দিয়ে ।
হে প্রত্যাদিষ্ট মানব ! সহায় হও মোদের , মোরা তব প্রতি বিনয়াবনত
মোরা অসহায় প্রেমিক তোমার , অন্তর মোদের ভরে দাও তব শান্তনা বাণীতে
কত ভাগ্যবান মোরা , এসেছি তব যিয়ারতে , চোখের সুরমা করেছি
এই মদীনার ধুলিকণা । কত ভাগ্যবান মোরা , তাওয়াফ করেছি
ক্ববর আর সবুজ গম্বুজ তোমার ; পাগলের ন্যায় কেঁদেছি মর্ম বেদনায় ।
যদিও ধুলিকণা চোখের ক্ষতিকারী , (পবিত্রতার জন্য) তা দিয়ে চোখের
মলম বানাবার ইচ্ছা করি । অপরিমিত ক্ষুধায় ক্লান্ত আমি
হে রাসূল খোদার ! সহায় হোন , ক্ষমাশীল হোন এ বিনীত দাসের পরে
ক্ষতিগ্রস্ত হবো মোরা , যদি না করেন দয়া এই অসহায় অভাগাদেরে ।
দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ ক্বাসিম নানোতভী থেকে আরো কিছু পদ্যাংশ
যদি তুমি (আল্লাহ) না সৃজিতে তাঁরে (রাসূল (সাঃ) কে ) না সৃজিতে এ বিশ্বলোক
হে বিশ্বভূবনের নেতা (রাসূল (সাঃ) ! নিবেদন করিব তব সকাশে
যদি সহায় হয় জিব্রাঈল ।
সারা জাহান অস্তিত্বে আছে শুধু তোমারই তরে ।
হে রাসূল আল্লাহর ! যদি কেউ বলে বিশ্বলোকের কেন্দ্র তুমি , তবে সে ঠিক;
কিছু নেই থেকে এসেছে বিশ্বজাহান , সে তো তোমারই তরে ,
হে রাসূল আল্লাহর ! তুমি হয়েছো আলোসম দ্রুত ।
নবী মুসার আশা ছিল আল্লাহকে দেখার , আল্লাহর ইচ্ছা তোমায় দেখার ।
(নিজেকে সম্বোধন করে মাওলানা ক্বাসিম বলেন-)
ক্বাসিম পাপী , পঙ্কিল আর কলঙ্কিত , তোমার ভক্ত হবার আশায় সে গর্বিত ;
সে বসে আছে তোমারই আশায় ,
তুমি পাপীদের শাফায়াতকারী , একথা শুনে আমি , সংগ্রহ করেছি অগণিত
পাপ (যাতে এগুলো পুণ্য হিসেবে গণ্য হয়)
সর্ব শক্তিমান আল্লাহ , তোমার প্রার্থনার এতই মূল্য দেন যে , স্থিরীকৃত নিয়তীও বদলে দেন তোমার প্রার্থনায় ।
অগণিত পাপের জন্য কুকুরও আমার নাম শুনে অবজ্ঞা করে ।
কিন্তু আমি তোমার নামে ও তোমার সাথে আমার সম্পর্কের জন্য গর্ব বোধ করি ;
তুমি যদি আমাদের প্রতি যত্নশীল না হও , আর কেউ এমন নেই যে আমাদের প্রতি যত্নশীর ও দয়াদ্র হবে ।
আমার আশার তরী ঘিরে ফেলেছে , ভীতির তরঙ্গে আর সাহসিকতায় ;
মনের আশা , মদীনার (রাস্তায়) কুকুরের তালিকায় আমার নাম লিখা হবে ।
আমি আশান্বিত যে , তোমার হারামের কুকুরদের সাথে আমি বেঁচে থাকবো ,
এবং যখন মারা যাবো , মদীনার শকুনেরা যেন আমার দেহ ভক্ষণ করে । – ফাজায়েলে দরুদ , নবী (সাঃ) এর নামে আরবী কাসীদাহ ।
এই ক্বাসীদায় আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর মিথ্যা প্রসংশা করা হয়েছে । যা বলা হয়েছে , তা আল্লাহও বলতে বলেননি , বা তিনি (রাসূল (সাঃ) ও নিজেকে ঐভাবে বর্ণনা করেননি । এতে এমন সব গুণাবলীর উল্লেখ করা হয়েছে , যা শুধু একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার জন্যই প্রযোজ্য , কোন সৃষ্টির জন্য ব্যবহার যোগ্য নয় । যেমন , “সর্বশক্তিমান আল্লাহ , তোমার প্রার্থনার এতই মূল্য দেন যে , স্থিরীকৃত নিয়তিও বদলে দেন তোমার প্রার্থনায়” ।
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন , তাই করেন” । সুরা হাজ্জ/১৪ । যখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) একটা কাজ করতে চেয়েছিলেন , তখন তাঁকে “ইনশা-আল্লাহ” (আল্লাহ যদি চাহেন) , বলতে আদেশ করা হয়েছিল ; আল্লাহ বলেন , “আল্লাহ ইচ্ছা করলে , একথা না বলে কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলো না , ‘আমি এটি আগামীকাল করবো’ । – সুরা আল কাহফ/২৩-২৪ ।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে কেউ যদি বলতো , “যদি আল্লাহ এবং আপনি ইচ্ছা করেন” । তিনি তাকে তিরস্কার করতেন । রাসূল (সাঃ) বলতেন , “তোমরা কি আল্লাহ এবং আমাকে সমান করলে ? বরং (তোমাদের বলা উচিত) , ‘যদি আল্লাহ , একাই ইচ্ছা করেন” । – আল মুসনাদ , ২য় খন্ড , হাদীস নং-২৫৩ ।
ফাজায়েলে আমালে যে সকল ক্বাসীদাহ উল্লেখ করা হয়েছে , তাতে আল্লাহর হাক্ব এবং রাসূল (সাঃ) এর হক্বের কোন পার্থক্য নেই । ইবাদাহ পাওয়া শুধু আল্লাহর হাক্ব ; সাহায্য কামনা , দোওয়া , আশা করা , তওয়াফ করা , শাফায়াত কামনা করা , ইত্যাদি এর অন্তর্ভূক্ত । মাওলানা জামী ও মাওলানা মুহাম্মাদ ক্বাসিম নানোতভী তাদের দ্বিপদী শ্লোকের সকল ইবাদাহগুলো আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর উপর আরোপ করেছেন , যা পরিস্কার শিরক ।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আক্বীদাহ সম্পর্কে অত্যন্ত কঠোর মনোভাব পোষণ করতেন । শিরকযুক্ত কোন কথা বললে তিনি তা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বাধা দিতেন । একদা , এক সাহাবী তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললেন , “আপনি আমাদের মনিব” । তিনি বললেন , ‘মনিব হলেন করুনাময় , মহামহিমামন্ডিত আল্লাহ’ । যখন তাঁরা (সাহাবীগণ) তাঁর (রাসূল (সাঃ) গুণাবলী বর্ণনা করে বললেন , “আপনি আমাদের মাঝে সর্বেত্তম ও দয়ালু” । রাসূল (সাঃ) বললেন , “তোমরা কি বলতে এসেছো বল , তোমরা নিজেদেরকে শয়তানের অনুসরণ করার এবং অতি বিশ্বাসী কথা বলার সুযোগ করে দিওনা” । – আবু দাউদ ।
আল্লাহর রাসূল সাঃ মানব জাতীর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি এরপরও , তিনি সাহাবীগণকে ‘আপনি আমাদের মনিব’ , ‘আমাদের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম’ ইত্যাদি কথাগুলো বলতে নিষেধ করেছিলেন । এটা করেছিলেন , শুধু মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা থেকে সাহাবীগণকে বিরত রাখতে এবং তাওহীদ (আল্লাহর একত্ব) রক্ষার নিমিত্বে । আল্লাহর বান্দারা সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ যে মর্যাদায় পৌঁছতে পারেন , রাসূল (সাঃ) সাহাবীগণকে সেই দুটি বৈশিষ্টপূর্ণ নামে সম্বোধন করতে বলেছেন । তিনি (সাঃ) বলেন , “নিঃসন্দেহে আমি আল্লাহর দাস , অতএব বলবে , আল্লাহর দাস এবং তাঁর (আল্লাহর) রাসূল (সাঃ)” ।- সহীহ আল বুখারী , ৬ষ্ঠ খন্ড , হাদীস নং-৪৭৮ । এ পদমর্যাদা দুটি তাঁর (সাঃ) এর প্রতি বাড়াবাড়িও নয় এবং আক্বীদার পরিপন্থিও নয় ।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর নিকট সাহায্য ও দোওয়া চাওয়া
মাওলানা জামীর ক্বাসিদায় বলা হয়েছে , “হে আল্লাহর পয়গাম্বার ! আমরা আপনার অনুগত ও অসহায় , তাই আপনার প্রেমিকদেরকে সাহায্য করে হৃদয়ে প্রশান্তি দান করূন” । কিন্তু মহিমান্বিত আল্লাহ কুরআনে বলেন , “অথবা তিনি আর্তের আহবানে সাড়া দেন , যখন সে তাঁকে ডাকে ; এবং বিপদাপদ দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে বংশ পরম্পরায় পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব প্রদান করেন । আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্য আছে কি ? তোমরা উপদেশ অতি সামান্যই গ্রহণ করে থাকো” – সুরা আন নামল : ৬২ ।
উপরে উদ্ধৃত ক্বাসীদা , পরিস্কার আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর নিকট বিনীত প্রার্থনা করা হয়েছে , যা পরিস্কার শিরক । আল্লাহ , সাহাবীগণকে বলার জন্য রাসূল (সাঃ) কে আদেশ করেছেন , “হে মুহাম্মাদ ! বল , আল্লাহ যা ইচ্ছে তাই করেন ; তা ব্যতীত আমার নিজের ভালো মন্দের উপর আমার কোন অধিকার নেই” – সুরাহ আল আরাফ : ১৮৮ ।
তিবরানী (রহঃ) বর্ণনা করেন , রাসূল (সাঃ) এর সময় এক মুনাফিক ছিল , যে বিশ্বাসীদের অনিষ্ট করতো । তাদের কিছুলোক বললো , ‘চলো আমরা আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর নিকট গিয়ে এই মুনাফিকের বিরুদ্ধে সাহায্য চাই’ । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর উত্তরে বলেছিলেন ,“অবশ্যই কেউ আমার কাছে সাহায্য চাইবে না । শুধুই ‘আল্লাহ’ , যাঁর নিকট সাহায্য এবং সহযোগিতার জন্য প্রার্থনা করতে হবে” । রাসূল (সাঃ) আরো বলেছেন , ‘ইবাদাতে যদি কিছু চাও , শুধু আল্লাহর কাছেই চাও , আর যদি সাহায্য চাও , সেটাও শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই চাও’ । – সুনান আত-তিরমিযী , ২য় খন্ড , হা/২০৪৩ , মিশকাতুল মাসাবিহ , ২য় খন্ড , হা/১০৯৯ ।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নিকট সুপারিস (শাফায়াত) প্রার্থনা করা
যদিও আল্লাহ শেষ বিচার দিনে তাঁর রাসূল (সাঃ) কে উম্মাহর সুপারিশ করার সুযোগ দিয়েছেন , তারপরও সুপারিশের জন্য প্রার্থনা একমাত্র আল্লাহর নিকটই করতে হবে । আল্লাহ কুরআনে বলেন , “বল , সকল সুপারিশ আল্লাহরই এখতিয়ারে , আকাশমন্ডলি ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই , অতঃপর তারই নিকট তোমরা প্রত্যাণীত হবে” । (সুরাহ আয-যুমার : ৪৪)
আল্লাহ আরো বলেন , “কে আছে এমন যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে?” – সুরাহ আল বাকারাহ : ২৫৫
শেষ বিচারের দিন সম্পর্কে আল্লাহ বলেন , “যখন তাঁর রাসূল (সাঃ) সুপারিশ করবেন ………. তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা কিছু আছে , তা তিনি অবগত । তারা , সুপারিশ করে শুধু তাদের জন্য , যাদের প্রতি তিনি সন্তুষ্ট , এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত ।” সুরা আম্বিয়া : ২৮
যখন এই আয়াত “তোমার স্বজনবর্গকে সতর্ক করে দাও” নাযিল হলো , আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বললেন , “হে কুরাইশগণ ! আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তির পথ সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করা (সৎকার্যাবলীর মাধ্যমে) , কারণ , আল্লাহর নিকট আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারবো না । ……… হে ফাতিমা ! মুহাম্মাদ (সাঃ) এর কন্যা , ইহজগতে আমার সম্পদ থেকে তুমি যা ইচ্ছা চাইতে পারো , কিন্তু আল্লাহর সম্মুখে আমি তোমার জন্য কিছুই করতে পারবো না (শেষ বিচারের দিনে)” । – সহীহ আল বুখারী , ৪র্থ খন্ড , হাদীস নং ৭২৭-৭২৮ , সহীহ মুসলিম , ১ম খন্ড , হা/৪০২ ।
আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন , “আপনার শাফায়াত প্রাপ্তদের মধ্যে কে সব চাইতে বেশী সুখী (সৌভাগ্যবান) হবে?” তিনি (সাঃ) বললেন , “যে সুগভীর আন্তরিকতায় বিশুদ্ধ চিত্তে (ইখলাছের সাথে) ক্বালব থেকে বলে , “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” । সুতরাং যদি আল্লাহ চান , এই শাফায়াত অবশ্যই ঐ অত্যন্ত আন্তরিক বিশুদ্ধ চিত্ত লোকদের জন্য । কিছুতেই শিরককারীদের জন্য নয় । আর , যে কেউ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে সুপারিশ চায় , সে শিরক-এ লিপ্ত । পরিণামে , শাফায়াত লাভের অযোগ্য সম্পূর্ণরুপে ।
ভ্রান্ত বিশ্বাস
এই ক্বাসীদায় আর একটি ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রচারণা করে যে , আল্লাহ তার রাসূল (সাঃ) কে সৃষ্টি করবেন বলেই এই জগৎ সমূহ এবং তার মাঝে যা কিছু আছে সব সৃষ্টি করেছেন । যেমন , ক্বাসীদায় বলা হয়েছে , “সারা বিশ্ব জাহানের অস্তিত্ব টিকে আছে শুধু তোমারই জন্য……কোন কিছু ছিল না , এ অবস্থা থেকে সারা বিশ্ব জাহানের আবির্ভাব হয়েছে শুধু তোমারই জন্য।” এ ধারনার জন্ম হয়েছে একটা জাল হাদীস থেকে । (সিলসিলাহ আহাদীস আয-যঈফাহ , হা/২৮২) এবং এটি কুরআনের একটি আয়াতের সম্পূর্ণ বিরোধী । আল্লাহ বলেন , “শুধু আমার দাসত্বের জন্যই আমি মানুষ ও জ্বিনকে সৃষ্টি করেছি” । (সুরাহ আয-যারীয়াহ : ৫৬) অতএব , আল্লাহর , মানুষ ও জ্বীন জাতী সৃষ্টির একমাত্র উদ্দেশ্য হলো যে , তারা শুধুমাত্র তারই ইবাদাত করবে ।
ক্বাসীদাহ সম্পর্কে মাওলানা জাকারিয়া তার উল্লেখিত কাহিনীতে যা বলেছেন , উপরোল্লিখিত প্রতিবাদ যিনি বোঝার চেষ্টা করবেন , তিনি এই কাহিনীর মিথ্যা বর্ণনা অবশ্যই উপলব্ধি করতে পারবেন । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) , যিনি সারা জীবন মানুষকে তাওহীদ শিক্ষা দিয়েছেন এবং অত্যন্ত বিনীতভাবে আল্লাহর নিকট দোয়া করেছেন , যেন পুঁজা থেকে তার কবরকে রক্ষা করা হয় । আর তিনিই নাকি মাওলানা জামীর সাথে মুসাফাহা করার জন্য কবর থেকে হাত বের করে দেবেন , এটা হতেই পারে না । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছেন , হে আল্লাহ ! তুমি আমার কবরকে পূজার স্থান হতে দিও না , যারা তাদের নবীদের ক্ববরকে ইবাদাতের স্থান বানিয়ে নিয়েছে , তাদের উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক । (তাবাকাত-ই-ইবনে সাদ , হা/৩৬২ , ২য় খন্ড) রাসূল (সাঃ) জীবিত অবস্থায় যে কাজের ভয় করতেন , ধর্ম বিরোধীদের সেই কাজকে তিনি কখনই কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করতে পারেন না ; আর তার হাত বের করে মোসাফাহা করারতো কোন প্রশ্নই আসে না । বরঞ্চ , এইসব লোকদেরকে তিনি লানত করেছেন ।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে একটি লজ্জাস্কর অপবাদ
ফাজায়েলে আমালে একটি এমন লজ্জাজনক ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে , যা লিখতেও বিব্রতবোধ করছি ; কিন্তু ঈমানী দায়িত্ব বোধে বাধ্য হয়ে লিখতে হচ্ছে , যাতে মানুষ দ্বীনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা পেতে পারে ।
মাওলানা যাকারিয়া ফাজায়েলে দরুদে বর্ণনা করেছেন , ‘এক বালক প্রতি পদক্ষেপেই পড়ছিল ‘আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিন অলা আলি
মুহাম্মাদিন’ ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করা হল , এরকমভাবে দরুদ পড়ার কারণ কি ? সে বলল , ‘একবার আমি আমার মায়ের সাথে হাজ্জে গিয়েছিলাম । পথে আমার মা মারা যান , তার মুখ কালো হয়ে যায় এবং পেট ফুলে যায় । মনে হলো , সে অনেক বড় পাপ করেছে । তখন আমি আল্লাহর দরবারে হাত উঠিয়ে দোয়া করলাম । এসময় হিজাজের দিক থেকে একখন্ড মেঘ উড়ে আসলো এবং তা থেকে এক ব্যক্তি বের হয়ে আমার মায়ের মুখে হাত বুলালেন , আর অমনি তার মুখ উজ্জ্বল হয়ে গেল এবং পেটে হাত বুললেন , পেটের ফুলাও চলে গেল । আমি আরয করলাম আপনার ওসীলায় আমার মায়ের বিপদ কেটে গেল , আপনি কে ? তিনি বললেন , আমি তোমার নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) । আমি নবী (সাঃ) এর নিকট আরয করলাম , আমাকে কিছু উপদেশ দান করুন । নবী (সাঃ) বললেন , যখন কদম উঠাবে এবং রাখবে তখনই পড়বে আল্লাহুম্মা ছাল্লি আলা মুহাম্মাদিন অলা আলি মুহাম্মাদিন । – ফাজায়েলে দরুদ , নবম পরিচ্ছেদ ।
আমরা জানি , আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ) মহান , পুত-পবিত্র চারিত্রিক বৈশিষ্টের অধিকারী ছিলেন । তিনি সারা জীবনে কখনও গায়ের মাহরাম মহিলাদের দেহ স্পর্শ করেন নি । তিনি যখন মহিলাদের থেকে শপথ নিতেন , শুধু মৌখিকভাবেই নিতেন । উরওয়াহ বলেন , আয়িশা (রাঃ) তাকে বলেছেন , রাসূল (সাঃ) মহিলাদের থেকেও শপথ গ্রহণ করতেন । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কখনও গায়ের মাহরাম মহিলাদেরকে স্পর্শ করতেন না । তিনি শুধু তাদের থেকে মৌখিক শপথ গ্রহণ করতেন এবং বলতেন , তোমরা যাও , আমি তোমাদের শপথ গ্রহণ করলাম । - সহীহ আল বুখারী , সহীহ মুসলিম , সুনানে ইবনে মাজাহ ,মুসনাদে আহমাদ । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর উপর অপবাদ দেয়া ও মিথ্যা আরোপ থেকে আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন । আমীন !
উপসংহার
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশা করতে হবে সেইভাবে , যেভাবে আল্লাহ তাঁর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশা করেছেন , এবং যতটুকু মর্যাদা সম্পন্ন প্রসংশা আল্লাহ তার রাসূল (সাঃ) এর জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন । আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনে বলেন , “আল্লাহ এবং মালাইকাগণ নবী (সাঃ) এর প্রতি দরুদ পাঠান । হে ঈমানদার গণ ! তোমরাও তাঁর (সাঃ) প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠাও” । - সুরা আল আহযাব : ৫৬ । নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সাঃ উচ্চ প্রসংশিত মর্যাদার অধিকারী এবং সৃষ্টির সেরা । আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে নবী রুপে পছন্দ করেছেন এবং তাঁকে মাকাম-ই-মাহমুদ (উচ্চতম প্রসংশিত স্থান) প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । যারা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদেশ অমান্য ও অবজ্ঞা করে , তাদের জন্য আল্লাহ হীনমন্যতা এবং অবমাননা নির্ধারণ করেছেন । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে শ্রদ্ধা করার অর্থ , আদেশ নিশেধ মেনে চলা । কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন বা বাড়াবাড়ি , মানুষকে পথভ্রষ্টতার দিকে ধাবিত করে ।
যাই করেন, সৌদী বাদশাহদের তৈরী করা সিলেবাসে পড়া আলেমদের প্রচারনা করে গূনার ভাগীদার হবেন না আশা করি। আপনার অবগতির জন্য সৌদী শিক্ষা মন্ত্রীর জীবনী দিলাম,আর চিন্তা করে দেখেন এরা ইসলামের খেদমত করতে পারে কিনা ? ধন্যবাদ।
Saudi Minister of Education:
Prince Faisal Bin Abdullah Bin Muhammad Al-Saud
Born: 1949 in Riyadh
Education: MA in Industrial Engineering, Stanford University, CA, USA; BA in Business Administration, Menlo College in the USA.
Positions Held: Research and Industrial Development Center at the Ministry of Commerce from 1971 to 1973; Undersecretary for the National Guard’s Western Sector 1992 to 2003; Deputy Chief of the General Intelligence 2003-2009; Minister of Education since February 14, 2009.
http://www.moe.gov.sa/news/Pages/nh_6_5_1433_s1.aspx
@দেশী৪৩২, কিছুই বুঝলাম না কি বুঝাতে চাইছেন । আমি কি এখানে সৌদির রেফারেন্স দিয়েছি । দিয়েছিতো কুরআন হাদীসের রেফারেন্স । তা এই রেফরেন্স গুলির চেয়েও কি আপনাদের দেওবন্দী আলেমদের কথার (কুরআন হাদীসের বিপরীত হলেও) দাম বেশী ।
ব্রাদার, এই বইটি কোথায় পাওয়া যাবে?
@ম্যালকম এক্স,
তাওহীদ পাবলিকেশন্স. যোগাযোগ: ৯০, হাজী আব্দুল্লাহ সরকার লেন, বংশাল, ঢাকা-১০০০। ফোন: ৭১১২৭৬২, ০১১৯০৩৬৮২৭২, ০১৭১১৬৪৬৩৯৬, ০১৯১৯৬৪৬৩৯৬, ০১৭৫১৭০৪৮৪৮।
@ABU TASNEEM, বইটির লেখক কোন দেশের ও কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন ?
@দেশী৪৩২, এই লিংক থেকে দেখে নিন
@ABU TASNEEM, লেখক সৌদি আরবে , সৌদি সরকারের টাকায় লখা পড়া করে বর্তমানে সৌদিতে কাজ করছেন।তার পরও আপনি এই লোকের প্রচারনা করে যাচ্ছেন ? সৌদী শিক্ষামন্ত্রীর জীবনি দেয়ার পরও ? আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন ,আমিন ।
@দেশী৪৩২, http://www.freewebs.com/abdulhamid-alfaidi-almadani/hamid.pdf
@দেশী৪৩২, এই লিংকে যান লেখকের ১০৩ টি বই পাবেন পিডিএফ ফরম্যাটে
বুঝা যাচ্ছে দেওবান্দের উলামা কেরামদের সমলোচনা করাই আপনার উদ্দেশ্য। গঠনমূলক সমালোচনা ওয়েম কাম। কিন্তু শত্রুতা মূলক বা বিভান্তি মূলক সমালোচনা কোরতে চাইলে অনেক করা যায়। এই জন্য কোন ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ লাগে না। কিন্তু বাস্তব কথা হল, ইংরেজ শাষণ কায়েম হবার পর ইসলামের উপর যে ভয়াবহ দুর্যোগ নেমে আসে তখন উলামায়ে দেওবান্দ অনেক কুরবানীর দ্বারা এই দুর্যোগ প্রতিহত করেন। কাদিয়ানী ফিৎনা, রেযাখানী ফিৎনা, পারভেজী ফিৎনা, আলীগড়ী ফিৎনা, চড়কালভী ফিৎনা, মুনকিরে হাদিস ফিৎনা, মওদুদী ফিৎনা আরও কত কি? এর সাথে রাষ্ট্রীয় মদদে খৃষ্টান ফিৎনা তো ছিলই। এসব ফিৎনা মানুষের দ্বীনকে ধ্বংস করার জন্য একেকটা মহ দুর্যোগ ছিল। দেওবান্দের উলামা কেরামদের মেহনতে দূর হয়েছে বা দুর্বল হয়েছে।
উলামায়ে দেওবান্দের সমালোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই ব্লগার মাওলানা যাকারিয়া রহ. কে আক্রমণ করেন। মূলতঃ উনার সংকলিত ফাযায়েলে আ’মালের দ্বারা মানুষের জিন্দেগী পরিবর্তিত হওয়াই বাতিলের মাথা ব্যথ্যার কারণ। অন্যথায় উনি আরও অসংখ্য কিতাব লিখেছেন যে গুলোর কোন সমালোচনা শুনা যায় না। উনি ফাযায়েলে আ’মাল সংকলণ না করলে হয়ত উনাকে নিয়ে কোন আলোচনাই হত না। এই একটি কিতাব উনাকে বাতিলের সমালোচনার শীর্ষে নিয়ে গেছে।
ফাযায়েলে আ’মাল কোন আকীদার কিতাব বা মাসায়ালার কিতাব নয়। শুধু মাত্র আ’মালী জযবা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য। যারা এই কিতাব পড়েন তারাও আকীদা বা মাসায়ালা জানার জন্য পড়েন না বরং আ’মালের জযবা নেয়ার জন্যই পড়েন। এ জন্য এখানে অন্য কোন উদ্দেশ্য টেনে নিয়ে আসা বির্তক সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোন কারণ থাকতে পারে না।
এ পর্যায়ে ব্লগার ফাযায়েলে হাজ্জ ও ফাযায়েলে দুরুদের উল্লেখ করেছেন। উনি অনুবাদের রেফারেন্স দিয়েছেন। এর মধ্যে ফাযায়েলে দুরুদ ফাযায়েলে আ’মালের অংশ নয় যদিও উনি ফাযায়েলে আ’মালের অংশ বলে উল্লেখ করেছেন। ফাযায়েলে দুরুদের প্রকাশনা ও মুদ্রণও এখন বন্ধ হয়ে গেছে। কোন কোন পীর সাহাবের খানাকাতে মূল উর্দু কিতাব টা পাওয়া যেতে পারে। ফাযায়েলে হাজ্জ ও ফাযায়েলে দুরুদের যে অনুবাদ আমাদের দেশে পাওয়া যায় তা নেহায়তই দুর্বল অনুবাদ। এতে অনুবাদক অনেক কিছু নিজে উল্লেখ করেছেন, অনেক কিছু বাদ দিয়েছেন, অনেক কিছু ক্রম পরিবর্তন করেছেন, অনেক কিছু মূল উর্দু শব্দই রেখে দিয়েছেন, অনেক কিছু আক্ষরিক অনুবাদ করেছেন যে খানে ভাব অনুবাদই কাম্য ছিল, অনেক কিছু এক শব্দের স্থলে আরেক শব্দ উল্লেখ করেছেন। একারণে উনার অনুদিত ফাযায়েলে আ’মাল এখন আর রেকোমেন্ড করা হয় না। তার এই দুই অনুবাদ থেকে কোন রেফারেন্স দেয়াটা কাম্য নয়। ব্লগারের কাছে মূল উর্দু কিতাবের রেফারেন্স চাইছি।
এবার ফায়ায়েলে আ’মাল প্রসংগ। ফাযায়েলে আ’মাল আ’মালে উৎসাহ বাড়ানোর জন্য একটা কিতাব। কিতাব খানি কোন ব্যক্তি বা গোষ্টিকে সামনে রেখে নয় বরং সকল ধরণের মানুষকে সামনে নিয়ে সংকলণ করা হয়েছে। এখানে কিছু আছে কুরআনের আয়াত, কিছু আছে হাদিস, কিছু হাদিসের ব্যাখ্যা, কিছু ঘটনা যেন মানুষ উৎসাহ পায়। কেননা কুরআন হাদিস দেখে অনেক মনে শয়তান ধোঁকা দিতে পারে এগুলো পালন করা সম্ভব নয়। এই জন্যই কিছু ব্যক্তি বিশেষের উদাহরণ দেয়া যে, এগুলো নবী রাসুল ও তাঁদের সাহাবাহ বাদে বাকিরাও পালন করতে পেরেছেন। সংকলক নিজেই স্বীকার করেছেন, এগুলো ইতিহাস এগুলোর মান হাদিসের অনেক নিচে। এ কারণের এগুলোকে পুঁজি করে ফাযায়েলে আ’মাল কিতাব কে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা দুঃখ জনক।
এক পর্যায়ে ব্লগার উলামাএ দেওবান্দের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কাসিম নানুতুভী রহ. এর একটি কবিতার আলোকে উনার উপর শিরকের অপবাদ আরোপ করেছেন। একথা সর্বজন স্বীকৃত কারো উপর শিরকের অপবাদ আরোপ করলে ঐ অপবাদ প্রমাণ রকতে না পারলে এই অপবাদ অপবাদ আরোপকারীর উপরেই বর্তায়। এপর্যায়ে ব্লগার যে রেফারেন্স দিয়েছেন তা অতি দুর্বল ও দুষ্পাপ্য।
ব্লগার যে গুলোকে শিরক বলেছেন তা আদৌ শিরক কি না এটা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। আপাততঃ ঐ দিকে যাব না। এখানে আমার কথা হল কবিতার ভাষা কোন দলীল হতে পারে কিনা যা দিয়ে কোন জিনিস প্রমাণ করা যাবে।
কবিদের একটা বৈশিষ্ট্য হল, কবি যা বলেন তা করেন না। যা করেন তা বলেন না। কবিতার ভাষাই হল অতিরন্জ্ঞন। যিনি কবিতা পড়েন শুনেন তিনিও কবিতার কোন কথা বিশ্বাস করেন না। বরং অতিরন্জ্ঞন না হলে কেউ ওটাকে কবিতা বলবেনই না। কোন সততা বা দলীল নেয়ার জন্য কেউ কবিতা পরে না বা শুনে না। বরং অন্য কিছু নেয়াই কবিতা পাঠ বা শ্রবণের উদ্দেশ্য থাকে। এই গুন (কেউ চাইলে দোষও বলতে পারেন) থেকে সাহাবাহ কেরামও মাহরুম ছিলেন না। হাসসান ইবন সাবেত রদিয়াল্লহু আ’নহু একজন বড় মাপের কবি ছিলেন। উনার কবিতা ছিল খুবই বীরত্বপূর্ণ এবং জিহাদের জযবা উদ্দীপক। উনার কবিতা শুনে সাহাবাহ কেরামদের রক্ত গরম হয়ে যেত। কিন্তু বাস্তব কথা হল, উনার নিজের রক্ত ছিল একেবারেই শীতল। উনার কবিতা অনেক কালজয়ী বীর জন্ম দিয়েছে। উনি মোটেই কালজয়ী বীর ছিলেন না। একজন মরা মানুষের মাথা কাটা হিম্মতও উনার ছিল না। কোন এক জিহাদের সময় রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের বৃদ্ধা ফুফু সাফিয়া রদিয়াল্লহু আ’নহা এক ইয়াহুদী গুপ্তচরকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে হাসসান ইবন সাবেত রদিয়াল্লহু আ’নহুকে বললেন তার মাথা কেটে নিয়ে আসার জন্য কিন্তু তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। অগত্যা সাফিয়া রদিয়াল্লহু আ’নহা নিজেই ইয়াহুদীর মাথা কেটে নিয়ে আসেন। এজন্য কেউ হাসসান ইবন সাবেত রদিয়াল্লহু আ’নহুকে কেউ মিথ্যাবাদী বা কাপুরুষ আখ্যা দেন নি।
বাস্তব কথা হল মানুষের জীবন ও কর্মই তার দলীল। কবিতা কবিতাই, দলীল নয়। কাসিম নানুতুবী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি আজীবন অতিরন্জ্ঞনকারী বিদআতীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। উনার ছাত্র ও ছাত্রদের সিলসিলা আজও বেরেলভী অতিরন্জ্ঞনকারীদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধেই অতিরন্জ্ঞনে অভিযোগ মিথ্যা অপবাদ ছাড়া কিছুই না।
ব্লগার দুই খানা হাদীস উল্লেখ করেন
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন , “আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেছেন , ধ্বংস তাদের , যারা চরমপন্থা অবলম্বনকারী (দ্বীনে)” । তিনি একথাটি তিনবার বলেছেন । (সহীহ মুসলিম )
সৎকর্মশীল লোকদের সম্মান ও মর্যাদার অতিরঞ্জনই অতীত জাতিগুলির পথভ্রষ্টতার মূল কারণ ছিল । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন , ‘বাড়াবাড়ি থেকে সাবধান হও । তোমাদের পূর্বসূরীগণ ধ্বংস হয়েছিল তাদের বাড়াবাড়ির জন্য’ । (মুসনাদে আহমাদ)
পরে এর থেকে উপসংহার টানেন,
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন (বাড়াবাড়ি) নিষিদ্ধ।
বাস্তবিক, শুধু রাসূল (সাঃ) এর প্রসংশায় অতিরঞ্জন নয় বরং সব ধরণের বাড়াবাড়িই নিষেধ করা হয়েছে উপরে হাদীস দুখানায়।
এখন দেখা যাক বাড়াবাড়িতে কারা লিপ্ত।
এদেশে আহলে (মুনকিরে) হাদিস নামে একটা সম্প্রদায় আছে। এদের একটি চরমপন্থী সংগঠন আছে জে এম বি নামে। জেএমবি’র নেতৃত্বে ছিলেন শায়খ আব্দুর রহমান যিনি আহলে (মুনকিরে) হাদিসের একজন শীর্ষস্থানীয় আলেম। আহলে (মুনকিরে) হাদিসের একটি মাদ্রাসার প্রধান ছিলেন। প্রতি বছর জামালপুরে আহলে (মুনকিরে) হাদিসের সম্মেলন করতেন যাতে প্রতিনিয়ত হানাফী মাযহাবের বড় বড় আলেমদের শুধু সমালোচনাই নয় বরং গালাগালি করতেন। জেএমবি’র আরেকজন নেতা ছিলেন বাংলাভাই। উনিও আহলে (মুনকিরে) হাদিস সম্প্রদায়ের লোক। এছাড়াও এদের নেতাকর্মী সবাই-ই আহলে (মুনকিরে) হাদিস সম্প্রদায়ের লোক। জেএমবি কয়েক বছর আগে সারা দেশে একযোগে বোমা হামলা চালায়। এতে করে সারা দুনিয়ার মানুষের নজর বাংলাদেশের উপরে পরে। পরবর্তীতে এরা দেশের বিভিন্ন জায়াগায় বোমা হামলা চালিয়ে নারী শিশুসহ প্রচুর সাধারণ মানষকে হত্যা করে। অবলা পশু ও মাছও এদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ঐ সময়ে ইসলাম ও আলেম উলামাদের উপর নেমে আসে এক মহা দুর্যোগ, যেমনটা ইংরেজ আ’মালে এসেছিল। সাধারণ দ্বীনদার মানুষগণ প্রচন্ড ভোগান্তির স্বীকার হন। এমনকি নামায পড়তে গেলেও অনেকে সরকারী বাহিনীর হাতে জংগী সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছেন। আলেম উলামাদের উপরে নির্যাতন নেমে আসে। অনেক দুর্বল ঈমানের মানুষ ঐ সময়ে দাঁড়ি কেটে ফেলেন, সুন্নতি পোষাক ছেড়ে দেন। অনেক মাসজিদে নামায আদায় করাও ছেড়ে দেন। আলেম উলামা ও দ্বীনদার মানুষদের ব্যপারে সাধারণ মানুষের যে অবিশ্বাস ও অনাস্থা ঐ সমায়ে পয়দা হয় তা আজও দূর করা যায় নি। জেএমবি’র চরমপন্থা কাফের মুশরেক ও ধর্মনিরপেক্ষদের হাতে যে অস্ত্র তুলে দেয় তা আজও তারা প্রয়োগ করে যাচ্ছে।
শুধু এই ব্যপারেই নয়। আকীদাহ ও বিদয়াতের নামে বাড়াবাড়ি, সহীহ ও জঈফ হাদিসের নামে বাড়াবাড়ি মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। আরেকদিনে উলামাকেরাম যাদের মাধ্যমে আমরা দ্বীন ও হাদীসের বিশাল ভান্ডার আমরা হাতে পেয়েছি তাদেরকেও আহলে (মুনকিরে) হাদিসের দল ছাড় দিচ্ছে না। এমন কি ইমাম বুখারী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহির হাদিসকেও এরা জঈফ বলার সাহস করেছে।
@Anonymous,
এদেশে আহলে (মুনকিরে) হাদিস নামে একটা সম্প্রদায় আছে। এদের একটি চরমপন্থী সংগঠন আছে জে এম বি নামে। জেএমবি’র নেতৃত্বে ছিলেন শায়খ আব্দুর রহমান যিনি আহলে (মুনকিরে) হাদিসের একজন শীর্ষস্থানীয় আলেম। আহলে (মুনকিরে) হাদিসের একটি মাদ্রাসার প্রধান ছিলেন
সহমত।
@Anonymous, এদের কাছে সবই শিরক, তাদের মনমত না হলেই শিরক। এদের সাথে রাজারবাগের ভন্ড পীর দিল্লুর রহমানের মিল আছে যে কথায় কথায় অন্যদের কাফের বলে।
@Anonymous,
তারা এত শরীয়ত বোঝে কিন্তু মাজহাবীদের সাথে আজ পর্যন্ত কোনো প্রকাশ্যে বাহাস এ গেলো না, এর হাকীকত কি?
http://www.peaceinislam.com//asksumon007/11666/