”কুরআন হাদিসের আলোকে ধর্মিয় জ্ঞান অর্জনের গুরত্ব”
লিখেছেন: ' herarnoor' @ বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৩, ২০১৪ (১২:১১ অপরাহ্ণ)
হয়ত সকলেই অবহিত যে, ইসলামী জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর উপর ফরজ করা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ইসলামী জ্ঞান অর্জন মুসলিম জাতীর জন্য কতটুকো ফরজ ? অধিকাংশ লোকের ধারণা সুরা কেরাত এবং নামাজ আদায় করার জন্য কিছু মাসয়ালা মাসায়েল শিক্ষা লাভ করাই যথেষ্ট ! বস্তুত এই ধারণা কুরআন হাদিসের সঙ্গে সম্পূর্নই সাংঘর্ষিক। হয়ত বিষয়টি অনেকের নিকট সন্দেহের পর্যায়ভুক্ত মনে হতে পারে তাই এর স্বপক্ষে কিছু প্রমান পেশ না করলেই নয়। পবিত্র কুরআনে বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহপাক এরশাদ করেন ”যারা জানে না আর যারা জানে তাদের উভয়ের মর্যাদা কি কখনো সমান হতে পারে” সমস্ত মুফাসসিরগন একমত এখানে পূনর্াঙ্গভাবে এলেম শিক্ষা অর্জনের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। অনত্র এরশাদ হয়েছে ”যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে এলেম দান করা হয়েছে তাদেরকেই আল্লাহ উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্টিত করবেন” উক্ত আয়াতে শুধুমাত্র এলমে দ্বীন শিক্ষা অর্জন কারীদের মযর্াদাই স্রষ্টার নিকট সংরক্ষিত, ইহারা ব্যতিত অন্য কেহ নন ! অনত্র আবার এরশাদ হয়েছে ”তোমরা কি কুরআনের শিক্ষামালার উপর দৃষ্টিপাত করবে না, নাকি তোমাদের অন্তর তালাবদ্ধ” কুরআনের শিক্ষামালার প্রতি যারা দৃষ্টি দেয়না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ অভিহিত করা হয়েছে এর চেয়ে ভয়ংকর বিষয় আর কি হতে পারে। আল্লাহ যদি সত্যি সত্যি হৃদয় মোহর মেরে দেন তাহলে কে আছে তাকে মুক্তির সন্ধান দিতে পারে ? উক্ত তিনটি আয়াত ছাড়াও পবিত্র কুরআনে আরও কিছু আয়াত আছে যেখানে ইসলামী জ্ঞান অর্জনের উপর জোর তাগিদ করা হয়েছে। হয়ত শুনে অবাক হবেন বুখারী শরীফের এলেম অধ্যায়ে সত্তরটিরও অধিক হাদিস রয়েছে যেখানে এলমে দ্বীন সংক্রান্ত আলোচনা এবং এর গুরত্বের প্রতি জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। মুসলিম শরিফের বিদ্যা অধ্যায়ে প্রায় ১০ টিরও অধিক হাদিসে বলা হয়েছে ”কেয়ামতের নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম হল মানুষের ধর্মিয় জ্ঞান কমে যাওয়া” (নাউযুবিল্লাহ) সমস্ত সাহাবী, তাবেয়ী এবং মাযহাবের চার ইমাম সহ সকলেই একমত যে, এলমে দ্বীন পূর্নাঙ্গভাবে শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর উপর ফরজ। আর ফরজ অভিহিত করা হয় এমন কাজকে যে কাজ না করলে স্রষ্টার পক্ষ থেকে ইহকাল ও পরকালে শাস্তী আসন্ন। খুব সংক্ষেপে এই শিক্ষার পরিধি কতটুকো বলে দিচ্ছি ১। স্রষ্টা সম্পর্কে পূর্নাঙ্গ ধারণা অর্জন করা। বস্তুত স্রষ্টা সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার ফলেই আজ মুসলিম জাতীর একটি বিরাট অংশ কবর পূজা, পীর পূজা এবং বিভিন্ন জড় দর্শন সমুহের পূজায় লিপ্ত হয়ে ঈমান বিপর্যস্ত করে ফেলেছে অথচ এরা হয়ত সুরা কেরাত বা নামাজের মাসয়ালা মাসায়েল সবই জানে, কুরআন সুন্নাহের পূর্ন জ্ঞান না থাকায় বিভ্রান্ত লোকদের নৈতিবাচক প্ররোচনায় তারা নিজেদের ঈমানটুকো পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি। এহেন গর্হিত কর্মনীতির ফলে তারা নিজেরা যেমন নরকের উপযুক্ত হয়ে হয়েছে ঠিক তেমনিভাবে তাদের মাধ্যমে তাদের পরিবারও বিভ্রান্ত হচ্ছে কারন তারা তাদের পরিবারকে সেই পথেই অনুপ্রানিত করে থাকে। তবে আত্বসচেতনতার ফলে যারা অভিবাবকদের এই নৈতিবাচক আদর্শ উপেক্ষা করে কুরআন সুন্নাহ আকড়ে ধরবে তারাই হবে সফলকাম। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ”কিছু লোক এমন আছে যারা ঈমান আনা সত্বেও মুশরিক” এই ভয়ংকর পথ চেনার অন্যতম উপায় হল স্রষ্টা সম্পর্কে সঠিক ধারনা অর্জন করা, মানুসিক রাজ্যে যদি মহান স্রষ্টার সঠিক পরিচয় এবং তার যথার্থ বিশ্বাস বিরাজমান থাকে তাহলে সেই অদৃশ্য সত্বায় ভুল প্ররোচনা কার্যকর হবার নয়। ২। রিসালাতের তাৎপর্য অনুধাবন করা। ইহজগতে রাসুলদের আগমনের উদ্দেশ্য এবং তাদের অনুসরনের আবশ্যকতা কতটুকো ও ইহলোকে রাসুল আগমনের তাৎপর্যইবা কি ইহাই যদি মানুষ না জানে তাহলে কিভাবে রাসুলদের পূর্নাঙ্গ অনুসরন সম্ভব ? অথচ পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ”যারা ইহজগতে রাসুলের আদেশ অমান্য করে চলে তাদের জেনে রাখা প্রয়োজন এই জন্য তাদের উপর কোন বিপদ নেমে আসতে পারে এবং যন্ত্রনাদায়ক শাস্তী এসে তাদেরকে গ্রাস করবে। এই আয়াতে সুষ্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে রাসুলের আদেশ সমুহ অনুসরন না করলে পরলোকে নয় শুধু ! ইহলোকেই বিভিন্নভাবে শাস্তী দেওয়া হবে এমনকি যন্ত্রনাদায়ক শাস্তী এসে সবাইকে গ্রাস করবে। যদি রাসুলের পূর্নাঙ্গ আনুগত্যে না করে ইহলোকেই নিরাপদ না থাকা যায় তাহলে সেই রাসুলের সমস্ত আদেশ নিষেধ সমুহ না জেনে তার আনুগত্যে কিভাবে সম্ভব ? ৩। আখেরাতের উপর দৃয় বিশ্বাস রাখা, আমপারা সহ কুরআনের বহু জায়াগায় মুসলিম জাতীকে সতর্ক করার জন্য আখেরাতের ভয়াবহ চিত্র সমুহ তুলে ধরা হয়েছে, মুলত আখেরাত হল নিজের কৃতকর্মের জন্য জবাবদীহি করার একটি জায়গা মাত্র, এই অনুভুতি সমস্ত নৈতিবাচক কার্যবলী বর্জন করার জন্য এক বিরাট শক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়, মানুসিক রাজ্যে থেকে যখনই জবাবদীহিতার অনুভুতি উড়ে যায় তখনই মানুষ মন্দ কর্মের দিকে ধাবিত হয় ইহা এমন এক সত্যে যে সত্যেকে মনোবিজ্ঞানীগন পর্যন্ত অস্বীকার করতে পারেনি। পবিত্র কুরআনে শত শত জায়গায় আল্লাহপাক মানুষকে আখেরাতের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়েছেন যেন মানুষ সেই দিনটির কথা ভুলে গিয়ে ইহজগতে ভোগ বিলাস এবং নিষিদ্ধ কর্মে লিপ্ত না হয়। এখন এই আয়াতগুলো যদি মানুষ না দেখে তাহলে কিভাবে আখেরাত বিশ্বাস হৃদয়জগতে বদ্ধমুল করা সম্ভব ? এরশাদ হচ্ছে ”অতপর যখন কান ফাটানো সেই (ভয়ংকর) আওয়াজ (পৃথিবীর দিকে) আসতে থাকবে তখন মানুষ ভয়ে পালাতে থাকবে নিজের আপন ভাই, তার মাতাপিতা এবং তার স্ত্রী সন্তানদের কাছ থেকে ! সম্মানিত পাঠক লক্ষ্য করে দেখুন উক্ত আয়াত কেমন এক ভয়ংকর দৃশ্য উপস্থাপন করছে অথচ উক্ত আয়াতে শুধু কিয়ামতের সূচনা কিভাবে হবে সেই কথা বলা হয়েছে, আর যখন কেয়ামত সংঘটিত হয়ে বিচার দিবষ কায়েম হবে সেই অবস্থা কত ভয়ংকর হবে সেটা চিন্তা করতেও যেন গা শিওড়ে উঠে। এই তিনটি বিশ্বাস (তাওহিদ রিসালাত আখেরাত) ঈমানের প্রানশক্তি, নবী রাসুলগন এই তিনটি মূলনীতিকে সামনে রেখেই স্বজাতীকে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত পেশ করেছিলেন যেন মানবজাতী স্রষ্টার পথে তার অনুগ্রহ অনুসন্ধান করতে পারে। পূনর্াঙ্গভাবে এই তিনটি বিষয়বস্তুর উপর ধারণা অর্জন করে অতপর প্রয়োজন পবিত্র কুরআনের সমগ্র শিক্ষামালার প্রতি দৃষ্টিপাত করা এবং সেই সঙ্গে সাহায্যকারী হিসাবে প্রয়োজন সহী বুখারীর ও মুসলিম এর উপর তুলনামুলক অধ্যায়ন। বস্তুত পবিত্র কুরআনের মর্মবানী অনুধাবন করার জন্য সহী হাদিসের বিকল্প নেই। পবিত্র কুরআনে এমন খুব কম সংখ্যক আয়াতই আছে সহী বুখারী বা সহী মুসলিম যেগুলোর ব্যক্ষা প্রদান করে না ! কুরআন এবং সহী হাদিস গবেষনার পাশাপাশি নির্ভরযোগ্য ইসলামী সাহিত্য সমুহ অধ্যায়ন করার প্রয়োজন রয়েছে এবং সেই সঙ্গে অধ্যায়ন করা প্রয়োজন মাসয়ালা মাসায়েল জানার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ফেকাহের গ্রন্থ। এছাড়া পবিত্র কুরআন শুদ্ধ ভাবে শিক্ষা করাও ফেকাহের ঈমামগন ফরজে আইন ঘোষনা করেছেন কারন যদি কাহারো কুরআন তেলাওয়াত শুদ্ধ না থাকে তাহলে অশুদ্ধ তেলাওয়াত দিয়ে যে নামাজ আদায় করা হয় সেই নামাজ অসম্পূর্ন অনেকের মতে বাতিল। যে কুরআন শুদ্ধভাবে শিক্ষা করা ফরজে আঈন সেই কুরআন শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করতে পারে শতকরা ২ থেকে ৫% মুসলিম এর চেয়ে দূর্ভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে। অবশেষে যাহা না বললেই নয় যদি সুরাকেরাত শুদ্ধকরন ও নামাজের জন্য কিছু মাসয়ালা জানাই একজন মুসলিমের জন্য যথেষ্ট হত (যদিও শতকরা ৯৫% লোক ইহাও জানেনা) তাহলে নবীজী সাহাবীদের মক্কী জীন্দেগীতে ১৩ বৎসর ঈমানী চেতনা বা অত্বশুদ্ধির প্রশিক্ষন কেন দিলেন ? কেন মাদানী জিন্দেগীতে ১০ বৎসর সময় ব্যয় করে সাহাবীদের ইলমে শরিয়ত শিক্ষা দিলেন ? ইতিহাস থেকে জানা যায় প্রত্যেহ নবীজী সাহাবীদের নিকট কুরআনের ব্যক্ষা দিতেন, আত্বউন্নয়ন মুলক প্রশিক্ষন দিতে গিয়ে কুরআনের বাহিরে তিনি যে সমস্ত কাজের আদেশ করতেন এবং যেগুলো থেকে নিষেধ করতেন মুলত সেগুলোই ছিল হাদিস। হাদিসগুলো যাচাই বাছাই এবং সংরক্ষন করতে গিয়ে তাদের সমগ্র জীবন শেষ করে দিয়েছেন এরই পিছনে ইতিহাসে রয়েছে এমন কয়েক হাজার মোহাদ্দিস। তাদের মধ্যে সাতজন রয়েছে উজ্জল নক্ষত্ররূপে যারা মুসলিম জাতীকে সাতটি সহীহ হাদিসগ্রন্থ (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, নাসায়ী, মুয়াত্তা ইমাম মালেক) উপহার দিয়েছেন, কতজনই বা তাদেরকে স্বরণ করে থাকি। হাদিস গ্রন্থের মধ্যে এই সাতটি এমন নির্ভরযোগ্য যেখানে পূনর্াঙ্গ ইসলামী জীবন ব্যবস্থার চিত্র অংকিত ! ইলমে দ্বীন পূর্নাঙ্গভাবে শিক্ষা লাভ করার জন্য এই সাতটি কিতাবের এখন বিকল্প নেই। হাদিসের পাশাপাশি কুরআনের জ্ঞান আহরনের জন্য মুফাসসিরগন অসংখ্য তাফসীর লিখেছেন, নির্ভরযোগ্য তাফসীরগুলোর মধ্যে অন্যতম হল ফী যিলালিল কুরআন, নুরুল কুরআন, ইবনে আব্বাস, ইবনে কাছীর, তাফসীরে উসমানী এবং তাফহীমুল কুরআন (তাফহীম নিয়ে কিছুটা বিতর্ক আছে) ইত্যাদি। এছাড়াও বিগত চৌদ্দশত বৎসরে ইসলামী চিন্তাবিদগন প্রায় ২ কোটিরও বেশি ইসলামী সাহিত্য রচনা করেছেন যেন মুসলিম উম্মাহ ইসলামী জীবন দর্শনের তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারে। যদি সুরা কেরাত শুদ্ধকরন ও কিছু মাসয়ালা জানাই যথেষ্ট ছিল তাহলে এত কিছু কেন ? সুতরাং পূর্নাঙ্গভাবে দ্বীন ইসলামকে জানা যে ফরজ ইহা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সন্দেহ নিরসনের জন্য আরও দুইটি প্রমান পেশ করতে চাই, পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ”তোমরা কি কুরআনের শিক্ষামালার উপর দৃষ্টিপাত করবে না, নাকি তোমাদের অন্তর (অবিশ্বাসীদের মত) তালাবদ্ধ” চিন্তা করে দেখুন মহান আল্লাহ যারা কুরআনের সমগ্র শিক্ষামালার দিকে দৃষ্টিপাত করতে চায় না তাদের ক্ষেত্রে কত ভয়ংকর কথাই না বলেছেন বস্তুত অন্তর তালাবদ্ধ শব্দটি কাফেরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে যেমন বলা হয়েছে ”তাদের হৃদয়ে কানে সীল মেরে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের দৃষ্টির উপর আছে আবরন আর তাদের জন্য প্রস্তুত রয়েছে কঠিন শাস্তী” যারা কুরআনের বর্ননা ভঙ্গির উপর কিছুটাও জ্ঞান রাখেন তারা হয়ত জানেন তালাবদ্ধ এবং সীল মোহর একই বস্তু। আল্লাহ যেন বুঝাতে চেয়েছেন যারা কুরআনের শিক্ষামালার প্রতি মনোনিবেশ করে না তাদের অন্তরজগত কাফেরদের মতই তালাবদ্ধ ! ইতিহাসে দেখতে পাই একজন সাহাবী যখন শুনতে পেতেন অমুক দেশের অমুক ব্যক্তি নবীজী থেকে একটি হাদিস শুনেছিলেন তখন ঐ সাহাবী একটি হাদিস শুনার জন্য নিজের দেশ, ব্যবসা বানিজ্যে, স্ত্রী সন্তান ছেড়ে দিয়ে ঐ ব্যক্তির নিকট চলে যেতেন ! এমনও হয়েছে যখন কোন সাহাবী কোন লোকের কাছে গিয়ে দেখতে পেতেন সেই ব্যক্তি দরজা বন্ধ করে ঘুমাচ্ছে তখন সেই ব্যক্তিকে বিরক্ত না করে ফজর পর্যন্ত সাড়ারাত উঠানে বসে থাকতেন একটি হাদিস শ্রবন করার জন্য ! ইতিহাসে এমন অসংখ্য তাবেয়ী এবং তাবে তাবেয়ীন রয়েছে যারা একটি হাদিস শুনার জন্য শত শত এমনকি হাজার মাইল পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছেন অথচ তখন ভাল কোন যানবহন ছিলনা। কি কষ্টই না করেছেন তারা দ্বীন ইসলামকে জানার জন্য। ”বিদায় হজ্জের ভাষনে নবীজী বলেছেন যারা উপস্থিত তারা আমার কথাগুলো তাদের কাছে পৌছে দাও যারা এখানে অনুপস্থিত” এই মুলনীতিকে সামনে রেখেই সাহাবীগন চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরেছিলেন এবং দেশ বিদেশ ঘুরে মানুষকে দ্বীন ইসলামের দিকে আহবান জানিয়েছেন, কোন সাহাবী এমন নেই যিনি হাজার হাজার মানুষের নিকট কুরআন সুন্নাহের বানী নিয়ে যাননি ! সাহাবীগন যদি দ্বীন ইসলামের দাওয়াত নিয়ে ব্যবসা বানিজ্যে ছেড়ে নিজেদের ভবিষ্যত চিন্তা না করে পৃথিবীতে ছড়িয়ে না পরতেন তাহলে কোন অবস্থাতেই আমরা আজ মুসলিম হতাম না ! হয়ত কেহ থেকে যেতাম হিন্দু কেহ বৌদ্ধ বা কেহ খ্রষ্টান। তারা দ্বীন ইসলাম নিয়ে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পরেছিল বিধায় আমাদের পূর্ব পুরুষগন কোন না কোনভাবে ইসলামে দিক্ষিত হয়েছিল যার ফলে আমরা আজ মুসলিম। কুরআন সুন্নাহ এবং সাহাবীদের জীবন দর্শন দ্ধারা যদি আমরা নিজেদেরকে একটু যাচাই করি তাহলে আমরা উপলদ্ধি করতে পারব কত বিরাট শুন্যতা আমাদের মধ্যে বিরাজ করছে। আমরা না নিজেদেরকে আগুন থেকে বাচাই, না পরিবারকে বাচাই, না বন্ধুমহলকে বাচাই, না সমাজের লোকদেরকে বাচানোর চেষ্টা করি ! অথচ পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ”তোমরা নিজেদের এবং পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাচাও” এই শুন্যতা থেকে উত্তরনের জন্য প্রয়োজন কুরআন সুন্নাহের পরিপূর্ন জ্ঞান এবং এর পূর্নাঙ্গ অনুসরন তাহলেই মুসলিম উম্মাহ তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে। ইসলামী জ্ঞান অর্জনের এই গুরত্বকে সামনে রেখে আজ এমন একটি ইসলামী লাইব্রেরী নিয়ে উপস্থিত হয়েছি যেখানে কুরআনের নির্ভরযোগ্য তিনটি তাফসীর, ছয়টি সহী হাদিস গ্রন্থ, ইসলামের ইতিহাস গ্রন্থ, সাহাবীদের ইতিহাস গ্রন্থ, এবং পৃথিবীর সেরা সেরা ইসলামী চিন্তাবিদদের লেখা প্রায় দুই শতাধিক নির্ভরযোগ্য ইসলামী সাহিত্য রয়েছে ! কোথায় পেতেন এই অমুল্য রতন ? হিসাব করে দেখেছি প্রায় ৪১০০০ হাজার টাকার ইসলামী বই রয়েছে এই সাইটটিতে ! বৃহত্তম এই জ্ঞানের ভান্ডার সংগ্রহ করতে হলে সময় কুরবানী করে ৪১০০০ টাকা যোগার করে বিভিন্ন মার্কেটে আপনাকে দিনের পর দিন ঘুরতে হত বইগুলো ক্রয় করার জন্য তবুও কি সমস্ত বই খুজে বের করা সম্ভব ছিল ? এক সময় বই দেখে দেখে চোখের তৃষ্ণা মেটাতাম কিন্তু বই ক্রয় করার সামর্থ ছিলনা আর এখন ইন্টারনেটের কল্যানে পৃথিবীর সেরা সেরা ইসলামী চিন্তাবিদদের প্রায় সমস্ত বই পেয়ে গেলাম সম্পূর্ন ফ্রি এর চেয়ে আনন্দের বিষয় আর কি হতে পারে বলুনত ? সাইটটি গুগল থেকে সার্চ দিয়ে পেয়েছিলাম তাই আপনাদের না জানিয়ে পারলাম না।
আমার অনেক মুসলিম ভাই হয়ত ভাবতে পারেন কৌশল অবলম্বন করে আমি লিংক প্রচার করছি বস্তুত লিংক প্রচারের সঙ্গে এই পোষ্টের কোনই সম্পর্ক নেই। যে মহান রবের কুদরতি হাতে আমার প্রান আমি সেই মহান সত্বার শপথ করে বলছি এই পোষ্ট শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। সুতরাং নৈতিবাচক ধারণা করা অনুচিত। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ”তোমরা অপর ভাইয়ের প্রতি ধারণা করা হইতে বিরত থাক কারন তোমাদের অনেক ধারনাই মিথ্যা হয়ে থাকে” সকলের নিকট প্রত্যাসা এই আয়াতের প্রতি ঈমানী শ্রদ্ধা রেখে ধারণা অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলা হইতে বিরত থাকবেন তাহলেই আমাদের মধ্যে সোহার্দ সমপ্রিতি বজায় থাকবে এবং ঈমান নিরাপদ থাকবে। আর যারা মানব সমাজে ইসলামের বানী প্রচার করে তাদের ক্ষেত্রে কি নীতি অবলম্বন করতে হবে সেই কথাও আল্লাহপাক বলে দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে ”যারা দ্বীন প্রচার প্রসারের কাজে সম্পৃক্ত থাকার ফলে কোন কাজ করার সময় পায়না তাদেরকে তোমরা সাহায্য কর” উক্ত আয়াতের শিক্ষা হল যারা দ্বীন প্রচারের কাজ করে তাদের বিরোধিতা করাত যাবেই না বরং তাদেরকে অর্থ দিয়ে সেটা না পারলে অন্ততপক্ষে প্রেরণা বা পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা ঈমানী দায়িত্ব। আল্লাহ সবাইকে সঠিক বিষয়টি বুঝার তওফিক দান করুন। আপনি যদি সাড়া জীবন আনলিমিটেড নেকী বাসায় বসে ফ্রি পেতে চান তাহলে এই প্রবন্ধটি আপনার পরিচিতি মহলে শেয়ার করুন তারা আপনার প্রচার থেকে যত বই ডাউনলোড করে পড়বে এবং নেক আমল করবে এবং কেয়ামত পর্যন্ত তাদের ভবিষ্যত বংশধর তাদের প্রেরনায় যত নেক আমল করবে তার একটি অংশ আপনার আমলনামায় অটো আসতে থাকবে ! এই বিষয়টি কুরআন হাদিস দ্ধারা অত্যান্ত সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত সত্য। অসম্ভব নয় যে, কেয়ামতের ময়দানে এটাই আপনার এবং আপনার পরিবারের সকলের জন্য নাজাতের উসিলা হয়ে যেতে পারে। অবশেষে আমার সকল মুসলিম ভাইদের বিশ্বস্রষ্টার আরেকটি বানী স্বরণ করিয়ে দিতে চাই, এরশাদ হয়েছে, তোমরা যদি আমার ধর্মের সাহায্যকারী হও তাহলে আমিও তোমাদের সাহায্য করব। এই আয়াতের মৌলিক শিক্ষা হল আমরা যদি নিজের আত্বা পরিশুদ্ধ করে অতপর পরিবারে, সমাজে, রাষ্টে, আন্তর্জাতিক অংগনে ইসলামী শিক্ষার প্রচার প্রসার করে আল্লাহর ধর্মের সাহায্যকারী হই তাহলে তিনি আমাদের সকল ভাল কাজে সাহায্য করবেন এটা তার ওয়াদা ! সুতরাং এই আয়াতের আলোকে একজন মুসলিমের মূল লক্ষ্যই হবে মহান রবের এবাদত এবং তার ধর্মের প্রচার প্রসারের দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে একজন সত্যের সাক্ষ্যদাতা হওয়া। আমরা হয়ত মহান আল্লাহকে ভুলে নিজের ক্যরিয়ার ও লেখাপড়া নিয়ে বেশি ব্যস্ত অথচ পবিত্র কুরআনের আমপাড়ায় এরশাদ হয়েছে ”তোমাদের চাওয়াতে কিছুই হয়না যদি আল্লাহ না চান” এই আয়াত প্রমান করে আমাদের সার্বিক উন্নতি মহান রবের করুনা রাশীর উপর নির্ভরশীল। ধৈর্য নিয়ে আমার মত একজন নগন্য লোকের আর্টিক্যলটি পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ সবাইকে সঠিক বিষয়টি হৃদয়ঙ্গম করার তওফিক দান করুন। আমিন। উক্ত প্রবন্ধে কোন ভুল হয়ে থাকলে বিচক্ষন দৃষ্টির কাছে আমার চিন্তা সত্বাকে সমর্পন করছি।
কেন ইসলামী জ্ঞান অর্জন করবেন ?
স্রষ্টার আদেশ সমুহ জেনে সেগুলো ব্যক্তি জীবনে আমল করার জন্য।
স্রষ্টা কতর্ৃক নিষিদ্ধ কর্মসমুহ জেনে সেগুলো বর্জন করার জন্য।
পরিবারবর্গকে সতর্ক করার জন্য।
প্রতিবেশিকে সতর্ক করার জন্য।
বন্ধু মহলকে সতর্ক করার জন্য।
আত্বীয় স্বজনকে সতর্ক করার জন্য।
শাসক গোষ্টিকে সতর্ক করার জন্য।
অমুসলিম সমপ্রদায়কে সতর্ক করার জন্য।
ইসলামী জ্ঞানের রাজ্যে পরিভ্রমন করুন প্রশান্তচিত্রে !
http://www.islambd.org