কৌতুক: নিজে নিজে ডাক্তারি
লিখেছেন: ' সাদাত' @ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২২, ২০১০ (১২:০৪ অপরাহ্ণ)
দুই বন্ধু খুব কঠিন এক অসুখে আক্রান্ত হলো। মাস কয়েক পর দুজনের দেখা হলো। একজন পরিপূর্ণ সুস্থ, আরেকজন মুমূর্ষ।
মুমূর্ষ বন্ধু: দোস্ত কী ব্যাপার! তুই সুস্থ হলি কীভাবে ?
সুস্থ বন্ধু: আলহামদুলিল্লাহ! আমি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে গেলাম। উনি সব কিছু পরীক্ষা করে আমাকে একটা প্রেসক্রিপশন দিলেন। আমি সে অনুসারে ঔষধপত্র খেয়ে আল্লাহর রহমতে এখন সুস্থ।
মুমূর্ষ বন্ধু: বলিস কী? মাত্র একজন ডাক্তার দেখিয়েই সুস্থ হয়েছিস!
সুস্থ বন্ধু: কেন? অবাক হবার কী হল? তুই কী ডাক্তার দেখাস নাই?
মুমূর্ষ বন্ধু: কী যে বলিস? কোন ডাক্তার দেখাতে কি আর বাকী রেখেছি নাকি!
সুস্থ বন্ধু: এত ডাক্তার দেখাবার কী দরকার ছিল?
মুমূর্ষ বন্ধু: আমি সব ডাক্তারদের শ্রদ্ধা করি, সব ডাক্তারকে মানি।
সুস্থ বন্ধু: আচ্ছা ডাক্তাররা কী করলেন?
মুমূর্ষ বন্ধু: কী আর করবে! প্রত্যেকে একটা করে প্রেসক্রিপশন দিল।
সুস্থ বন্ধু: তারপর তুই কী করলি?
মুমূর্ষ বন্ধু: সবগুলো প্রেসক্রিপশন যাচাই বাছাই করে যেসব ঔষধ ঠিক মনে হয়েছে, সেগুলো নিয়ে একটা প্রেসক্রিপশন বানালাম। তারপর সে অনুসারে ঔষধপত্র খাচ্ছি।
সুস্থ বন্ধু: বলিস কী? এই করেছিস?
মুমূর্ষ বন্ধু: হ্যাঁ।
সুস্থ বন্ধু: তোর কান্ড দেখে তো মনে হচ্ছে, তুই ডাক্তারদের চেয়েও বড় ডাক্তার!
মুমূর্ষ বন্ধু: কেন?
সুস্থ বন্ধু:তুই নিজেই যখন ডাক্তারদের প্রেসক্রিপশন যাচাই বাছাই করতে পারিস, খামাখা ডাক্তারদের কাছে গিয়েছিলি কেন? নিজেই প্রেসক্রিপশন বানাতি!!
মুমূর্ষ বন্ধু: আমি তো সব ডাক্তারের কথাই মান্য করলাম।
সুস্থ বন্ধু: তুই আসলে কোন ডাক্তারকেই মানিস নাই।
হাহা। কৌতুকটা ভাল লাগলো।
মুমূর্ষ বন্ধু: কী যে বলিস? কোন ডাক্তার দেখাতে কী আর বাকী রেখেছি নাকি!
এখানে দ্বিতীয় “কী” এর পরিবর্তে “কি” হবে। বাকি সব “কী” ঠিক আছে।
@এস.এম. রায়হান,
আসলেই ভুল হয়ে গেছে।
ঠিক করে দিচ্ছি। ধন্যবাদ!
সাদাত,
তাও তো এক বন্ধু “বহু ডাক্তারের” কাছে গিয়েছে । অনেকে “ফার্মাসির” বা ওষুধের লিস্ট নিয়ে বসে পড়ে এবং গবেষনা করে দেখে কোন অষুধের গুনাগুন এর সাথে তার রোগের মিল আছে , বোঝেন এবার ।
মজা পেলাম।
হা: হা:, পড়ে আমিও মজা পেলাম। তবে সব কৌতুকেই তিনজন থাকে, এখানে তৃতীয় জনকে পাওয়া গেলনা। তৃতীয় জনের কাহিনী শুনেন -
-তোমাদের আরেক বন্ধু কই?
-মারা গেছে।
-কেমনে?
-আরে গেছিল ওদের গ্রামের মূর্খ কবিরাজের কাছে, লাথি আর ঝাটার বাড়ির সাথে কি এক ওষুধ দিছে, খেয়ে আর এক সপ্তাহও বাঁচে নাই।
-সর্বনাশ, হাসপাতালে গেলনা কেন?
-ওর বাপ দাদা তো ঐ কবিরাজেরই কাছে চিকিৎসা নিত।
-এটা কোন কথা? এই আধুনিক চিকিৎসার যুগে এই কাজ কেউ করে?
- কি করব ভাই? ওর একই কথা – “বাপ-দাদার কবিরাজী লাথি-ওষুধই খাব, মরি-বাঁচি এইটা বড় ব্যাপার না, বড় ব্যাপার কার ওষুধ খাচ্ছি”
-আহারে, আল্লাহ মানুষটার ভাল করুক।
@মনপবন, সুন্দর বলেছেন ।
কবিরাজ এবং ডাক্তারের মধ্যে পার্থক্য হোলো :
ডাক্তাররা সাধারনত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা অর্জন করে , তাদের নির্দিষ্ট অনেকে প্রফেসর শিক্ষক থাকে , তাদের মধ্যে একটি চেইন বা সূত্র থাকে , অর্থ্যাৎ এক ডাক্তার যে গবেষনা করে থাকে অন্য ডাক্তার সেই গবেষনা অনেক দুর এগিয়ে নিয়ে যায় । অর্থ্যাৎ অনেক ডাক্তার মিলে যে আবিস্কার বা কাজ করে যায় , পরবর্তিতে আরো ডাক্তার এসে সেটা এগিয়ে নিয়ে যায় । কোনো ডাক্তার এমন কিছু আবিস্কার করে না যেটা আর সব ডাক্তারের কাজকে ভুল প্রমানিত করে । বরং সেটা সহায়ক হয় , আবিস্কারকে আরো গতিশীল করে ।
কবিরাজ সাধারনত কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে না । তার কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষক থাকে না । সে নিজে নিজে বই পড়ে যেটা বোঝে সেটাই “জীবনের শেষ চিকিৎসা” হিসেবে চালিয়ে দেয় । কবিরাজের কাজের মধ্যে কোনো সমন্বয় বা চেইন থাকে না । সে টুটা ফাটা যে অষুধ বের করেছে , তার নিজস্ব মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তাধারা , কোনো সাইন্টিফিক ডেফিনিশন নেই । সে যেটা আবিস্কার করে ( তার দাবী অনুযায়ী সেটা আবিস্কার , আসলে কিছুই নয় ) সেটার সাথে অন্য কবিরাজের আবিস্কারেরে কোনো মিল নেই । তার আবিস্কার বা কাজকে অন্য কোনো কবিরাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না , কেননা সেটা সিসটেমেটিক নয় । সে দাবী করে “সে এমন কিছু আবিস্কারে করেছে যা আগের সব কাজকে ভুল প্রমানিত করেছে” , আসলে ঠিক নয় , সে নিজেই ভুল করেছে, যদিও সাময়িকভাবে সে তা বুঝতে পারে না ।
আমাদের দায়িত্ব “ডাক্তার” এবং “কবিরাজের” মধ্যে পার্থক্য বোঝা ।
@মনপবন,
তো ডাক্তার আর কবিরাজের পার্থক্যটা বুঝলেই পুরা ব্যাপারটা সহজ হত।
খোঁচা এবং পাল্টা খোঁচা দুটোই উপভোগ্য হয়েছে।
ব্লগে তো দেখি বিনোদনের অভাব নাই। গ্যালারিতে বসেই ছিলাম, কিন্তু ওদিকে ওরা তিনজন যেন কি নিয়ে ঝগড়া করছিল….
-আমি বলছি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান।
-আর আমি বলছি স্বাধীনতার ঘোষক শেখ মুজিব।
-আরে না স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক হচ্ছে এম. এ হান্নান। তিনিইতো সর্বপ্রথম স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেছিলেন।
তাদের উক্ত বিতর্ক শুনে চতুর্থ ব্যাক্তি হাজির হল।এবং তাদের বিতর্কের বিষয় শুনে তিনি বললেন, দেখ তোমরা স্বাধীনতারও প্রায় ২০-২৫ বছর পর জন্মগ্রহন করেছ। হয়ত বলবে এখনতো স্বাধীনতার অনেক দলীলপত্র প্রকাশিত হয়েছে, স্বাধীনতা নিয়ে অনেক গবেষনা হয়েছে। কিন্তু শুধু দলীলপত্র, গবেষনা আর বই-কিতাব দেখে তখনকার সময়ের সঠিক তথ্য জানা অনেকটাই কঠিন। তাই এইসব দলীলপত্র গবেষনা থাক, সত্যটা জানতে চলো আমরা এমন ব্যক্তির নিকট যাই যিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের নিকটবর্তী সময়ের, যিনি ছিলেন তখনকার পরিবেশ-পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অধিক অবগত।
@মাহমুদ,