লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ্ ছাড়া কোণ ইলাহ নেই) – প্রচ্ছদ -১ (ইসলাম ও বিজ্ঞান)
লিখেছেন: ' iqramul' @ সোমবার, এপ্রিল ২৭, ২০১৫ (১১:০৪ অপরাহ্ণ)
***************************************************************************
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ্ ছাড়া কোণ ইলাহ নেই)। অর্থ কি ?
ইলাহ কি ?
যদি এতটুকু না জানেন তাহলে আপনি মুসলিম কি ?
আমরা মুসলিম পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করলাম , আপনি চাইলে সাবধান হতে পারেন।
ইল্লাহ অর্থ হোল মাবুদ , মাবুদ মানে যার ইবাদাত করা হয় বা যার পুজা করা হয়।
তাহলে পূজা, বা ইবাদাত কি ?
পুজা মানে হোল কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও রিতি নিতি পালন।আল্লাহ্র পুজা করা মানে আল্লাহ্র কে সন্তুষ্ট করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও নিতির পালন ও অনুসরণ। পুজা ও ইবাদত একই বিষয় কিন্তু ভাষা একটা আরবি একটা বাংলা সংস্কৃতি ।
মুসলিমরা আমরা ইবাদাত বলি। তাহলে ইবাদাত কি আসুন তা জানি ।
ইবাদাত অর্থ হোল কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্য তার আদেশ বা আইন পালন করা এবং আদেশ পালন করা ঠিক সেই নিয়মে যে ভাবে তিনি বা ইলাহ(আদেশ দাতা ) তা করতে বলেছেন বা যে নিয়ম তিনি শিখিয়েদিয়েছেন। অর্থাৎ যে নিয়মে আল্লাহ্র রাসুল তা করে দেখিয়েছেন ঠিক সেই বিজ্ঞান ও নিয়ম অনুযায়ী আল্লাহ্ আদেশ/আইন পালন করাই ইবাদাত। আল্লাহ্ ছারা অন্য কোন নিয়ম বা আইন পালন আল্লাহ্র ইবাদাত না।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বপ্রথম লাওহে মাহফুজে যা কিছু লিখেছেন তা হচ্ছে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম – পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি, নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া আর কোন মা’বুদ(আইন/আদেশ এর মালিক) নেই। আমার কোন শরীক নেই, যে আমার বিচার-মীমাংসার বা আদেশের/আইনের প্রতি আত্নসমর্পণ করেছে। আমার কঠিন পরীক্ষার সময় সবর এখতিয়ার করেছে এবং আমার আইনে/শাসনে সন্তুষ্ঠ রয়েছে, তাকে আমি সত্যবাদীরূপে লিখেছি; এবং কিয়ামতের দিন তাকে সত্যবাদীদের সাথে পুনরুন্থিত করব।”
ইবনুন নাজ্জার এ হাদীসটি হযরত আলী (রাঃ) থেকে সংগ্রহ করেছেন।
তাহলে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আল্লাহ্ ছাড়া কোণ ইলাহ নেই) অর্থ হোল এক আল্লাহ্ আল্লাহ্ ছারা আইন সৃষ্টিকারী কোন ইলাহ আদেশ/আইন দাতা ণেই যার আদেশকে পালন করতে হবে। আল্লাহর আইন/আদেশ কে বাদ দিয়ে অন্য আইন দাতার আইন পালন করলে ইবাদাত হবে না, আল্লাহ্র ইবাদাতে শিরক হবে।
********************************************************************************
আসুন একটু বোঝার চেষ্টা করিঃ
একটু বুঝার চেষ্টা করি , আমরা মানি যে আল্লাহ্ আমাদের ইলাহ (আইন/আদেশ দাতা), তিনি আমাদের আদেশ করেছেন “দান করতে, মিথ্যা না বলতে, পিতা মাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে, ঝগড়া বিবাদ না করতে, সুধ ঘুস না নিতে, মদ নেশা হতে দূরে থাকতে , হত্যা জিনা ব্যবিচার না করতে, চুরি না করতে, কোন কিছুর সামনে মাথানত না করতে, আল্লাহ্র আইনকে বাদ দিয়ে অন্য আইন দাতা গ্রহণ না করতে, কমকথা বলতে, আল্লাহ্র নিকট চাইতে, যাকাত দিতে, সালাত কায়েম করতে” এমন আরও অনেক আদেশ/আইন পালন করতে, তাই আমরা মুসলিমরা তার আদেশ গুলো পালন করি। এই আদেশ পালন করা টাই হোল ইবাদাত, আল্লাহ্ যা করতে বলেছেন তা করা, আর যা করতে নিষেধ করেছেন তা না করাই ইবাদাত।
আল্লাহ্ বলেনঃ
আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য/ইলাহ (ইলাহ = আইন বা আদেশ এর একছত্র মালিক) নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই। আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ(আদেশ আইন দাতা) নেই। অতএব আমার এবাদত বা আদেশ পালন কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।
সূরা ত্বোয়া-হা: 8, 20
এখন সালাত আদায় করাতো আদেশ দাতা(ইলাহর) আল্লাহ্র আদেশ, কিন্তু কিভাবে এই আদেশ পালন করতে হবে ? এই সালাত আদায় করার আইন ও নিয়ম তিনি শিখিয়েদিয়েছেন যাকে আমরা বলি হিকমাহ বা সুন্নাহ বা নিয়ম/পদ্দতি বা কৌশল আবার হিকমত মানে হোল বিজ্ঞান । তাহলে এক ইলাহের আদেশ পালন বা ইবাদাত করতে হলে তা ঠিক সেই নিয়মে করতে হবে, যেভাবে আল্লাহ্র তা করতে শিখিয়েছেন। একটু বুঝার জন্য ধরুন
সালাত পরতে কেউ জদি প্রথমে সালাম ফিরিয়ে, সুরা পাঠ করে , তারপর সেসদা করে বা তার ইচ্ছামত সালাত পরতে চায়, তবে তা কি গ্রহণ যোগ্য হবে? হবে নাহ। কারন তিনি আল্লাহ্র আদেশ পালন করেছেন কিন্তু আল্লাহ্র শিখানো হিকমত(রাসুলের সুন্নাহ) অনুযায়ী তা করেন নি। তার এই আদেশ পালন আল্লাহ্র কাছে গ্রহণযোগ্য হবে নাহ। তাই আল্লাহ্র ইবাদাত হতে হবে, আল্লাহ্র আদেশ ও হিকমত(নিয়ম/বিজ্ঞান) অনুযায়ী, যেভাবে আল্লাহ্র তার রাসুল ধারা জিন ও মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন।
তাই “লা ইলাহা ইল্লালাহ” হল তিনি ছাড়া অন্য কোণ আদেশ/আইন দাতা নেই , সুতরাং তার আইন/নিয়ম ও আদেশের মধ্যে থাকা । কোণ মানুষ, জিন, নবী রাসুল কেউই আদেশ/আইনের মালিক না একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া। কিন্তু যদি রাসুল (সাঃ) এর কথা বলা হয় যে তিনি কি আইনের মালিক ছিলেন বা আদেশ দাতা, রাসুল (সাঃ) তো ছিলেন আল্লাহ্র রাসুল, তিনি যে আইন আদেশ দিয়েছেন তা আল্লাহ্র ওহীর ধারাই দিয়েছেন, সেই আইন রাসুল (সাঃ) এর নিজের তৈরি না, অর্থাৎ রাসুল (সাঃ) এর আদেশ মূলত আল্লাহ্রই আদেশ, এবং যে নিয়মে তিনি আল্লাহ্র আদেশ পালন করেছেন তাও আল্লাহ্রই শিখানো নিয়ম, অর্থাৎ রাসুল(সাঃ) এর সুন্নাহও আল্লাহ্রই শিখানো আইন বা নিয়ম । তাই আল্লাহ্র ইবাদাত অর্থ হোল এক আল্লাহ্র আদেশ পালন ঠিক আল্লাহ্র শিখানো নিয়ম অনুযায়ী অর্থাৎ রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাহ অনুযায়ী । তাই রাসুলের সুন্নাহ ও আল্লাহ্র শিখানো নিয়ম। তাই যদি আল্লাহ্র আদেশ/আইন ও রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাহ বাদ দিয়ে যদি অন্য যেকোন আইন পালন করা হয় যদিও তা আল্লাহ্র জন্যই হয় বা ভালোর জন্য হয় তা ইবাদাত বা আল্লাহ্র আদেশ পালন হয় সেটা আল্লাহ্র নিকট গ্রহণ যোগ্য হবেন না।
আল্লাহ্ বলেনঃ
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত(কৌশল/সুন্নাত)। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।
সূরা আল জুমুআহঃ২
এখানে কিতাব হোল আল্লাহ্র আদেশ নিদর্শন(কুরআন) আর হিকমাহ মানে আল্লাহ্ আদেশ/আইন পালন করার নিয়ম বা কৌশল বা বিজ্ঞান । এই হিকমাহকে বলা হয় সুন্নাহ বা নিয়ম , যা আল্লাহ্র রাসুল (সাঃ) নিজে মানুষ ও জিনকে করে দেখিয়েছেন, ও শিখিয়েছেন। এই সুন্নাহ/হিকমাহ আল্লাহ্রই শিখানো আইন/নিয়ম এটা রাসুল (সাঃ) এর মনগড়া নিয়ম না। কারন রাসুল (সাঃ) আদেশ দাতা নয় বা নিয়ম তৈরির মালিকও না। তিনি আল্লাহ্র রাসুল, তিনি নিজে বানিয়ে কোণ নিয়ম শিখাতেন না, তিনি তাই বলতেন যা আল্লাহ্ তাকে ওহী করে শিখিয়েছেন ঃ
এ ব্যপারে আল্লাহ্র বলেনঃ
তোমাদের সঙ্গী(মুহাম্মাদ সাঃ) বিভ্রান্ত নয় বিপদগামীও না, এবং সে মনগড়া কথাও বলেন না। এতো ওহী যা তার উপর প্রত্যাদেশ হয়। তা শক্তিশালী শিক্ষাদান করে।
সুরা নাজমঃ ২-৫
এই আয়াত থেকে বুঝা যায় যে রাসুল (সাঃ) কোণ মনগড়া কথা বা আইন আদেশ তৈরি করতেন না বরং রাসুল হিসেবে যা তিনি করেছেন ও বলেছেন তা আল্লাহ্ কাছ থেকেই নাযিল হয়েছে। এর একটিকে বলা হয় কিতাব , আর একটিকে হিকমত বা বিজ্ঞান।
তাহলে ইবাদত হোল আল্লাহ্র আদেশ পালন করা, ঠিক যে নিয়মে আল্লাহ্ তা করতে শিখিয়েছেন সেই নিয়মের অনুসরণে এবং শুধুমাত্র আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য, রাসুল (সাঃ) ও তাই করেছেন অর্থাৎ ইবাদাত হতে হবে ওহীর অনুসরণে শুধু আল্লাহ্র জন্য, যদি এই ইবাদাত অন্য কারো আদেশ বা আইন অনুযায়ী হয় তা হলে ইবাদাত হবেনা, এবং “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ভংগ হবে যদিয় তা আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য হয় ।
আল্লাহ্ বলেন ঃ
এরপর আমি আপনাকে রেখেছি ধর্মের এক বিশেষ শরীয়তের বা নিয়ম নিতির উপর। অতএব, আপনি এর অনুসরণ করুন এবং অজ্ঞানদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না।
সূরা আল জাসিয়াঃ১৮
আমি আপনার প্রতি এ কিতাব যথার্থরূপে নাযিল করেছি। অতএব, আপনি একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর আদেশ পালন করুন। জেনে রাখুন, একনিষ্ঠ এবাদত বা আদেশ পালন আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে ইলাহ বা আইন আদেশ দাতা গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের আদেশ এ জন্যেই পালন করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
সূরা আল-যুমার:2
আর “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” হোল আল্লাহ্ই একমাত্র আদেশ/আইন দাতা অর্থাৎ এক আল্লাহ্র আইন আদেশ পালন বাদ দিয়ে অন্য কোণ আইন আদেশ পালন নয়। যদি আল্লাহ্র আদেশকে বাদ দিয়ে অন্য যেকোণ কিছুর আইন/আদেশ পালন করা হয় তবে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” ভঙ্গ হবে অর্থাৎ আল্লাহ্কে বাদ দিয়ে মানুষকে বা সয়তান কে আইন/আদেশ/নিয়ম দাতা কে ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করা হবে। সুতরাং ইমান আনার পর এক আল্লাহ্র যিনি আমাদের রব তার আইন আদেশ পালন ও প্রতিষ্ঠার উপর থাকতে হবে। এটাতে আল্লাহ্র সীমানা, যে এই সীমানায় থাকবে সে নিরাপদে থাকবে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য আইন/নিয়ম/আদেশের মালিক নেই) আমার দুর্গ। তাতে যে প্রবেশ করেছে, সে আমার শাস্তি থেকে নিরাপদ হয়েছে।”
এ হাদীসটি হযরত আনাস (রাঃ) থেকে ইবনু নাজাজ সংগ্রহ করেছেন।
কিন্তু যেখানে আল্লাহ্র আইন দেননি সেখানে মানুষের স্বাধীনতা রয়েছে নিজ ইচ্ছায় কল্যাণ কর কিছু করার, কল্যাণকর বিজ্ঞান সম্মত নিয়মে কাজ করার। কিন্তু আল্লাহ্র আইন আদেশ থাকলে বাকি সবল আইন আদেশ বাতিল, ও বাতিল।
নিশ্চয় আল্লাহ্র আইন ইমানদারদের জন্য সহস,আল্লাহ্র মানুষের জন্য আল্লাহ্র আদেশ পালনের নিয়মকে (হিকমাহকে) সহজকরেছেন যেন মানুষ তা সহজে পালন করতে পারে।
এবং সহজ করে দিয়েছেন আল্লাহ্র আইন আদেশ নির্দেশ গুলিকে বুঝার জন্য যাতে মানুষ বুঝতে পারে আল্লাহ্র চূড়ান্ত সংবিধান কুরআনকে।
আল্লাহ্ বলেনঃ
আমি আপনার জন্যে সহজ শরীয়ত(নিয়ম বা আইন) সহজতর করে দেবো। উপদেশ ফলপ্রসূ হলে উপদেশ দান করুন, যে ভ-য় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে,
সূরা আল আ’লাঃ৮-১০
যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন। এটা আল্লাহর আইন/আদেশ, যা তিনি তোমাদের প্রতি নাযিল করেছেন। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ ক্ষমা করেন এবং তাকে মহাপুরস্কার দেন।
সূরা আত্ব-ত্বালাক্বঃ৪-৫
আমি এ কোরআনে মানুষের জন্যে সব দৃষ্টান্তই বর্ণনা করেছি, যাতে তারা অনুধাবন করে; আরবী ভাষায় এ কোরআন বক্রতামুক্ত বা সহজপথ, যাতে তারা সাবধান হয়ে(সহজ পথে) চলে।
সূরা আল-যুমারঃ২৭-২৮
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি?
সূরা আল ক্বামারঃ১৭,২২,২৫,৩২,৪০
রাসুল (সাঃ) বলেনঃ
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “দ্বীন সহজ, যে ব্যক্তি দ্বীনের ব্যাপারে বেশী কড়াকড়ি করে, তাকে দ্বীন অবশ্যই পরাজিত করে দেয়। কাজেই তোমরা মধ্যম পন্থা অবলম্বন কর এবং কাছাকাছি হও। আর হাসিমুখ নিয়ে থাক। আর সকাল-বিকাল ও রাতের কিছু অংশ (আদেশ পালনের বা ইবাদাতের মাধ্যমে) সাহায্য প্রার্থনা কর।” [বুখারী: ৩৯]
যারা আল্লাহ্র আদেশ/আইনকে অস্বীকার করে বা অমান্য করে তারাই তো কাফির।
আল্লাহ্ তাদের ব্যপারে বলেনঃ
আর যারা কাফের এবং আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে বা অমান্য করে , তারাই জাহান্নামের অধিবাসী, তারা তথায় অনন্তকাল থাকবে।
সূরা আত-তাগাবুনঃ১০
আমি অবশ্যই কাফেরদেরকে কঠিন আযাব আস্বাদন করাব এবং আমি অবশ্যই তাদেরকে তাদের মন্দ ও হীন কাজের প্রতিফল দেব।
সূরা হা-মীম সেজদাহ ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৭
মুমিনরা এক আল্লাহ্কে আইন দাতা রুপে গ্রহণ করে ও তার উপর ভরসা করে,
মুমিনদের ব্যপারে আল্লাহ্ বলেনঃ
আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন আইন আদেশের মালিক বা ইলাহ নেই। অতএব মুমিনগণ আল্লাহর উপর ভরসা করুক।
সূরা আত-তাগাবুনঃ১৩
আল্লাহ্ সকল মানুষ আর জিনকে স্বাধীনতা দিয়েছেন যা খুশি করার অর্থাৎ ইচ্ছা স্বাধীনতা । মানুষ ও জিন ছাড়া সবকিছুকে আল্লাহ্ তার আইন পালনে বাধ্য করেছেন। এক আল্লাহ্র আদেশ পালন পালন করে তার সৃষ্টির সবকিছু অর্থাৎ সবকিছুই এক সৃষ্টিকর্তার আইন বা নিয়ম পালন করে। যদি আকাশ ও পৃথিবীতে আল্লাহ্র ছাড়া অন্য কোণ নিয়ম দাতা থাকতো আকাশ পৃথিবীর সমস্ত কিছুতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিত আর সব ধংস হয়ে যেত।
আল্লাহ্ বলেনঃ
হে মানুষ, তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর। আল্লাহ ব্যতীত এমন কোন স্রষ্টা আছে কি, যে তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে রিযিক দান করে? তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ (ইলাহ বা উপাস্য = আইন বা আদেশ এর মালিক ) নেই। অতএব তোমরা কোথায় ফিরে যাচ্ছ?
সূরা ফাতিরঃ ৩
সকল সৃষ্টির উদাহরণ দিয়ে আল্লাহ্ কিতাবে মানুষকে বার বার সাবধান করেছেন আল্লাহ্র উপর ইমান আনতে, আল্লাহ্ আইন আদেশ পালন করতে ও তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে যেভাবে আল্লাহ্র সকল সৃষ্টি তার আইনের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে।
আল্লাহ্ বলেনঃ
তাঁর অন্যতম নিদর্শন এই যে, তাঁরই নিয়মে/আদেশে আকাশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত আছে। অতঃপর যখন তিনি মৃত্তিকা থেকে উঠার জন্যে তোমাদের ডাক দেবেন, তখন তোমরা উঠে আসবে।
সূরা আর-রূম ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ২৫
আকাশ পৃথিবী এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, তা আমি ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।
নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে যারা আছে, তারা তাঁরই। আর যারা তাঁর সৃষ্টি সান্নিধ্যে আছে তারা তাঁর ইবাদতে (আইন পালনে) অহংকার করে না এবং অলসতাও করে না। তারা রাত্রিদিন তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করে এবং ক্লান্ত হয় না। যদি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য ইলাহ( আদেশ/ আইন দাতা ) থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।
কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী একুত্রে বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম বা আলাদা করে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?
তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে (অর্থাৎ আল্লাহ্র আইন বা নিয়ম অনুযায়ী কক্ষপথে চলে, নিজের নিয়মে চলে না)।
সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে।
সূরা আম্বিয়া: 16,19,20,22,30,33,104
এক আল্লাহ্ যিনি সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সকল কিছুকে আইন ও নিয়ম দান করেছেন, সকল সৃষ্টিই তার আইন আদেশ পালন করে ও তার আইনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে শান্তি শৃঙ্খলা তথা ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে।
আবার বলে শেষ করছি আল্লাহ্ কি বলেছেন ঃ
আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য/ইলাহ (ইলাহ = আইন বা আদেশ এর একছত্র মালিক) নেই। সব সৌন্দর্যমন্ডিত নাম তাঁরই। আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ(আদেশ আইন দাতা) নেই। অতএব আমার এবাদত বা আদেশ পালন কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।
সূরা ত্বোয়া-হা: 8, 20
সুতরাং মুমিনগন তোমরা আল্লাহ্র আইন আদেশের ও নির্দেশের অনুসরণ কর যেভাবে আল্লাহ্র রাসুল তা করে দেখিয়েছেন ও বলেছেন , রাসুল আইন আদেশ তৈরি কারী না তিনি আল্লাহ্র আইনের বার্তা বাহক। সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র আদেশকে বাদ দিয়ে খেয়াল খুশির ও অন্য আইন দাতার অনুসরণ করোনা।
আল্লাহ্ বলেনঃ
তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলুল্লাহর আনুগত্য কর। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে আমার রসূলের দায়িত্ব কেবল খোলাখুলি পৌছে দেয়া।
আল্লাহ তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ বা আইন/নিয়মের আদেশ দাতা নেই। অতএব মুমিনগণ আল্লাহর উপর ভরসা করুক।
সূরা আত-তাগাবুনঃ১২-১৩
সূরা সাবা ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ৫
যারা আমার আয়াতের নির্দেশের আবৃত্তিশুনে অথচ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে নিজ মতবাদে অটল থাকে, যেন সে শুনেও শোনেনি, ওকে মর্মন্তুদশাস্তির সংবাদ দাও। যখন সে আমার কোণ আয়াত/নিদর্শন/আদেশ যানতে পারে সে আমার তা নিয়েপরিহাস করে, ওদের জন্য লাঞ্ছনা দায়ক সাস্তি আছে।
ওদের কোণ আমল বা কৃতকর্ম ওদের কোণ কাজে আসবেনা, অরা আল্লাহ্র পরিবর্তে অন্যদেরকে অভিভাবক(বাবা, পীর, আওলিয়া ) গ্রহণ করেছে , ওদের জন্য জাহান্নাম অপেক্ষা করছে।
যারা তার রবের আয়াত বা আদেশ যা সঠিক পথ দেখায়, তা কুফরি করেছে (কুফরি করেছে =অস্বীকার,অমান্য, শুনেও শুনেনি) ,তাদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে ।
সুরা জাসিয়াঃ ৮-১১
সুত্রান সাবধান হন , এক আল্লাহ্র আইন/নিয়ম ও আদেশ পালন করুন, “লা ইলাহা ইল্লালাহ” এর উপর অর্থাৎ এক আল্লাহ্র আইনের উপর থাকুন, সাবধান হয়ে ইসলামের সরল পথের উপর থাকুন, জামেলা ও বক্রতা খুজবেন না। যদি খুজেন তাহলে নিজেই বিশৃঙ্খলা ও অশান্ততে পরে যাবেন, শান্তির জীবন বিধান বা ইন্সলাম থেকে বেরিয়ে যাবেন,
পথ হারিয়ে ফেলবেন।
আল্লাহ্ বলেনঃ
আমি এ কোরআনে মানুষের জন্যে সব দৃষ্টান্তই বর্ণনা করেছি, যাতে তারা অনুধাবন করে; আরবী ভাষায় এ কোরআন বক্রতামুক্ত বা সহজপথ, যাতে তারা সাবধান হয়ে(সহজ পথে) চলে।
সূরা আল-যুমারঃ২৭-২৮
আল্লাহ এক দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেনঃ একটি লোকের উপর পরস্পর বিরোধী কয়জন মালিক রয়েছে, আরেক ব্যক্তির প্রভু মাত্র একজন-তাদের উভয়ের অবস্থা কি সমান? সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না।
নিশ্চয় তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে।
অতঃপর কেয়ামতের দিন তোমরা সবাই তোমাদের পালনকর্তার সামনে কথা কাটাকাটি করবে। যে ব্যক্তি (এক)আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা বলে এবং তার কাছে সত্য আগমন করার পর তাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে, তার চেয়ে অধিক যালেম আর কে হবে? কাফেরদের বাসস্থান জাহান্নামে নয় কি?
সূরা আল-যুমারঃ২৯-৩২
পরে আমরা জানবো আল্লাহ্র আদেশ সংবিধান কিতাব ও হিকমাহ কি ? বিস্তারিত জানবো আমরা আল্লাহ্র আদেশ কিভাবে পালন করবো ।
বিস্তারিত জানতে আল্লাহ্র কিতাব কুরআন ও আল্লাহ্ শিখানো হিকমত/বিজ্ঞান অর্থাৎ রাসুল (সাঃ) এর সুন্নাহ বিশুধ হাদিস অনুসরণ করুন।
জেনে রাখুনঃ
তিনিই জীবন ও মরণ দান করেন এবং তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
সূরা ইউনুস ( মক্কায় অবতীর্ণ ), আয়াত ৫৬
আল্লাহ্ আমাদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন , আমাদের ভুলগুলো দূর করুন ও আমাদেরকে ক্ষমা করুন ।
আমীন।
কোন ভাই আমাদের কোন আয়াতের রেফ এর ভুল পেলে বা কোন ভুল পেলে জানাবেন।