লগইন রেজিস্ট্রেশন

নোবেল প্রাইজ ও সাম্রাজ্যবাদ এর জেনেটিক্যাল by-product মালালা ইউসুফজায়ী

লিখেছেন: ' হাফিজ' @ মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৯ (৮:৩৪ অপরাহ্ণ)

সুইডেন ও নরওয়ে এর নোবেল কমিটি সম্মিলিতভাবে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী নোবেল প্রাইজ দিয়ে থাকেন। সাহিত্য, বিজ্ঞান, শান্তি, কেমিস্ট্রি ও মেডিসিন এই ৫ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে। সাহিত্য ও শান্তি ছাড়া বাকি ৩টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেবার ব্যাপারে তেমন কোনো সমালোচনা হয় না কেননা বিজ্ঞানের বিষয়গুলো মোটামুটি প্রমাণসাপেক্ষ এবং যোগ্য ব্যাক্তিদের দেয়া হয়ে থাকে।

সাহিত্য ও শান্তি বিষয়ে যাদের পুরস্কার দেয়া হয় তাদের যে যোগ্যতা নেই সেটা বলা যাবে না তবে সব যোগ্যতার মধ্যে একটি বাধ্যতামূলক যোগ্যতা তাদের আছে যেটা হলো তারা হচ্ছে “সাম্রাজ্যবাদের শুভাকাঙ্খী”। শব্দটাকে সতর্ক ভাবে চয়ন করা হয়েছে কেননা “এজেন্ট” বা “দালাল” শব্দদ্বয় কৌলিন্য-সর্বস্ব এলিট শ্রেণীর জন্য অশোভনীয় ও মর্মমূলে আঘাতকারী। এই কারণে দেখা যায় চরম ইসলাম বিদ্বেষী লেখক ভি এস নাইপল সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পেলেও অবিস্মরণীয় প্রতিভার অধিকারী তলস্তয়কে নোবেল প্রাইজ দেয়া হয়নি। যে তলস্তয় সমন্ধে দস্তভয়স্কি বলেছিলেন “পৃথিবী লিখতে পারলে তলস্তয় এর মতো করে লিখতে পারতো” । তলস্তয় কে নোবেল প্রাইজ না দেবার কারণে বার্নার্ড শ তার নিজের নোবেল প্রাইজ প্রথমে নিতে চাননি। তলস্তয় কে নোবেল প্রাইজে দেয়া হলো না? আপনার কাছে ছোট মনে হলেও কারণটা খুবই গুরুতর। সে “সাম্রাজ্যবাদের শুভাকাঙ্কী ছিল না !!”

ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস-এর Micro-ইকোনমিক্স-এ প্রতিভা থাকতে পারে, কিন্তু “শান্তি”র সাথে তার কি সম্পর্ক সেটা আমার বোধগম্য নয়। সে অর্থনীতিতে নোবেল পেলে কোনো সমস্যা ছিল না।

অনুসন্ধিৎসু মনে প্রশ্ন জাগে “গণহত্যা”, “ধর্ষণ” , “জ্যান্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা”, “মা এর সামনে শিশু হত্যা” এবং তদুপরি ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু বুকে নিয়ে বাংলাদেশ — সব মিলিয়ে এতগুলো অভিযোগ যার দিকে সেই অন সান সূচি কিভাবে নোবেল প্রাইজ পেলো সেটা তেমন আশ্চর্যের কিছু নয় – বরং আশ্চর্য হতে হয় সাম্রাজ্যবাদের দোসর হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে তাকে আন্তর্জাতিক কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে সেটাই ভেবে। হয়তো missfire ।

রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা অনস্বীকার্য তবে এটাও ঠিক নোবেল কমিটিতে তখন পঞ্চম জর্জ ছিলেন খুবই ইনফ্লুয়েন্সিয়াল (Influencial) ব্যাক্তি যার সাথে রবীন্দ্রনাথের ছিল খুবই ভালো সম্পর্ক এবং এই পঞ্চম জর্জ এর ভারতবর্ষে আগমন উপলক্ষে তিনি লিখেছিলেন তার সেই বিখ্যাত গান “জনগণ মন অধিনায়ক হে ভারত ভাগ্য বিধাতা”। গোলাম মোর্তজার লেখা “চেপে রাখা ইতিহাস” , “ইতিহাসের ইতিহাস” বইগুলো পড়লে এর চেয়ে বেশি তথ্য জানা যায় যদিও বইগুলো একসময় ভারতীয় সরকার কর্তৃক ব্যান হলেও হালে বায়তুল মোকাররমে সহজলভ্য।

পাকিস্তানের neoroscientist, Phd হোল্ডার, ৩০ পারা কোরানের হাফেজা ড: আফিয়া সিদ্দিকীকে মার্কিন সৌনিকরা যে অত্যাচার করেছে সেটা হররর মুভিকেও হার মানায়। ধর্ষণ থেকে শুরু করে তার একটি কিডনি পর্যন্ত তারা কেটে ফেলে দিয়েছে। ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া এই কয়েদিকে তারা কোরআন শরীফের ওপর দিয়ে হেটে যাবার জন্য বাধ্য করেছিল। পাকিস্তানে না খেয়ে যখন নারীরা মারা যায় সেখানে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই কিন্তু তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে “মালালার” আন্দোলনকে তারা একমাত্র মুক্তির পথ হিসেবে দেখে। যেন সারা বিশ্বের মুসলিম নারীদের মুক্তি নির্ভর করছে শুধুমাত্র “মালালার” এই আন্দোলনের ওপর। নোবেল কমিটি এখানে কিন্তু ভুল করেনি মালালাকে নোবেল প্রাইজ দিয়ে। কেন?

রাশিয়া যখন আফগানিস্তান আক্রমণ করে তখন তালিবান ছিল মার্কিনদের কাছে হিরো। তারপর রাশিয়ার farewell এর পর সেই তালিবান হলো তাদের শত্রূ। বাবা মা এর কোনো শিশু সন্তান যখন খুব দুষ্টু হয় তখন বাবা মা চেষ্টা করেন কোনো খেলনা দিয়ে তাকে ভুলিয়ে রাখতে যেমন মোবাইল। সবসময় নিজের স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য এধরণের বিভিন্ন আইটেম সাম্রাজ্যবাদ হাইলাইট করেন বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী বর্তমান মুসলিম বিশ্বকে ভুলিয়ে রাখার জন্য, যেমন একসময়ের বন্ধু পরবর্তীতে শত্রূ “সাদ্দাম হোসেন”, একসময়ের বন্ধু পরবর্তীতে শত্রূ “ওসামা বিন লাদেন” একসময়ের বন্ধু পরবর্তীতে শত্রূ “গাদ্দাফি।

২০১২ সালে মালালার স্বল্পদৈর্ঘ্য গুলির ঘটনা/নাটক ঘটার পর পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী পত্রিকা ডন ২০১৩ সালে তাদের নিজস্ব প্রফেশনাল কয়েকজন সাংবাদিককে সোয়াত উপত্যকায় প্রেরণ করে ৫ মাসের তদন্ত পরিচালনা করেন। তাদের রিপোর্ট এ যে তথ্যগুলো উদ্ভাসিত হয় তার সংক্ষেপ নিম্নরূপ:

* সোয়াত এর একজন সম্মানিত মেডিকেল ডাক্তার ইমতিয়াজ আলী খানজাই দাবি করেন তার সংগ্রহে মালালার DNA আছে। মালালা ছোট থাকতে তার পিতামাতার সাথে ডঃ ইমতিয়াজ এর ক্লিনিক এ ভিসিট করেন চিকিৎসা নেবার জন্য। ডঃ ইমতিয়াজ এর হবি ছিল যেকোনো রোগীর DNA সংগ্রহ করার এবং সে হিসেবে সেদিনও সে মালালার DNA রেখে দেন।
* মিডিয়াতে তার গুলিবিদ্ধ হবার ঘটনা আসার পরে ডঃ ইমতিয়াজ মালালার DNA চেক করে দেখেন “মালালা ককেশিয়ান, তারা ধারণা মতে Origin পোল্যান্ড”
* এটা উদ্ঘাটন এর পর ডঃ ইমতিয়াজ মালালার পিতাকে ফোন করে বলেন যে তিনি বুঝতে পেরেছেন মালালার পরিচয় কি!!” একথা শুনে মালালার পিতা হতভম্ভ হয়ে যায় এবং জড়তার সাথে তাকে অনুরোধ করেন এ কথা যেন সে কাউকে না বলেন। মালালার বাবা স্বীকার করেন যে মালালার প্রকৃত নাম হল ‘জেন (jane)’ এবং সে হাঙ্গেরিতে ১৯৯৭ সনে জন্মগ্রহণ করে। তার বায়োলজিক্যাল(biological) পিতা ছিল একজন খ্রিস্টান, যে ২০০২ সনে সোয়াত-এ এসে পালক হিসেবে তার বর্তমান পরিবারের কাছে মালালাকে হস্তান্তর করে কেননা তারা গোপনে খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিল। সুতরাং মালালা এবং তার পালক পিতা-মাতা সবাই কনভার্টেড ক্রিস্টিয়ান।
* ডন পত্রিকার রিপোর্টার যখন ডক্টর ইমতিয়াজ কে জিজ্ঞেস করেছিল কেন সে মালালার বিষয়গুলো উন্মোচিত করছে তার জবাব ছিল যে “আমি বিশ্বাস করি এটা পাকিস্তান এর বিরুদ্ধবাদীদের একটি প্লট ছিল। ” সে তখন এটাও বলেছিল — যে যুবক মালালাকে গুলি করেছিল সে পশতুন বা তালিবান ছিল না। তার DNA সংরক্ষিত ছিল, যাতে ধারণা করা যায় সে ইতালিয়ান ছিল। তিনি ডন পত্রিকার সাংবাদিকদের “কানের পশম” থেকে মাইক্রোস্কোপ এর মাধ্যমে এই DNA এর নমুনাগুলো দেখান। তার উদ্ঘাটিত তথ্যগুলো পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ (ISI )এর উচচ পদস্থ কিছু কর্মকর্তাকে বলেন। এর কিছুদিন পর পাকিস্তানের পুলিশ তার ক্লিনিক রেইড করেন যখন তিনি সৌদি আরবে ছিলেন সৌদি রাজ্ পরিবারের কিছু সদস্যের DNA সংগ্রহ করার জন্য। তার ক্লিনিক এর স্টাফদের পুলিশ হেনস্থা করেন এবং জিজ্ঞেস করেন DNA স্যাম্পল গুলো কোথায় রাখা হয়েছে।
* ২০১৩ সনে একজন ISI অফিসার ড: ইমতিয়াজের অফিস ভিসিট করেন এবং স্বীকার করেন যে মালালার প্রকৃত তথ্য ISI অবগত আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ISI অফিসার ডন পত্রিকার সাংবাদিকদের বলেন যে এ সত্য একদিন বের হয়ে আসবেই। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন :

https://www.dawn.com/news/1048776

উপসংহার:
যারা ৯/১১ এর ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত পড়াশোনা করেছেন যেটাকে বলা হয় আমেরিকার Inside Job তারা মালালার এই ঘটনায় খুব একটা আশ্চর্য হবেন না বলেই মনে করি। যারা নিজেদের নবীর নাম “ঈসা” কে পরিবর্তন করে JESUS, দাউদ কে পরিবর্তন করে DAVID রাখতে পারে তাদের পক্ষে সবধরণের ককটেল পরিবেশন করা সম্ভব।

ইরাক, আফগানিস্তান, বসনিয়ায় লক্ষ লক্ষ নারী,শিশু নিহত হলে তাদের অশ্রু ঝরে না কিন্তু পাকিস্তানের নারীদের শিক্ষা ব্যবস্থা উচাঙ্গের না হলে তাদের অশ্রু বিসর্জন হয় — পাশ্চাত্যের চিন্তাধারার এই নান্দনিক বৈপরীত্য দুর্লভ নয় — ইতিহাস সাক্ষী।

কেউ কেউ বলতে পারেন তাহলে কি “শান্তি” এবং “সাহিত্যে” নোবেল প্রাইজ যারা পান তারা সবাই সাম্রাজ্যবাদের দোসর? না, তা হবে কেন। জীবনানন্দ দাশ যেমন বলেছিলেন:-
“সবাই কবি না, কেউ কেউ কবি !”

তথ্য সূত্র:

১। চেপে রাখা ইতিহাস – গোলাম আহমেদ মোর্তোজা
২। ইতিহাসের ইতিহাস – - গোলাম আহমেদ মোর্তোজা
৩। https://www.dawn.com/news/1048776
৪। https://newslinemagazine.com/magazine/the-curious-cases-of-siddiqui-and-shahzad/
৫। https://www.rokomari.com/book/185356/gray-lady-of-bagram
৬। https://steemit.com/steemit/@azam843/this-is-afia-siddika

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
৮৯ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)