লগইন রেজিস্ট্রেশন

শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী রহ. পদোন্নতি পেলেন

লিখেছেন: ' Anonymous' @ বৃহস্পতিবার, অগাষ্ট ৩০, ২০১২ (১২:১৮ অপরাহ্ণ)

আমাদের এক সহ-ব্লগার ভাই শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী রহ. কে যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস আল্লামা ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করলেন। এরপর রাহি. নামে এক উপসর্গও যোগ করলেন। তবে উনাদের বহুল ব্যবহৃত শায়খ শব্দটি অবশ্য টাইটেলে ব্যবহার করেন নি। করেছেন লেখার মধ্যে। ব্যক্তিপূজা সম্ভবতঃ ইহাকেই বলে। হয়রত আবু বকর রদিয়াল্লহু আ’নহুর সেই ভাষণটির কথা মনে করুন। “যে মুহা’ম্মাদের (সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লা ) পূজা করত সে জানুক ……” বাস্তব কথা হল আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি একজন শৌখিন হাদীস গবেষক ছিলেন। তিনি হাদীস গবেষণার সময় সালাফের (পূর্ববর্তী বুযুর্গ ও শায়েখ গণ) হাদীস গবেষণার পদ্ধতি ফলো করেন নি। খুবই স্বাভাবিক ভাবে তাঁর গবেষনার অমার্জনীয় প্রচুর ভুল ছিল। এব্যপারে শুধু আরব উলামাকেরাম থেকেই পঞ্চাশের অধিক কিতাব লিখিত হয়েছে।

যাইহোক, যারা গত ১০-১২ ধরে আমাদের এই আহলে হাদীস নাম ধারী মুনকিরে হাদীস ভাইদের সম্পর্কে যারা খোঁজ খবর রাখেন তারা জানেন শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি এই অভিধার দ্বারা পদোন্নতি পেলেন। এবং তাদের এক সময়কার বহুল আলোচিত ও সম্মানিত শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর পদাবনতি হল তাদের কাছে। আজ তাদের আলোচনায় শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর কথা খুব কমই আসে। আসে মিডিয়া ও টিভি স্টারদের নাম আর শায়খ নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর নাম। এই ব্লগেই দেখুন নফসপূজারী ভাইদের শুরুর দিকের পোস্টে বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর নাম প্রচুর আসত। এখন দেখুন তেমন একটা আসে না। বিশেষতঃ আমাদের এই সহ-ব্লগার ভাই বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর নামে একটা মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটা কমেন্ট দিয়েছিলেন যে বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি নাকি আট রাকাত তারাবী পড়তেন। এছাড়া উনার লেখা কখনও বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর নাম পেয়েছি মনে পড়ছে না।

২০০১ সাল থেকে এই আহলে মুনকিরে হাদীস ভাইদের সাথে আমার পরিচয়। আমাকে বিভিন্ন জিনিস বুঝাতেন। বিভিন্ন হাদীসের রেফারেন্স দিতেন। শায়খ আলবানী রহ.-এর নবীজির নামায বইটি পড়তে দিয়েছিলেন। দেখালেন যে আসল নামায এই। আর আমরা যে নামায পড়ি তা সবই ভুল। আমাদের নামায হচ্ছে না। পরবর্তীতে বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর নামে প্রকাশিত একখানা চটি বই দিয়ে বললেন হারামাইন শরীফের গ্রান্ড মুফতি এর ফতোয়া দেখুন আলবানী রহ.-এর সাথে পুরাপুরি মিলে যায়। তারা পরিচয় করিয়ে দিতেন বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি এই যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম আর আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি হলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আলেম।

তখন শুধু নামায আর আমাদের সম্মানিত উলামাকেরামের গালাগালির মধ্যেই আহলে নফস ভাইদের কর্মকান্ড সীমিত ছিল। পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন বিষয়ে নফস পূজারী ভাইদের মনমত ইসলামের মাসায়ালা আসতে থাকে যেমন তারাবী আট রাকাত, নেকাব পড়তে হবে না বরং বিদআ’ত, কোন ধরণের নফল নামায ও রোযা রাখতে হবে না কেননা তা দুর্বল হাদীস দ্বারা প্রামাণিত তাই বিদআ’ত, কাফেরদের মত পোষাক আষাক পড়া যাবে কেননা টিভিস্টার জাকির নায়েক পড়েন ইত্যাদি ইত্যাদি। এভাবে অসংখ্য জিনিস বাদ দিয়ে মনমত এক চমৎকার সহজ ইসলাম তারা আবিষ্কার করেন যেখানে মনে যা চায় তাই করা যায় যেহেতু সহীহ হাদীসে কিছু পাওয়া যায় না। এসবের নফসের চাহিদা পূরণ করার ব্যপারে তারা আলবানী রহ.-এর দুর্বল ও অসম্পূর্ণ এবং ভুলে গবেষণার প্রচুর রেফারেন্স খুঁজে পান। একই সাথে জাকির নায়েক ও মতিউর রহমানের মত প্রচুর গলাবাজও খুঁজে পান। পক্ষান্তরে এসবের পক্ষে শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর থেকে কোন রেফারেন্স তারা পান না। বরং তাদের কথাবার্তার উল্টা কিছু ফতওয়া পাওয়া যায়। আজ তাই তাদের দৃষ্টিতে শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর কদর কমে গেছে। আর আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি পেলেন যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীস আল্লামা-এর পদোন্নতি।

বাস্তব কথা হল শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-এর একজন সম্মানিত আলেম ও অভিভাবক। কিছু কিছু ব্যপারে মত পার্থক্য থাকলেও তিনি সারা বিশ্বের উলামাকেরামদের চোখে একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর বিভিন্ন প্রোফাইলে তাঁকে হাম্বালী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তিনি সালাফের অনুসরণ ও গবেষণার পদ্ধতি অনুসরণ করার উপর জোর দিতেন। শায়খ আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি-ও একই লক্ষ্য নিয়ে চলতেন। এজন্য বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি আলবানী রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি কে শ্রদ্ধা করতেন। আমাদের উপমাহাদেশের আলেমরাও আলবানীকে একই কারণে শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি আলবানীর সীমাবদ্ধাতাকে বুঝতে পেরে তাঁকে আর রেকোমেন্ড করেন নি। মূলতঃ একারণেই আলবানী রহ.কে মাদীনা ইউনিভার্সিটি ছাড়তে হয়। তবে আলবানীর সীমাবদ্ধতা ছিল তাঁর অপারগতা, একারণে তাঁকে দোষারোপ করাও নিষেধ করেন উলামা কেরাম। শুধু এতটুকু বলেন যে, তিনি অনুসরণ যোগ্য নন। এছাড়াও সৌদি আরব ও মক্কা মাদীনার উলামা কেরামদের সম্পর্কে এদেশের মানুষের ব্যপক নেক গুমান ও আবেগের কারণে এসব নফস পূজারী আহলে মুনকিরে হাদীস ভাইগণ শায়খ বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি -এর নামে এদেশে সাধারণ মানুষদের ইমোশোনাল ব্ল্যাক মেইলিং করতেন। অন্যথায় তারাও জানতেন যে বিন বায রহ’মাতুল্লহ আ’লাইহি লা-মাযহাবী নন। তিনি আজীবন ২০ রাকাত তারাবী পড়েছেন।

আজ অবশ্য এইসব সৌদি আবেগ ও বুখারী শরীফের নামে ব্ল্যাকমেইলিং হালে পানি পায়না। কেননা আমাদের নামাযের দলীল যেমন বাংলায় এসে গেছে তেমনি শায়খ আলবানীর রহ.-এর ভুলগুলোও এখন মানুষের জানা আছে।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
৪২৩ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৪.৩৩)