বহু দিন পর ঘরে ইফতারী করলাম
লিখেছেন: ' রাতদিন' @ শনিবার, অগাষ্ট ২৮, ২০১০ (৫:৩৩ অপরাহ্ণ)
সকাল বেলায় ক্লাসে দোড়াও, বাসায় আসার সুযোগ নেই, জবে যেতে হবে, তাই কোন রকম একটি কোক কিংবা ফিস বার্গার দিয়ে প্রতিদিন ইফতারী করা হয়, তবে ছুটির দিন গুলিতে মসজিদে ইফতারী করি, এভাবেই রোজার দিন গুলি চলছে। খারাপ না, ভালই দিনকাল চলছে। মসজিদের সবার সাথে ইফতারী করার মজাই আলাদা। কিন্তু তবুও কি জানি মিস করতে ছিলাম। আহা রেহ কত দিন বাসায় ইফতারী করা হয় নি।
আজকে শনিবার, ছুটির দিন, পড়াশুনা কিছুই নেই, থাকলেও আলসামীর কারনে আর পড়া হয়ে উঠেনি। হঠাত মনে পড়ল, আজকে বাসায় ইফতারী করলে কেমন হয়? যেই বলা সেই কাজ। চিন্তা করলাম, বেগুনী, ছানা, ডাইলের বড়া(পিয়াজু) আর ডিজার্ট বানানোর চিন্তা করলাম। কিন্তু সমস্যায় পরলাম, বাসায় কিছু নেই। বেসন না কি জানি লাগে। কিন্তু আমার হাউজ মেইট রা খুব চালু। ঢাকার ছেলে, তাই বুদ্ধিমান হবে এটাই স্বাভাবিক। খুব সহজেই তারা দুই জন প্লেন করে ফেলল কিভাবে কি করবে। আমি আর আরেকজন বাজারে বের হলাম। তারা ঝাল আইটেমের বাজার বুঝিয়ে দিয়ে আমি চলে গেলাম ডিজার্ট জাতীয় কিছু যোগার করতে। আমার কাজ মুটামুটি সহজ, রেডিমেট কাটার্ড, চকলেট কেইক আর বেশ কিছু ফ্রুট নিয়ে নিলাম সাথে প্রিন্সের শ্যামাই। বাসায় এসে দেখি দুম ধাম রান্না চলছে। তবে বেসনে যে লবল দিতে হয়, এই খবর কাউরো নেই, তার উপর ছানাকে তো পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তাই যা হবার তাই হল, খাবরে লবণ নেই, ছানা শক্ত পাত্থর হয়ে গেছে। পরে লবণ টবন দিয়ে আয়েশী ভাব নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। নাহ মন্দ হল না, তবে জোর করে পাথরের কণা মানে ছানা বুট গুলি খেতে চেষ্টা করলাম। হল না, সব ছানা বুট ফেলে দিতে হল।
তবে আমার করা অংশ গুলি অসাধারন হল, (আমার কোন ক্রেডিট নেই, সব রেডিমেইট) কাস্টর্ড এর সাথে ফ্রুট পিস করে মিশিয়ে দিলাম। আর কেইক শুধু কষ্ট করে পিস করলাম। আর শ্যামাই বানানো সহজ কাজ দুধ, শ্যামাই আর চিনি মিশিয়ে দিলেই হয়। নিজের বানানো ইফতার করতে, আলাদা মজাই লাগল। আরেক বার একটি কবিতা লিখার চেষ্টা করলাম। কেন জানি আমার কবিতা গুলির কোন নাম ঠিক করতে পারি না। কবিতা নাকি গদ্য হল বুঝতে পারলাম না।
রাতের আকাশের ওই আলোকিত চাঁদ,
আমি আর আব্বু মিলে চেয়ে নিতাম,
তিনি বলতেন, ঐ যে চাঁদের আলো তা কিন্তু তার নিজের নয়,
সূর্যের আলো, সে ধার করে নিয়ে এসেছে,
আর চাঁদের যে ঐ বড় দাগ, তাও একটি গর্ত; বিশাল গর্ত,
কিন্তু পারার ছেলেরা অন্য কাহিনী নিয়ে এসেছিল,
ওই গর্ত নাকি গর্ত নয়,
তা একটি বুড়ি যে সুতা বানায়,
পূর্নিমার রাতে সুতা গুলি ছড়িয়ে দেয়,
কিছু দিন পরে নিজেই সুতা গুলি পেলাম,
আর মনে মনে হাসলাম,
সুতার উতস খুজে খুজে কিছু বের করতে পারলাম না,
কিছু দিন পরেই নদীর পারের কার্পাশ তুলার গাছ গুলি চোখে পড়ল,
এগুলো কেউ ফলায় না, আপনা আপনি হয়,
বুঝলাম ঐ তুলা গুলিই আসলে বাতাসে ভেসে বেড়ায়,
আর মানুষ কত রকমের কাহীনি বানায়।চাঁদের ধার করা আলো দেখে আশ্চর্য হই না,
আমাদের সব কিছুই তো ধার করা,
পরিবেশের কত কিছুই ধার করে নেই,
কিছু স্বীকার করি কিংবা নাই করি।