প্রথম আলোর প্রশ্ন! মওদুদী জামায়াতের দুঃখপ্রকাশ, কার কাছে, কেন? মাকির্নিদের সাথে এদের এত সখ্যতা কেন???
লিখেছেন: ' এম এম নুর হোসেন' @ বুধবার, ডিসেম্বর ৫, ২০১২ (৬:০৯ অপরাহ্ণ)
মঙ্গলবার জামায়াত ইসলামী আহূত হরতালের সময় দলের কর্মী ও ক্যাডাররা সারা দেশেই তাণ্ডব চালায়। ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, হরতালকারীরা ১১১টি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি সম্পদের ক্ষতি করেছে। এমনকি তাদের রুদ্ররোষ থেকে হাসপাতালও রেহাই পায়নি। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বহু সদস্য।
এসব জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট হওয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামী বিন্দুমাত্র অনুশোচনা না করলেও হরতালের সময় প্রগতি সরণিতে মার্কিন দূতাবাসের একটি গাড়িতে হামলা ও গাড়িচালক আহত হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা এই হামলার দায় নিয়ে বলেছে, ‘অভূতপূর্ব এই দুঃখজনক ঘটনার ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত শেষে এর দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করছি এবং নিন্দা জানাচ্ছি। এ ঘটনার জন্য দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। এবং এর ক্ষতিপূরণ দিতে আমরা প্রস্তুত।’
জামায়াতে ইসলামী মার্কিন দূতাবাসের গাড়ি ভাঙচুরের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে চাইলেও বাংলাদেশের মানুষের যে সম্পদ বিনষ্ট করেছে, তার জন্য কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেনি। তারা একটি গাড়ি ভাঙচুরের জন্য মার্কিন দূতাবাসের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালাচ্ছে, পুলিশসহ সাধারণ মানুষকে আহত করছে, তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করার প্রয়োজন বোধ করেনি।
এতেই প্রমাণিত হয়, ইসলামের নামধারী এই মৌলবাদী দলটির দায়বদ্ধতা কার কাছে। দেশের মানুষের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র দায়বদ্ধতা নেই। দেশের সম্পদ বিনষ্ট হওয়ায় তারা বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়। তাদের সব দায়বদ্ধতা, সব অনুশোচনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি।
দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি জামায়াতে ইসলামীর দায়বদ্ধতা থাকলে ১৯৭১ সালে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করতে পারত না। পারত না মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিতে। গাড়ি ভাঙচুরের জন্য আজ তারা মার্কিন দূতাবাসের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেও একাত্তরের অপরাধের জন্য দেশের মানুষের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেনি। এটাই হলো জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক চরিত্র!
ওই দিন আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশনের আপত্তির মুখে জামায়াতে ইসলামী দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে ‘ইসলামী জীবনবিধান’ বাদ দিয়ে ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ’ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। এ ছাড়া এতে ‘ইসলামের সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম’-এর পরিবর্তে ‘সুবিচারপূর্ণ শাসন কায়েম’ বসানো হয়েছে। এর পরও দলের নামের সঙ্গে ‘ইসলামী’ শব্দটি সংযুক্ত করার কী যুক্তি থাকতে পারে?