নারী স্বাধীনতা ও অধিকার বনাম পরকালে নারীদের মুক্তি – ১ + ২ ।
লিখেছেন: ' দেশী৪৩২' @ শনিবার, অক্টোবর ১৬, ২০১০ (১২:২০ পূর্বাহ্ণ)
বহুদিন থেকেই আমাদের দেশেও নারী অধিকার ও নারীমুক্তি নিয়ে খুবই আলোচনা ও গবেষনা হচ্ছে।ইদানিং বহু আলেম ওলামা নামধারী ব্যক্তিরাও এই আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন।কেউ কেউ ইসলামের নামে রাজনীতি করেন তাই ভোটের জন্য বাধ্য হয়েই ধর্মহীনদের চেয়েও কিভাবে নারীদের বেশী সুযোগ ও অধিকার দেয়া যায় তার চেষ্টায় ব্যস্ত।এখন আমার প্রশ্ন আমরা যারা ইসলাম ধর্ম পালন করি তা কি শুধু স্বার্থ আর অধিকার আদায়ের জন্য ? এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামে পুরুষের যদি নারীদের চেয়ে বেশী অধিকার দেয়া হয় তাহলে মোসলমান পুরুষরাও এত ধর্মবিমুখ কেন বা সেকুরারিজমের প্রতি এত দরদ কেন ? ইউরোপে বর্তমানে পশু পাখিদের যে অধিকার দেয়া আছে তার অনেক কিছু আমাদের দেশের নারীদের কেন অনেক পুরুষেরও নেই।তাছারা নরীদের যে অধিকার দেয়া আছে তার জ্বালায় পাশ্চাত্যের প্রতিটা পুরুষ কেন, তার মাতা(নারী)ও ক্রন্দন করে। বিয়ের দুই বৎসরের মধ্যে অর্ধেকের বেশী বিয়ে ভেঙ্গে যায়। এখন ইসলামের নামে এসব সুবিধাভুগী নারীদের ভোট কিভাবে নেয়া সম্ভব ? ইসলামের কোন দর্শন দিয়ে আপনি এসব মহিলাদের আরোও বেশী অধিকার ও আরো মুক্তি দিবেন।মোটকথা অসম্ভব।যে সব মোসলমান নারীদেরকে এদের চেয়েও বেশী অধিকার ও স্বাধীনতা দিতে চান তাদের মিথ্যা বলা ছারা উপায় নেই।আর দিলেও পরকালে এই নারীদের কি মুক্তি পাওয়া সম্ভব ? আল্লাহ পাক নারী, পুরুষ,শিশু ,বৃদ্ধ সৃষ্টি করেছেন যার যার দায়িত্ব ও কর্তব্য দিয়ে।যে যে তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করতে পারবে সেই পরকালে মুক্তি পাবে।এই পৃথিবীতে কে কত অধিকার আদায় করলো ও কে বেশী স্বাধীন হলো এগুলি পরকালের মুক্তির কোনই উপায় হবে না।বরং আরোও বিপদের কারন হবে।তাহলে আমরা মোসলমানরা মেয়েদেরকে পরকালের মুক্তির কথা না বলে তাদের স্বাধীনতা ,মুক্তি বা অধিকারের কথা বলি কোন যুক্তিতে ? মিরাজে রসুল পাক সাঃ কে যখন জাহান্নাম দেখন হলো তখন তিনি দেখতে পেলেন দোযকের বেশীরভাগ বাসিন্দাই নারী।নারীরা যদি পৃথিবীতে এতই অবহেলিত ও নির্যাতিত হবে তবে যাহান্নামে তাদের সংখ্যাধ্যিক্কের কারন কি ? রসুল পাক সাঃ বলেন,” জহান্নামের অধিকাংশই হবে নারী এবং এদের অধিকাংশের দোজকে প্রবেশের কারন হবে স্বামীর অবাধ্যতা ।” অন্য হাদিসে রাসুল পাক সাঃ বলেন,” আমি দোজকের প্রতি দৃষ্টি করে তথায় বহুসংখ্যক স্ত্রীলোক দেখলাম।ইহার কারন জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম,ঐ স্ত্রীলোকগুলি
নিজ নিজ স্বামির সহিত কটুবাক্য ব্যবহার করত ।তাদের(স্বামীদের) সদ্ব্যব্হার ও অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত না।তাই তাদের এই দুর্দশা।” অপরদিকে রসুল পাক সাঃ বলেন,”কোন মানুষের জন্য অন্য কোন মানুষকে সেজদা করা যদি দুরস্ত হত,তবে স্ত্রীকে হুকুম দেয়া হত তার স্বামীকে সেকদা করতে।” রসুল পাক সাঃ আরো বলেন,” যে স্ত্রী তার (ইমানদার)স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে মৃত্যুবরন করে,সে জান্নাতবাসিনী হবেন।” এসব হাদীস পড়ে কেউ যদি বলে নারীদের কোনঠাসা করা।তাহলে ”মায়ের পায়ের নীচে সন্তানের বেহেশ্ত” এটা বিশ্বাস করতে কেন কষ্ট হয় না কেন ? এখন কেউ যদি বলে সন্তানকে ছোট করা।তাদের অধিকার হরন।এটা যেমন বলা সম্ভব না।তেমনি নারীদের ক্ষেত্রেও এ কথা বলা সম্ভব নয়।
পত্র পত্রিকায় ও রেডিও টেলভিশন ছারা আমার নিজ চোখে কোন আলেমতো দুরের কথা সাধারন শিক্ষিত কোন লোককেও দেখিনি তার স্ত্রীকে নির্জাতন করেছে বা জোর করে যৌতুকের টাকা নিয়েছে ।বরং দেখেছি বড় বর আর্মী অফিসারের বউদেরকে তাদের স্বামীদেরকে নাকে খদ দিয়ে ঘুরাতে বা সাধারন একজন মহিলাকে তার পুর্বের সন্তানদেরকে নির্যাতন করতে বা পুর্বের ঘরের সন্তানদেরকে নিঃস্ব করে নিজের নামে সব জমি লিখে নিতে বা গ্রামের সাধারনরন কৃষক তার যে সন্তানকে নিজের সব নিঃস্ব করে তিলে তিলে শিক্ষিত করেছে, নারীরুপী স্ত্রী সেই সন্তানকে কিভাবে বাবা মার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে।কিছুদিন পুর্বে দেখলাম আমেরিকাতে অবস্হানরত অত্যন্ত ধার্মিক(আলহামদুলিল্লাহ) এক বন্ধু, যে করুনা করে নিজের চেয়েও বেশী বয়সী এক মেয়েকে বিয়ে করে আনলেন।সেই স্ত্রী কিভাবে ছেলের বৃদ্ধা মাকে প্রবাসের বাড়িতে প্রথমে ঘর ছারা করালো ও পরে অর্থনৈতিক সহায়তাও বন্ধ করতে চাপ দিতে গিয়ে বিয়ে ভাংলো।এই হলো অবলা নারীদের কর্মকান্ড।এরা স্বামীদেরকে বাবামার সাথে বেয়াদপি থেকে শুরু করে তাদের সাথে সম্পর্কছ্ছেদ করাতেও দিধা করে না। অথচ পবিত্র কোরানে আল্লাহ পাক বলেন,”আল্লাহতাআলার এবাদৎ বন্দেগী কর তাহার সহিত কাহারও অংশীদার করিও না এবং মাতা পিতার সহিত সদ্ব্যবহার করিতে থাক।”
রসুল পাক সাঃ বলেন, ”মাতাপিতার অবাধ্যতার পাপ ব্যতীত আল্লাহপাক সমস্ত পাপ যাহাকে ইচ্ছা সমস্তই মাপ করে দেন।কিন্তু মাতা পিতার অবাধ্য সন্তানদিগকে ইহকালেই ইহার শাস্তি দিয়ে থাকেন।” তিনি সা: আরো বলেন, তিনটি গুন যাহার আছে ,তাহার মৃত্যুকে আল্লাহ তাআলা শজ করে দিবেন।দুর্বলের প্রতি দয়া করা,মাতা পিতার জন্য ব্যয় ও দাস দাসীর উপকার সাধন।(তিরমিজি শরীফ)। রসুল পাক সা: আরো বলেন, ”পুরুষেরা যখন নিজেরর ব্যক্তিত্ব হারিয়ে স্ত্রীর কথামত চলা আরাম্ভ করে ,তখন সমাজে এমন অনাচার শুরু শুরু হবে ,যাহার ফলে দুনিয়ায় আল্লাহর গজব উপর্যুপরিভাবে নাজিল হতে থাকবে,যেমন তসবিহর সুতা কেটে দিলে উহার দানা গুলি অনবরত একটি পর একটি ঝরতে থাকে।(মেশকাত শরীফ)।
রসুল পাক সাঃ একবার তার কন্যা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন, ”ফাতেমা স্ত্রী জাতির পক্ষে সর্বোত্তম কাজ কি ?” জবাবে ফাতেমা রাঃ বলিলেন,” স্ত্রী জাতির সর্বোত্তম কাজ হল এমনভাবে চলা যাহাতে কোন পরপুরুষ তাহাদিগকে এবং তাহারা কোন বেগানা পুরুষকে দেখতে না পায়।”এই জবাব শুনে রসুল পাক সাঃ কন্যাকে গলায় জড়িয়ে ধরে বললেন,’মা,তুমি আমার কলিজার টুকরা। (মোকছুদুল মো’মেনিন -পৃষ্টা ৩৭৯)
রসুল পাক সাঃ আরো বলেন,”স্বামী যদি কুষ্টরোগগ্রস্তও হয় আর তার ক্ষত স্হানসমুহের পুজ ইত্যাদি স্ত্রী নিজ জিহ্বার সাহায্যে চাটিয়া পরিষ্কার করে,তাহাতেও স্ত্রী স্বামীর হক আদায় করতে পারবে না।” (মোকছুদুল মো’মেনিন -পৃষ্টা ৩৭৯)
রাসুল সাঃ মহিলাদের সম্বোধন করে বলেন, হে নারী সমাজ ! তোমরা বেশী বেশী দান সদকা কর।কেননা আমাকে দেখানো হয়েছে দোযখীদের মধ্যে তোমাদের সংখ্যা অধিক। মহিলারা আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা:) এর কারন কি? রাসুলাল্লাহ (সা:) বললেন,তোমরা বেশী অভীশাপ-লানত কর এবং স্বামীর নাশোকরী কর।
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেনঃ রসুল পাক সাঃ এরশাদ করেন,’আমাকে দোজখ দেখান হয়।(আমি দেখি) তার অধিবাসীদের অধিকাংশই স্ত্রীলোক;কারন তারা কুফরি করে।” জিজ্ঞাসা করা হলো,”তারা কি আল্লাহর সাথে কুফরি করে ? তিনি সাঃ বললেন, ”তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং ইহসান অস্বীকার করে।তুমি যদি দীর্ঘ্যকাল তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক,এরপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখলেই বলে,”আমি কখনও তোমার কাছ থেকে ভাল ব্যবহার পাইনি।” – বোখারি শরীফ-পৃষ্ঠা-২৭,ইমান অধ্যায়।
রাসুল সাঃ মহিলাদের সম্বোধন করে বলেন, হে নারী সমাজ ! তোমরা বেশী বেশী দান সদকা কর।কেননা আমাকে দেখানো হয়েছে দোযখীদের মধ্যে তোমাদের সংখ্যা অধিক। মহিলারা আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা:) এর কারন কি? রাসুলাল্লাহ (সা:) বললেন,তোমরা বেশী অভীশাপ-লানত কর এবং স্বামীর নাশোকরী কর। তোমাদের জ্ঞান এবং দ্বীন অসম্পুর্ণ হওয়া সত্ত্বেও একজন বিচক্ষণ মানুষের আকল তোমাদের চেয়ে অধিক বিলুপ্তকারি আর কাউকে দেখি নাই । মহিলারা আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা:) ! আমাদের জ্ঞান ও দীনের অসম্পূর্ণতার কারণ কি ? হুজুর (সা:) বললেন,নারীর সাক্ষী কি পুরুষের সাক্ষীর অর্ধেক নয় ? মহিলারা বলল,নিশ্চয় । হুজুর (সা:) বললেন,এই হলো তোমাদের জ্ঞানের অসম্পূর্ণতা। তারপর বললেন, এ কথা কি সত্য নয় যে, হায়েয অবস্হায় তোমরা নামায পড় না এবং রোজা রাখ না । মহিলারা বলল, নিশ্চয় ।হুজুর (সা:) বললেন, এই হল তোমাদের দ্বীনের অসর্ম্পূনতা।
হাদীসটিতে রসুল পাক সাঃ নারী সমাজের পাচটি ত্রুটির কথা উল্লেখ করেছেন।দুটি অনিচ্ছাধীন,তিনটি ইচ্ছাধীন।ইচ্ছাধীন তিনটি হল স্বামীর নাশোকরী করা,অনর্থক লানত অভিশাপ করা,বিচক্ষন পুরুষের আকল বিলুপ্ত করে দেয়া।প্রকাশ থাকে যে অনিচ্ছাধীন ত্রুটিগুলি দুর করা সাধ্যের বাইরে।কিন্তু ইচ্ছাধীন ত্রুটিগুলি সম্পর্কে সচেতন হয়ে তার চিকিৎসা করা যেতে পারে।এতদসত্তেও রসুল পাক সাঃ অনিচ্ছাধীন ত্রুটিগুলি বর্ননা এজন্য করেছেন,যে যাতে মেয়েদের গর্ব ও অহঙ্কার দুর হয়ে যায়।কেননা গর্ব ও অহঙ্কার সাধারনত অজ্ঞতা থেকে সৃষ্টি হয়।সুতরাং মুর্খতাও তাদের একটি ত্রুটি।
প্রথমত মেয়েরা দেখা যায় কথায় কথায় মানুষকে লানত দেয়। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত তাদের কাজই থাকে যার সাথে তার শত্রুতা থাকে তার গিবত করা ও যার সাথে মহব্বত ঠকে তার গুন গাওয়া।
দ্বিতীয়ত দেখা যায় নারীরা স্বামীর প্রতি অকৃতঙ্গ হয়।তাদের যত কিছুই এনে দেয়া হোক,তা তাদের জন্য অল্প।
নারীর তৃতীয় দোষ হলো তারা বিচক্ষন পুরুষের বিচক্ষনতাকে বিলুপ্ত করে দিতে পারে। তারা এমন অতিরন্জিত কথাবার্তা বলে যে অনেক সময় একজন বিচক্ষন জ্ঞানী ব্যক্তিও বেআকল জ্ঞানহীন হয়ে পড়ে।তাদের কথার মধ্যে এমন প্রতিক্রিয়া রয়েছে যে, এমনিতেই পরুষরা ঘায়েল হয়ে পড়ে।তার কারন এই নয় যে ,তারা পুরুষের তুলনায় অধিক জ্ঞানী ।বরং তারা ছলছাতুরী ও ছলনায় পুরুষের চেয়ে অগ্রগামী।জ্ঞান-গরিমা এক জিনিষ ও ছলচাতুরী আরেক জিনিষ।মোট কথা ছলচাতুরী ও চালাকির কারনেই নারী একজন বিচক্ষন পুরুষের বিচক্ষনতাকে বিলুপ্ত করে দিতে পারে।নর্জনে স্বামীর সাথে বসে এমন কায়দা কৌশলে কথাবার্তা বলে,যাতে সকল কিছু থেকে -স্বামীর মন বিচি্ছন্ন হয়ে তার দিকেই নিবিষ্ট হয়ে যায়।জ্ঞানীর আকল বিলুপ্তি করার দ্বারা সৃষ্টি হয়, অনৈক্য,ঝগরা-বিবাদ,গৃহ যুদ্ধ ইত্যাদি।