হাদীস
লিখেছেন: ' আবদুস সবুর' @ রবিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১১ (১১:১৯ পূর্বাহ্ণ)
হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেছেন, নামাযে এক হাত অপর হাত আকর্ষনপূর্বক নাভীর নিচে বাধবে। (সুনানে আবু দাউদ)
২৮৫ বার পঠিত
লিখেছেন: ' আবদুস সবুর' @ রবিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১১ (১১:১৯ পূর্বাহ্ণ)
হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেছেন, নামাযে এক হাত অপর হাত আকর্ষনপূর্বক নাভীর নিচে বাধবে। (সুনানে আবু দাউদ)
আপনার উল্লেখিত হাদিসটি সুনানে আবু দাউদের ৭৫৮ নং হাদিস (ইস:ফাউন্ডেশন)। এখানে আবু দাউদ (রহ:) হাদিসটির রাভিকে দূর্বল মনে করেছেন।
আপনি কিন্তু তা উল্লেখ করেননি।
পক্ষান্তরে,
সুনানে আবু দাউদের ৭৫৯ নং হাদিস:
আবু তাওবা- তাউস (রহ:) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুললাহ (সা:) নামাজরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা বুকের উপর বেঁধে রাখতেন।
@Mujibur Rahman ভাই, ইমাম তাহাভী তার শারহু মাআনিল আসার গ্রন্থে বলেছেন ইমাম মুহাম্মদ ইবনে সীরিন বলেছেন হাদীসটির সকল রাবী সিকাহ। অতএব, হাদিসটি সহীহ, কমপক্ষে হাসান।
আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্নিত হাদীস কেউ কেউ গ্রহন করতে আপত্তি করেছেন কেবলমাত্র এ কারনে যে, তাতে আবদুর রহমান ইবন ইসহাক আল-কূফী নামক একজন রাবী রয়েছেন যার ব্যাপারে কেবলমাত্র এই আপত্তিটুকু রয়েছে যে তিনি অন্যান্য হাফিযে হাদীসের ন্যায় স্মৃতিশক্তির অধিকারী নন। কিন্তু মুহাদ্দিসগন এটিও বলেছেন যে তার হাদীস লেখার উপযোগী এবং কেউ তার নামে মিথ্যার অভিযোগ আনেননি এবং এই হাদীসটির এই দূর্বলতা যদি মেনেও নেয়া হয় তবুও অন্যান্য হাদীস দ্বারা সমর্থিত হয়ে তা কমপক্ষে হাসান পর্যায়ের।
পক্ষন্তরে,
আপনি সুনানে আবু দাউদের ৭৫৯ নং হাদীস উল্লেখ করেছেন। তার জবাব হল-
আবু তাওবা থেকে আলহায়সামু অর্থাত ইবন হুমায়দ থেকে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা থেকে তাউস (র) তিনি বলেন “রাসূল (সা) নামাজরত অবস্থায় ডান হাত বাম হাতের উপর স্থাপন করে তা নিজের বুকের উপর বেধে রাখতেন।”
প্রথমত : হাদীসটি মুরসাল। এবং অধিকাংশ মুহাদ্দিসের মতে মুরসাল হাদীস যঈফ মারদুদ (দুবল ও বর্জনীয় )। এবং যেহেতু ফিকহের ক্ষেত্রেও আপনারা মুহাদ্দিসেকিরামের মত প্রাধান্য দিচ্ছেন তাই আপনারা এই হাদীস দিয়ে দলীল দিতে পারেন না। এবং দলীল দিতে চাইলেও বলতে হবে হাদীসটি যঈফ। কেননা এটি মুরসাল হাদীস।
দ্বিতীয়ত : হাদীসটির রাবী (বর্ননাকারী) সুলায়মান বিন মুসা মৃত্যুর পূবে স্মৃতিশক্তি লোপজনিত দূবলতায় পড়েছিলেন। তাই তার হাদীস আর সহীহ থাকেনি।
তৃতীয়ত : হাদীসটির সনদ খেয়াল করুন সেখানে বলা হচ্ছে সাওরী থেকে সুলায়মান বিন মুসা। অথচ সাওরী(র) এর মত হল নাভীর নিচে হাত বাধা।
চতুর্থত : আবু দাউদ তার মারাসীলেএ্ই হাদীসাটি সংকলন করেছেন কিন্তু তাতে ছুম্মা ইয়াশুদ্ধু বায়নাহুমা এর স্থলে রয়েছে ছুম্মা ইয়াসবিকু বিহিমা আলা সদরিহি।
এতএব আবু দাউদ গ্রন্থে থাকা বুকের উপর হাত বাধার একটিমাত্র হাদীস তাতেও আবার যঈফের বহু কারন বিদ্যমান। এতএব সমস্ত দিক বিবেচনায় হাদীসটি আবু দাউদের নাভীর নীচে হাত বাধার হাদীসের চেয়ে অধিক দূবল।
@আবদুস সবুর,আমি বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। শুধু বলতে চাই আবু দাউদ (রঃ) ৭৫৮ নং হাদিস সমপর্কে নিজেই প্রশ্ন তুলেছেন আর ৭৫৯ নং হাদিস নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলেননি।
কিনত্তু আপনার বক্তব্যে তার উল্টো মনে হচ্ছে।কারণ আপনি বলেছেন “এতএব সমস্ত দিক বিবেচনায় হাদীসটি আবু দাউদের নাভীর নীচে হাত বাধার হাদীসের চেয়ে অধিক দূবল।”
এজন্য আপনাকে আবু দাউদ (রঃ) এর ওস্তাদ বলা যায় কি?
@Mujibur Rahman ভাই, আমি পুরো বিষয়টি রেফারেন্সসহ উল্লেখ করেছি। এখন আপনি যদি রেফারেন্স বুঝতে না পারেন তাহলে এব্যাপারে চুপ থাকাই আপনার কর্তব্য।
আপনি বিতর্ক করেও বলছেন আমি বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। আপনার বক্তব্য পরষ্পর স্ববিরোধী।
ইমাম তাহাবী (র) এবং আবু দাউদ (র) একই উস্তাদ থেকে পাঠ নিয়েছেন। অতএব, আবু দাউদ (র) কোন রেফারেন্স উল্লেখ করলে আমি তার জবাবে ইমাম তাহাবীর (র) রেফারেন্স উল্লেখ করা দ্বারা ইমাম আবু দাউদ (র)-এর উস্তাদ হয়ে যাই না।
অতএব কথা একটু বুঝে বলুন।
ইমাম আবু দাউদ (র) তার কিতাবে যেসকল পরষ্পর বিরোধী হাদীসের সমাবেশ ঘটিয়েছেন ইমাম তাহাবী (র) সেই সকল হাদীস পর্যালোচনা করেছেন এবং হাদীসগুলোর মান নির্ণয় করেছেন। এর দ্বারা কারো মর্যাদাই খাটো হয়নি। বরং উভয়ই মহান মুহাদ্দিস।
ইমাম তাহাবী (র)-এর অতিরিক্ত গুন তিনি কেবল বড় মাপের মুহাদ্দিসিই নন বরং বড় মাপের একজন ফকীহ।
অতএব আপনার বক্তব্যে এরূপ হল যে, যখন সমস্ত দলীল শেষ হয়ে গেল তখন ব্যক্তিগত আক্রমনে লিপ্ত হলেন। কারন আমি আমার বুঝ দ্বারা ইমাম আবু দাউদ (র)-এর বক্তব্যকে নাকচ করিনি। বরং অন্যান্য ইমাম, মুহাদ্দিস ও ফকিহগনের মতামত ইমাম আবু দাউদ (র)-এর বক্তব্যের ক্ষেত্রে পেশ করেছি।
অতএব আমি তার ওস্তাদ হওয়ার কথাটা একেবারেই বাজে। দয়া করে দলীলগুলো বুঝার চেষ্টা করুন। না বুঝলে দলীলের যে অংশ বুঝে আসেনি সেটি উল্লেখ করুন। ইনশাআল্লাহ আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব। ব্যক্তিগত আক্রমনে লিপ্ত হবেন না।
আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন। আমীন।