২০ রাকাআত তারাবী নামাজ
লিখেছেন: ' হাফিজ' @ শুক্রবার, জুন ১, ২০১৮ (১১:২৭ অপরাহ্ণ)
দলিল ১:
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, – “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম রমজান মাসে ২০ রাকাত তারাবীহ এবং বিতর পড়তেন”
(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, ৫/২২৫ হাদিস – ৭৭৭৪)
হাদিসের স্তর – হাসান সহীহ (১)
দলিল ২:
হজরত সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রাঃ) বলেন – “হজরত ওমর (রাঃ) এর যামানায় রমজান মাসে সাহাবীগণ ২০ রাকাত তারাবীহ-র নামাজ আদায় করতেন। আর তারা কোরআন থেকে শত আয়াতের সূরাগুলো তেলাওয়াত করতেন।
(বায়হাকী সুনানে কুবরা, ২/৪৯৬, মুসনাদে আলী ইবনুল জাআদ, হাদিস – ২৮২৫)
হাদিসের স্তর – সহীহ (১)
দলিল ৩:
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) এর গবেষণা :
যখন উমর (রাঃ) লোকদেরকে উবাই ইবনে কাব (রাঃ) এর পিছনে একত্র করে দিলেন তখন ২০ রাকাত তারাবি ও বিতর পড়তেন।
(আল-ফাতাওয়াল মিসরিয়া)
উমর (রাঃ) সকল সাহাবীকে উবাই ইবনে কাব (রাঃ) এর পিছনে এক জামাতে একত্রিত করেছেন। বলাবাহুল্য উমর (রাঃ) খোলাফায়ে রাশেদীনের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে সাল্লাম বলেছেন “আমার সুন্নাহ এবং আমার হেদায়াতপ্রাপ্ত খলীফাগণের সুন্নাহকে অবলম্বন করবে এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে থাকবে” .
“মাড়ির দাঁতের কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে সাল্লাম এজন্য বলেছেন যে, এভাবে ধারণ করলে তা মজবুত হয়ে থাকে। তারাবি বিষয়ে উমর (রাঃ) এর এই কাজ (জামাতের ব্যবস্থা করা) সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত।
(ফতোয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া ) (২)
দলিল ৪:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে সাল্লাম এর সার্বক্ষণিক সহচর আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) সমন্ধে আমাশ (রহঃ) বলেন – “আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) ২০ রাকআত তারাবীহ এবং ৩ রাকাত বিতর পড়তেন। (কিয়ামুল লাইল) (২)
দলিল ৫:
ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেন – অধিকাংশ মনীষী এই মতই পোষণ করেন যা আলী (রাঃ), উমর (রাঃ) এবং অন্নান্য সাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ ২০ রাকাআত। ইমাম সুফিয়ান সওরী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক ও ইমাম শাফেয়ী (রঃ) এর সিদ্ধান্ত তাই। ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) বলেন – “আমি মক্কাবাসীকে ২০ রাকাআত তারাবি পড়তে দেখেছি”। (জামে তিরমিযী ১/১৬৬) (২)
দলিল ৬: (তাবেয়ীদের আমল)
তাবেয়ী রুফাই বিন মেহরান আবুল আলিয়া নাম প্রসিদ্ধ ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে সাল্লাম এর ইন্তিকালের মাত্র ২ বছর পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। হজরত ওমর (রাঃ) এর পিছনে তিনি নামাজ পড়েছেন। (তাহযীবুল কামাল)
তিনি তার ঘনিষ্ঠ ওস্তাদ সাহাবী উবাই ইবনে কাব (রাঃ) এর ঘটনা বর্ণনা করেন -
“হজরত ওমর (রাঃ) হজরত উবাই (রাঃ) কে রমজানে লোকদের নিয়ে নামাজ পড়ার নির্দেশ দেন। বললেন যে লোকজন দিনভর রোজা রাখে, কিন্তু তারা সুন্দরভাবে কোরআন পড়তে পারে না, তাই আপনি যদি রাত্রে তাদেরকে নামাজে কোরান পড়ে শোনাতেন। তখন তিনি বললেন আমিরুল মুমিনীন। জামাত বদ্ধভাবে কোরআন শোনানোর এ পদ্ধতি তো পূর্বে ছিল না। উমর (রাঃ) বললেন, আমি তা জানি, তবে তা খুবই উত্তম। এরপর সাহাবী হজরত উবাই (রাঃ) লোকদেরকে নিয়ে ২০ রাকআত তারাবীহ পড়লেন। (আল মুখতারাহ, জিয়াউদ্দিন মাকদিসি) (৩)
দলিল ৭:
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ২০ রাকাত তারাবি এবং বিতর রমজান মাসে প্রতি রাত্রে পড়তেন।
(আল সুনান আল কুবরা , ২/৬৯৮) (৪)
রেফারেন্স :
১। আমি সহীহ হাদিস অনুযায়ী নামাজ পড়ি – মুফতি শফী কাসেমী
২। নবীজির নামাজ – ড: শাইখ মুহাম্মদ ইলিয়াস ফয়সাল, মদিনা মুনাওয়ারাহ
৩। তারাবির নামাজ ২০ রাকআত কেন – মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানী
৪। http://askimam.org/public/question_detail/29681