নেকড়ে কিভাবে কুকুর হল?
লিখেছেন: ' Mahir' @ শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭ (২:৩৫ পূর্বাহ্ণ)
ক্ষুদে চিহুয়াহুয়া থেকে বড় আকারের ম্যাস্টিফ পর্যন্ত বিপুল বৈচিত্র্যের আকার ও অনুপাত, লোমের দৈর্ঘ্য ও অঙ্গবিন্যাস, এবং আচরণ সমৃদ্ধ গৃহপালিত কুকুরের সংখ্যা ২০০ থেকেও বেশি।[i] ৪৩০০ বছরে ২৩০ ধরণের কুকুর দেখা যায়। ক্রোমোসোম থেকে দেখা যাচ্ছে যে, গৃহপালিত কুকুর [Canislupus familiaris] আসলে ধূসর নেকড়ে। ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করে শক্ত প্রমাণ মেলে যে, সকল কুকুরের উদ্ভব হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পোষ মানানো নেকড়ে থেকে।[ii]
যদিও এরিস্টটল তার Historiae Animalium বইতে শিয়াল বা নেকড়ে থেকে কুকুরের কথা আলাদাভাবে লিখেছেন, কিন্তু University of Otago এর archaeologist Helen Leach লিখেছেন, “systematic breeding only emerged within the past 300 years.”[iii] ৩০০ বছরে ২০০ প্রকরণ! এটা কি বিবর্তনের সাথে খাপ খায়? বিবর্তনবাদীরা দাবি করে যে, প্রাণীর পরিবর্তন পর্যায়ক্রমিক মিউটেশনের সমষ্টি দ্বারা হয়। কিন্তু দলিলাদি থেকে দেখা যায় যে, মিউটেশন নয়, বরং সুপ্ত জিনগত পূর্ব-নকশা অনুসারে নেকড়ে থেকে কুকুরের বিবর্তন দ্রুত হয়।
বরফ যুগের সূচনা থেকে মানুষের সংস্পর্শ কিভাবে নেকড়েকে পোষ মানাল? যেহেতু কুকুর নেকড়ে থেকে ছোট, লোমের রঙ আর অন্যান্য অঙ্গবিন্যাসের দিক থেকেও অনেক আলাদা। তাহলে কিভাবে মানুষের সংস্পর্শ শারীরিক পরিবর্তন সংঘটন করল?
বিদ্যুৎবেগে মিউটেশন!
নাস্তিকদের মতে, যা ঘটেছে তা হল- আপনার কুকুর-নেকড়ের একটি দল বৃহত্তর নেকড়ে দল থেকে আলাদা হয়ে গেল এবং যখন আপনি এদের প্রজনন ঘটাবেন, আপনি কিছু জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের উদ্ভব হতে দেখবেন, আর এই বৈশিষ্ট্য পপুলেশনের অংশ হয়ে উঠবে… অন্য কথায়, পপুলেশোনের ক্ষুদ্র অংশে মিউটেশন দেখা যাবে। যদি আমি এটা না চাই, আমি যা করব তা হল পশু হত্যা করব যেন তারা প্রজনন করতে না পারে। আর আমি যদি এটা চাই তবে আমি এগুলোকে প্রজনন করতে দিব।[iv]
সুতরাং, একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, উদাহরণস্বরূপ, পেচানো লেজ মিউটেশনের দ্বারা উদ্ভূত হয়। অনুমান অনুসারে এই মিউটেশন ও তার ফলে প্রাপ্ত বৈশিষ্ট্য, এই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কুকুরের প্রজনন দ্বারা একটি নির্দিষ্ট কুকুরের বংশে নিবিষ্ট হয়।
শুরুতে এটাকে যৌক্তিক মনে হতে পারে। কিন্তু ২০০৯ সালে Bioessays জার্নালে প্রকাশিত একটি বিশেষ গবেষণা সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলছে। গবেষকরা কৃত্তিমভাবে শিয়ালের গৃহপালিতকরণের জন্য নির্বাচিত করেন। নিশ্চিতরূপে শিয়াল সাধারণভাবে সৃষ্ট কুকুরের প্রকারভেদ, উদাহরণস্বরূপ শিয়াল কয়োটের সাথে ইন্টারব্রীড করে বলে জানা যায়। রাশিয়ার শিয়ালের পশোম খামারের শিয়াল ব্যবহার করে পরিচালিত পরীক্ষাটি প্রায় ৫০ বছর ধরে চলেছে আর এখনও চলছে।[v]
গবেষকরা সবচেয়ে কম হিংস্র শিয়াল আলাদা করেন আর প্রজনন ঘটান। তারা ৩০ টি পুরুষ আর ১০০ টি নারী শিয়াল বাছাই করেন “যেহেতু প্রারম্ভিক প্রজন্ম নির্বাচন করা হয়েছিল মানুষের প্রতি সহনশীলতার বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে, এরপরে গৃহপালিতকরণের জন্য”। তারপর সবচেয়ে বেশি পোষ মানা প্রজন্মের সর্বোচ্চ ১০ ভাগ শিয়ালকে পরের প্রজন্মের জন্য ব্যবহার করেন।
As a result of such a rigorous selection, the offspring exhibiting the aggressive and fear avoidance responses were eliminated from the experimental population in just two-three generations of selection
এরূপ কঠোর নির্বাচনের ফলে, মাত্র ২-৩ দিন প্রজন্মে পরীক্ষণীয় পপুলেশনের ছানা থেকে হিংস্রতা আর ভয়ের কারনে প্রদর্শিত কর্মকাণ্ড বিলুপ্ত হল।
তাদের হাজার বছর লাগে নি, মাত্র ৩ প্রজন্মের দরকার হয়েছে। এবং মাত্র ষষ্ঠ প্রজন্মে শিয়াল ছানা লেজ নাড়িয়ে মানুষের সাহচার্য কামনা করা শুরু করে।
আশ্চর্যজনকভাবে গৃহপালিত শিয়াল গৃহপালিত প্রাণীর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অর্জন করে নিল। কিন্তু মিউটেশন ছাড়াই!!! এটা প্রমাণ করতে লেখক বিভিন্ন গৃহপালিত পশুর সাথে ঘটনাটির তুলনা করেন। বুনো পশুর কান খাড়া থাকে। কিন্তু পোষা শিয়ালের কান খাড়া নয়। এমন আরো অনেক বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হয়।
নিশ্চিতভাবে, ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল মিউটেশন কখনোই একইরূপ বিভিন্ন প্রকারের স্তন্যপায়ী জন্ম দিতে পারে না। এজন্যই লেখক লিখেছেন,
“Finally, it is difficult to interpret the changes in the domesticated foxes as a result of randomly arisen new mutations.”
জিন রেগুলেশনের পরিবর্তন বৈশিষ্ট্যের বৈচিত্র্যের সৃষ্টি করেছে, মিউটেশনের ফলে বিবর্তন নয়। এটা মূলত প্রকৃত কুকুর শ্রেণীর প্রজাত্যায়ন।
কুকুরের বৈশিষ্ট্য কি বিবর্তনের দ্বারা উদ্ভূত?
কিন্তু বিবর্তনবাদীরা মিউটেশন নিয়ে এত কথা শুনতে নারাজ। তাদের দাবি, যেভাবে-ই হোক, নেকড়ে থেকে কুকুরের বিবর্তন macroevolution, কারন কুকুর মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। কিন্তু নেকড়ে পারে না।
বস্তুত, মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের যোগ্যতা কুকুর বিবর্তনের মাধ্যমে লাভ করে নি। নেকড়েও অনুরূপ গুণ বহন করে।
মানুষের সংস্পর্শে ১০টি নেকড়ে ছানার সীমিত নমুনা নিয়ে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল, যা royal society of open science প্রকাশ করেছে,
[W]e demonstrated that human-raised wolves can develop an individualized relationship with their human raisers which may not include attachment to and dependency on this person but which, at least before the sexual maturation of the animals, is characterized with a higher level of affiliation with the foster parent than with other closely familiar humans. Finally, we confirmed that intensive socialization and hand rearing result in general affinity towards humans.
“আমরা দেখিয়েছি যে, অন্তত যৌন পরিপক্কতা অর্জন করার আগে অন্যান্য পরিচিত মানুষের চেয়ে পালকের প্রতি সম্পর্কে আসক্তি ও নির্ভরশীলতা থাকুক বা না থাকুক, মানুষ পালিত নেকড়ে তাদের পোষকের সাথে বিশেষায়িত সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। অবশেষে, আমরা নিশ্চিত করেছিলাম যে প্রগাঢ় সামাজিকীকরণ এবং প্রত্যক্ষভাবে পালনের দ্বারা মানুষের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়”।[vi]
কুকুরের মাঝে এই ‘আকর্ষণ’ আরও উন্নত হওয়ার কথা, কিন্তু দেখা যাচ্ছে নেকড়ের মাঝে এই বীজ আগে থেকেই বপন করা আছে। তার মানে হল, ১৫০০০ বছর আগে নেকড়ে ও কুকুরের সাধারণ পূর্বপুরুষের মাঝেও এই গুণ ছিল।
[S]cientists have also documented some behavioral similarities between dogs and wolves. When greeting each other, for instance, wolves like to lick each others’ faces—a trait that’s all too familiar to dog owners. Wolves are also capable of following a person’s gaze into space, and they understand gestures like finger pointing (not even chimps can do this).
Given these similarities, [researcher Dorottya] Ujfalussy sought to learn more about the kinds of relationship that wolves, when socialized to humans, can have with their human caretakers. A primary aim of the study was to figure out what makes dogs so unique in their relationship with humans, and where their traits may have originated. Ultimately, Ujfalussy was trying to learn if dog behaviors were already present in ancestral wolves, or if they’re a product of domestication and artificial selection. This new research suggests the former may be true. [Emphasis added.]
“বিজ্ঞানীরা কুকুর এবং নেকড়ে মধ্যে কিছু আচরণগত মিল নথিভুক্ত করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য, নেকড়েরা একে অপরের মুখ চেটে দেয়- এই বৈশিষ্ট্য কুকুর মালিকদের কাছে খুব পরিচিত। খালি জায়গার দিকে কারও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে তা অনুসরণ করতে পারে এবং আঙুল দিয়ে ইঙ্গিত করলে নেকড়েরা বুঝতে পারে। [শিম্পাঞ্জিও তা পারে না]
এই সাদৃশ্যগুলো জানার পরে, [গবেষক Dorottya] Ujfalussy সামাজিক নেকড়ে তাদের মালিকের সাথে কত রকমের সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, তা জানতে অনুসন্ধান করতে থাকেন। গবেষণায় একটি প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল মানুষের সাথে কুকুরের অনন্য সম্পর্ক এবং তাদের বৈশিষ্ট্যগুলির উৎপত্তি রহস্য উদঘাটন করা। Ujfalussy জানার চেষ্টা করছিলেন যে, কুকুরের বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের পূর্বপুরুষ নেকড়েদের মাঝেও নিহিত আছে কিনা, নাকি কুকুর গৃহপালিতকরণ এবং কৃত্তিম নির্বাচনের ফলাফল। গবেষণায় প্রথম অনুমান সত্য প্রমাণিত হয়েছে [অর্থাৎ, কুকুর ও নেকড়ের মাঝে একই বৈশিষ্ট্য আছে]।[vii]
তথ্য হ্রাস [ইনফরমেশন লস] বিবর্তনের জন্য চ্যালেঞ্জ
কুকুরের মত নেকড়ে মানুষের উপর নির্ভরশীল না। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। জার্মানির Max Planck Institutes এর জিনবিজ্ঞানী Wolf-Ekkehard Lönnig ২০০৪ সালে তার Our Domestic Dog: A Shrew in Wolf’s Clothing? বই-তে দেখিয়েছেন যে, এই বিপুল সংখ্যক কুকুরের প্রজাতির জিনগত এবং শারীরিক স্তরে তথ্য বৃদ্ধি হয় নি বরং কার্যকারিতা নষ্ট হয়েছে এবং ইনফরমেশন হ্রাস পেয়েছে।
Max Planck Institute of Breeding Research এর জীববিজ্ঞানী মন্তব্য করেছেন,
On the basis of research of many experts in the relevant fields, Lönnig proves that the enormous variability of our domestic dogs essentially originated by reductions and losses of functions of genes of the wolf.
“প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রগুলির মধ্যে অনেক বিশেষজ্ঞের গবেষণার ভিত্তিতে, লনিগ প্রমাণ করেছে যে আমাদের ঘরোয়া কুকুরের বিশাল পরিবর্তনগুলি মূলত নেকড়ের জিনের কার্যকারিতার হ্রাস এবং ধ্বংসের দ্বারা উৎপন্ন হয়েছে”।
বেলায়েভের পরীক্ষা প্রজাতির নমনীয়তা (plasticity) প্রমাণ করে। কিন্তু প্রজাতিগুলি নমনীয় হওয়ার কারণ এই নয় যে তাদের স্বকীয়তা নেই। স্বকীয়তা বজায় রেখে গোষ্ঠীর সদস্যরা এমন অন্য বৈশিষ্ট্যাবলী ধারণ করতে পারে যা গোষ্ঠীর মধ্যে তাদের শ্রেণিবদ্ধ করে না বা গোষ্ঠী থেকে তাদের আলাদা করে না। প্রজাতির স্বকীয়তা নিয়ে এই বিশেষ স্বীকার্য প্রজাতির পরিবর্তনকে সম্ভব প্রমাণ করে, তবে নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে যেগুলি এখনও তাদেরকে গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রাকৃতিক নির্বাচনের উক্ত গবেষণায় দেখা যায় যে, প্রজাতিগুলি প্রকৃতপক্ষে নির্দিষ্ট সীমানার দ্বারা বেষ্টিত এবং মাইক্রো বিবর্তনমূলক পরিবর্তনগুলি প্রজাতির প্রজাত্যায়ন ব্যবস্থাকে অতিক্রম করতে পারে না। মাইক্রোইভোলিউশন এবং প্রজাত্যায়নের(speciation) ক্ষেত্রে যে জৈবিক পরিবর্তনগুলি ঘটেছে, তা ম্যাক্রোভোলিউশনের জন্য অনুমিত পরিবর্তনগুলির তুলনায় ভিন্ন। যথাযথ বৈধতা ছাড়া এক স্তরের পরিবর্তন অন্যান্য স্তরের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাবে না।
হাস্যকর ভাবে, কুকুর প্রজননের প্রচেষ্টায় দেখা যায় যে, দক্ষ মানুষের প্রচেষ্টাও কুকুরকে তার জৈবিক সীমানার বাইরে নিতে পারে না। ইংরেজ বুলডগ এর প্রমাণ । তাদের অস্বাভাবিক বড় মাথা থাকার কারণে, এই কুকুরগুলো শুধুমাত্র caesarian ছেদের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করা যেতে পারে। ইংরেজ বুলডগগুলির “বিবর্তন” শুধুমাত্র এজন্য সম্ভব যে, মানবজাতি এই শাবককে কৃত্তিম উপায়ে জন্ম দিতে পেরেছে। যদি প্রাকৃতিক নির্বাচনের সময় প্রজাতির সামঞ্জস্যহীন বড় মাথা থাকে, তবে বিবর্তন প্রক্রিয়াটি স্থগিত হতে পারে, কারণ বড় মাথাওয়ালা কুকুর জন্মের পথ দিয়ে পার হতে পারবে না।
প্রাণঘাতী লড়াইয়ে বেঁচে থাকার জন্য জীবন্ত প্রাণীকে বিনিময় প্রথার মুখোমুখি হতে হয়, আর এই কারণে প্রজাতির সীমানা থাকা উচিত। এই বিনিময় প্রথা প্রাকৃতিক নির্বাচনের গতিকে কোণঠাসা করে। একটি বিবর্তনীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, বিবর্তনকে অবশ্যই নির্বাচনী চাপসমূহের (selection pressure ) মধ্যে আপোস খুঁজে পেতে হবে। এক বিভাগে পরিপূর্ণতা অন্য বিভাগে বলি দানকে আবশ্যক করে। এই বিনিময় প্রথা এমন সীমারেখা সৃষ্টি করে যা প্রজাতি অন্দ্ধ বিবর্তন দ্বারা অতিক্রম করতে পারে না।
নেকড়ে শীর্ষ শিকারী প্রাণীগুলোর একটি, পক্ষান্তরে বন্য পরিবেশে আপনার সাধারণ গৃহপালিত কুকুর দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকতে পারে না। বিবর্তনের দৃষ্টিতে, এটা প্রাণীর জন্য খুবই অসুবিধাজনক। আসল কথা, বিবর্তন তখন সম্ভব যখন ডিএনএ প্রতিনিয়ত তার তথ্যভাণ্ডারকে উন্নত করবে। কিন্তু কুকুরের ক্ষেত্রে তেমন দেখা যায় না। তাই বিবর্তনের পক্ষে কুকুরকে উকিল হিসাবে দাড় করানো বোকামি।
পড়ুন ডারউইনের ফিঞ্চ: নতুন প্রজাতি?
[i] The American Kennel Club lists over 235 breeds, 173 of which are eligible to compete at AKC events. See the Complete Breed List posted on the American Kennel Club website at akc.org. Wikipedia includes over 500 breeds in its list of dog breeds posted on wikipedia.org
[ii] Ahlfort, K. Genetic Study Confirms: First Dogs Came from East Asia. Royal Institute of Technology news release, November 23, 2011.
[iii] Leach, H. R. 2007. Selection and the Unforeseen Consequences of Domestication. In Cassidy, R. and M. H. Mullin, eds. Where the wild things are now: domestication reconsidered. Oxford, UK: Berg, 72-73.
[iv] How Dogs Evolved Into ‘Our Best Friends.’ Fresh Air. National Public Radio. Transcript posted on npr.org November 8, 2011, accessed November 15, 2011.
[v] Trut, L., I. Oskina and A. Kharlamova. 2009. Animal evolution during domestication: the domesticated fox as a model. Bioessays. 31 (3): 349-360.
[vi] http://rsos.royalsocietypublishing.org/content/4/6/160956
[vii] https://gizmodo.com/what-happens-to-wolves-when-theyre-raised-like-dogs-1796458238