পশ্চিমাদের বাঁকাচোখ ও তাহমিনার সত্য উচ্চারণ
লিখেছেন: ' এম এম নুর হোসেন' @ সোমবার, জুলাই ১১, ২০১১ (৩:২০ অপরাহ্ণ)
গভীর রাতে মসজিদের ইমাম সাহেবকে ফোন করলাম। ইমাম সাহেব ফোন ধরলেন। কী ব্যাপার ভাই? হুজুর! বাসায় একটু সমস্যা হয়েছে। আমার একজন আত্মীয় বেশ ভয় পাচ্ছে। ভয় সংক্রমণব্যধি। তার কারণে আমার বাচছরাও ভয় পাচছে। দয়া করে যদি বাসায় আসতেন। আমি আপনার বাসার নিচে দাঁড়িয়ে আছি। কিছুক্ষণ পরই ইমাম সাহেব নিচে নেমে এলেন। এই গভীর রাতেও হুজুরকে বিরক্ত করার কারণে তিনি মোটেও অসন্তুষ্ট হলেন না। আমার বাসায় গিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় ব্যয় করলেন। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর তিনি চলে এলেন। তখন রাত আড়াইটা। এমন গভীর রাতে এবং এমন অস্থির পরিস্থিতিতে আমরা ইমাম সাহেবের জন্য কোনো আপ্যায়নের ব্যবস্থা করতে পারিনি। এমনকি তাকে কিছু হাদিয়া দিতে চাইলেও তিনি তা সবিনয়ে ফিরিয়ে দেন।
এখানে একজন ইমাম সাহেবের যে বদান্যপূর্ণ বৈশিষ্ঠ্য ফুটে উঠেছে, এটা কিন্তু আলেম সমাজে খুব বড় কোনো বিষয় নয়। আলেম-উলামা যে কোনো পেশারই হোন না কেন মানব হিতৈষী এ ধরনের বৈশিষ্ট বা গুণাগান তাদের মধ্যে অনেকটা মজ্জাগত হয়ে ওঠে। নন আলেম কারো কাছে মনে হতে পারে এতো রাতে যিনি তার আরামের ঘুম হারাম করে পরের বিপদ মুহূর্তে পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি নিশ্চয় অনেক বড় মনের অধিকারী। কিংবা এ ধরনের ঘটনা কালভদ্রে ছাড়া কখনো ঘটা সম্ভব নয়। এটা ঠিক যে, উদারচিত্ত না হলে কারো পক্ষে এভাবে অন্যের পাশে দাঁড়ানো সম্ভব নয়।
ঐশী বিদ্যানগণ যে কোনো মানুষই নি:স্বার্থভাবে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। এটাই ইলম বা ঐশী বিদ্যার এক সমুজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য। বিষয়টি গভীর দৃষ্টিতে দেখলে মনে করবেন, ধর্মীয় যে কোনো ধরনের জিজ্ঞাসা-সমাধান মানুষ ইচছা করলেই জানতে পারেন। বিজ্ঞ কোনো আলেমের দ্বারস্থ হলেই অতি সহজে এবং কোনো ধরনের আর্থিক ব্যয় ছাড়া মানুষ যে কোনো বিষয়ে কোনো বিজ্ঞ আলেমের কাছে গেলেই জানতে পারে। এ জন্য তাকে এ্যপয়েনমেন্টও নিতে হয় না। ফোনে, সাক্ষাতে, পথে ঘাটে, পরিবহনে, অফিস আদালতে যে কোনো ব্যস্ত পরিসরেও কেউ যদি কোনো আলেমের কাছে কোনো জটিল মাসআলাও জিজ্ঞাসা করেন, কোনো আলেম তাকে বিমুখ করেন না। কিন্তু কেউ যদি গভীর রাতে কোনো ডাক্তারের কাছে কোনো রোগের চিকিৎসা চায়, কোনো উকিলের কাছে কোনো মামলার বিষয় উত্থাপন করে, কোনো অর্থনীতিবিদের কাছে মার্কেটের ব্যাপারে কোনো কনসালটেটিভ সার্ভিস চায়, কোন ব্যবসায়ির কাছে ব্যবসায়িক কোনো তথ্য চায় তাহলে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? বিষয়টা সহজেই অনুমেয়। ডাক্তার-উকিলকে মোটা অংকের ফি দিয়েও প্রায়ই রোগী বা মক্কেলকে তাদের বিরু দ্ধে অভিযোগ করতে শোনা যায়। অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা বড় ধরনের সমস্যায় বা প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে কনসালটেন্ট নিয়োগ করে। প্রত্যেক মাসে সেই কনসালটেমন্টকে ৩/৪ লাখ টাকা দিতে হয়। সঙ্গে গাড়ি, ড্রাইভার আরামদায়ক অফিস চেম্বার ইত্যাদি তো আছেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কনসালটেন্ট নিয়োগের উল্লেখযোগ্য সুফল পাওয়া যায় না। স্ত
অথচ দেখুন, যে যে কাজ করে বা যে পেশায় আছে সে কিন্তু সে বিষয় সম্পর্কে লেখাপড়া, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি কম বেশি অর্জন করে। এমনকি একজন রোগীও সাধারণ রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে অ- বিস্তর জানে। তারপরও জটিল অবস্থায় কন্স্যাল্টেন্টের শরনাপন্ন হয়। পক্ষান্তরে ধর্ম বা ইসলাম সম্পর্কে সাধারণ মানুষ খুব কমই লেখাপড়া করেন। যারা কুরআন শরীফ পড়তে পারেন, তাদের কেবল কুরআন সম্পর্কে অক্ষরজ্ঞান আছে। ইসলামের মৌলিক উৎস থেকে ইসলাম সম্পর্কে জানার কোনো সুযোগ নেই। যদিও বাংলায় অনেক ধর্মীয় বই-পত্র আছে। কিন্তু সেগুলোও প্রাইমারি লেবেলের। তাও কয়জনে পড়ে, কুরআন শরীফই বা কয়জনে পড়তে জানেন? ৭৭% মানুষ দেখে দেখে কুরআন শরীফ পড়তে পারেন না। কিন্তু আলেম সমাজের বদান্যতায় ধর্মীয় জ্ঞান অর্জিত এই মানুষগুলো কী অনায়াসেই না ধর্মীয় সেবা করে যাচেছ।
একারণেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো ধর্মীয় চেতনা বা ধর্মীয় আবেগ অনুভূতির স্পূরণ দেখা যায়। এই উপলব্ধি থেকে আলেম সমাজকে মানুষ যথাসম্ভব শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকে। আলেম সমাজের যে কোনো আহবানে সরবে বা নীরবে সাড়া দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যখন দেশের কোথাও ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকান্ড হয়। ইসলাম বিরোধী কোন আইন ইত্যাদি করা হয় তখন আলেম সমাজের ডাকে সাধারণ মানুষ দলমত নির্বিশেষে সাড়া দেয়। আলেমদের সঙ্গে সাধারণ মানুষও প্রতিবাদ মূখর হয়ে ওঠে। যে পর্যন্ত এটা নিখাদ ধর্মীয় মূল্যবোধে উজ্জীবিত থাকে সে পর্যন্ত এই প্রতিবাদ মুখরতা ক্রমেই উচছারিত হতে থাকে। বিষয়টি সুরাহ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন প্রতিবাদ অব্যহত থাকে। তবে ইসলামী নেতৃত্বের আসনে বসে কেউ কখনো ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার অপপ্রয়াস চালায় না বিষয়টি এমন নয়। আর এ কারণেই অনেক সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটে দু:খজনকভাবে।
আলেম সমাজের যারা মুরু ব্বি অভিভাবক তাদের উচিত, আলেম সামজের যারা নিজেদের পায়ে বেপরোয়াভাবে কুঠারাঘাত করেন তাদেরকে সতর্ক সংশোধন করে দেয়া।
রহমানী পয়গাম জুন ২০১১
আলেম সমাজের যারা মুরু ব্বি অভিভাবক তাদের উচিত, আলেম সামজের যারা নিজেদের পায়ে বেপরোয়াভাবে কুঠারাঘাত করেন তাদেরকে সতর্ক সংশোধন করে দেয়া।
আপনাকে ধন্যবাদ লেখাটি শেয়ার করার জন্য।
Thank’s for share