রমজানে প্রাত্যহিক খাদ্য তালিকা যেমন হতে পারে
লিখেছেন: ' ফয়সল' @ মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০১১ (১২:০২ অপরাহ্ণ)
রমজানের রোজার রয়েছে আধ্যাত্মিক, শারীরিক, মানসিক, সামাজিক উপকারিতা; কিন্তু, যদি সঠিকভাবে রোজা পালন না করা হয় তবে তার উপকারিতা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খর্ব হয়ে যেতে পারে। সর্বপ্রথমেই বলতে হয় ইফতার, ডিনার বা সেহরির সময়ে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের কোন প্রয়োজনই নেই। শরিরের একটি নিয়ন্ত্রক মেকানিজম আছে যা উপবাস সময়ে সক্রিয় হয়। শরীরের চর্বির পর্যাপ্ত ও দক্ষ ব্যবহার হয় এই সময়েই। কেননা, মৌলিক বিপাক প্রক্রিয়া রমজানের রোযার সময়ে ধীর হয়ে যায়। রমজান মাসের সময় একজন ব্যক্তির সুস্থ ও সক্রিয় থাকার জন্য একটি ডায়েটিং প্ল্যানই যথেষ্ট যা স্বাভাবিক পরিমানের চেয়ে কম কিন্তু সুষম। বাড়তি ও অসম খাবার খাওয়া এবং অপর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমন একটি লাইফস্টাইল রমযান মাসের অপরিহার্য প্রয়োজনীয়তা এবং আত্নিক শিক্ষার সাথেও সাংঘর্ষিক।
বাস্তবিক অভ্যাস এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় একটি খাদ্য তালিকা (উদাহরণস্বরূপ) হবে নিম্নরূপ :
সেহরি : গমের রুটি দুই স্লাইস (ঘরে তৈরি চাপাতি রুটির ক্ষেত্রে তিনটি), দুধ ১ কাপ, ১ কাপের চারভাগের একভাগ হালকা তেলযুক্ত সবজি/সালাদ (দুই চাচামচ ভিনেগার দেয়া যেতে পারে), ১টা আপেল (ছোলা সহ), ২ চা চামচ চিনি এক কাপ চা বা কফির সাথে।
ইফতার : ৩টি খেজুর, কমলার রস আধা কাপ, সবজি স্যুপ ১ কাপ, ২টি প্লেইন বাদামযুক্ত ক্র্যাকার বিস্কুট; আধা কাপ রান্না করা চানাবুট, গমের রুটি ২ স্লাইস (ঘরে তৈরি চাপাতি রুটির ক্ষেত্রে তিনটি), আধা কাপ আঙ্গুর।
ডিনার : ১ কাপ হালকা তেলযুক্ত সবজি/সালাদ(১ চাচামচ ভিনেগার মিশ্রন থাকতে পারে), মুরগীর মাংস ২ আউন্স (১ টুকরা), আধা কাপ ঢেড়স ভাজি, এক কাপ ভাত, টক দই এক কাপের চার ভাগের তিনভাগ, একটা কমলা, ১ আউন্স পরিমান বাদাম।
এছাড়াও আরো কিছু সাজেশন হবে :
১। ডিহাইড্রেশন এড়ানোর জন্য সাধ্যমত প্রচুর পরিমান পানি খেতে হবে ইফতারের পর থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে।
২। পর্যাপ্ত পরিমান সব্জি খাবার চেষ্টা করুন প্রতিবেলা খাবারের সাথেই। শেষ করুন ফল খেয়ে।
৩। উচ্চমিষ্ট খাবার (হালুয়া বা মিষ্টি) যতটুকু পারা যায় এড়িয়ে চলতে হবে।
৪। প্রচুর মশলাযুক্ত (প্রচলিত বুটভাজি আর ভাজাপোড়া) খাবার বাদ দিন।
৫। কোক, কফি এবং চা পানের মাধ্যমে যে ক্যাফেইন আমরা গ্রহণ করি তা রমজানের দুই তিনদিন আগে থেকেই ধীরে ধীরে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করতে হবে। কারন, ক্যাফেইন হচ্ছে ডাই-ইউরিক যা মূত্র বর্ধক হিসেবে কাজ করে উপবাসকালিন সময়ে শরিরে পানির পরিমান কমিয়ে দিতে পারে। আবার হঠাৎ করে প্রাত্যহিক ক্যাফেইন ছেড়ে দিলে প্রচন্ড মাথাব্যাথার উপদ্রব দেখা দিতে পারে।
৬। মিসওয়াক ব্যাবহার করে দাঁত ব্রাশ করার পরিমান বাড়িয়ে দিতে হবে। অন্ততপক্ষে ঘুমানোর আগে এবং সেহরির পর ব্রাশ করতেই হবে।
৭। যাদের গ্যাস্ট্রিক এর ব্যাথা আছে, তাদেরকে বেশিরভাগকে অবশ্যই আপেল এড়িয়ে চলতে হবে। যারা রমজানের সুযোগে স্লিম হতে চান তাদেরকে অবশ্যই সবজি খেতে হবে বেশি আর সেহেরীতে কম খেয়ে পানি বেশি পান করতে হবে। সেহেরিতে কম খেলে বেশি ক্ষুধা লাগবে এটি সম্পুর্ণ ভুল ধারণা। তবে পানি বেশি পান না করলে ইউরিন ইনফেকশন সহ অন্যান্য শারিরীক প্রব্লেম হবে।
আজ এ পযর্ন্তই। সকলকে ধন্যবাদ ধৈর্যসহকারে পড়ার জন্য। আমি কোন নিউট্রিশনার নই। ইন্টারনেট থেকে ঘেটে যে ডায়েট প্ল্যান পেয়েছি তা নিজের বিবেচনায় আমাদের দেশে প্রাপ্য খাদ্যের সাথে মিলিয়ে লেখার চেষ্টা করেছি। ভুল-ত্রুটি অবশ্যই আছে বলে ধরে নিচ্ছি। কারো চোখে স্পেসিফিক মারাত্নক কিছু ধরা পরলে অবশ্যই তা মন্তব্য আকারে দিবেন। সংযোজন করে নিবো।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ও উপকারী লেখার জন্য। আরও লেখা আশা করি।
@রাসেল আহমেদ, ধন্যবাদ! দোয়া করবেন, ইনশাআল্লাহ্ চেষ্টা করবো!
সময় উপযোগি লেখার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই আপনাকে আশেষ ধন্যবাদ।