আহলে হাদিসদের মিথ্যাবাদীতা ও দু:সাহসের নমুনা – ৩
লিখেছেন: ' Anonymous' @ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৯, ২০১২ (৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ)
শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানী রহমাতুল্লাহ আলাইহি নিঃসন্দেহে একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর পিতা একজন আলেম ছিলেন এবং নিজের ও সন্তানদের ঈমান ও আক্বীদাহ বাঁচানোর তাকীদে হিজরত করেছিলেন। এমন একজন মহান ব্যক্তিত্বের প্রভাব তাঁর সন্তানদের মধ্যেও পড়বে এটাই স্বাভাবিক। বাস্তবিকই তাঁর (আলবানী) মধ্যে এর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। ছোট বেলা পড়া শুনার সুযোগ না পাওয়া, দারিদ্র এসব কোন কিছুই তাঁকে হাদীসের জ্ঞান অর্জন থেকে ফিরাতে পারেনি। তিনি দামেস্কের এক বিখ্যাত লাইব্রেরীতে নিজ গরজে হাদীস শিখেন ও গবেষণা করেন। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এই হিসেবে তিনি প্রচলিত অর্থে কোন মুহাদ্দিস নন বরং সৌখিন হাদীস গবেষক। উনার শিক্ষা জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত কোন বিবরণ পাওয়া যায় না। আমি উইকিপিডিয়াতে বিভিন্ন ভাযায় খুঁজেছি এবং ওখানে দেয়া বিভিন্ন লিংকেও খুঁজেছি। তাতে বিস্তারিত কোন বিবরণ পাওয়া যায় না। বরং বিভিন্ন রকমের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে এখানে একটি লিংক আছে শায়খ আলবানী রহমাতুল্লাহ আলাইহির একটা সাক্ষাতকার সম্বলিত। এটা কতটুকু আথেনটিক আমি নিশ্চিত নই তবে আলবানীর কোন ভক্তের লেখা বলে মনে হয়েছে। এই জন্য এখান থেকেই উদ্ধৃতি দিলাম। এখানে লেখা আছে শায়খ আলবানী একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালিত মাদ্রাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে উনার পিতার দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে আর প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেন নি। যেহেতু উনি মনে করতেন সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান থেকে শরীয়াতের বাস্তব জ্ঞান পাওয়া যায় না। পরবর্তীতে তিনি উনার পিতা এবং আরেক জন উস্তাদ শায়খ সাঈদ বুরহানীর নিকট হানাফী ফিকাহর উপর কিছু কিতাব পড়াশুনা করেন। তিনি উনার পিতার নিকট কুরআন ও তাজবীদ শিখেন এবং একই সময় কাঠ মিস্ত্রীর কাজ শিখেন। এবং এই পেশাতেই কিছু বছর আত্মনিয়োগ করেন। উনার পিতা একজন ঘড়ির মেকার ছিলেন। পরবর্তীতে উনার পিতার সাথে কাজ করেন এবং আরও পরে নিজেই ঘড়ির দোকান দেন। এই হচ্ছে মোটামুটি উনার শিক্ষা জীবন। পরবর্তীতে উনি সিরিয়ার বিখ্যাত এক লাইব্রেরীতে নিজ গরজে হাদীসের বিভিন্ন কিতাব পড়েন ও গবেষণা করেন।
যেহেতু তিনি গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিসদের মানদন্ড অনুসরণ করেন নি তাই উনার গবেষণা প্রচুর ভুলে ভরা।আল্লহ সুবানাহু ওয়া তায়া’লা উনাকে মাফ করুন। উনার ভুলের উপরে ইতিমধ্যেই আরব বিশ্ব সহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে, বিভিন্ন ভাষায় প্রচুর কিতাব রচিত হয়েছে। এমন একটি কিতাবের সার সংক্ষেপ এখানে পাবেন। তবে হাদীস শাস্ত্রে উনার অবদান কম নয়। কিন্তু তাই বলে উনার ভুল কে ওভারলুক করার সুযোগ নেই। বস্তুতঃ উনার ভুল কে চিহ্নিত করাই উনার প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন। কেননা উনার ভুলের উপর মানুষ আ’মাল করলে এই গুনাহ উনার করবে যেতে থাকবে। তাই যারা উনার ভুলকে স্বীকার করে না তারা উনার প্রকৃত মঙ্গলকামী নয়।
উনার ভুলের উপরে একটি পোস্ট দেয়া হয়েছিল এই ব্লগে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি উনার একজন অন্ধ ভক্ত এই ভুলগুলোকে স্বীকার করেন নি। এর কোন খন্ডনও করেন নি। বরং করেছেন মিথ্যাচার। উনি সেখানে বেশ কনফিডেন্টলী বোল্ড অক্ষরে লিখেছেন “সবচেয়ে বড় কথা তিনি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মদীনা ইসলামীক ইউনিভার্সিটির হাদীস বিভাগের প্রধানের দ্বায়ীত্ব পালন করেছেন । তার পড়াশুনার অবস্থা যদি শোচনীয় হয় আর তিনি যদি হাদীসের ব্যাপারে এরকম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এতবড় দায়ীত্ব পান কি করে ?” কিন্তু বাস্তব কথা হল তিনি ১৩৮১ – ১৩৮৩ হিজরী এই তিন বছর সেখানে হাদীস পড়ান পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাঁর সাথে আর চুক্তি নবায়ন না করায় তিনি দামেস্ক ফিরে যান। পরে অবশ্য ১৩৯৫ থেকে ১৩৯৮ হিজরী তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রিম কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তখন শায়খ আবদুল আজীজ বিন বায সৌদির গ্রান্ড মুফতি ছিলেন। এই দুই জনের মানসিকতায় বেশ কিছু মিল ছিল। শায়খ আলবানী মৃত্যু বরন করেন ১৪২০ হিজরীতে। এটাই বাস্তব। অথচ কনফিডেন্টলী লেখা হয়েছে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এবং হাদীস বিভাগের প্রধানের দ্বায়ীত্ব পালন। এভাবেই আহলে মুনকিরে হাদীসের দল কনফিডেন্টলী(!) মিথ্যা বলে। এদের কনফিডেন্ট দেখে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। বাস্তবিক মিথ্যা ছাড়া এদের কাছে খুব কম দলীলই আছে। একই পোস্টে আরও দেখুন “তিনি ‘জামঈয়াতুল ঈসআফ আল খায়রী’ নামক সিরিয়ার একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছেন ।” অথচ ওখানে তিনি শুধু প্রথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেছেন এটা তিনি উল্লেখ করেন নি। এটা তথ্য গোপনের শামিল। আরও বলেছেন, “এছাড়াও তিনি মুহাম্মাদ সাঈদ বুরহানী এবং মুহাম্মাদ বাহযাতুল বায়তার নামক দুজন শিক্ষকের কাছে উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন“। মুহাম্মাদ বাহযাতুল বায়তার এর নাম উনি কোথায় পেয়েছেন একটু জানালে খুশি হতাম। তবে মুহাম্মাদ সাঈদ বুরহানী ও স্বীয় পিতার নিকট উচ্চতর পড়াশোনা নয় বরং কিছু কিতাব পড়েছেন যা মুহাদ্দিস হবার জন্য যথেষ্ট নয়।
এজন্য আবারও অনুরোধ এই সব মিথ্যুকদের কথায় বা তথ্যে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। যে কোন সন্দেহে ভালো আলেমের পরমর্শ গ্রহণ করুন।
এই তথ্যটি আমি রেফারেন্স ছাড়া নিজের থেকে দিয়েছি । এটা স্বীকার করছি । আমার ভুল হতেই পারে । তবে জেনে বুঝে সত্যকে বদলিয়ে দিইনি এটা ঠিক । আমার সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালাই ভাল জানেন ।
আর মুহাম্মাদ বাহযাতুল বায়তার এই নামটি বাংলা অনুবাদকৃত শায়খের লিখা ইসলামে হাদীসের গুরৃত্ব ও মর্যাদা নামক বইয়ের শায়খের জীবনী অংশ থেকে নেয়া ।
@ABU TASNEEM,জ্বী, বাস্তব কথা এটাই। এভাবেই আপনারা রেফারেন্স ছাড়া কনফিডেন্টলী মিথ্যা বেলন। সাধারণ মানুষ আপনাদের কনফিডেন্টএর ধাক্কায় ধোঁকা খায় অনেক সময়। এমন কাজটা শায়খ আলবানীও করতেন। অনেক রেফারেন্স তিনি দিয়েছেন যা পাওয়া যায় নি। পোস্টে যে লংক দিয়েছি ওখানে আরও এমন পাবেন।
@Anonymous,সহমত!