শূন্য থেকে মহাবিশ্ব! স্রষ্টা কি কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন?
লিখেছেন: ' Mahir' @ শনিবার, অগাষ্ট ২৫, ২০১৮ (৭:২৯ অপরাহ্ণ)
শূণ্য থেকে সৃষ্টিতত্ত্বের সৃষ্টিগত শূণ্যতাকে শূণ্য চোখে উপেক্ষা ও by chance theorist -দের গাণিতিকভাবে চিহ্নিতকরণ।
চিরকাল নাস্তিক -আস্তিক বিতর্ক একটা সহজ যুক্তিতেই হার মেনেছে।সেটা হল-শূন্য থেকে কিভাবে মহাবিশ্বেরগঠন হতে পারে?
প্রশ্নের জবাবে নাস্তিকরা তখন বলত,”সবকিছু আগে থেকেই এরকম ছিল,আর এরকমই আছে,আর এরকমই থাকবে।”এই উত্তরটি ইমানুয়েল কান্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু কপাল নাস্তিকদের সাথে ছিল না।বিগ ব্যাং থিওরি মতে মহাবিশ্বের শুরু আছে।তাই উত্তরটা কান্ট সাহেবের কবরেই কবরস্থ হয়ে গিয়েছিল।
নতুন করে নাস্তিকরা আবার থিওরি জোগাড়ের কাজে হাত দিল,কারন তাদের কপালে আস্তিকরা “by chance theorist” লেবেল এটে দিয়েছিল, যা তাদের theory of everything স্লোগান ভিত্তিহীন করে দেওয়ায় নাস্তিকদের আত্মসম্মানবোধে আঘাত লাগে। আর তাই তারা একবিংশ শতাব্দীর কোয়ান্টাম মেকানিকস ব্যবহার করে theory of everything এর সিদ্ধিলাভের দ্বারা কপালের by chance theorist লেভেল মুছে ফেলতে আগ্রহী হয়ে উঠে।
এরই ধারাবাহিতায় তাদের দাবি কিছুই না থেকে কিছু সৃষ্টি হওয়াটা কোয়ান্টাম মেকানিক্সে খুবই স্বাভাবিক। আসলে তিলকে তাল বানানো নাস্তিকদের মজ্জাগত অভ্যাস, তাই সামান্য মিউটেশন থেকে প্রজাতির পরিবর্তন হতে পারে, এমন অলীক ভাবনা কোন experimental evidence ছাড়াই তারা বিজ্ঞানের মোড়কে বাজারে চালিয়ে দিচ্ছে।
যাই হোক, আমি আস্তিক বলে নাস্তিকরা কথার দাম দেয় না।এটা এক বিশাল রহস্য। শুধুমাত্র আস্তিক পরিচয় পাওয়া গেলেই আপনার কথার কোন গুরুত্বই একগুঁয়ে নাস্তিকমহলে বিবেচিত হবে না। তাই কথা বলার আগে ব্যাপক চিন্তা-ভাবনা করা লাগে। শেষ পর্যন্ত আস্তিকদের পক্ষের নয় এমন ব্যক্তিই নাস্তিকদের বোকা বলে অভিহিত করেছে, এমন উদ্ধৃতি সংগ্রহ করতে সক্ষম হলাম।
astrophysicist, Postdoctoral Researcher at the Sydney Institute for Astronomy, University of Sydney, Australia,Luke Barnes কঠোরভাবে বলেন :
First and foremost, I’m getting really rather sick of cosmologists talking about universes being created out of nothing.. . This is nonsense. The word nothing is often used loosely—I have nothing in my hand, there’s nothing in the fridge etc. But the proper definition of nothing is “not anything”. Nothing is not a type of something, not a kind of thing. It is the absence of anything.
Some of the best examples of the fallacy of equivocation involve treating the word nothing as if it were a type of something:
-Margarine(কৃত্তিম মাখন) is better than nothing.
-Nothing is better than butter.
-Thus, margarine is better than butter.
We can uncover the fallacy by simply rephrasing the premises, avoiding the word nothing:
-It is better to have margarine than to not have anything.
-There does not exist anything that is better than butter.
The conclusion (margarine is better than butter) does not follow from these premises. (Barnes, L., Out of nothing, letterstonature.wordpress.com, 1 April 2011.)
কোয়ান্টাম মেকানিকস শূণ্য থেকে কিছুই সৃষ্টি করে না। paul davies যদিও বলেছেন যে,শূণ্য থেকে কণার আবির্ভাব হতে পারে।কিন্তু তিনি শুরুতে বলেও নিয়েছেন, this scenario ‘should not be taken too seriously.
(Davies, P., God and the New Physics, p. 214, Simon & Schuster, 1983.)
কিন্তু নাস্তিকরা তিলকে তাল বানানোর জন্য বানরকে মানুষ বানিয়ে ফেলেছে, আর শূণ্য থেকে মহাবিশ্ব বের করে ফেলেছে।শেষোক্ত দাবি পূর্বোক্ত দাবির চেয়ে অধিক আশ্চর্যজনক এবং গাঁজাখুরি।
আমাকে একবার এক নাস্তিক বলেছিল যে, আদিম পরিবেশে আরএনএ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তৈরি হয়েছিল,আর এর experimental evidence আছে।” “আচ্ছা? ভাল কথা,তো ল্যাবে যে আরএনএ তৈরি সম্ভব হয়েছে,সেটা কি ফাংশনাল?” জবাব দিল”,না।তবে কোন কোষে প্রবেশ করানো হলে ‘হয়তো’ কাজ করবে।” তার মাথায় এতটুকু বুদ্ধি এলো না যে,যে সময়ে কোন কোষই ছিল না,সে সময় নন-ফাংশনাল আরএনএ কিভাবেই বা প্রাণ-সঞ্চার করবে?(উক্ত বিক্রিয়ার ফাক-ফোকরের কথা বাদ-ই দিলাম)
এখানেও একই সমস্যা। কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন ঘটানোর জন্য যদি কিছু না-ই থাকে,তবে ফ্লাকচুয়েশন হবে কি করে,আর মহাবিশ্ব-ই বা হবে কি করে? যাই হোক,আমার মনে হয় না কোন বি-গ্যানমনস্ক নাস্তিকের মাথায় এই বুদ্ধি এসেছে যে,quantum vacuum নিজেই হল matter-antimatter potential,এটাকে nothing বলে বাজারে চালিয়ে দিলে, science fiction বলা চালানো যায় বিজ্ঞান নয়। এগুলো হল কথার মার-প্যাচ,যা ওকালতি করার কাজে আসতে পারে,আর জনগণকে বোকা বানানোর জন্য যথেষ্ট হতে পারে।কিন্তু সত্য হতে পারে না।
কিন্তু নাস্তিকদের মাথায় এতো বুদ্ধি নেই বলেই মনে হচ্ছে।তাদের এই বুদ্ধি হল না যে,কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েট করে,এর শক্তি আছে,কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। মহাবিশ্বের শুরুতে তো শক্তির-ই অস্তিত্ব ছিল না।
যদি সময়ের ব্যবধান শূণ্য হয়, তবে কোয়ান্টাম ঘটনা ঘটার সম্ভাবনাও শূণ্য। [ Stephen Hawking and Roger Penrose, “The Singularities of Gravitational Collapse and Cosmology,” Proceedings of the Royal Society of London, Series A314 (1970): 529–48; Arvind Borde, Alan H. Guth, and Alexander Vilenkin, “Inflationary Spacetimes Are Incomplete in Past Directions,” Physical Review Letters 90 (April 2003): id. 151301; Arvind Borde and Alexander Vilenkin, “Violation of the Weak Energy Condition in Inflating Spacetimes,” Physical Review D 56 (July 15, 1997): 717–23; Arvind Borde and Alexander Vilenkin, “Singularities in Inflationary Cosmology: A Review,” International Journal of Modern Physics D 5, no. 6 (December, 1996): 813–24; Arvind Borde, “Open and Closed Universes, Initial Singularities, and Inflation,” Physical Review D50 (September 15, 1994): 3692–702; Arvind Borde and Alexander Vilenkin, “Eternal Inflation and the Initial Singularity,” Physical Review Letters 72 (May 23, 1994): 3305–308.]
স্থান-কাল উপপাদ্য মতে, মহাবিশ্ব ও সময়ের শুরু একই সাথে ঘটেছিল। সুতরাং, মহাবিশ্বের শুরুতে সময়ের ব্যবধান শূণ্য ছিল। এতে করে, কোয়ান্টাম মেকানিক্স আমাদের মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক স্রষ্টা হওয়ার যোগ্যতা হারায়।
তত্ত্বীয় পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রিধারী philosopher David Albert, professor of philosophy at Columbia University, লিখেছেন,
Relativistic-quantum-field-theoretical vacuum states—no less than giraffes or refrigerators or solar systems—are particular arrangements of elementary physical stuff. The true relativistic-quantum-field-theoretical equivalent to there not being any physical stuff at all isn’t this or that particular arrangement of the fields—what it is (obviously, and ineluctably, and on the contrary) is the simple absence of the fields! The fact that some arrangements of fields happen to correspond to the existence of particles and some don’t is not a whit more mysterious than the fact that some of the possible arrangements of my fingers happen to correspond to the existence of a fist and some don’t. And the fact that particles can pop in and out of existence, over time, as those fields rearrange themselves, is not a whit more mysterious than the fact that fists can pop in and out of existence, over time, as my fingers rearrange themselves. And none of these poppings—if you look at them aright—amount to anything even remotely in the neighborhood of a creation from nothing.
(Albert, D., On the Origin of Everything: review of A Universe From Nothing, by Lawrence M. Krauss, New York Times, 23 March 2012; nytimes.com)
এতক্ষণে বুঝে গেছেন যে,নাস্তিকদের শূণ্যস্থানের সংজ্ঞাতেই বিশাল ফাকি আছে।কিন্তু নাস্তিকদের আপনি এ কথা বুঝাতে পারবেন না।তাই ‘ধরে নিলাম’, শূণ্য থেকেই মহাবিশ্বের উৎপত্তি। এখানেও বিশাল ফাকি, যদি আপনি গণিত বুঝে থাকেন।
“…we present such a ‘proof’ based on the analytic solutions of the Wheeler-DeWitt equation…once a small true vacuum bubble is created by quantum fluctuations of the ‘metastable false vacuum’, it can expand exponentially no matter whether the bubble is closed, flat or open.
(D. He, D. Gao, and Q-yu Cai, Spontaneous creation of the universe from nothing, Physical Review D, 89, 083510 (2014); arxiv.org/pdf/1404.1207v1.pdf.)
শিশু মহাবিশ্বের কোয়ান্টাম মহাকর্ষ তত্ত্ব দেওয়ার জন্য সাধারণ আপেক্ষিকতা ও কোয়ান্টাম মেকানিকসের সমন্বয়কারী সূত্র হল Wheeler-DeWitt equation (WDWE)
((1/a^p)(d/da)(a^p)(d/da)-(ka^2))y(a)=0
এখানে আমি ব্যবকলনের অপারেটর ব্যবহার করেছি, কিন্তু আসলে এখানে partial differentiation এর অপারেটর হবে।আর y হচ্ছে ‘সাই’।
এখানে a হল minisuperspace এর মহাবিশ্বের স্কেল ফ্যাক্টর। k হল স্থান বক্রতা(spatial curvature)
k=1(মানে, আবদ্ধ ও সসীম)
k=0(সমতল, ইউক্লিডীয় ও অসীম)
k=-1(ওপেন,অসীম)
y (সাই) বুদবুদ আকারের মহাবিশ্বের wave function.যাই হোক,সমীকরণের অসীম সংখ্যক সমাধান রয়েছে,আর বিশেষ সিস্টেমের জন্য অন্যান্য তথ্য,মান ইত্যাদি জানা দরকার।
এই মডেলের assumption হল,মহাবিশ্বের সকল শক্তি শূণ্য,মানে বস্তু এবং শক্তির সকল রূপের যোগফল শূণ্য হবে।
বিজ্ঞানীরা যেটা দেখিয়েছেন তা হল, যদি একবার সত্যিকারের ভ্যাকুয়াম বাবল তৈরি হয়,তবে এটা exponentially ছড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা আছে।মানে by chance।আশা করি বুঝতে পারছেন যে,তাদের মডেলের ফলাফল থেকে সম্ভাব্য মহাবিশ্বের সমাহার পাওয়া যাবে।যেহেতু কোয়ান্টাম মেকানিকস সম্ভাব্যতার কথা বলে,সেহেতু আমাদের এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির সম্ভাবনা অনেক কম।
সমস্যা হল,এটা এমন এক গাণিতিক হিসাব যা আমাদের বাস্তব মহাবিশ্বে পরীক্ষা করা,বা প্রমাণ করা সম্ভব নয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল Wheeler-DeWitt equation শুধুমাত্র a>0 হলে সিদ্ধ হবে।a>0 হওতার শর্ত হল, অবশ্যই metastable quantum vacuum উপস্থিত থাকতে হবে।এই সূত্রের আরেকটি পূর্বস্বীকার্য হল,আমাদের পদার্থবিদ্যার নীতিমালা তখন কার্যকর ছিল।
কাজেই সূত্রগুলো যতই সুন্দর মনে হোক না কেন,এটা হ্যামিলটনের বাবল ইউনিভার্সের আরেক রূপ:
H=(-1/2)(((P^2)a)/a)+ka)
হ্যামিলটনিয়ান হল এমন অপারেটর যা সিস্টেমের সকল শক্তির যোগফল। হ্যামিলটনিয়ান অনুমান করেছিল, শুরুতে শক্তিরও অস্তিত্ব ছিল না।আর সূত্রটি শুধু তখনই গ্রহণীয় যখন স্কেল ফ্যাক্টর সময়ের উপর নির্ভরশীল ও অশূণ্য।
কিভাবে bubble universe বিস্ফোরিত হয়ে প্রকৃত মহাবিশ্ব সৃষ্টি করে সেটা বুঝার জন্য একটা guidance relation যোগ করা হয়।এটা বোহেমিয়ান কোয়ান্টাম থিওরি থেকে আসে যা nonrelativistic particle physics এবং সমতল space-time-এ quantum field theory(যেখানে কোয়ান্টাম প্রাস পাওয়া যায়) এর অনুরূপ। মোট কথা,এটা আপনাকে বলবে যে bubble exponentially expand করলে কোয়ান্টাম পটেনশিয়াল কিভাবে পরিবর্তিত হয়।
কিন্তু আমাদের মহাবিশ্বকে আল্লাহ ছাড়া নিজে থেকেই অস্তিত্বে আসতে হলে,একে নিজের পদার্থের সূত্র -নীতি, স্থান-কাল,বস্তু-শক্তি সকল কিছুকেই শূণ্য থেকে অস্তিত্বে আনতে হবে।তাদের কথামত quantum vacuum, metastable বা পদার্থের সূত্র প্রয়োগের জন্য বুদ্ধিমত্তার অস্তিত্ব পূর্ব থেকেই থাকতে হবে।
তো এই সমাধান অনুসারে অসীম সংখ্যক মহাবিশ্ব শূণ্য থেকে অস্তিত্বে আসতে পারে এবং এটা শুধু এর ক্ষেত্রে যেখানে পদার্থের সূত্র প্রয়োগ করা সম্ভব। কিন্তু এতেও সমাধান হয় না, কারন আপনি এই দাবি করতে পারেন না যে, এই মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করার জন্য যে সূত্র ব্যবহৃত হয়েছে,সেই সূত্র অস্তিত্বে আসা অন্য সমান্তরাল বিশ্বের ক্ষেত্রেও প্রয়োগযোগ্য। আপনি আমাদের পদার্থবিদ্যা দ্বারা অন্য মহাবিশ্বের পদার্থবিদ্যাকে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।
alan guth বলেন,
“In spite of the fact that we call it the big bang theory, ah, it really says absolutely nothing about the big bang. Ah, it doesn’t tell us what banged, why it banged, what caused it to bang. Ah, it doesn’t even describe—it doesn’t really allow us to predict what the conditions are immediately after this big bang.”
(Alan Guth, Victor F. Weisskopf Professor of Physics at MIT, “Before, Meanwhile and After the BIG BANG—(M-Theory)”, youtube.com/watch?v=HOkAagw6iug, 11 September 2007.)
paul davise বলেন, Yet the laws [of physics] that permit a Universe to create itself are even more impressive than a cosmic magician. If there is a meaning or purpose beneath physical existence, then it is to those laws rather than to the big bang that we should direct our attention.”(Davies, P., Is the Universe a free lunch?, 3 March 1996; independent.co.uk)
বৈজ্ঞানিক মহলের নতুন ধর্ম হল সৃষ্টির পূজা। যাই হোক,নাস্তিকরা হাজার চেষ্টা করেও theory of by chance থেকে বের হতে পারে নি।এতদিন তাদেরকে by chance theorist বলা হত ইন্দ্রিয়জাত বুদ্ধি থেকে,এই হিসাব-নিকাশ তাদেরকে গাণিতিকভাবে by chance theorist প্রমাণ করল।
যেকোন শর্ত সাপেক্ষে, মহাবিশ্ব ও তার সকল স্থান-কাল বুদবুদ [অস্তিত্ব আছে কিনা নিশ্চিত না] সসীম সময়ের প্রারম্ভের অধীন। [Arvind Borde, Alan H. Guth, and Alexander Vilenkin, “Inflationary Spacetimes Are Incomplete in Past Directions,” Physical Review Letters 90 (April 2003): id. 151301.]
যা কিনা মহাবিশ্বের অস্তিত্ব স্থান-কালের বাইরের একজন কারনবাচক সত্ত্বার অস্তিত্বকে আবশ্যক করে।
———————-
পড়ুনঃ কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন এবং ইসলাম