হাদীস শাস্ত্রে ইমাম আবু হানীফা (রহ.)
লিখেছেন: ' আবদুস সবুর' @ মঙ্গলবার, জানুয়ারি ১০, ২০১২ (১:৪৫ অপরাহ্ণ)
আজকাল অনেকের মুখেই একটি বিভ্রান্তমূলক কথা শুনা যায়
তা হল ইমাম আবু হানীফা নাকি হাদীস শাস্ত্রে অজ্ঞ ছিলেন!!!!
তারা যে ভুলের মধ্যে আছে তা তাদের জানানোর জন্যই এই পোষ্ট….
1. ইমাম বোখারীর অন্যতম উস্তাদ মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) (মৃতু- 215 হিঃ) যার সনদে ইমাম বুখারী (রহ.) অধিকাংশ ‘সুলাসিয়্যাত হাদীস’ বর্ণনা করেছেন। এই মক্কী বিন ইব্রাহীম (রহ.) ইমাম আবু হানীফা (রহ.) এর ছাত্র। তিনি ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“আবু হানীফা তাঁর সময়কালের শ্রেষ্ঠ আলেম ছিলেন” – মানাক্বেবে ইমাম আজম রহ. 1/95
আবার হাফিয মযযী (রহ.) বলেন: মক্কী বিন ইব্রাহীম ইমাম আবু হানীফা (রহ.) সম্পর্কে বলেন,
“তিনি তাঁর কালের সবচে’ বড় আলিম ছিলেন” – তাহ্যীবুত তাহযীব-এর টিকা- 10ম খন্ড, 452পৃ.
(এখানে একটি কথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে হবে, প্রাচীন আলিমগণ ‘ইলম’ বলতে ‘ইলমে হাদীস’ই বুঝাতেন। তাই ইমাম আবু হানীফা (রহ.) কে বড় আলিম বলার অর্থ- ‘হাদীস শাস্ত্রের বড় আলিম’ এতে কোন সন্দেহ নেই।)
2. ইমাম আবু দাউদ বলেন,
নিঃসন্দেহে আবু হানীফা ছিলেন একজন শেষ্ঠ ইমাম।- তাহজীব 1/445
3. জরহে তাদিলের (সনদ পর্যালোচনা শাস্ত্র) অন্যতম ইমাম ইয়াহ্ইয়া ইবনে মুঈন (মৃতু- 233হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন হাদীস শাস্ত্রের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি”- তাহবীবুত্তাহজীব 5/630
4. আলী ইবনে মাদানী (মৃতু- 234 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা হাদীস শাস্ত্রে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। তার মধ্যে কোন দোষক্রুটি ছিল না। – জামঈ বয়ানিল ইল্ম 2/1083
5. প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাফিজ ইয়াহ্ইয়া বিন হারুন (মৃতু- 206 হিঃ) বলেন,
“আবু হানীফা ছিলেন সমকালীন শ্রেষ্ঠতম জ্ঞানী ও সত্যবাদী” –আহবারে আবু হানীফা 36
6. আল্লামা হাফিয ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ. বলেন-
“ইমাম আবু হানীফা রহ.-র মুত্যু সংবাদ শুনে ফিক্বাহ ও হাদীস শাস্ত্রের সুপ্রসিদ্ধ ইমাম, শাফঈ মাযহাবের প্রধানতম সংকলক হযরত ইবনে জরীহ রহ. গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছিলেন,
“আহ! ইলমের কি এক অফুরন্ত খনি আজ আমাদের হাতছাড়া হলো”। –
তাহযীবুত্তাহযীব খন্ড ১, পৃ: ৪৫০)
6. : একবার হযরত ইয়াহয়া ইবনে মুঈনকে প্রশ্ন করা হলো- হাদীসশাস্ত্রে আবু হানীফা রহ. কি আস্থাভাজন ব্যক্তি? সম্ভবতঃ প্রচ্ছন্ন সংশয় আঁচ করতে পেরে দৃপ্তকন্ঠে তিনি উত্তর দিলেন- হ্যা, অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! অবশ্যই তিনি আস্থাভাজন! (মানাকিবুল ইমামমুল আ’যামি লিলমাওয়াফিক- খন্ড:1, পৃষ্ঠা 192)
আহলে হদসের ফিতনা বাজদের উচিত,এখান থেকে কিছু শিক্ষা নেওয়া।ওরা যেন জাতির জন্য এক মহামারি রুপ ধারন করেছে।
আপনাকে ধন্যবাদ।
একেবারে প্রথমেই যে কথা টি বলতে হয় আমাদের সমাজের ওয়ামে হাদীস ( হাদীসের নিছক ধারনা বাদীদের জন্য ) তা হল বর্তমান যূগের প্রসিদ্ধ হাদিস শাস্ত্রের সর্বজন বিদিত কিতাবগুলো যে আনআনা বা রেওয়ায়েতের ধারাবাহিকতা স্বীকার করেন সে ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফার আনআনা অন্যান্ন ইমামদের তুলনায় কম, আরো খোলাসা করে এভাবেই বলা চলে যে কোন কোন হাদীস ইমাম বোখারী যা ছয়জন ব্যক্তির পরম্পরায় পেয়ে থাকেন তা ইমাম আবু হানিফা দুই কি তিন পরম্পরায় পেয়ে থাকেন।
ইমাম আবু হানীফার জীবনের সাধনা কেবল হাদীস রচনা ভিত্তিক নয়, বরং কোন একটি বিষয়ের হাদীস কোরান ও সমাজের ওরফের ভিত্তিতে তার শরয়ী সমাধান রচনার প্রয়াসই ইমামরে জীবনের অনাবৈদ্য অবদান- সে যূগে হাদীস রচনার প্রয়োজনীয়তার চাইতে এই তাতবীকাত ও সমাধান নির্নয় করাই প্রধান আবেদন ছিল, পরবর্তি সময়ে ঐ সকল বিষয়ের সপক্ষ হাদীসগুলো বর্ননা পরম্পরায় ব্যক্তি সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হাদীস রচনাকারী ইমামদের নিকট জয়ীফ হওয়া স্বাভাবিক, এতে প্রথমযূগের ব্যাক্তির তার নিকট বিশুদ্ধ হাদীস অনুযায়ী সিদ্ধান্তের ভ্রান্তি প্রমানিত হয় না, বরংচ হাদীস সাস্ত্রের জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটানো হয়।
সালাফী- সম্প্রদায় এসব বেসিক বিষয় বুঝতে আগ্রহী নন, তাদের এক কথা ইমাম বোখারী যা বলেছেন তার উপরে আল্লাহর নবীর নামে আর কোন হাদীস বর্ননা করা এ সম্ভব নয়। কথা হল বাপের নাতির কাছে এখন দাদার কাশি শেখতে হবে এই আর কী! ইমাম বোখারী বা সিহাস সিত্তা সংকলকদের সময়কাল ও ইমাম নুমান বিন সাবেত আবু হানীফা রহ এর সময়কাল নিয়ে এসব ব্যাক্তির নুন্যতম জ্ঞান থাকলে এসব অবান্তর কথাবার্তা চালিয়ে যাবার প্রয়োজন হত না।
@আল মুরতাহিল, শুকরিয়া সুন্দর জবাব দিলেন।
@আল মুরতাহিল,আসসালাম ভাই। খুবই সুনদর , Precise reply. But do you have detailed reply for these confusions? Please make DUA for me. U are always in our DUA.