পীর- মুরিদ- বাইয়াত/ বাইয়াতের আসল উদ্দেশ্য
লিখেছেন: ' Islamickantho' @ রবিবার, মার্চ ২০, ২০১১ (৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ)
http://www.peaceinislam.com/islamickantho/8847/
<strong>বাইয়াতের আসল উদ্দেশ্য
রাসুল সাঃ এর নিকট সাহাবায়ে কেরাম যে উদ্দেশ্যে বাইয়াত হতেন, আমাদেরকেও সেই একই উদ্দেশ্যেই বাইয়াত হতে হবে।
হযরত আবু ওবায়দা ইবনে ছামেত রাঃ বলেন আমরা রাসুলের নিকট বাইয়াত গ্রহণ করলে নিম্মক্ত কাজগুলো করার জন্য বলেছিলেন ঃ-
১)নেতার আদেশ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। তা দুঃসময়ে হোক, আর সুসময়ে হোক, খুশীর মুহুর্তে হোক বা অখুশীর মুহুর্তে হোক।
২)নিজের তুলনায় অপরের সুযোগ সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩)আমীরের সাথে বির্তকে জড়াবে না, তবে হ্যাঁ, যদি নেতার আদেশ প্রকাশ্য কুফরীর শামিল হয় এবং সে ব্যপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে যথেষ্ট দলিল থাকে, তাহলে ভিন্ন কথা।
৪)যেখানে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন হক কথা বলতে হবে, আল্লাহর পথে কোন নিন্দুকের ভয় করা চলবে না। (বুখারী ও মুসলিম)
তবে রাসুল সঃ এর নিকট বাইয়াত ও পরবর্তী কারো নিকট বাইয়াত গ্রহণের আনুগত্যের মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ- হে ঈমানদারগণ! আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসুলের, আর আনুগত্য কর তোমাদেও মধ্যে যারা দায়িত্বশীল। অতঃপর তোমাদের মধ্যে কোন ব্যপারে মতবিরোধ তৈরী হয় তবে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে ফিরে আছো। যদি তোমরা প্রকৃত আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমারদার হয়ে থাক। এটাই সঠিক কর্র্মনীতি এবং পরিনতির দিক দিয়েও এটাই উত্তম। সুরা আন- নিসা ঃ ৫৯)
সর্বাবস্থায় বিনাশর্তে আল্লাহর রাসূলের আনুগত্য করতে হয়, কিন্তু রাসুল ছাড়া অন্য কারো আনুগত্য অন্ধভাবে করা যাবে না। কোরআন সুন্নার অধীনে যাচাই- বাছাই করে তাদের আনুগত্য করতে হবে। রাসুলের আনুগত্য নিরংকুশ ও নিঃশর্ত, কিন্তু অন্যের বেলায় তা শর্তাধীন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ বলেন, রাসুল সাঃ বলেছেন মুসলমানদের উপর নেতার আদেশ শোনা ও মানা অপরিহার্য কর্তব্য। চাই সে আদেশ তার পছন্দনীয় হোক বা অপছন্দনীয়। তবে হা, যদি আল্লাহর নাফরমানী মূলক আদেশ হয় তবে তা শুনা ও মানার কোন প্রয়োজন নেই। (বুখারী ও মুসলিম)
ইসলামী বিধান অনুযায়ী বাইয়াত কার নিকট হওয়া উচিত?
রাসুলের নিকট সাহাবায়ে কেরাম বাইয়াত হয়েছিলেন আর রাসূল সাঃ দুনিয়া হতে চলে যাওয়ার পর রাসূলের তৈরী করা ইসলামী রাষ্ট্রের আমীরের নিকট বাইয়াত হয়েছেন। কিন্তু এখন তো পৃথিবীর কোন অঞ্চলে ইসলামী রাষ্ট্র নেই, তাহলে আমরা কার কাছে বাইয়াত গ্রহণ করবো ? এই ধারনা যারা মন ও মগজে ধারন করছেন তাদেরকে বলবো, রাসুলের মক্কী জীবনের দিকে তাকানোর জন্য। সেখানে রাসূল সাঃ কোন রাষ্ট্রের প্রধান ছিলেন না। তিনি ছিলেন ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ রূপে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সেনা নায়ক ও নবী হিসাবে।
সুতরাং বাইয়াত গ্রহণের জন্য ইসলামী রাষ্ট্রের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন রাসুল সাঃ যে উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন সেই উদ্দেশ্য।
রাসুল সাঃ এর আগমনের উদ্দেশ্য কি?
তিনি প্রেরন করেছেন আপন রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন ( জীবন পরিচালনার বিধান) সহকারে, যেন এই দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর মনে করে। সুরা তওবা ঃ ৩৩
তিনি প্রেরন করেছেন তাঁর রাসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীন ( জীবন পরিচালনার বিধান) সহকারে, যাতে এই দ্বীনকে অন্যান্য দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন, সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। সুরা ফাতহ ঃ ২৮
তিনি তাঁর রাসূলকে প্রেরন করেছেন পথনির্দেশ ও সত্য দ্বীন ( জীবন পরিচালনার বিধান) দিয়ে, যেন এই দ্বীনকে অপরাপর দ্বীনের উপর প্রবল করেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে। সুরা ছফ ঃ ০৯
আজ ইসলাম পৃথিবীর কোন অঞ্চলেই বিজয়ী আদর্শ রূপে প্রতিষ্ঠিত নেই । বাতিল আদর্শের অধীনে যতটুকু পালনের সুযোগ দিচ্ছে, ততটুকু পালন করা যাচ্ছে।
(চলবে)
আপনাকে ধন্যবাদ। হক্কানী পীর দেখে বাইয়াত করলে আমলের পরিপক্ষতা আসে। তবে ভন্ডদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।