ইভ টিজিং….অতঃপর
লিখেছেন: ' loner' @ সোমবার, নভেম্বর ৮, ২০১০ (৯:০৯ পূর্বাহ্ণ)
একবার একটা ডক্যুমেন্টারী দেখছিলাম একটা সাপকে নিয়ে। “বাম্বা” নামক এই আপাত হিংস্র সাপটির ব্যবহারের ধরন নিয়ে বানানো ছিল ঐ ডক্যুমেন্টারীটা। অন্ধকারে, বিশেষ ক্যামেরা দ্বারা তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছিল একটা সাপ প্রায় নির্জীব অবস্থায় পড়ে আছে কোন অন্ধকার গুহা সদৃশ স্থানে। তার পাশ দিয়েই (তার প্রিয় খাদ্য) ইঁদুর ঘুরছে ফিরছে, অথচ, সে কিছুই করছে না – একেবারে নির্বিকার! ছবিতে বেশ কিছুক্ষণ সময় জুড়ে এই আপাত নিরাপদ অবস্থা দেখানো হলো। তারপর হঠাৎ সাপটি অত্যন্ত ক্ষিপ্র গতিতে একটা ইঁদুরকে ধরে গিলতে লাগলো – তার পদক্ষেপ এতই দ্রুতগতি ছিল যে, “স্লো-মোশন” দেখানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ছবিটা ঝাপসা হয়ে যাচ্ছিল! বর্ণনাকারী বলছিলেন যে, ঐ সাপটির ক্ষুধা পেলেই সে কেবল শিকার করে – অন্যথায় একেবারে নির্বিকার থাকে। এখানে খুব সাধারণ যুক্তিতেই বোঝা যায় যে, সাপের ইঁদুর শিকার করার ঐ দৃশ্যের ঘটনার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক বিষয়গুলো হচ্ছে:
১)একটা সাপ
২)তার পরিবেশ/প্রতিবেশে (তার প্রিয় খাদ্য) ইঁদুরের উপস্থিতি
৩)সাপের ক্ষুধার্ত বোধ করা
প্রাণীকুলে আরো অনেক প্রাণীর মাঝে এই ধরণের “আচরণ বিধি” দেখা যায় – সিংহের বেলায়ও এ কথা প্রচলিত যে, সে অকারণে শিকার করে না!
যাহোক, ক্ষুধার মতই অনস্বীকার্য আরেকটি মৌলিক ব্যাপার হচ্ছে “যৌন বাসনা”। শুনতে যত অস্বস্তিই লাগুক – বলা বাহুল্য যে, এই মৌলিক বোধের বশবর্তী হয়েই একজন তরুণ, যুবক বা পুরুষ একজন মেয়ের/নারীর প্রতি আকর্ষণ বোধ করে, তাকে পেতে চায়, তার কাছে যায় এবং অসংযত/অসংলগ্ন আচরণ সমেত তার উপর চড়াও হয়। এখানেও ঘটনাটা ঘটার জন্য তিনটা উপাদন থাকে:
১)একজন তরুণ/যুবক/পুরুষ
২)তার পরিবেশ/প্রতিবেশে তার কাছে আকর্ষণীয় মনে হবে এমন তরুণী/নারীর উপস্থিতি।
৩)তরুণ/যুবক/পুরুষটির “যৌন-ক্ষুধা” থাকা
উপরের তিনটি উপাদানের যে কোন একটি না থাকলেই “ইভ টিজিং”-এর মত ঘটনা যে ঘটবে না – তা একপ্রকার নিশ্চিত! পুরুষ-নারীর সম্ভাব্য মেলা-মেশার ক্ষেত্র হ্রাস করে, নারীর খোলা-মেলা যৌন আবেদনময় বেশ-ভূষা বা সাজ-গোজ পরিহার করে এবং “ইভ টিজিং”-এর মত বিশ্রী ঘটনায় যাবার আগেই, প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক উপায়ে তরুণ/যুবক/পুরুষের যৌন-ক্ষুধা নিবারণ করে – “ইভ টিজিং”-এর ঘটনা প্রায় শূন্যের ঘরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, ইনশা’আল্লাহ্।
আরো সহজভাবে বললে “নিজের পায়ে দাঁড়ানোর” সেই অনিশ্চিত ক্ষণের অপেক্ষা না করে – ন্যূনতম সঙ্গতির অধিকারী হলেই তরুণ/যুবক/পুরুষরা যদি তাড়াতাড়ি বিয়ে করে, আর, মেয়েরা যদি ঢেকে চলে – তবেই “ইভ টিজিং” কমে আসবে। ও আরেকটা ব্যাপার ভুলেই গিয়েছি – ঘুমন্ত মানুষকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জাগিয়ে তোলার মত করে, অহেতুক, যৌন-বাসনা উদ্রেককারী পর্ণোগ্রাফিক সামগ্রী (যার ভিতর বিল-বোর্ডের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে বিনোদন শিল্পের প্রায় সবই এসে যাবে) ব্যবহারে মানুষকে “হন্যে” করে তোলা অবশ্যই পরিহার করতে হবে!!
পুরুষ-নারীর সম্ভাব্য মেলা-মেশার ক্ষেত্র হ্রাস করে, নারীর খোলা-মেলা যৌন আবেদনময় বেশ-ভূষা বা সাজ-গোজ পরিহার করে এবং “ইভ টিজিং”-এর মত বিশ্রী ঘটনায় যাবার আগেই, প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক উপায়ে তরুণ/যুবক/পুরুষের যৌন-ক্ষুধা নিবারণ করে – “ইভ টিজিং”-এর ঘটনা প্রায় শূন্যের ঘরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, ইনশা’আল্লাহ্।
সহমত ।
@হাফিজ, ধন্যবাদ।
ভাল লিখেছেন।
@অক্টোপাশ, ধন্যবাদ – অনেক দিন পর এই ব্লগে আসা হলো।
একদিকে হাইকোর্ট থেকে ফতোয়া জারি করা হলো “পর্দায় বাধ্য করা যাবে না” অন্যদিকে দেশে বেড়ে গেল ইভ টিজ। এটা খুবই স্বভাবসুলভ বিষয়।
হাদিস শরিফের ইরশাদ : عن أبي هريرة – رضي الله عنه – قال : قال رسول الله – صلى الله عليه وسلم – : إذا أتاكم من ترضون خلقه ودينه فزوجوه ، إلا تفعلوا تكن فتنة في الأرض وفساد عريض . “আবু হুরাইরা রযি : থেকে বর্নিত : রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেন : যখন তোমাদের নিকট এমন প্রস্তাব আসে যার দ্বীন-ধর্ম ও আচার ব্যবহার তোমাদের পসন্দ হয় তখন তাদেরকে (তাদের সাথে তোমাদের পৌষ্যদের) বিয়ে করিয়ে দাও (যাদের ব্যাপারে তারা প্রস্তাব নিয়ে আসে) আর যদি তা না করো তবে যমিনে ফিৎনা ও ব্যাপক ফাসাদ আরম্ভ হবে। ” সূত্র
@আল মুরতাহিল, সহমত।