লগইন রেজিস্ট্রেশন

একটি ঘৃণ্য এবং হৃদয়বিদারক ও লোমহর্ষক ইতিহাসের নাম “এপ্রিল ফুল”

লিখেছেন: ' এম এম নুর হোসেন' @ রবিবার, মার্চ ৩১, ২০১৩ (৭:০২ অপরাহ্ণ)

এপ্রিল ইংরেজী বর্ষের চতুর্থ মাস , ফুল (FOOL) একটি ইংরেজী শব্দ , যার অর্থ বোকা । এপ্রিল ফুলের অর্থ ‘এপ্রিলের বোকা’ । “এপ্রিল ফুল” ইতিহাসের একটি জঘণ্যতম ও ঘৃণ্য এবং হৃদয়বিদারক লোমহর্ষক ইতিহাস । আজ আমরা অনেকই এসর্ম্পকে জানিনা বলে ইহুদী খৃষ্টানদের সাথে এপ্রিল ফুল পালন করে থাকি।

আমরা মুসলমান , আজ আমাদের ইতিহাস সর্ম্পকে আমাদের জানা নাই এবং জানার চেস্টা ও করিনা । আর একারনে আজ আমাদের অধঃপতন ত্বরাম্বিত হইতেছে। ‘যে জাতি তার ইতিহাস সর্ম্পকে জানেনা , সে জাতির মত সর্বহারা জাতি আর হতে পারেনা’।মূল কথায় আসি- হিজরী প্রথম শতাব্দীর শেষের দিক । যখন সারাবিশ্ব মুসলমানদের বিজয়ের বাতাস বয়ে চলছে । সে বাতাস ইউরোপের মাটিতে দোলা দেয় । ইউরোপের একটি দেশের নাম আন্দুলুস বা স্পেন । ইউরোপের দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থিত রুপসি স্পেন । উত্তরে ফ্রান্স, পশ্চিমে র্পতুগাল , র্পূবে ও দক্ষিনে ভূমধ্যেসাগর ।

স্পেনের রাজা লডারিক ছিলেন একজন কট্ররপন্থী জালিম খৃস্টান । তার জুলুমে জনগন ছিল অতিস্ঠ । তার জুলুম নির্যাতনে হাপিয়ে উঠেছিল মাজলুম মানবতা। কিন্তু তার বিরুধ্যে টু শব্দ করার সাহস ছিল না কারো । যখন গোটা ইউরোপের ক্রান্তিকাল চলছিল , মুসলিম রণক্ষেত্রে কমান্ডার প্রধান ছিলেন মূসা বিন নুসায়ের । তিনি তখন দক্ষিন মরেক্কো জয় করে কায়রোয়ানে অবস্থান করছিল । তখন তার সাথে কাউন্টার রাজা জুলিয়ান সাক্ষাত করে মাজলুম মানবতাকে রক্ষা করার জন্য মূসা বিন নুসায়েরকে আহবান করেন । মূসা বিন নুসায়ের তার অধিনের সেনাপতি তারেক বিন যিয়াদের নেতৃত্বে ৭,০০০ (সাত হাজার) সৈন্যর একটি মুজাহিদ বাহিনি প্রেরন করেন ।

৯২ হিজরী ২৮ রমযান মোতাবেক ৭১১ খ্রিঃ জুলাই মাসে স্পেনে অবতরন করেন মুজাহিদ বাহিনি । শুরু হয় খ্রিস্টানদের সাথে প্রচন্ড লড়াই ।মর্মস্পর্শী তাকবীর ধব্বনিতে মূখরিত হয় আকাশ বাতাস । দীর্ঘ জিহাদের পর খৃস্টান বাহিনি পর্যদস্ত হয় । একের পর এক স্পেনের সকল শহর করায়ত্ব হয় মুসলমানদের ।সলিল সমাধি হয় জালিম শাসকের

তারপর থেকে ১৪৯২ সাল পযর্ন্ত প্রায় ৮০০ বছর মুসলমানেরা শান্তি আর সাম্য বজায় রেখে স্পেন শাসন করে। এদীর্ঘ আটশত বছর মুসলমানেরা স্পেনের বর্বর চেহারা সম্পূর্ণ্য সভ্যতার আলোকে উদ্ভাসিত করেন । তাদের ন্যায়-ইনসাফ আর ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে মানুষ দলে দলে আশ্রয় নেয় ইসলামের ছায়া তলে । শিক্ষা-সাংস্কৃতি ,জ্ঞান-বিজ্ঞান ,শিল্প-বাণিজ্যে ইত্যাদির কেন্দ্র-বিন্দুতে পরিণিত হয় স্পেন।

কালের প্রবাহে এক সময় মূসলমানেরা শিক্ষা-সাংস্কৃতি , জ্ঞান-বিজ্ঞান ছেড়ো আরাম- আয়েশে মত্ত হতে শুরু করল। শাসকদের মাঝে ক্ষমতা ও অর্থের লোভ, ভোগ- বিলাসিতা ও বিজাতিয় আচার-আচরনসহ সব ধরনের নৈতিক অধঃপতন দেখা দেয়। এমন কি নৈতিক অধঃপতনের নিম্নপর্যায়ে উপণীত হল। মুসলিম শাসকদের মধ্যে অনৈক্য ও বিবাদ শুরু হয় ।

আর এই সুযোগকে কাজে লাগায় খৃস্টান শক্তি । যখনই মুসলমানেরা নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ভূলে আরাম আয়েশে লিপ্ত হল এবং নিজেদের মধ্যে বিবাদ শুরু হল তখনই তাদের উপর নেমে আসলো এক অমানিবক অত্যাচার এবং হত্যাযজ্ঞ। ইউরোপের মাটি থেকে মুসলমানদের চিরতরে বিলিন করার জণ্য মেতে উঠে ইউরোপিয় নরপিচাশেরা । পর্তুগিজ রাণী ইসাবেলা এবং পার্শবর্তি রাজা ফার্ডিন্যান্ডের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী নিয়ে ১৪৯২ সালের ১লা এপ্রিল চতুর দিক থেকে মুসলমানদেরকে ঘেরাও করে পশুর মত ঝাপিয়ে পড়ে ।

ইতিহাস সাক্ষীদেয় , যখন খ্রিস্টানদের সম্মলিত বাহিনী মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ করছিল , তখনও মুসলমান রাজা- বাদশাদের হেরেমগুলো মদ আর নর্তকি দ্বারা ভরপুর ছিল ,আর তারা সেগুলো নিয়ে মত্ত ছিল । নেতৃত্বহীন নিরীহ অপ্রস্তুত মুসলমানেরা বুকভরা আশায় নিয়ে রাজধাণী গ্রানাডায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহন করে । কিন্তু তাদের হতাশা চাড়া আর কিছুই ছিলনা।

কারন, যারা তাদের নেতৃত্ব দিবে, তাদের ঈমান আমল আগেই বিলীন হযে গেছে ।মুসলমান রাজ- বাদশারা ছিল বহুদলে বিভক্ত । কিছু নামধারী মুসলিম নেতারা নিজেদের ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য এই পৈচাশিক কাজে মদদ জুগিয়ে ছিল।

প্রিয় বন্ধু !অনেক লম্বা ইতিহাস,আমি সংক্ষেপ করছি। ক্রমে খৃস্টানগন গ্রনাডা দখল করে মুসলমানদের উপর চালালো অত্যাচারের স্টীমরোলার । মুসলমানরা দিশেহারা হয়ে যখন মুসলমানদের অবস্থা প্রকট রুপ ধারন করল ,তখন ধূর্তবাজ ফার্ডিন্যান্ডে ঘোষনা দেয় , যে মুসলমানেরা অস্ত্র সর্মপণপূর্বক মসজিদ সমূহে আশ্রয় নিবে তাদেরকে পূর্ণ্য নিরাপাত্তা দেওয়া হবে এবং যারা সমূদ্রের জাহাজ সমূহে আশ্রয় নিবে , তাদেরকে অন্যান্য মুসলিম দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে । নেতৃত্বহীন অসহায় মুসলমানেরা অস্ত্রবিহীন ক্ষুধা- পিপাসা কাতর হয়ে অর্ধৈয্য হয়ে পড়েছিল । তারা নরপিচাশ খৃস্টানদের প্রতরানা না বুঝে সরলমনে মসজিদ এবং জাহাজ সমূহে আশ্রয় নেয় । তখনই জালিম , নরপিচাশ প্রতারক রাজা ফর্ডিন্যান্ডের নির্দেশে খৃষ্টান সৈণ্যরা মসজিদ সমূহে তালাবদ্ধ করে দিয়ে ভিতরে ও বাহিরে চতুরদিক আগুন লাগিয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়া লক্ষ লক্ষ মুসলমানদেরকে পুড়িয়ে ণির্মম ভাবে শহিদ করল এবং জাহাজ গুলোতে আশ্রিত মুসলমানদেরকে গহীন সমূদ্রে ডুবিয়ে মারলো ।ত্রিশ লক্ষ মুসলমানদের কে পুরিযে মারলো এক সাথে । এভাবে আগুনে পুরে ভস্মিভূত হল আধুনিক ইউরোপের জনকেরা ।পরর্বর্তিতে মুসলমানদের মসজিদ-মাদ্রাসা এবং স্মৃতিগুলোকে বানিয়ে ছিল তাদের ঘোড়ার আস্তাবল ।

আসহায় নারি- পুরুষ আর শিশুদের আত্নচিৎকারে ঐদিন আকাশ- বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। মুসলমানদের দুর্দশা দেখে জালিম , নরপিচাশ , প্রতারক রাজা ফর্ডিন্যান্ডের তার স্ত্রী ইসাবেলাকে জড়িয়ে ধরে আনন্দ উল্লাসে বলে উঠে Oh Muslim ! HoW fool you are . হায় মুমলমান ! তোমরা কত বোকা ।

সে দিন টি ছিল এপ্রিল মাসের ১ তারিখ । সেই থেকে মুসলমানদেরকে উপহাস করার জন্য খৃষ্টানেরা প্রতি বছর ১লা এপ্রিলকে অত্যন্ত জাক-জমাকের সাথে ‘এপ্রিল ফুল’ বা এপ্রিলের বোকা উৎসবের দিন হিসাবে পালন করে আসছে।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় , এপ্রিলের এ দিনে লক্ষ লক্ষ মুসলমান ভাই-বোনেরা নির্মমভাবে প্রান হারিয়েছিল ,আজ মুসলমানের সন্তানেরা খৃস্টানদের অনুসরনে সে দিনটিকে হাসি-খুশির দিন হিসাবে পালন করে থাকে। এপ্রিলের এই নির্মম ও হৃদয় বিদারক ইতিহাস জানার পরও কোন মুসলমান এই দিনকে হাসি খুশির দিন হিসাবে উদযাপন করতে পারে না । এপ্রিল ফুলের এই ইতিহাস আমরা সকল মুসলমান ভাইকে জানিয়ে দেই ,যাহাতে আর কোন মুসলমান এই দিন কে আনন্দ র্ফুতি হিসাবে পালন না করে । আসুন আমরা সকলে মিলে এই দিনটিকে ঐতিহাসিক ঘৃণ্য এবং কালো দিবস হিসাবে পালন করি । আল্রাহ পাক সকল মুসলমানদের কে সহী বুঝ দান করুন ।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
১৫৪ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)