বে-নামাযীদের বলছি….
লিখেছেন: ' faridsworld07' @ বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১, ২০১১ (৩:৪৪ অপরাহ্ণ)
আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য নামাযকে ফরয করেছেন । কুরানের মোট ৮২ জায়গায় নামায সম্পর্কে বলা হয়েছে । এই নামাযের উপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । হাদিসে বলা হয়েছে কেউ নামাযে উতরে গেলে সব বিষয়েই উতরে যাবে ।আর নামাযে ফেল করলে সব বিষয়েই ফেল । তারপরেও অনেক মুসলমানকে দেখা যায় নামায না পড়তে । তারা হয়ত ব্যস্ততা বা অলসতার কারণে নামায পড়েননা। কিন্তু এর পরিণতি সম্পর্কে তারা একটুও অবগত নন ।
তার আগে বলি,(এটা হজম করতে হয়ত অসুবিধা হবে) অনেক ওলেমাদের মতে যারা নামায ত্যাগী তারা আর মুসলমান থাকে না । তারা কাফের হয়ে যায় । যেমন, আব্দুল হামীদ মাদানী বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নামায ফরয হওয়ার কথা অস্বীকার করে এবং ইচ্ছাকৃত তা ত্যাগ করে সে ব্যক্তি ওলেমাদের সর্বসম্মতভাবে কাফের । পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি অবহেলায় অলসতার দরুন নামায ত্যাগ করে, সেই ব্যক্তিও ওলেমাদের শুদ্ধ মতানুসারে কাফের’ (রমযানের ফাযায়েল ও রোজার মাসায়েল; নামায ত্যাগী অধ্যায়; ৩১ পৃষ্ঠা) । এই ব্যাপারটা হাদিস থেকেও পরিস্কার হয়ে যায় । যেমন, মুহাম্মাদ (সা) বলেন, ‘মুসলমান এবং কুফর ও শির্কের মাঝে (অন্তরাল) নামায ত্যাগ’ (মুসলিম শরীফ; হা/৮২) । তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ও ওদের মাঝে চুক্তিই হল নামায, যে ব্যাক্তি তা পরিত্যাগ করে সে কুফরি করে’ (তিরমিযী, হা/২৬২২ ; ইবনে মাজাহ, হা/১০৭৯) । তাহলে কি বুঝলেন ? আর যদি এতেও মন না ভরে তাহলে আরও কয়েকটি হাদিস ও আসার (সাহাবা(রা)দের বাণী, কাজ ইত্যাদি) দেখুন ।
আব্দুল্লাহ বিন শাকীক উকাইলি (রা) বলেন, ‘মুহাম্মাদ (সা) এর সাহাবাগণ (রা) নামায ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোনো আমল ত্যাগ করাকে কুফরি মনে করতেন না ‘ (তিরমিযী, হাকেম, সহীহ তারগীব, হা/৫৬২) ।
ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নামায ত্যাগ করে তার দ্বীনই নেই’ (ইবনে আবী শাইবা, ত্বাবারানী, কাবীর, সহীহ তারগীব, হা/৫৭১) ।
আবু দারদা(রা) বলেন, ‘যার নামায নেই তার ইমানই নেই’ (ইবনে আব্দুল বার, সাহীহ তারগীব, হা/ ৫৭২) ।
আর এটা ভাববেন না যে আপনি মুসলিম ঘরে জন্মেছেন বলে রেহাই পেয়ে যাবেন । আল্লাহ আমাদের সাবধান করে বলেছেন,‘মানুষ কি মনে করে যে ‘আমরা ইমান এনেছি’ একথা বললেই ওদেরকে পরীক্ষা না করে অব্যাহতি দেওয়া হবে ? আমি তো পরীক্ষা করেছিলাম ওদের পুর্ববর্তীদের কেউ; আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করে দেবেন কারা মিথ্যাবাদী” (সুরা আনকাবুত ২৯/২-৩)।
‘যারা ইমান আনে তাদের হৃদয় ভক্তি বিগলিত হওয়ার সময় কি আসেনি, আল্লাহর স্বরণে এবং যে সত্য অবতীর্ন হয়েছে তাতে ?…….” সুরা হাদীদ ৫৭/১৬ ।
আমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা বলেন ‘হ্যাঁ ভাই নামায তো পড়তেই হবে, একটু বয়স হতে দেন তারপর দাড়ি ছেড়ে নামায ধরে নেব’ । কিন্তু তারা ভাবেই না যে কালকের সুর্যও হয়ত সে আর দেখতে পারবে না । আর যদিও পায়… তাহলেও সারা জীবন জেনেশুনে গুনাহ করে বুড়ো বয়সে তওবা করলে আল্লাহ কি কবুল করবে ? এই দেখুন এই আয়াতটি, “আর এমন লোকদের জন্য কোন তওবা (ক্ষমা) নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকে ‘আমি এখন তওবা করছি’। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। (০৪;১৮) । একটু ভাবুন আপনি (যদি বেনামাযী হোন) কি এই দুই ক্যাটাগরিতে পড়েন না । হয়ত আপনি ভাবে রেখছেন য্বে বুড়ো বয়সে নামায ধরবো অথবা হয়ত আপনি কিছুই ভাবেননি । আর বেনামাযী হয়েই আছেন । আর্থাত কুফরি করেই যাচ্ছেন । তাহলে সাবধান কারন আপনার জন্য তওবা নেই আর আপনার জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রাখা আছে । এই কথা গুলো আমি বলছি না স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা বলছেন ।
আপনি যদি (বেনামাযী হয়েও) নিজেকে মুমিন বলে মানেন, তাহলে আপনার জন্য আল্লাহর কয়েকটি নির্দেশ দেখুন, ‘….নিশ্চয় মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য হল নির্ধারিত সময়ে সালাত (নামায) কায়েম করা’ (০৪;১০৩) । ‘তোমরা সালাতের জন্য যত্নবান হবে……….’ (০২;২৩৮) ।
পোষ্টটা হয়ত বড় হয়ে গেল…যাইহোক পড়ার জন্য ধন্যবাদ । এই ব্যাপারে বলার অনেক কিছু আছে আবার কোন দিন চেষ্টা করব । ইনশাল্লাহ! আপনাদের কেমন লাগল জানাবেন আর মন্তব্য করতে ভুলবেন না ।
ভাই সুন্দর লেখা। তবে এতে জামায়াতে নামাজের গুরুত্ব বিষয়ে কিছু কথা থাকলে ভাল হত।
@Saifullah Mujaheed, ধন্যবাদ ভাই
ধন্যবাদ, সুন্দর লেখার জন্য। মুসলিম শরীফের হাদিসে আছে, নিশ্চয়ই নামাজ মুমিন ও মোশরেকের মধ্যেকার তফাত।
কিন্তু ভাই, যাদের জন্য এ লেখাটা পড়া জরুরী সেই বেনামাজীরা তো এই সাইটি সম্ভবত ভিজিট করেন না। তাহলে কিভাবে তাদের কাছে এ কথাগুলি পৌছানো যায়? ভাল হয় কোন পত্রিকায় লেখাটি প্রকাশ করার চেষ্টা করা।