হাদিস বিষয়ে আমার অনুরোধ
লিখেছেন: ' সাদাত' @ রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১০ (৬:০০ অপরাহ্ণ)
আজকাল কিছু বিষয় খুব চোখে পড়ছে:
১. কুরআন-অনলিদের হাদিসকে ইসলাম পরিপন্থী প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা।
২. কেউ কেউ শুধু সহিহ হাদিসের পক্ষে। তবে তর্কের প্রয়োজনে কোন কোন সহিহ হাদিসও নির্দ্বিধায় অগ্রাহ্য করতে তারা কুন্ঠিত নন।
কুরআন-অনলিদের আমার কিছু বলার নেই।
কিন্তু যারা সুন্নাহ বা হাদিসকে কিছুটা হলেও স্বীকার করেন, তাদের কাছে অনুরোধ:
১. আমাদের জানার সীমাবদ্ধতা অনেক। অজানার কোন সীমা নেই। কাজেই কোন হাদিসকে বিসর্জন দেবার আগে একটু সময় নিন। হয়ত আপনার যুক্তিগ্রাহ্য কোন উত্তর আপনি পেতেও পারেন।
২. হাদিস/ইসলাম বিশারদদের অকর্মণ্য ভাববেন না। মনে করবেন না। এই যে প্রশ্নগ্রলো আমাদের সামনে এসেছে, আসলে এগুলোর কোন উত্তর কোথাও দেওয়া হয় নাই। আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের অকূল সমুদ্রে ভাসিয়ে যান নাই। আমাদের কাজ হবে তাদের সেই রেখে যাওয়া সম্পদগুলো আহরণ করা।
৩. হাদিস অস্বীকার করার পরিণতি শেষমেষ কুরআন অস্বীকারেই যাবে, এটা বিচক্ষণ যেকেউ বুঝতে পারবেন। এটা বুঝতে হলে কুরআন কিভাবে আমাদের কাছে এসেছে এটা নিয়ে একটু পড়াশোনা করুন। কাজেই একটু চিন্তা করুন আমার কোন কথা বা কাজ যদি কুরআন-অনলিদের এই ফিতনার পালে হাওয়া দেয়, তবে এর জন্য আমাকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।
৪. আমার বিচার-বুদ্ধিই যদি হাদিস যাচাইয়ের মানদন্ড হয়, তবে এত ইসনাদের কী প্রয়োজন ছিল?
৫. আপাত: দৃষ্টিতে কোন হাদিস কুরআন পরিপন্থী হলেই, সেটাকে কুরআন পরিপন্থী সাব্যস্ত না করি। আরও দেখি, যারা জানে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করি, তাহলেই প্রকৃত তথ্য বের হয়ে আসবে। হয়ত এমনও হতে পারে যেটাকে আমি কুরআন পরিপন্থী মনে করছিলাম, সেটা মোটেই কুরআন পরিপন্থী নয়।
[ নিজেদের মধ্য কামড়াকামড়ি দেখলে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। আজ অনেক কিছুই পোস্ট করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু মন ভাল লাগছে না। আজ আমাদের ঐক্য দরকার, বিচ্ছিন্নতা নয়।]
সহমত।
আমাদেরকে আমাদের কর্ম ও সময় সময় সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খানুরূপে জবাব দিহি করতে হবে। সেজন্য আমাদেরকে আমাদের সময় সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। যেখানে আমাদের জ্ঞানের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে, সেখানে এমন বিষয় যা বর্তমান সময়ে কোন উপকারে আসবেনা, সেসব নিয়ে অহেতুক তর্ক-বিতর্ক করা এবং এ ধরণের বিষয় উপস্হাপন করা উচিত নয়।
সহমত।
যে কোন আলিমের গবেষনা লব্দ কোন বিষয় গ্রহণ করে, আমাদের পুর্বপুরুষদেরকে বিভিন্ন ট্যগিং করার আগে (যেমনঃ ন্যারো মাইন্ড ইত্যাদি) এ সকল আলিমের প্রোপার্টিজ দেখা উচিত। এক্ষেত্রে হাদিসের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।
সহমত।
শুধু তর্ক-বিতর্ক করার জন্য বিতর্কিত কোন বিষয় উপস্হাপন করা উচিত নয়। তাছাড়া এসব ব্যপারে মোফাসসির, ফকিহ, মুহাদ্দিসগণ আগেই গবেষনা করে যার যার মতামত দিয়ে গেছেন। এসকল ব্যপারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। এবং এসব লিখা ইগনোর করা উচিত।
সহমত।
শুধু শুধু খুঁত বের করার কাজে সময় নষ্ট না করে, আমাদের আক্বিদা ও আমল গত জ্ঞান অর্জনে মনোযোগী হওয়া উচিত।
সহমত।
আমরা খুব বড় গলায় এ কথা প্রকাশ করে থাকি যে, আমি সহীহ হাদীস ও কুরআন ছাড়া কিছু মানিনা, আমরা কোন আলিম মানিনা। অথচ আমরা এতটাই বেকুব যে, এটা একবার ও ভাবিনা যে, যারা হাদিসগুলোকে আমাদের সামনে উপস্হাপন করেছেন, ব্যাখ্যা করেছেন, কোরআনের তাফসীর করেছেন তারা কি আকাশ থেকে নেমে এসেছেন? উনারাওতো আলিম। অদ্ভুদ মন-মানসিকতা আমাদের।
সহানুভুতি জানাই। এই দুঃখে পোস্ট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ধীরে ধীরে। আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। আমিন।
@দ্য মুসলিম, সহমত ।
সহানুভুতি জানাই। এই দুঃখে পোস্ট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি ধীরে ধীরে। আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। আমিন।
আগ্রহ হারাবেন না । মেজোরিটি না হোক , অন্তত একজনও যদি আমাদের কথা বুঝতে পারে সেটাই সফলতা । তবে এটাও ঠিক “সফলতা” এখানে না আসলেও , আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা আমাদের নিয়ত দেখবেন । সুতরাং কার প্রচেষ্টা কবুল হয় সেটা আগেই বলা যায় না । তাই হতাশ না হয়ে আরো শক্ত করে লিখতে থাকুন ।
@হাফিজ,
ইনশাআল্লাহ।
ব্লগে আমার আগমন আসলে এই একটা উদ্দেশ্যেই। তানা হলে এ পথে কখনোই পা মাড়াতাম না। “সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ ” এটি একটি অপরিহার্য বিষয়। বিভিন্ন সমস্যা ও পারিপার্শিকতার কারনে হয়তোবা এ দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করতে পারিনা, আর সেজন্যই আমার এই ব্লগ ভুবনে আগমন।
দোয়া করবেন।
@দ্য মুসলিম, ইনশাল্লাহ পরিস্হিতি পরিবর্তন হবে । আসলে এখানে বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে তরুনরা এসেছে , যারা আবেগের বশবর্তি হয়ে অনেক কমেন্ট করে থাকে । আপনি , সাদাত এবং অন্যান্য যে ভাইরা আছেন , যাদের বেসিক এবং সাথে সাথে বিস্তারিত ইসলাম সম্বন্ধে কিছুটা হলেও ধারনা আছে , তারা ধৈর্য ধরে লেগে থাকলে সুফল বয়ে আনবে ।
তবে আমি মনে করি কর্তৃপক্ষেরও কিছু এদিকে দৃষ্টি রাখা উচিত । বিশেষ করে , যে বিষয়গুলো মতভেদ হয় সেগুলো প্রশ্ন উত্তর আকারে আলেমদের থেকে মতামত নিয়ে ব্লগে প্রকাশ করা উচিত । তাহলে আমরাও কিছু জানতে পারলাম , সাথে সাথে মতভেদ পূর্ন বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতেও সবারও সুবিধা হবে ।
ভালো লাগ্লো কথাগুলো। ধন্যবাদ।
@সাদাত,
আপনার বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ন সহমত ।
এভাবে কোনো হাদিস শরীফ দেখে কোনো সিদ্ধান্তে আসা খুব কঠিন । কেননা হাদিস শরীফও কোরান শরীফের মতো পর্যায়ক্রমে সাহাবীগন শুনেছেন এবং আমল করেছেন । অনেক সময় এমন হয়েছে পরের হাদিস শরীফ আগের হাদিস শরীফকে মনসুখ করে দ্যায় । যেমন প্রথমদিকে নামাজে “সালাম” দেয়া যেত , যেটা পরবর্তিতে নিষেধ হয়ে গেছে । এখন কেউ পূর্বের হাদিস শরীফ দেখল এবং সাথে সাথে বলল নামাজে সালাম দেয়া যায় , তাহলে সেটা হবে চরম ভুল । কেননা এই হাদিস শরীফগুলো সহীহ হলেও , আমাদের বুঝতে হবে এগুলোর আমল রহিত হয়ে গেছে । ঠিক যেমন “কোরানের” যে আয়াতে দেখা যায় নামাজ ছাড়া অন্যান সময় শরাব পান করা যেত, যেটা প্রথম দিকে অনুমোদন থাকলেও পরবরর্তিতে নিষেধ হয়ে গেছে ।
কোরান শরীফ এর কোনো আয়াত বা কোনো বিষয়ে একটি হাদিস শরীফ দেখে সিদ্বান্তে আসা চরম বোকামি । কেননা কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত সকল আয়াত শরীফ , হাদিস শরীফ , সাহাবীদের আমল ইত্যাদি বিচার বিশ্লেষন করেই একমাত্র সিদ্বান্ত আসা যায় । এবং সেগুলোর বিচার বিশ্লেষন আমরা পাই আলেম , মুজতাহিদ , মুহাদ্দিস এনাদের মাধ্যমে ।
যেকোনো বিষয়ে পড়াশুনা করার একটি সিস্টেম আছে । ইসলাম বিষয়ক পড়াশুনার একটি সিস্টেম আছে । সেই সিস্টেমটা জানা উচিত। আমি যেকোনো বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারি সেটা দোষের নয়, কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না ইসলামের যেকোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার জন্য যোগ্যতা দরকার । সেই যোগ্যতা আছে কিনা সেটা ভেবে দেখা দরকার।
হাদিস/ইসলাম বিশারদদের অকর্মণ্য ভাববেন না। মনে করবেন না। এই যে প্রশ্নগ্রলো আমাদের সামনে এসেছে, আসলে এগুলোর কোন উত্তর কোথাও দেওয়া হয় নাই। আমাদের পূর্বপুরুষরা আমাদের অকূল সমুদ্রে ভাসিয়ে যান নাই। আমাদের কাজ হবে তাদের সেই রেখে যাওয়া সম্পদগুলো আহরণ করা।
সহমত
সুন্দর লেখা ,ভবিষ্যতে আরো লিখবেন ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ।
ভবিষ্যতে আরো সুন্দর লিখবেন ধন্যবাদ