মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি ‘প্রতিশ্রুত ঈসা মসীহ-ইমাম মাহদী’ ?
লিখেছেন: ' আবদুস সবুর' @ বুধবার, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫ (১২:৩৫ অপরাহ্ণ)
কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় ইমাম ও খলিফা, মির্জাপুত্র বশীরুদ্দীন মাহমুদ ১৯১৫ সনে ‘হাকীকাতুন নবুওয়াহ’ নামে একটি বই লিখে প্রচার করেছেন। তিনি এটি কাদিয়ানী লাহোরী গ্রুপের বিরুদ্ধে লিখেছেন এবং তাতে মির্জা সাহেবের স্বতন্ত্র-শরঈ নবী হওয়ার বিষয় ‘দালীলিক’ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। বইটির প্রচ্ছদে বড় অক্ষরে লেখা আছে, ‘প্রতিশ্রুত ঈসা মসীহ-ইমাম মাহদীর নবুওত ও রেসালাত অকাট্য দলীলে প্রমাণিত।’
বইয়ের ১৮৪-২৩৩ পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশ পৃষ্ঠাব্যাপী ‘দলীল-প্রমাণ’ দ্বারা মির্জা সাহেবের নবুওত প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে। সেখানে মূলত লাহোরী গ্রুপের মত খন্ডন করে বিশ প্রকার ‘দলীল’ দেওয়া হয়েছে। তার মাঝে সপ্তম দলীল এমন, ‘খোদ মির্জা সাহেব নিজেকে নবী ও রাসূল বলে উল্লেখ করেছেন এবং সুস্পষ্টভাবে নবুওত ও রেসালাত দাবী করেছেন’।
বইটির কিছু কিছু বক্তব্য আমরা আমাদের পাঠকের সামনেও তুলে ধরছি। এগুলি আমরা মির্জা সাহেবের মূল কিতাবেও পড়েছি। এখানে আলোচ্য বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে ক্ষান্ত হচ্ছি।
১. আমি ঐ আল্লাহর কসম করে বলছি, যার হাতে আমার প্রাণ, তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন এবং আমাকে ‘নবী’ বলে নাম দিয়েছেন। (হাকীকাতুন নুবুওয়াহ, পৃ. ৬৮)
২. আল্লাহর হুকুম অনুসারে আমি একজন নবী। (‘আখবারে আম’ পত্রিকায় ২৬ মে ১৯০৮ঈ.তে প্রকাশিত মির্জা সাহেবের সর্বশেষ চিঠি)
৩. আমাদের দাবি হলো, আমি নবী ও রাসূল। (বদর, ৫ মার্চ ১৯০৮ঈ.)
৪. সুতরাং এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আমার ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী পৃথিবীতে ভূমিকম্প হওয়া এবং নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেওয়া আমার নবুওতের নিদর্শন। স্মরণ রাখা উচিৎ, পৃথিবীর এক এলাকাতে আল্লাহর কোনো রাসূলকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করা হলে অন্য এলাকার অপরাধীরাও তখন পাকড়াও-এর শিকার হয়। (হাকীকাতুল ওহী, পৃ. ১৬২)
৫. বিভিন্ন এলাকায় শতশত পাহাড়ী মানুষ ভূমিকম্পের আঘাতে হতাহত হয়েছে। তাদের কী অপরাধ ছিলো! কোন্ জিনিসকে তারা মিথ্যা মনে করতো! সুতরাং মনে রাখতে হবে, যখন আল্লাহর কোনো নবীকে অস্বীকার করে মিথ্যুক বলার অপচেষ্টা করা হয়, তা বিশেষ কোনো সম্প্রদায় করুক অথবা বিশেষ কোনো ভূখন্ডের অধিবাসীরা করুক, আল্লাহ তাআলা তখন ব্যাপক আজাব ও শাস্তি নামিয়ে দেন। (হাকীকাতুল ওহী, পৃ. ৮-৯)
৬. আল্লাহ তাআলা তাঁর নিয়ম অনুযায়ী কোনো নবী প্রেরণ করার আগ পর্যন্ত আজাব মূলতবি করে রাখেন। … এখন সে নবীর আগমন হয়ে গেছে। তাই তাদেরকে অপরাধের শাস্তি দান করার সময়ও এসে গেছে। (তাতিম্মা হাকীকাতুল ওহী, পৃ. ৫২)
৭. কঠিন আযাব কেবল তখনি আসে, যখন নবীর আগমনের পরও তাকে অস্বীকার করা হয়। কুরআন মাজীদে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, (অর্থ) আমি কখনো কাউকে শাস্তি দেই না, যতক্ষণ না (তার কাছে) কোনো রাসূল পাঠাই।’-সূরা বনী ইসরাঈল, (১৭) : ১৫
তাহলে আসল বিষয়টা বুঝতে এত বিলম্ব কেন যে, পুরো দেশ দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে পরিণত হয়েছে, একের পর এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেই চলেছে। ওহে বেখবর! খোঁজ নিয়ে দেখ, তোমাদের মাঝে আল্লাহ তাআলা হয়ত কোনো নবী পাঠিয়েছেন, যাকে তোমরা অস্বীকার করে চলেছ! (যার ফলে এ-সমস্ত দুর্যোগ তোমাদের পিছু ছাড়ছে না)-তাজাল্লিয়াতে এলাহিয়া, পৃ. ৮-৯
৮. আল্লাহ তাঁর নবীকে বিনা সাক্ষ্যে ছেড়ে দিতে চাননি।-দাফেউল বালা, পৃ. ৮
৯. আল্লাহ তাআলা ‘কাদিয়ান’ অঞ্চলকে প্লেগ মহামারী থেকে রক্ষা করবেন। কেননা এটি তার প্রিয় রাসূলের বিচরণ ক্ষেত্র!-প্রাগুক্ত, পৃ. ১০
১০. প্রকৃত খোদা তিনি, যিনি কাদিয়ানে আপন রাসূলকে প্রেরণ করেছেন। (দাফেউল বালা, পৃ. ১১; মির্জা মাহমুদকৃত হাকীকাতুন নুবুওয়াহ-এর সূত্র অবলম্বনে, পৃ. ২১২, ২১৪)
মির্জা সাহেব এগুলি নিজের ভাষায় ব্যক্ত করেছেন। পাঠক! ইনসাফের সাথে ভেবে দেখুন এবং এসব বাক্যে ভিন্ন কোনো ব্যাখ্যার অবকাশ আছে কি না নিজেই বিচার করুন।
এই দুটি আলোচনা মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর ‘প্রতিশ্রুত ঈসা মসীহ-ইমাম মাহদী’ দাবির সত্যতা সম্পর্কে জানতে আপনাকে সাহায্য করবে…
গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি প্রতিশ্রুত ঈসা আ.?
গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদি?
(মির্যা সাহেবের নবুয়্যাতের দাবি সম্পর্কে খুব শিগগিরই আলোচনা আসছে, আলোচনা দেখার জন্য সাবক্রাইব করে রাখতে পারেন)
গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি প্রতিশ্রুত ঈসা আ.?
https://www.youtube.com/watch?v=w24jwYvnPaI&list=PLEKjfSe2aCmBIxwjPC2s4xX6FnMWRx0jj&index=2
গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কি প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদি?
https://www.youtube.com/watch?v=dmFZn9jQdHk&list=PLEKjfSe2aCmBIxwjPC2s4xX6FnMWRx0jj&index=1
জাযাকাল্লাহ