পর্দার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
লিখেছেন: ' kawsartex' @ মঙ্গলবার, জুলাই ১৭, ২০১২ (৪:০২ অপরাহ্ণ)
লেখক: মাওলানা আব্দুস সালাম সুনামগঞ্জী
নারীকে হাদীস শরীফে ‘আওরত’ বলা হয়। আওরত শব্দের অর্থ – গুপ্ত বা আবৃত। সুতরাং নারীর নামেই বুঝা যায় – নারীর জন্য পর্দা আবশ্যকীয়। পারিপার্শ্বিকতার বিবেচনায় বিবেকের দাবীও তাই। তেমনি শরীয়তে নারীর জন্য পর্দাকে ফরজ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে পর্দার নির্দেশ
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন : “(হে নারীগণ!) তোমরা তোমাদের ঘরের (বাড়ীর চতুর্সীমানার) ভিতর অবস্থান কর এবং বাইরে বের হয়োনা – যেমন ইসলামপূর্ব জাহিলী যুগের মেয়েরা বের হত।” (সূরাহ আহযাব, আয়াত : ৪৩)
আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেন : “(হে নবী!) আপনি আপনার পত্মীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, যখন কোন প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয়, তখন তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। (যেন পর্দার ফরজ লংঘন না করে। এমনকি চেহারাও যেন খোলা না রাখে। তারা যেন বড় চাদরের ঘোমটা দ্বারা নিজেদের চেহারাকে আবৃত করে রাখে।) ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সূরাহ আহযাব, আয়াত : ৬০)
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র ইরশাদ করেন : “মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয় তারা যা করে, আল্লাহ তা অবহিত আছেন। আর ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান – তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের ওড়না বক্ষদেশে দিয়ে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্তবাদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও বালক – যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে।” (সূরাহ নূর, আয়াত : ৩০ – ৩১)
হাদীস শরীফে পর্দার নির্দেশ
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন – “যে সতর দেখবে এবং যে দেখাবে, তাদের উপর আল্লাহ লা‘নত করেন।” (বাইহাকী)
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো ইরশাদ করেন – “স্ত্রীজাতির পর্দায় গুপ্ত থাকার সত্তা। কিন্তু যখনই তারা পর্দার বাহিরে আসে, তখন শয়তান তাদের দিকে ঝুঁকে।” (তিরমিযী)
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো ইরশাদ করেন – “খবরদার! কোন পুরুষ যেন কোন মেয়েলোকের সাথে একাকী না থাকে। কেননা, যখনই কোন পুরুষ কোন মেয়েলোকের সাথে একাকী হয়, তখনই শয়তান তাদের তৃতীয়জন হয়ে যায় এবং তাদের পিছনে লাগে।” (তিরমিযী)
নবীজী (সা.) আরো ইরশাদ করেন – “মেয়েরা যখন বালিগা হয়ে যায়, তখন তাদের শরীরের কোন অংশ দেখা বা দেখানো জায়িয নয়। অনেক কাপড় পরিধানকারিণী (পাতলা কাপড়ের কারণে) কিয়ামতের দিন উলংগ সাব্যস্ত হবে।” (মুসলিম)
ফিকহের আলোকে পর্দার হুকুম
ফিকহের মাসআলা হল, মেয়েদের জন্য পর্দা করা ফরজ। গাইরে মাহরাম পুরুষের সামনে সে পর হোক বা আপন হোক, মেয়েদের একটি চুলও উন্মুক্ত রাখা জায়িয নয়। তেমনিভাবে মেয়েলোকদের জন্য কোন মেয়েলোকের সামনে হাটু হতে নাভী পর্যন্ত উন্মুক্ত করা জায়িয নয়।
গর্ভকালে বা প্রসবকালে অথবা অন্য কোন কারণে যদি ধাত্রী দ্বারা পেট মালিশ করার দরকার পড়ে, তবে নাভীর নীচের কোন অংশ খোলা যাবে না। কোন কাপড় রেখে তার উপর দিয়ে মালিশ করবে। বিনা প্রয়োজনে সতর ধাত্রীকে দেখানোও জায়িয নয়। সাধারণত কোন মেয়ের পেট মলবার সময় মা, বোন, খালা, ফুফু, দাদী, নানী, ননদ এবং বাড়ীর অন্যান্য লোকেরাও দেখে থাকে, এটা জায়িয নয়।
প্রত্যেক গাইরে মাহরাম পুরুষের প্রত্যেক গাইরে মাহরাম স্ত্রীলোকের সামনে যে পরিমাণ পর্দা করা ফরজ, কাফির-ফাসিক মেয়েলোক হতেও মুমিন মেয়েদের সে পরিমাণ পর্দা করা ওয়াজিব।
সুতরাং হিন্দু বা খৃষ্টান মেয়েলোক বা যেকোন বেদ্বীন বা বেপর্দা মেয়ে হতেও পর্দানেশীন নারীর পর্দা করা ওয়াজিব। তাদের সামনে কেবলমাত্র মুখম-ল, হাতের পাতা ও পায়ের পাতা ব্যতীত শরীরের কোন অংশ খোলা রাখা জায়িয নয়।
ধাত্রী যদি অমুসলিম মহিলা হয়, তবে শুধু জরুরী স্থান ব্যতীত হাতের বাজু, পায়ের নলা, মাথা বা গলা তাকে দেখালে গুনাহগার হবে।
মেয়েদের জন্য নতুন বর বা ভিন্ পুরুষদেরকে সামনাসামনি অথবা বেড়ার ফাঁক দিয়ে কিংবা ছাদে উঠে বা জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখা জায়িয নয়। তেমনিভাবে পুরুষদের জন্য বেগানা মেয়ে বা নতুন বউ দেখা জায়িয নয়।
স্ত্রীলোকদের নিজের পীরকেও দেখা দেয়া জায়িয নয়। তেমনি ধর্মবাপ, ধর্মভাই, উকিল বাপ, খালু, দুলাভাই, দেবর, ভাসুর, বেয়াই, নন্দাই, চাচাতো ভাই, মামাতো ভাই, খালাতো ভাই, খালাশ্বশুর, চাচাশ্বশুর ইত্যাদি গাইরে মাহরাম আত্মীয়দের সাথে দেখা দেয়া জায়িয নয়।
চুড়ি বিক্রেতা পুরুষতো দূরের কথা, বেদ্বীন স্ত্রীলোকের হাতে, এমনকি যে সকল মুসলিম মহিলা বেপর্দায় চলে, তাদের হাতেও চুড়ি পরা জায়িয নয়।
তেমনিভাবে বেগানা পুরুষের সাথে কখনো কোথাও আসা-যাওয়া করা বা দেখা দেয়া দুরস্ত নয়।
(ফাতাওয়া আলমগীরী)
পর্দার অন্যান্য বিধান
অনুমতি ছাড়া কারো ঘরে প্রবেশ নিষেধ
আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন – “হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যান্য গৃহে প্রবেশ করো না – যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে (অনুমতির জন্য) সালাম না দাও। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।” (সূরাহ আন-নূর, আয়াত : ২৭)
উক্ত আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী, যে কারো গৃহে প্রবেশ করতে হলে, আগে অনুমতি নিতে হবে। এমনকি নিজের মায়ের ঘরে প্রবেশেও এ হুকুম।
বিনানুমতিতে কারো গৃহে প্রবেশ করলে, মাহরাম নয় এমন নারীর উপর দৃষ্টি পড়তে পারে কিংবা মাহরাম কেউ নিজ ঘরে কখনো বেহাল অবস্থায় থাকতে পারে, তখন অনুমতি ছাড়া ঢুকলে, তাদের সেই অনাকাক্সিক্ষত অবস্থা চোখে পড়ে যাবে – যা বড়ই লজ্জাকর বিষয়। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে – পর্দা ও সতর রক্ষার জন্যই অপরের ঘরে বিনানুমতিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
দৃষ্টি নত রাখতে হবে
দৃষ্টি নত রাখা পর্দার একটি বিধান। আল্লাহ তা‘আলা নর-নারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন দৃষ্টি নত রাখতে।
দৃষ্টি নত রাখার অর্থ – দৃষ্টিকে এমন বস্তু থেকে ফিরিয়ে রাখা, যার প্রতি দেখা শরীয়তে নিষিদ্ধ ও অবৈধ।
বেগানা নারীর প্রতি বদ নিয়তে দেখা হারাম ও কবীরা গুনাহ এবং বিনা নিয়তে বা ফ্রিমাইন্ড নিয়ে দেখাও নাজায়িয। কোন নারী অথবা পুরুষের গোপনীয় অঙ্গের প্রতি দেখা মারাত্মক গুনাহর কাজ। এছাড়া কারো গোপন বিষয় দেখার জন্য তার গৃহে উঁকি মেরে বা বেড়ার ফাঁক দিয়ে গোপনে দেখা জঘন্য পাপ।
যৌনাঙ্গকে হিফাজত করতে হবে
যৌনাঙ্গকে হিফাজত করা ও সংযত রাখা পর্দার বড় বিধান। আল্লাহ তা‘আলা নারী-পুরুষ উভয়কে যৌনাঙ্গ হিফাজত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।
যৌনাঙ্গকে হিফাজত করার অর্থ হল – কুপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করার যত পন্থা প্রক্রিয়া আছে, সবগুলো থেকে যৌনাঙ্গকে দূরে রাখা। এতে ব্যভিচার, সমমৈথুন, হস্তমৈথুন, ঘর্ষণ ইত্যাদি সব কাম চরিতার্থমূলক কর্ম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কাম প্রবৃত্তির প্রথম ও প্রারম্ভিক কারণ হচ্ছে দৃষ্টিপাত করা ও দেখা এবং সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে ব্যভিচার। সূরাহ নূরের ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা এসব বিষয় জোড়ালোভাবে নিষিদ্ধ করে হারাম করে দিয়েছেন। সেই সাথে এতদুভয়ের অন্তর্বতী ভূমিকাসমূহ যেমন – পরস্পর কথাবার্তা বলা, শোনা, স্পর্শ করা, চিঠিপত্র বা এসএমএস আদান-প্রদান করা ইত্যাদি সবই নিষিদ্ধ ও হারাম পরিগণিত হয়েছে।
গাইরে মাহরামদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকতে হবে
নারীদের পর্দা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে জরুরী হল – সকল বেগানা পুরুষের সং¯্রব থেকে দূরে থাকতে হবে। এ জন্য মাহরাম ও গাইরে মাহরামদের সম্পর্কে পূর্ণরূপে অবগত হওয়া তাদের কর্তব্য।
যেসব পুরুষদেরকে দেখা দেয়া নারীদের জন্য জায়িয নয়, তারা হচ্ছে বেগানা বা গাইরে মাহরাম। নিম্নে তাদের কিছু ফিরিস্তি তুলে ধরা হল -
১। হুরমতের রক্তের সম্পর্কহীন যে কোন বেগানা পুরুষ – নিজ গ্রামের লোক হোক বা ভিন্ন গ্রামের এবং চাই একই স্কুল বা কলেজ বা ভার্সিটির হোক না কেন, কিংবা কাসমেট বা সহপাঠি হোক না কেন বা একই অফিসে চাকুরী করুক না কেন, তারা গাইরে মাহরাম।
২। ধর্মবাপ, ধর্মভাই, উকিল বাপ, মুখডাকা বাপ-ভাই বা মামা-চাচা, শিক্ষক, পীর প্রমুখ গাইরে মাহরাম।
৩। দুলাভাই।
৪। খালু, ভাসুর ও ভাসুরের ছেলে।
৫। দেবর ও দেবরের ছেলে।
৬। ননদের স্বামী ও তার ছেলে।
৭। চাচার ছেলে/চাচাতো ভাই।
৮। জেঠাতো ভাই।
৯। মামার ছেলে/মামাতো ভাই।
১০। স্বামীর অন্য যত প্রকারের ভাই বা দুলাভাই আছে।
উল্লিখিত তারা সকলেই বেগানা। তাদের সাথে পর্দা করা ফরজ। এক কথায়, যাদের সাথে বিবাহ বৈধ, তারা সবাই গাইরে মাহরাম। তাই তাদের সাথে দেখা দেয়া জায়িয নয়।
আর যাদের সাথে বিবাহ জায়িয নয়, বরং তা চিরতরে হারাম, তাদেরকে মাহরাম বলা হয়। মেয়েদের জন্য যারা মাহরাম অর্থাৎ যাদের সাথে দেখা সাক্ষাত জায়িয, তারা হচ্ছে -
১। স্বামী।
২। স্বামীর পিতা, দাদা যত উপরে যাক।
৩। আপন পিতা, দাদা যত উপরে যাক।
৪। আপন ভাই, বিমাতা ভাই, বৈপিত্রিক ভাই।
৫। সতীনের ছেলে।
৬। আপন মামা।
৭। আপন চাচা।
৮। আপন ছেলে।
৯। আপন ভাইয়ের ছেলে (যত নীচে যাক)।
১০। আপন ভগ্নির পুত্র (যত নীচে যাক)।
এছাড়াও নি¤œবর্ণিত ব্যক্তিগণের সাথে নারীর দেখা দেয়া জায়িয -
১০। নাবালিগ ছোট ছেলে – নারীদের বিষয়ে এখনো যার বুঝ হয়নি।
১১। ঈমানদার স্ত্রীলোক। (কাফির-বেদ্বীন স্ত্রীলোকের সঙ্গে দেখা দেয়া দুরস্ত নয়।)
১৪। অশীতিপর বৃদ্ধ যার একেবারে চাহ্ওয়াত নেই এবং স্ত্রীলোকের প্রতি কোনরকম আসক্তি নেই।
উল্লিখিত লোকদের সাথে নারীর দেখা দেয়া জায়িয অর্থাৎ দেখা দিলে কোন গুনাহ হবে না। এদের ছাড়া সকল পুরুষ থেকে নারীদের পর্দা করতে হবে। তাদের কারো সামনে নারীর পর্দা ছাড়া আসা বা দেখা দেয়া জায়িয হবে না। তা সম্পূর্ণ হারাম ও কবীরা গুনাহ।
পর্দার উপকারিতা
ইসলামে যে পর্দার বিধান দেয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তা করলে আমরা এর তিনটি উপকারিতা উপলব্ধি করতে পারি -
প্রথমত এতে নারী ও পুরুষের নৈতিক চরিত্রের হিফাজত হয় এবং নর-নারীর অবাধ ও প্রতিবন্ধকহীন মেলামেশা পথ রুদ্ধ হয়।
দ্বিতীয়ত নারী ও পুরুষের কর্মক্ষেত্র পৃথক হওয়ার দ্বারা প্রকৃতি নারীদের ওপর যে গুরুদায়িত্ব ন্যস্ত করেছে, তা তারা নির্বিঘেœ ও সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে।
তৃতীয়ত পারিবারিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত ও সুদৃঢ় হয়। কারণ, পর্দার দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পরকিয়াবিহীন পবিত্র জীবন গঠিত হয় এবং চরিত্রহীনতা ও অবিশ্বাস তাদের থেকে বিদায় নেয়।
পক্ষান্তরে বেপর্দা থেকে পরকিয়া ও চরিত্রহীনতার জন্ম হয়। আর এর দ্বারা স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিশ্বাস উঠে গিয়ে অশান্তির উদ্ভব হয়।
পর্দাহীনতার ক্ষতি
পর্দাহীনতার দ্বারা পরিবারে অবিশ্বাস ও অশান্তি নেমে আসে তা পূর্বেই বলা হয়েছে। তেমনিভাবে বেপর্দেগীর দ্বারা পাশ্চাত্যের বল্গাহীন জীবনধারায় অভ্যস্ত হয়ে নারীরা তাদের দ্বীন ও ঈমান বরবাদ করে দেয়। বলতে কি, বল্গাহীন চলাফেরার ফলেই পাশ্চাত্যবাসীদের নৈতিক ও চারিত্রিক কাঠামো আজ চূড়ান্ত বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
তেমনিভাবে বেপর্দার দ্বারা সমাজে ইভটিজিং জন্ম নেয় এবং যৌন সন্ত্রাস প্রকট আকার ধারণ করে। এর বাস্তবতা আজ আমাদের নখদর্পণে।
অনুরূপভাবে পর্দাহীনতার পরিবেশে নারীদেরকে তাদের নিজস্ব কর্মক্ষেত্র থেকে টেনে এনে পুরুষের কর্মক্ষেত্রে নামিয়ে দেয়া হয়। তখন নারী তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বাতন্ত্র্যকে বিসর্জন দিয়ে পুরুষের সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়। এর ফলে নানা অঘটনসহ ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবন বিপর্যস্ত হয় – যার বাস্তব চিত্র পেপার-পত্রিকা খুললেই চোখে পড়ে।
তদুপরি বেপর্দার সবচেয়ে বড় ক্ষতি হল – এর কারণে হারাম ও কবীরা গুনাহ হয় এবং আল্লাহ ও রাসূল তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হন। যদ্দরুণ দুনিয়াতে অশান্তি ও দুর্ভোগের শাস্তিসহ পরকালে তারা কঠিন আজাবের সম্মূখীন হবে।
পরিশেষে আমাদের মনে রাখতে হবে – নারীদের যেমন পর্দা করা ফরজ, তেমনি তাদেরকে পর্দামত চলতে সুযোগ দেয়া পুরুষের উপর ফরজ। আর যেসব পুরুষরা নারীদের অভিভাবক, তাদের জন্য ফরজ হল – নারীদেরকে পর্দায় রাখা।
মাসিক আদর্শ নারী তাত্ত্বিক প্রবন্ধ ::::: মে – ’১২ www.adarsha-nari.com