ক্রিকেটার সাঈদ আনোয়ারের বয়ান
লিখেছেন: ' kawsartex' @ সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১২ (৭:২৩ পূর্বাহ্ণ)
লিখেছেন: নীরব পাঠক
দুনিয়াতে প্রত্যেক মানুষ কামিয়াব হতে চায়, আল্লাহ তায়ালাও তাকে কামিয়াব করতে চান। কিন্তু একপ্রকার কামিয়াবী মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে আর একপ্রকার কামিয়াবী আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাঃ) এর অনুসরনের মাধ্যমে। মানুষ আজ দুনিয়ার মধ্যে দৌড় লাগাচ্ছে, মাল জমা করছে, আসবাব জমা করার জন্য, রাস্ট্র, সম্পদ, ঘর, বাহন, বেশীর চেয়ে বেশী বাহ্যিক জিন্দেগী। কিন্তু যাদের দুনিয়া অর্জিত হয়েছে, আল্লাহ এসব লোকদের ব্যর্থ করেছেন। কুরআনে এদের ঘটনা শুনিয়েছেন, যারা দুনিয়ার জিন্দেগী বানানোর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। শুধু ঐ বাচবে যে অন্তরের উপর মেহনত করবে। হযরত মুসা(আঃ) মানুষের অন্তরের উপর মেহনত করেছেন, হযরত ঈসা (আঃ) মানুষের অন্তুরের উপর মেহনত করেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) অন্তরের উপর মেহনত করেছেন। আম্বিয়া, সাহাবা, আউলিয়া যারাই অন্তরের উপর মেহনত করেছেন তাদেরকে আল্লাহ তাআলা সর্বদাই সফলতা দান করেছেন। দুনিয়াতেও সফলতা দান করেছেন, আখেরাতেও সফলতা দান করেছেন। কামিয়াবীর জন্য আল্লাহ তাআলা মানুষকে তাকওয়ার পথ অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেছেন কুরআন মুত্তাকীদের জন্য পথপ্রদর্শক (হেদায়েত)। সুরা বনী-ঈসরালে আল্লাহ তাআলা বলেছেন “আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুনিদের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়।” (আয়াত ঃ ৮২)। যতক্ষন পর্যন্ত তাকওয়া অবলম্বন না করা হবে ততক্ষন পর্যন্ত আমাদের কুরআন বুঝে আসবে না। যতক্ষন পর্যন্ত তাকওয়া অবলম্বন না করা হবে ততক্ষন পর্যন্ত আমাদের দ্বীন বুঝে আসবে না। যে লোক সারাদিন চোখের সাহায্যে হারাম দেখে, বেগানা মহিলার উপর নজর লাগায়, যে লোক সারাদিন মিথ্যা বলে, গীবত করে, যে লোক কান দিয়ে সারা দিন গান শুনে ঐলোকের কিছুতেই কুরআন বুঝে আসবে না। কুরআন শ্রেফ তাকওয়ালাদর জন্যই হেদায়েত। তাকওয়া কি? কুরআনের শুরুতেই আল্লাহ তায়ালা তাকওয়াওয়ালাদের তিনটি গুন বর্ণনা করেছেন, ১.গায়েবের ওপর ঈমান আনে, ২.নামায কায়েম করে, ৩.আল্লাহর রাস্তায় মাল খরচ করে। (বাকারা ঃ ৩) গায়েবের উপর আলহামদুলিল্লাহ আমরা সবাই ঈমান এনেছি। গায়েবের উপর ঈমান কি? আল্লাহর উপর ঈমান আনা, ফেরেশতাদের উপর ঈমান আনা, আল্লাহর প্রেরিত রাসুল ও কিতাবের উপর ঈমান আনা, তাকদীরের উপর ঈমান আনা, মৃত্যু পরবর্তী জীবনের উপর ঈমান আনা। এটা প্রথম শর্ত। দ্বিতীয় শর্ত হল, নামায কায়েম করা। ভাই দোস্ত ও বুযুর্গ, আজ উম্মতের শতকরা নব্বই ভাগ লোকতো নামায-ই পড়ে না। নাযায পড়লেও খেয়াল নেই কেমন হচ্ছে। আল্লাহু আকবার করতেছে কিন্তু নামায হচ্ছে না। আমার নামায জবরদস্ত হয়ে যায়। এটা সেই নামায যার মাধ্যমে হযরত সুলাইমান (আঃ) এক জবরদস্ত হুকুমত (সাম্রাজ্য) নিয়ে নিয়েছেন, এটা সেই নামায যার মাধ্যমে হযরত মুসা(আঃ) দরিয়ার মধ্যে রাস্তা খুলে নিয়েছেন, এটা সেই নামায যার মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরাম তাদের কাজকর্ম আল্লাহ থেকে আদায় করে নিয়েছেন। তৃতীয় শর্ত হল, আপনার মাল সঠিকস্থানে ব্যয় করা। শায়েখ কুরতুবী তাঁর কুরআনের তফসীরে ফরমাইয়াছেন এসব লোক তার মাল গরীব আত্মীয়-স্বজন, মিসকীন, এতীম. আল্লাহ রাস্তার মুসাফিরদের, ঋণমুক্তির ব্যবস্থার জন্য খরচ করে। আমরা প্রতিদিন তালাশ করবো আমাদের সম্পদ কোথায় খরচ হয়, আমরা গরীব-মিসকীনদের তালাশ করবো, এতীমদের তালাশ করবো, ঋণগ্রস্থ তাদের ঋণ আদায় করবো। যখন আমরা এই তিন লাইনে মেহনত করবো, তখন আল্লাহ তাকওয়া দান করবেন। যখন আমরা তাকওয়াওলা হবো, তখন কুরআন বলতেছে, মুত্তাকীদের জন্য হেদায়েত। কুরআন তাদের হেদায়েত দিবে। আমরা কিভাবে এই তাকওয়া অর্জন করবো? তাকওয়ার উদ্দেশ্য কি? আল্লাহকে ভয় করা। এবং কিভাবে ভয় করা? যে ব্যক্তি একা বসে রয়েছে, কেউ দেখছে না। ঐব্যক্তির চোখ ঐটা না করে যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন, ঐব্যক্তির চোখ ঐটা করে যা আল্লাহ অুনমতি দিয়েছেন। এর জবান ওটাই বলে যা আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন। সে একাই হোক না কেন তার অন্তরে এটা থাকবে আল্লাহ আমাকে দেখছেন। এটাই তাকওয়া। ভাই, দোস্ত ও বুযুর্গ, উম্মত আজ বিভক্ত হয়ে গেছে। কোন কিছুর উপর একত্রিত হচ্ছে না। শুধু লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ-এর উপর এক হতে পারে। আমরা এটার-ই মেহনত করছি। কিভাবে সারা দুনিয়ার সব মানুষ আল্লাহর অস্তিত্বের উপর বিশ্বাসী হয়ে যায়। সব মানুষ রাসুল (সাঃ) এর জিন্দেগী নিজের জীবনে অনুসরন করে। আজ উম্মতের মধ্যে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ তো আছে, এটা নিয়ে কোন লোকের কোন আপত্তি নেই। কোরআন পড়তেছে, খুব পড়তেছে লোকদের শুনাইতেছে, কিন্তু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ মানার জন্য প্রস্তুত না। মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহর আকৃতি গঠনে তৈরী না। মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ অনুযায়ী জীবন গঠনে তৈরী না। ব্যস, কুরআনও পড়, বাকী কাজও কর। কুরআনের কাহিনী লেখ। ভাই কুরআনে তো বহু কিছুই লেখা নাই। কুরআন তো শুধু শুকরকে হারাম করেছে। অন্য পশুর ব্যাপারে কোন কথা নেই। কুরআনতো এই শর্ত রেখেছে, বলুন, যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভালবাস তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ্ও তোমাদেরকে ভালবাসেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। (সুরা আলে-ইমরান ঃ ৩১) সাহাবায়ে কেরাম রাসুল(সাঃ) এর নিকট প্রশ্ন করলেন আমরা যদি আল্লাহকে মহব্বত করি তাহলে আল্লাহ কি আমাদের ভালবাসবেন। তখন আল্লাহ এ ওহী নাযিল করলেন। আপনি তাদের বলে দিন যদি এরা চায় আমি এদের মহব্বত করি, তবে এরা আপনার পুরোপুরি অনুসরন করুক। যে আপনার কাছে সবচেয়ে বেশী প্রিয়, ভিতরে বাহিরে আপনার প্রিয়, ততক্ষন পর্যন্ত এটা না হবে ততক্ষন পর্যন্ত তাকে মহব্বত করবো না। আজ আল্লাহর রহমত আমাদের দিকে নেই, ভুমিকম্প আসছে, সুনামী আসছে, বিভিন্ন সমস্যা আসছে, হাসপাতাল বাড়ছে, রোগ-ব্যাধি বাড়ছে, জেলখানা ভরছে, পাগলাগারদ ভরছে, মসজিদ খালি। কেন? আল্লাহর রহমত আমাদের সাথে নেই। আর যদি আমরা আল্লাহর রহমত আমাদের দিকে অনুগামী করতে চাই তাহলে উপায় একটাই। হুজুর (সাঃ) এর পুরোপুরি অনুসরন করা। এজন্য আমিও চেষ্টা করছি, আল্লাহর রাস্তায় বেরিয়ে সারা দুনিয়ার সকল মুসলমানের নিকট এই বার্তা পৌছে দেয়া। মুসলমানরা দুনিয়াতে ওয়াজের মাধ্যমে ইসলাম কায়েম করেননি। সাহাবায়ে কেরাম আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষা জানতেন না। অন্য মানুষেরা আরবীও বুঝতো না। তারা সাহাবায়ে কেরামেরর ব্যবসা-বানিজ্য দেখেছেন, আচার-আচরন দেখেছেন, লেন-দেন দেখেছেন, আখলাক দেখেছেন। এভাবেই সারা দুনিয়াতে ইসলাম প্রসারিত হয়েছে। আমরাও এই চেষ্টাই করছি, মুসলমানরা নিজেদের ইবাদাত, ঈমানিয়াত, আখলাক, আচার-আচরন, লেন-দেন, রাজনীতি সব ইসলামী করুক, তাহলে দুনিয়ার মানুষ এসব দেখে দেখে মুসলমান হয়ে যাবে। আমরা এর জন্যই প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আসুন আমরা সবাই মিলে পিছনের জীবনের জন্য তাওবা করি। সবাই মিলে আল্লাহর কাছে তাওবা করি। আল্লাহ তাআলা বলেন, যে তাওবা করবে, তাকে শক্তিশালী বানিয়ে দেব এভাবে তাদের উপর আকাশ থেকে বৃষ্টিধারা বর্ষন করে আসমান-জমীনের বরকত নাযিল করবো, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবো, নহর ও উদ্যান প্রদান করবো। (সুরা নুহঃ ১০-১২ এর সারাংশ) তাওবাহ আল্লাহর নিকট খুব পছন্দ। আসুন আমরা পিছনের জীবনের জন্য তওবা করি, নতুন এক জীবনের আয়োজন করি।
http://www.minsid.com/IslamicAudio/Nasheeds/Junaid_Jamshed/Mehboob-e-Yazdaan/(07)_Junaid_Jamshed_-_Words_of_Advice_-_Saeed_Anwar.mp3
www.islam.com.bd
২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯ – ০৪:৪৪ (ওয়েবসাইটটি একটিভ নেই)