চেতনার যাতনা : আমেরিকার ইসলাম বিদ্বেষের কারন
লিখেছেন: ' atiqr88' @ শনিবার, জুন ১৪, ২০১৪ (৬:২৩ পূর্বাহ্ণ)
বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি আমেরিকার অভ্যুদয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এ দেশটি প্রথম পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসাবে আত্বপ্রকাশ করে এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। ঠান্ডা যুদ্ধের (COLD WAR) শেষ ভাগে এবং সোভিয়ত ইউনিয়নের পতনের পর আমেরিকা বিশ্বের মহাশক্তিধর রাষ্ট্রে পরিনত হয়। বিশ্বের মোট সামরিক ব্যায়ের দুই পঞ্চামংশ ব্যায় ক্রের এই দেশ। বর্তমানে আমেরিকা বিশ্ব শাষন করছে এবং গোটা বিশ্বের অর্থনীতি,রাজনীতি,ও সাংস্কৃতি নিয়ন্ত্রনের কেন্দ্র বিন্দুতে রয়েছে।
আমেরিকা কোন পুরান সভ্যতা নয়। ১৪৯২ খ্রিষ্টাব্দে ক্রিষ্টেফার কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেন। পৃথীবির তৃতীয় বৃহত্তম –ভূ- খন্ডের অধিকারী আমেরিকার মুল জাতীগোষ্ঠীর কোন শন্ধান পাওয়া যায় না। এশিয়ার রেড ইন্ডিয়ানদের আমেরিকার আদিবাসী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
আমেরিকার কোন নির্দিষ্ট কোন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নেই। ইউরোপকে ভর করে আমেরিকা তার ভাষা ও সংস্কৃতির একটা বলয় তৈরী করে নিয়েছে এবং তার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর আমেরিকা ও ইউরোপীয় সংস্কৃতি মিলে গড়ে উঠেছে আজকের পাশ্চত্য সভ্যতা (western civilization)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে আমেরিকা মানবতার বিরুদ্ধে যেসব ভয়াবহ ও নজীরবিহিন গনবিদ্ধংসী কর্মকান্ড ঘটিয়েছে এবং একতরফা যুদ্ধ পরিচালনা করেছে তন্মোধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য কয়েকটি হল- জাপানের হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পারমানবিক বোমা বিস্ফোরন, ভিয়েতনামা যুদ্ধ,ইরান ও ইরাক যুদ্ধ,বসনিয়ার যুদ্ধ,কসভোর যুদ্ধ,আফগানিস্তান যুদ্ধ,ইরাক যুদ্ধ,ইরাক যুদ্ধ,লিবিয়ার যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষিত আজীবন যুদ্ধ ইত্যাদি।
বর্তমান আমেরিকা তার মিত্রদের নিয়ে মুসলিম বিশ্বকে একতরফা সমস্ত আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেছে। অধিকাংশ যুদ্ধ পরিচালনা করেছে এবং করে চলছে অসহায় মুসলিম জনপদের বিরুদ্ধে। এর পরিনাম অন্যান্যদের চেয়ে তিনগুন বেশী। গত অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে আমেরিকারে দুর্বেত্তায়নের নিয়মিত শিকারে পরিণত হয়েছে মুসলিম জাতি, ইসলাম ধর্ম, মুসলিম সমাজ-সংস্কৃতি,মুসলিম বিশ্বের সম্পদ ও ভুখন্ড। সর্বতভাবে ইসলামী সভ্যতা (islamic civilization)
আমেরিকানরা ভেবেছিল আধুনিক প্রযুক্তি ও শক্তিশালী একটি অর্থনীতি তাদেরকে যুগ যুগ ধরে পৃথীবির চালিকাশক্তির আসনে প্রতিষ্ঠিত রাখবে। এজন্য সবরকম আয়োজনও তারা সম্পন্ন করেছে। জীবনকে রঙ্গীন করে তোলার জন্য যা কিছুর প্রয়োজন তার সবকিছু নিয়ে আমেরিকা মানবজাতির সামনে উপস্থিত হয়েছে । কিন্তু প্রতিষ্ঠিত থাকার লড়াইয়ে একটা ভিন্ন চিন্তার উদ্ভব ঘটান আমেরিকার প্রখ্যাত রাজনীতি বিশেষজ্ঞ স্যামুয়েল ফিলিপস হান্টিংটন – তিনিই সর্বপ্রথম অত্যান্ত বলিষ্ঠভাবে আমেরিকার চিন্তার জগতকে আলোড়িত করেন। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত তার ভিন্নধর্মী রাজনৈতিক বিশ্লেষনমুলক গ্রন্থ THE CLASH OF CIVILIZATION (সভ্যতার দ্বন্দ) এ তিনি গোটা বিশ্ববাসির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন চিন্তার খোরাক যোগান।
হান্টিংটন তার the clash of civilization গ্রন্থে আমেরিকার এক নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে এনে উপস্থিত করেন। বইটিতে তিনি মানবতাবাদী ও নৈতিক মুল্যবোধ উজ্জীবিত সংস্কৃতি সমৃদ্ধ সভ্যতাকে আগামি বিশ্বের নেতৃত্বের আসন দেখেছেন বলে জানিয়ে দেন। প্রযুক্তি আর মজবুত অর্থনীতি যে কেবল ভবিষ্যত বিশ্ব শাষন করার একমাত্র পন্থা নয়। এই ব্যাপারে তিনি তার গ্রন্থে আমেরিকাকে সতর্ক করে দেন। হান্টিংটন বলেন- it is my hypothesis that the fundamental source of conflict in this new world will not be primarily ideological or primarily economic.the great division among humankind and the domainating source of conflict will be cultural nation states will remain the most powerful actors in world affairs, but the principle conflict of global politics will occur between nations and groups of different civilization. The clash of civilization will dominate global politics.the fault lines between civilization will be the battle lines of the future.
স্যামুয়েল পি হান্টংটন যখন বললেন আগামী বিশ্বের রাজনীতির মেরুকরণ হবে সভ্যতা ও সংস্কৃতির দ্বন্দের ভিতর দিয়ে, তখন তিনি পাশ্চাত্বের সামনে একমাত্র প্রতিদ্বন্দী হিসাবে দার করিয়েছেন ইসলামকে। হান্টিংটন অত্যান্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেন,- islams borders are bloody and so are its innards.the fundamental problem for the west is not islamic fundamentalism.it is islam ,a different civilization whose people is convinced of the superiority of thire culture and obsessed with the infeiority of their power.
তাছাড়া হান্টিংটনের এমন বক্তব্যের বহুকাল আগে প্রথিতযশা দার্শনিক জর্জ বার্নাড’শও ইসলাম সম্পর্কে ইউরোপকে এই বলে সতর্ক করে দেন যে,- if any religion had the chance of rulling over england,any europe within the next hunded years,it could be islam.পৃথীবির ভবিষ্যৎ শক্তি হিসেবে টিকে থাকার উচ্চাভিলাষ আমেরিকাকে হান্টিংটনের the clash of civilization তত্তটি বিশেষভাবে মুল্যায়ন করতে বাধ্যা করে। তাই আজ ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের শিক্ষা,সমাজ,সংস্কৃতি,রাজনীতি,অর্থনীতি ও বিশ্ব্বাসের ধ্বংস সাধন করা আমেরিকার প্রধান টার্গেট। আমেরিকা কি পারবে সভ্যতা ও নৈতিকতার এই লড়াইয়ে জয়ী হতে।