খিলাফাত : আল্লাহপাকের ওয়াদা এবং আমাদের দায়িত্ব
লিখেছেন: ' সাদাত' @ শুক্রবার, মে ১৪, ২০১০ (৩:০০ অপরাহ্ণ)
আল্লাহপাক আল-কুরআনে বলছেন:
وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُم فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
[সূরা নূর: আয়াত ৫৫]
অর্থ:
তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে [ঈমান আনে]ও সৎকর্ম করে,
আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে,
তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব [খিলাফাত] দান করবেন।
যেমন তিনি শাসনকর্তৃত্ব [খিলাফাত] দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে
এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে, যা তিনি তাদের জন্যে পছন্দ করেছেন
এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন।
তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না।
এরপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে, তারাই অবাধ্য।
কাজেই,
আল্লাহপাক খিলাফাতের ওয়াদা করেছেন।
কাদের জন্য ওয়াদা করেছেন? যারা ঈমান আনে এরং নেক আ’মাল করে তাদের জন্য।
আল্লাহপাকের শর্ত হচ্ছে ঈমান এবং নেক আ’মাল। এখানে কি আল্লাহপাক আমাদের শক্তি/সংখ্যাধিক্যকে বা অন্য কোন কিছুকে শর্ত করেছেন?
আল্লাহপাক বলছেন:
তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে [ঈমান আনে]ও সৎকর্ম করে,
আল্লাহ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে,
তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব [খিলাফাত] দান করবেন।
যেমন তিনি শাসনকর্তৃত্ব [খিলাফাত] দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে।
প্রশ্ন: পূর্বে কাদেরকে আল্লাহপাক খিলাফাত দান করেছিলেন:
قَالُواْ أُوذِينَا مِن قَبْلِ أَن تَأْتِينَا وَمِن بَعْدِ مَا جِئْتَنَا قَالَ عَسَى رَبُّكُمْ أَن يُهْلِكَ عَدُوَّكُمْ وَيَسْتَخْلِفَكُمْ فِي الأَرْضِ فَيَنظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُونَ
[৭:১২৯]
অর্থ:
তারা [মুসা(আ.) এর কাওম] বলল, আমাদের কষ্ট ছিল তোমার আসার পূর্বে এবং তোমার আসার পরে। তিনি [মুসা(আ.)] বললেন, তোমাদের পরওয়ারদেগার শীঘ্রই তোমাদের শক্রদের ধ্বংস করে দেবেন এবং তোমাদেরকে দেশে প্রতিনিধিত্ব[খিলাফাত] দান করবেন। তারপর দেখবেন, তোমরা কেমন কাজ কর। [৭:১২৯]
আমরা জানলাম,
পূর্বে হযরত মুসা(আ.) এর কাওমকে ও আল্লাহপাক খিলাফাত দানের ওয়াদা করেছিলেন। [আর আল্লাহপাক সে ওয়াদা অবশ্যই পূরণও করেছিলেন।]
প্রশ্ন: মুসা(আ.) এর কাওমকে কী অবস্হায় আল্লাহপাক শাসনক্ষমতা দিয়েছিলেন:
وَأَوْرَثْنَا الْقَوْمَ الَّذِينَ كَانُواْ يُسْتَضْعَفُونَ مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا الَّتِي بَارَكْنَا فِيهَا وَتَمَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ الْحُسْنَى عَلَى بَنِي إِسْرَآئِيلَ بِمَا صَبَرُواْ وَدَمَّرْنَا مَا كَانَ يَصْنَعُ فِرْعَوْنُ وَقَوْمُهُ وَمَا كَانُواْ يَعْرِشُونَ
[৭:১৩৭]
অর্থ:
আর যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তাদেরকেও আমি উত্তরাধিকার দান করেছি এ ভুখন্ডের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের যাতে আমি বরকত সন্নিহিত রেখেছি এবং পরিপূর্ণ হয়ে গেছে তোমার পালনকর্তার প্রতিশ্রুত কল্যাণ বনী-ইসরাঈলদের জন্য তাদের ধৈর্য্যধারণের দরুন। আর ধ্বংস করে দিয়েছে সে সবকিছু যা তৈরী করেছিল ফেরাউন ও তার সম্প্রদায় এবং ধ্বংস করেছি যা কিছু তারা সুউচ্চ নির্মাণ করেছিল।
[৭:১৩৭]
وَنُرِيدُ أَن نَّمُنَّ عَلَى الَّذِينَ اسْتُضْعِفُوا فِي الْأَرْضِ وَنَجْعَلَهُمْ أَئِمَّةً وَنَجْعَلَهُمُ الْوَارِثِينَ
وَنُمَكِّنَ لَهُمْ فِي الْأَرْضِ وَنُرِي فِرْعَوْنَ وَهَامَانَ وَجُنُودَهُمَا مِنْهُم مَّا كَانُوا يَحْذَرُونَ
[২৮;৫,৬]
অর্থ:
দেশে যাদেরকে দুর্বল করা হয়েছিল, আমার ইচ্ছা হল তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার, তাদেরকে নেতা করার এবং তাদেরকে দেশের উত্তরাধিকারী করার।
এবং তাদেরকে দেশের ক্ষমতায় আসীন করার এবং ফেরাউন, হামান ও তাদের সৈন্য-বাহিনীকে তা দেখিয়ে দেয়ার, যা তারা সেই দুর্বল দলের তরফ থেকে আশংকা করত।
[২৮:৫,৬]
আমরা জানলাম, আল্লাহপাক মুসা(আ.) এর কাওমকে এমন অবস্থায় শাসনক্ষমতা দিয়েছিলেন যখন তারা দুর্বল ছিল।
এখন আমাদের চিন্তা করার বিষয়:
আমরা সে বিষয় নিয়ে খুব চিন্তিত যে বিষয়ের ওয়াদা আল্লাহপাক করেছেন যদি ও আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহপাক কখনও ওয়াদা ভঙ্গ করেন না, কিন্তু ওয়াদা পূরণের জন্য আল্লাহপাক যে পূর্বশর্ত রেখেছেন সে বিষয়ে আমাদের প্রচেষ্টা কতটুকু?
প্রত্যেকে নিজ নিজ মসজিদের দিকে লক্ষ করি, জুমআর সময় মসজিদ ভরে যায়,
এই লোকগুলো তো সবাই ফজরের পর হঠাৎ করে আগমন করে নাই
এবং
আসরের পর হঠাৎ করে বিদায় ও নেয় নাই।
তাহলে ফজর আর আসরে মসজিদের এই হাল কেন?
আসুন আমরা প্রত্যেকে চেষ্টা করি মসজিদগুলোকে প্রতি ওয়াক্তে জুমআর মত ভরে তুলতে।
আমরা আমাদের দায়িত্বটুকু পালন করি। আল্লাহপাকের ওয়াদা অবশ্যই পূরণ হবে।
সবাই আলোচনা করছে গনতন্ত্র ও খিলাফত নিয়ে , আপনি শুধুমাত্র কোরআন শরীফের আয়াত দিয়ে দলীল দিলেন ।
তবে এখানে একটি বিষয় সবারই মনে রাখা উচিত , ইসলামে রাষ্ট্রব্যবস্হা খেলাফত হলেও , এর অর্থ এই নয় বুঝে না বুঝে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে হবে । খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার সুন্নত পদ্ধতি আছে । সেটা না বুঝে অশান্তি সৃষ্টি করা যাবে না ।
@হাফিজ,
এটা খিলাফাত সংক্রান্ত কোন চুড়ান্ত মতামত নয়। খিলাফাত প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথক কোন মেহনতের দরকার নেই এটা প্রমাণ করাও আমার উদ্দেশ্য না।
আমার বক্তব্য হল যতটুকু আমাদের সাধ্যের ভেতর, যা আমাদের কাছে চাওয়া হয়েছে, আমাদের উচিত সেই দিকে মনযোগ দেওয়া। সেখান থেকে আমাদের কাজ শুরু করা উচিত।
মানুষের ঈমান আ’মাল সহি করার চেষ্টা এমন একটা কর্মকান্ড যাতে বাধা দেবার কেউ নেই অথচ এতে রয়েছে আল্লাহপাকের অপ্রতিরোধ্য এক ওয়াদা [খিলাফাত]।
‘পরিমার্জিত গণতন্ত্র’ এর পক্ষে যারা
অথবা
‘প্রচলিত গণতন্ত্র’ এর বিপক্ষে যারা
সবারই কাম্য কিন্তু কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক খিলাফাত(খিলাফাহ)।
সেই খিলাফাতের ওয়াদা আল্লাহপাক করেছেন আমাদের ঈমান আ’মালের শর্তসাপেক্ষে।
এই শর্ত পুরা করার জন্য যে মেহনত প্রয়োজন আমরা সেটা পুরা করা আমাদের সাধ্যের ভেতর। কাজেই আমরা আমাদের সাধ্যের ভেতরের কাজটুকুর ব্যাপারে আগে মনযোগী হই।
[একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেই, ঈমান আ'মালের মেহনত কেবল প্রচলিত তাবলিগের মাধ্যমেই করতে হবে, এটা বলা কিন্তু আমার উদ্দেশ্য না।]
@সাদাত,
এটা খিলাফাত সংক্রান্ত কোন চুড়ান্ত মতামত নয়। খিলাফাত প্রতিষ্ঠার জন্য পৃথক কোন মেহনতের দরকার নেই এটা প্রমাণ করাও আমার উদ্দেশ্য না।
জ্বী আমিও বুঝতে পেরেছি এটা আপনার চুড়ান্ত মতামত নয় , তবে অনেকেই এতে ভুল বুঝে তাই পয়েন্টগুলো উল্লেখ করলাম ।
সুন্দর লিখেছেন,
। আলহামদুলিল্লাহ, বহুদিন যাবৎ আপনার লিখা পাচ্ছি না কেন ?