গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা কি সম্ভব?
লিখেছেন: ' ইবনে হাবীব(মাহমুদ)' @ বুধবার, মে ১২, ২০১০ (১১:০৯ অপরাহ্ণ)
গত প্রায় সপ্তাহকাল ব্যাপি ইসলাম, গণতন্ত্র, খিলাফাত প্রভৃতি বিষয় নিয়ে উত্তপ্ত আলোচনা চলছে। কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। আবার কেউ গণতন্ত্রকে ইসলামাইজেশান এর ঘোর বিরোধী। কেউবা ‘গণতন্ত্রই ইসলামসম্মত’- তাও প্রমান করার চেষ্টা করেছেন। ‘গণতন্ত্রের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা স্বপ্ন মাত্র।’- এমনটিও কারও দাবী। অনেকে গণতন্ত্রকে মন্দের ভাল বলতে চাইছেন; ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ গণতন্ত্র’- এরকম মত ও কেউ কেউ পোষন করেন। আজ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পৃথিবীর কোথাও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি- এমন উদাহরনও দেখলাম আমরা।
আসলেই কি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব?
২,৫২০ বার পঠিত
আমরা যারা ইসলামি রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি তাদের উচিত নিজকে একটা রাষ্ট্র কল্পনা করা, যেই রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান আমি নিজেই। এবার আমার নিজের এই রাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে দেখি, এখানে ফরয/ওয়াজিব আছে কি না, এখানে হারাম নিষিদ্ধ হয়েছে কিনা, এখানে পর্দা পালিত হচ্ছে কি না, এখানে অনৈসলামিক কাজ বন্ধ হয়েছে কিনা, সর্বোপরি এখানে কুরআন-সুন্নাহ জারি হয়েছে কি না। আমাদের এই ছোট একট রাষ্ট্রেই যদি আমরা ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তাহলে বৃহৎ রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখা দিবাস্বপ্নই থেকে যাবে।
@সাদাত, r8
@সাদাত, আপনার সাথে একমত হওয়া ছাড়া উপায় নেই। যাদের দীনি বুঝ আছে তারাই কেবল নিজের মধ্যে আগে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে- এদের সংখ্যাতো নগণ্য। কিন্তু যাদের দীনি বুঝ নেই অর্থ্যাৎ সমাজের বড় অংশ তাদের ভিতরে কিভাবে নিজের মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার অনুভূতি আসবে?
@মাহমুদ,
সমাজের বড় অংশ তাদের ভিতরে কিভাবে নিজের মধ্যে ইসলাম প্রতিষ্ঠার অনুভূতি আসবে?
>> তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে আগে ঈমান আমল ঠিক করাতে হবে। আমাদের বেশিরভাগের ঈমান আমল যখন সহি হবে তখন ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ আল্লাহপাকই দেখিয়ে দেবেন। যেখানে ৫ ওয়াক্ত নামাযীর সংখ্যা ১০% ও না, হয়ত ৫% ও না, সেখানে ইসলামি রাষ্ট্রের ভাবনা ভেবে লাভ কী?
@সাদাত,তাহলে ভাই,রাসূল (স) কেন এত কষ্ট করে যুদ্ধ করলেন?শুধু ইসলাম প্রচার করলেই কি হয়ে যেত না?আসলে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যখন যেভাবে সম্ভব সেভাবেই মুসলিমদের চেষ্টা করতে হবে।কারণ আল্লাহ আর নবী পাঠাবেন না।এখন আল্লাহর আইন কার্যকর করার সঠিক ব্যবস্থা করতে হবে মুসলিমদেরকেই।এটা মুসলিম হবার আসল শর্ত।
@সাদাত,
সহমত।
@সাদাত, “আমাদের বেশিরভাগের ঈমান আমল যখন সহি হবে তখন ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ আল্লাহপাকই দেখিয়ে দেবেন”
এই কথা কি নতুন কোন ওহী হতে পেয়েছেন, নাকি কোরান-সুন্নাহ হতে বের করা আপনার মতামত? দয়া করে পরিস্কার করবেন।
সম্ভব অসম্ভবের প্রশ্ন থাকলেও এই যুগে গণতান্ত্রিক ফর্মূলা ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালানোর পথ নেই। কাজেই গণতন্ত্রের দ্বারাই পথের বাঁশ সরানোর চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ বলেন- তোমরা তোমাদের সাধ্যমত চেষ্টা কর।
@মুনিম,
তার মানে আপনি বলতে চাইছেন- এই যুগে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ গণতন্ত্র।
আচ্ছা দেখি আর কোন ভাই কী বলেন।
আলজেরিয়াতে ইসলামী দল ভোটে জয়ী হয়েছিল।সাথে সাথেই পশ্চিমাদের ইন্দনে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহন করে প্রচুর আলেমকে হত্যা ও জেলে ভরে।ইসলাম এখনও কায়েম হয়নি।আমাদের দেশে B:N:P এর সহায়তায় জামাতে ইসলামী দেশে কতটুকু ইসলাম কায়েম করেছিল তাতো আমারা সবাই দেখলাম।এখন ভেবে দেখুন নিজ দেহে ও জীবনে ইসলাম কায়েম করবেন কিনা ?
@দেশী৪৩২,
হ্যা আলজেরিয়া, মিশর, ফিলিস্তিনের উদাহরন সাদাত ভাইও দিয়েছিলেন-
(আলজেরিয়াতে ইসলামিক স্যালভেশন ফ্রন্ট ব্যাপক পপুলার ভোটে জয়ী হওয়া সত্ত্বেও অগনতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচন বাতিল করা হয়েছে এবং ইসলামিক স্যালভেশন ফ্রন্ট কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মিশরেও ইখওয়ানের রাজনীতি অগনতান্ত্রিক ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গাযাতে ইসলামিক দল কে ভোট দেয়ার অপরাধে সেখানকার জনগনকে ৩ বছর ধরে অবরূদ্ধ করে রাখা হয়েছে।)
এখন তাহলে উপায় কি?
নিজ দেহে ও জীবনে ইসলাম কায়েম তো সবাই করবেনা, সেটা আশাও করা যায় না। অধিকাংশ লোকই তো হবে অবিশ্বাসী। দেখুন, সুরা ইউসুফ:১০৩
وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ
আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসী নয়।
@মাহমুদ, শুধু তাই নয়। তুরষ্কতে একটি দল (যাদের চেহারা সুরতে বা চালচলনে ইসলামের ছাপ খুব কমই পাওয়া যায়) শুধু ইসলাম শব্দটি উচ্চারণ করার কারণে তিন তিন বার নির্বাচিত হওয়ার পরও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এর আগেও বেশ কিছু দল নিষিদ্ধ ও দলের নেতাদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিল।
@Anonymous,
হ্যা, তুরস্ক, মিশর, ফিলিস্তিন ও আলজেরিয়ার ঘটনা আমাদের জন্য শিক্ষা হতে পারে।
গনতান্ত্রিক পদ্ধতি আদৌ ইসলামিক কিনা এব্যাপারে মাওলানা আনোয়ার শাহ কাশ্মীরী রহমাতুল্লহ আ’লাইহি এর একটি ছোট কিতাব ছিল। নামটা ভুইলা গেছি। উনি অনৈসলামিক বলেছিলেন।
ইসলামী গনতন্ত্র বা ” জামহুরিয়্যা ইসলামিয়্যার” একমাত্র রাষ্ট্র হলো ইরান, এখানে ইরান নিয়ে একটি আলোচনা হয়েছে যাতে প্রমান করা হয়েছে যে, এটা গনতান্ত্রিক ইসলামী রাস্ট্র নয় বরং খোমেনীতন্ত্রের কাছে জিম্মী একটি রাস্ট্র।
গনতন্ত্রের মূল বিষয় হলো সংখ্যাগিরস্ঠের মতামত । আর কোরানের বারবারই বলা হয়েছে, তারা অধিকাংশরাই বুঝে না, উপলবদ্ধি করে না, মানে না, ইমান আনে না, মুশরিক, এবং ফাসেক ইত্যাদি।
অধিকাংশ মানুষের অবস্থা যখন কোরানের একাধিক আয়াতের আলোকে অনুপযুক্ত তখন গনতান্ত্রিক দাবী অনুযায়ী অধিকাংশ মানুষের চাহিদা অনুযায়ী যদি রাস্ট্র পরিচালনা করা হয় তখন রাস্ট্রের শাষণনীতিকে ইসলামাইজ করার কোন প্রশ্নই আসে না, কারন তা গনতন্ত্রের দাবীর মোয়াফেক বা অনুকুলে নয়।
@বাংলা মৌলভী,
গণতন্ত্র বিরোধী কয়েকটি আয়াত:
সুরা আন-আম: ১১৬
وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللّهِ إِن يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ
আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে।
সুরা আন-আম:১১১
وَلَـكِنَّ أَكْثَرَهُمْ يَجْهَلُونَ
কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুর্খ।
সুরা বাক্বারা: ১১১
كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللّهِ وَاللّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ…
….সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।
সুরা ইউসুফ:১০৩
وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ
আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসী নয়।
@মাহমুদ, আপনি কেমন করে সিদ্ধান্ত নিলেন বা আপনি কোথায় পেলেন এই আয়াত গুলো গণতন্ত্রের বিপক্ষে?
১। সুরা আন-আম:১১১ وَلَـكِنَّ أَكْثَرَهُمْ يَجْهَلُونَ
কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুর্খ।
পরিপূর্ণ আয়াত হলো- ১১১। আমি তাদের নিকট ফেরেশতা প্রেরণ করলেও এবং মৃতেরা তাদের সাথে কথা বললেও, সকল বস্তুকে তাদের চোখের সামনে হাজির করলেও, যদি তা আল্লাহ্র পরিকল্পনা না থাকে; তবে তারা ঈমান আনবে না । কিন্তু তাদের অধিকাংশই [সত্য সম্বন্ধে] অজ্ঞ।
তার মানে এখানে রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে এই আয়াতে কথা হচ্ছেনা। কারণ তখন রাসুল সঃ মদিনায় হিযরত করেন নাই। মক্কার লোকদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিলেন। এবং মক্কার লোকেরা রসুলের নবুয়ত নিয়ে সন্দেহ করছিল বলেই আল্লাহ রাসুলকে এই আয়াতের দ্বারা সান্তনা দিচ্ছিলেন। কাজেই এই আয়াত কেমন করে গণতন্ত্র বিরোধী হলো?
২। সুরা আন-আম: ১১৬
وَإِن تُطِعْ أَكْثَرَ مَن فِي الأَرْضِ يُضِلُّوكَ عَن سَبِيلِ اللّهِ إِن يَتَّبِعُونَ إِلاَّ الظَّنَّ وَإِنْ هُمْ إِلاَّ يَخْرُصُونَ
আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে।
এই আয়াতও মক্কায় নাজিল কৃত। যখন রাসুল ও নব মুসলমানরা মক্কার তখনকার অধিকাংশ বাসিন্দা দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছিলেন। এখানে আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, বলতে আল্লাহ বুঝাচ্ছেন- তখনকার প্রচলিত ধারার কথা। মক্কার অধিকাংশ কাফেরদের কথা। মক্কা বিজয়ের পর অধিকাংশ মুসলমানদের কথা নয়।
৩। সুরা বাক্বারা: ১১১
كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللّهِ وَاللّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ…
….সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন।
এটি আয়াত নং ১১১ নয় এটি আয়াত হবে ২৪৯ নং। আর এখানেও রাসুলের আমলের কথা বলা হয় নাই। বলা হয়েছে তালুত বাহিনীর কথা যুদ্ধক্ষেত্রের কথা। যুদ্ধক্ষেত্রের প্রেক্ষাপটে নাজিল হয়েছিল এই আয়াত । তাই এটির গণতন্ত্রের সাথে কি সম্পর্ক বুঝতে পারিনাই।
৪।সুরা ইউসুফ:১০৩
وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ
আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসী নয়।
এই আয়াতে আল্লাহ রাসুল সঃ ইউসূফ আঃ কাহিনী বর্ণনা করে বুঝিয়ে ছিলেন – এই সূরাটি অবতীর্ণ হয় হিযরতের সামান্য কিছু পূর্বে। এর কাহিনীর মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসের বিভিন্ন ধাপ বর্ণনা করা হয়েছে। আল-মুস্তফার (সা) ঐকান্তিক আগ্রহ ও ইচ্ছা ছিলো যেনো মানবতা তাঁর দ্বারা উপকৃত হয়। মানব সন্তানকে ঈমানহীনতার যে পাপ তা থেকে রক্ষা করা। কিন্তু তাঁর এই চেষ্টা অবিশ্বাসীদের বিদ্রূপের কষাঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় । তিনি তার জন্মভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হন। হযরত ইউসুফকে নির্যাতন ও নীপিড়নের মাধ্যমে আল্লাহ্ তাঁকে বৃহৎ ও মহৎ কাজের যোগ্যরূপে গড়ে তোলেন। ঠিক সে ভাবেই , বা হযরত ইউসুফের থেকেও বেশী নির্যাতন রসুলুল্লাহ্কে (সা) সহ্য করতে হয়েছে – কারণ তিনি ছিলেন আল্লাহ্ কর্তৃক নির্বাচিত পৃথিবীর বৃহৎ কাজের জন্য । আর শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁর কাজে সাফল্যও অর্জন করেছিলেন। এখানেও গণতন্ত্রের সাথে বিরোধ খুঁজে পাই নাই।
ভাই আল্লাহর আয়াতকে এই ভাবে নিজের খেয়াল খুশীমত ব্যাখ্যা করবেন না। প্লিজ!
@মুনিম, আচ্ছা মুনিম সাহেব আপনার দাবীমত আমরাই নিজস্ব তাবীল করলাম কিন্তু আপনার তাফসীরের তো কোন রেফারেন্স দিলেন না।
মোফাস্সেরদের এ কথা নিশ্চয় আপনার জানার কথা যে, কোরানের যেসকল বিশেষ আয়াত ব্যক্তিসীমাবদ্ধ তা ছাড়া অন্যান আয়াত যা সাধারন হুকুমবাহী তার হুকুম ও ধারা কেয়ামত পর্যন্ত বাকী থাকে।
খেলাফতের যূগেও কি ভোট হয়েছিল? জনে জনে গিয়ে আমীর কে হবে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল? কাফের মুশরিকদের দেশে দাওয়াত দেয়ার পর তারা তা গ্রহণ না করলে যুদ্ধ করে তাদের কাফের থাকা স্বত্বেও শাষন করতে বলা হয়েছে, জিযিয়া নিতে বলা হয়েছে সে পরিস্থিতিগুলো ঐতিহাসিক ব্যাখায় কি আসে যে সকল বিজীত দেশগুলোর মুসলিম সংখ্যা বেশী ছিল তাই ই কেবল খলীফাগন তাদের শাষণ করেছিলেন? নাকি যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে সংখ্যগরিষ্ঠ কাফেরদের শাষণ করেছিলেন? আব্বাসীয়-উমুয়ী, মুঘল ও স্পেনের শাষনইতিহাস কি বলে?
নিজের মনের মত আয়াতের শানে নুযুল কোড করেদিলেন নিজের কথা বাস্তব ফলানোর জন্য আর ইতিহাস ও সিয়ারগুলো তুড়িমেরে উড়িয়ে দিলেন এটা কেমন কথা?
@বাংলা মৌলভী,
সহমত।
@বাংলা মৌলভী, সহমত ।
@হাফিজ,যিনি উপরের আয়াত গুলো কোট করেছেন । উনি কোট করে বলেছেন যে ঐগুলো হলো গণতন্ত্রের বিপক্ষে কোরানের আয়াত। কোরআনের আয়াত মানে আল্লাহর প্রত্যেক্য নির্দেশ। সেই হেতু আমি এটি যাচাই করতে ইন্টারনেট ভার্সন কয়েকটি সাইটে চেক করে দেখলাম উনার এই দাবির যথার্থতা আছে কি? কিন্তু কোথাও উনার দাবি খুঁজে পাই নাই। কারণ কোরআন নাজিল কালিন সময়ে রাষ্ট্রতন্ত্রে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধিয় দর্শন প্রচলিত ছিলনা। ছিল জোর যার মুলুক তার দর্শনের চালিত ঐ সময়ের বাস্তবতা। সেই অর্থে গণতন্ত্র একটি বেদাত।
২য়তঃ এমনকি ঐ সকল আয়াত যখন নাজিল হয় তখন রাসুলের ইসলাম মিশন এক চরম বৈরীতার মধ্যে নিমজ্জিত। যা সহ্য না করতে পের নও মুসলিমরা দলে দলে মক্কা ছেড়ে অন্যত্র হিযরত করেছিলেন। তাই ঐ সকল আয়াতের সাথে ছিলনা রাষ্ট্র পরিচালনার কোন নির্দেশ যেমন, ছিলনা তেমনি অপরিচিত দর্শন গণতন্ত্রের বিপক্ষেও কোন নির্দেশ। কোরআনে যতই আয়াত এসেছে রাষ্ট্র পরিচালনা, রাজনীতি বা যুদ্ধনীতির সবই এসেছে রাসুল সঃ মদিনায় হিযরতের পর থেকেই। কাজেই কোরআনের আয়াতকে ইমপ্লিমেন্ট করতে হলে অবশ্যই তার শানে-নজূলের দিকে লক্ষ্য রেখেই করতে হবে। সেই কারণে আমি মাহমুদ সাহেবের কোট সাথে একমত হতে পারিনাই।
আমি জবাব দিলাম মাহমুদ সাহেবকে, উনি জবাব দিলেন না। জবাব দিলেন শায়খূল বাংলা। আমার কাছে রেফারেন্স দাবি করলেন, কিন্তু মূল পোস্ট দাতার কাছে কোন রেফারেন্স দাবি করলেন না। কারণ উনি গণতন্ত্রের বিপক্ষে কথা বলেন। তিনিও সেই ধারার লোক। অথচ ঐ ব্যাক্তিকে আফসোস করতে শুনেছি এই বলে যে, বাংলাদেশ ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এই সব কি হচ্ছে বলে। এখানে উনি সংখ্যাধিক্যের দাবিতে উনি ইসলাম কায়েম করতে চান অথচ এই সংখ্যাধিক্য মানুষ যে কখনও এই দেশী ইসলামী দল গুলোকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবেনা এটি বুঝেই তিনি গণতন্ত্রকে সাপোর্ট করতে চান না। উনি চান মধ্যযুগীয় দর্শন জোর যার মূলুক তার দর্শনের মাধ্যমে ইসলাম কায়েম করতে। অথচ বাংলাদেশে যদি অন্য কোন ইজমের অনুসারী এই মধ্যযুগীয় দর্শন জোর যার মূলুক তার দর্শনের মাধ্যমে তাদের অনৈসালামিক দর্শন চাপিয়ে দেয় তখন তা উনি কোন দর্শনের দাবিতে অন্যায্য আগ্রাসন বলে প্রতিবাদ করবেন?
আর আপনিও পিঠে তালি লাগালেন কিন্তু উনার কোন বক্তব্যের জন্য তালিয়া বাজলেন যদি বুঝতে পারতাম তাহলে নিজকে যাচাই করে দেখতাম।
১।আচ্ছা মুনিম সাহেব আপনার দাবীমত আমরাই নিজস্ব তাবীল করলাম কিন্তু আপনার তাফসীরের তো কোন রেফারেন্স দিলেন না।
তালিয়া কি এর জন্য?
২।মোফাস্সেরদের এ কথা নিশ্চয় আপনার জানার কথা যে, কোরানের যেসকল বিশেষ আয়াত ব্যক্তিসীমাবদ্ধ তা ছাড়া অন্যান আয়াত যা সাধারন হুকুমবাহী তার হুকুম ও ধারা কেয়ামত পর্যন্ত বাকী থাকে।
নাকি এর জন্য?
৩। খেলাফতের যূগেও কি ভোট হয়েছিল? জনে জনে গিয়ে আমীর কে হবে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল?
নাকি এর জন্য?
৪। কাফের মুশরিকদের দেশে দাওয়াত দেয়ার পর তারা তা গ্রহণ না করলে যুদ্ধ করে তাদের কাফের থাকা স্বত্বেও শাষন করতে বলা হয়েছে, জিযিয়া নিতে বলা হয়েছে সে পরিস্থিতিগুলো ঐতিহাসিক ব্যাখায় কি আসে যে সকল বিজীত দেশগুলোর মুসলিম সংখ্যা বেশী ছিল তাই ই কেবল খলীফাগন তাদের শাষণ করেছিলেন? নাকি যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে সংখ্যগরিষ্ঠ কাফেরদের শাষণ করেছিলেন? আব্বাসীয়-উমুয়ী, মুঘল ও স্পেনের শাষনইতিহাস কি বলে?
নাকি এর জন্য?
৫।নিজের মনের মত আয়াতের শানে নুযুল কোড করেদিলেন নিজের কথা বাস্তব ফলানোর জন্য আর ইতিহাস ও সিয়ারগুলো তুড়িমেরে উড়িয়ে দিলেন এটা কেমন কথা?
নাকি এর জন্য? না উপরের সব কিছুর জন্য? মিঃ হাফিজ এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য আপনার কাছ থেকে আশা করতে পারি কি?
@মুনিম,মুনিম ভাই আমি কোথায় এমন বলেছি যে এসব আয়াতের মাধ্যমের সরাসরিই গনতন্ত্রকে হারাম বলা যায়?
আমি বল্লাম গনতন্ত্রের মৌলিক বিষয় হল সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট-বা রায় যাদের মাধ্যমে খন্ডকালীন আমীর নিযুক্ত হয়। এবং সেই আমীরেরর সাংঙ্গ-পাঙ্গরা মিলে যে আইন কানুন পাশ করান তাই হলো গনতন্ত্রের রেজাল্ট। এবার প্রত্যেকটি আইন পাশ করানোর সময় গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যক্তি ব্যক্তি করে বৃহত্তর ভোট হয় না। এ করানেই আমি এ বিরোধ ও করেছি যে, গনতন্ত্রের মাধ্যমে জনগনের বাস্তব চাহিদার প্রতিফলন হয় না । তারপরে আসুন যদি গনতন্ত্রকে মেনে নিয়েই প্রত্যেকটি আইন পাশ করানোর ক্ষেত্রে বৃহত্তর ভোটাভুটির কথা আসে সে ক্ষেত্রেও আমি কোরানের আয়াতকে আমার পক্ষের দলিল সাব্যস্ত করি নি। আমি আপনার মতই বলছি যে কোরান শামেল বা ব্যাপকভাবে মানুষের অবস্থা বর্ণনা করছে যে, অধিকাংশ মানুষই অন্যায়কে ভালবাসে, কুফুরী করে, অজ্ঞ ইত্যাদি ।
এসব আয়াতের ব্যাপারে আপনিও বলছেন যে, এটা গনতন্ত্রের হুকুম নিয়ে নয়। কিন্তু দেখুন এটা গনতন্ত্রে সোর্স বা পয়েন্ট নিয়ে একটি খবর বা বার্তা বাহন করছে। যেমন: و إن تطع أكثر من في الأرض ـ আপনি যদি দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষকে অনুসরণ করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ব্যাপারে একটি খবর। كم من فئة قليلة غلبت فئة كثيرة তালুত জালুতের ঘটনার মতই পৃথীবিতে অনেক ছোট ছোট দল বড় বড় দলের উপর জয়ী হয়- একটি খবর, و لكن أكثر الناس لا يعلمون ইউসুফ আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর ঘটনা বর্ণনা করে আকছারুন্নাছ ব্যাপক অর্থে কয়েদ বা নির্দিষ্ট করন ছাড়াই একটি খবর। এসব খবরের বিষয় হলো যে অধিকাংশ মানুষ হক্ব কে পসন্দ করে না। আপনি রসূলের বৈরি পরিবেশের কথাই বল্লেন আমি আরো পরের গুলোও বলি আবু বকর এর সময় রিদ্দাতের যুদ্ধে সাহাবাদের সংখ্যা বেশী না মুরতাদ দের সংখ্যা বেশী? ওমরের যূগে রোম ফারেসের সংখ্যা বেশী না মুসলমান বেশী? ওসমানের যূগে শিয়া খারেজী বেশী না আহলে হক্বের সংখ্যা বেশী? আলীর যূগে এভাবে খেলাফতের যূগের পরেও কি পৃথীবিতে উমাইয়ারা অধিক সংখ্যায় ছিল না তাতারীরা? মুঘলদের আমলে হিন্দু বেশী ছিল না মুসলিম? এক কথায় উত্তর দিতে বাধ্য যে, বিপরীতমুখী মানুষের সংখ্যা সর্বযূগে বেশী -তবে মাহদীর শাষণের সময় ভিন্ন কথা- আমার সাবজেক্ট হল এই বিপরীত বৈরি পরিবেশের ব্যাপারে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন । এবং ঐতিহাসিক বাস্তবতাও এমন।
এবার আসুন গনতন্ত্র যদি ইসলামী পথই হবে তাইলে আল্লাহ একদিকে বেশী সংখ্যক মানুষ অজ্ঞ হবে, দুনিয়া মুখি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি বলে অপরদিকে তাদেরকে গনতান্ত্রিক উপায়ে শাষণ করার কথা বলবেন কেন?
@বাংলা মৌলভী, ভাই আমি কোথায় এমন বলেছি যে এসব আয়াতের মাধ্যমের সরাসরিই গনতন্ত্রকে হারাম বলা যায়?
আমি আপনাকে বলেছি? আপনি কেন নিজের উপর টেনে নিচ্ছেন! এটি মাহমুদকে বলছি সে এই সব কোরআনের আয়াত কোট করে বলেছে যে এইগুলো গণতন্ত্রের বিপক্ষে । ওহঃ তাহলে আপনি কি মাহমুদ?
একটি উদহারণ দিয়ে বলি লোহা দিয়ে চাকু তৈরি করা হয়। সেই চাকুতে মানুষও খুন করা যাবে আবার শত্রুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে ব্যবহার করা যাবে। আবার বাচ্চাদের পেন্সিল চুকাতেও পারবেন। এখানে কি দেখি চাকু একটি সাহায্যকারী বস্তু সে নিজ থেকে কিছু করার ক্ষমতা নাই। ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করছে এই লৌহখণ্ড কেমন ব্যবহার করবে।
কাজই গণতন্ত্র হলো সেই রকম। কোন রাষ্ট্রজাতি যে রকম চাইবে সে ভাবে ব্যবহার করতে পারবে। এর জন্য গণতন্ত্র দোষী হতে পারেনা। প্রত্যেক মুসলমানের লক্ষ্য হওয়া উচিত ইসলামী রাষ্ট্রের। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় তা বাংলাদেশে কেন পৃথিবীর কোথাও তা কায়েম সম্ভব নয়। তাই বলে কি বসে বসে স্বপ্নের রাজ্যে বিচরণ করবে? কেউ কি খেজুর গাছে কখন ফল ফলবে এই ভাবনায় পেটে পাথর বেঁধে ঘরে বসে থাকবে? না সে তার তাৎক্ষনিক প্রয়োজন মিটানোর জন্য আলু চাষ থেকে ফায়দা নেবে?
যেহেতু বাংলাদেশে আমরা মুসলমানরা মেজরীটি সেইহেতু বাংলাদেশে গণতন্ত্র কখনও আমাদের বিপক্ষে যেতে পারবেনা। যদিনা আমাদের ইসলামী দল সমূহের মধ্যে অনৈক্য না থাকে। এখন শুধু বাংলাদেশের সংবিধানে যাতে কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন সন্নিবেশিত নাহয় এরকম একটি ধারা সংযোজিত করা যায় সেই আন্দোলন করতে হবে। আর আমি মনে করি এটিই আমাদের ফর্জ। আল্লাহ বলেন- তোমরা তোমাদের সাধ্যমত চেষ্টা কর।
আপনি রসূলের বৈরি পরিবেশের কথাই বল্লেন আমি আরো পরের গুলোও বলি আবু বকর এর সময় রিদ্দাতের যুদ্ধে সাহাবাদের সংখ্যা বেশী না মুরতাদ দের সংখ্যা বেশী? ওমরের যূগে রোম ফারেসের সংখ্যা বেশী না মুসলমান বেশী? ওসমানের যূগে শিয়া খারেজী বেশী না আহলে হক্বের সংখ্যা বেশী? আলীর যূগে এভাবে খেলাফতের যূগের পরেও কি পৃথীবিতে উমাইয়ারা অধিক সংখ্যায় ছিল না তাতারীরা? মুঘলদের আমলে হিন্দু বেশী ছিল না মুসলিম? এক কথায় উত্তর দিতে বাধ্য যে, বিপরীতমুখী মানুষের সংখ্যা সর্বযূগে বেশী -তবে মাহদীর শাষণের সময় ভিন্ন কথা- আমার সাবজেক্ট হল এই বিপরীত বৈরি পরিবেশের ব্যাপারে আল্লাহ জানিয়ে দিলেন । এবং ঐতিহাসিক বাস্তবতাও এমন।ঐ সব দিনের কথা বলে বর্তমানে কোন লাভ নাই। কবে কখন কাঠাল খেয়েছিলেন আর এখনও গোফ হাত দিয়ে সে স্বাদ পাওয়ার কসরত করছেন!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
@মুনিম,
আপনার কাছে সরাসরি প্রশ্ন :
১) প্রচলিত গনতন্ত্র কি ইসলামে জায়েজ ?
২) ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্হায় যদি গনতন্ত্র জায়েজ হয় তাহলে সেটার সপক্ষে দলীল দিন ।
৩) যদি গনতন্ত্র ইসলামে সমর্থন করে , তাহলে খোলাফায়ে রাশেদীন এর সময় গনতন্ত্র না হয় খেলাফত শাসন ব্যবস্হা কেন হয়েছিল ?
@মুনিম,ধন্যবাদ আপনাকে অবস্থান থেকে সরে আসায়, আপনি গনতন্ত্রকে মৌলিক পন্থা না ভেবে পাল্লায় পড়ে মদ খাওয়ার অবস্থানে কিংবা না পাড়তে হারাম খাওয়ার স্থানে দেখলে আমারো আপত্তি থাকবে না, কারন আল্লাহ কথা হলো “সাধ্যের বাইরে কিছু চাপিয়ে দেন না”
কিন্তু কথা হলো আপনি কাঠাল খেতে পাবেন না তাই টকফল খেতে খেতে বলবেন কাঠালের কি দরকার তাতেও কিন্তু কাঠালের স্বাদ পাবেন না ।
গনতান্ত্রিক উপায়ে আমাদের লিবারেল জামাত ই ইসলামীরা ৪১সাল থেকে, ইখওয়ান ও আলজেরিয়ান জাবহা পার্টি ৪৫সাল থেকে গনতান্ত্রিক উপায়ে علي سبيل الحكمة মৌলিক নয় বরং পাক্ষিক উপায়ে রাজনীতি করে আসছে কিন্তু ফায়দা বেশী হইছে না ক্ষতি বেশী হইছে তা মিশর, লেবনান, আর আলজেরিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখেন। বাংলাদেশে আল্লাহর রহমত হইছে যে এককভাবে এখনো কোন ইসলামী দল গনতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় আসেনি, যেদিন আসবে দেখবেন তালেবানের হুকামাত দরকার হবে না এমনিতেই পশ্চিমারা আপনাদের গনতান্ত্রিক নির্বাচিত সরকারকে কিভাবে মহান জংঙ্গীবাজ বানিয়ে দেয়।
মুল কথা হলো মানুষের মুসলমান ঠিকই কিন্তু ইসলামী শাষণ ব্যবস্থা মানার মতো যোগ্যতা এখনো বেশীর ভাগ মুসলিম দেশেই নেই, মুলত এ কারনেই গনতান্ত্রিক উপায় বলেন, অভ্যুথ্যান ও যুদ্ধ বিগ্রহ যেভাবেই হোক মানুষের মাঝে মানার যোগ্যতার অভাবে ইসলামী শাষণ ব্যবস্থা নেই । এ বাস্তবতা তালেবান, স্যালভেশণ, ইখওয়ান, জামাত সবাই মানে।
তাহলে উপায় কী? لا يصلح آخر هذه الأمة إلا ما صلح بها أولها উম্মতের শেষের জন্য সেই সাজেশনই থাকবে যা শুরুর ভাগের জন্য ছিল, ইমানী মেহনত, এতেয়াত বা মানার যোগ্যতার জন্য কাজ করে যেতে হবে, একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় যে অঞ্চলেই তা আসবে সেখানে ইসলামী হুকমাত প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সোয়াতে ইসলামী বিদ্বেষী লোকাল পরিবেশ নেই, যা হচ্ছে তা পাকিস্তানের মোনাফেক সরকারের, আফগানিস্তানের কথিত ভোটকে তালেবান চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে, পাবলিক ন্যাটোর সাথে রাস্তায় রাস্তায় হাতাহাতি শুরু করেছে চোখ মেলে ধরুন সব দেখতে পাবেন। কাঠাল খেতে পান না বলে তেতুই খেয়ে কাঠালের স্বাদ তালাশ করাও ঠিক হবে না।
@মুনিম,
আর আপনিও পিঠে তালি লাগালেন কিন্তু উনার কোন বক্তব্যের জন্য তালিয়া বাজলেন যদি বুঝতে পারতাম তাহলে নিজকে যাচাই করে দেখতাম।
আমি যদি মনে করি বাংলা মৌলভীর বক্তব্য সঠিক এবং সেটাতে সমর্থন দিই ( যদিও সেটা আপনার মতের বিরুদ্ধে ) তাহলে কোনো সমস্যা আছে ?
সংশোধনী: كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللّهِ وَاللّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ… আয়াতাংশটি সুরা বাক্বারার ১১১নং নয় এটি হবে ২৪৯ নং।
ধন্যবাদ মুনিম ভাইকে।
@মাহমুদ, বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানে আছে “ধর্ম নিরপেক্ষ” যেটা গনতন্ত্রের একটি রেজাল্ট । এটা কি শরীয়ত সম্মত ? যারা গনতন্ত্রকে সাপোর্ট করে তাদের নিকট এই প্রশ্ন
@হাফিজ,
আমি আপনার সাথে আরেকটু অ্যাড করছি-
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যাদেরকে ক্ষমতায় বসানো হয়, তাদেরকে এমন একচ্ছত্র ক্ষমতার মালিক বানানো হয় যে, তারা যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারে। কারন, আইন প্রণয়ন কর্তৃত্বের মালিক পার্লামেন্ট। চাই তা কুরআন সুন্নাহর বিরুদ্ধে হোক না কেন।
আপনাদেরকে এ দুটো লেখা একটু পড়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
http://www.witness-pioneer.org/vil/Articles/politics/democracy_in_islamic_perspective.htm
http://www.ikhwanweb.com/article.php?id=20998&ref=search.php
@নাজনীন, আপনি যতই লিংক দেন না কেন কোন লাভ হবেনা। ঐ হান্নান সাহেবের লিখার বাংলা লিংক দিয়েছিলাম কেউ পড়ে নাই।
@নাজনীন, “Anyway, these fears can be overcome by one article stipulating that any legislation contradicting the incontestable provisions of Islam shall be null and void because Islam is the religion of the State and the source of legitimacy of all its institutions and therefore may no be contradicted, as a branch may not run against the main stream.”
আপনাকে এই লিংক দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
হান্নান সাহেবের এই লিখা থেকে বুঝলাম, উনি মনে করেন ইসলামী রাস্ট্র গণতন্ত্র এর মাধ্যমে উপরুক্ত clause যোগ করে চলতে পারে? কিন্তু এর মাধ্যমে কি আমাদের ইসলামী আন্দোলনের মন্ত্রীরা যে এদেশের শিল্প-মন্ত্রী হয়ে শিল্প ব্যাংক, ক্ষুদ্র ও বৃহত শিল্প-ঋণ এর কাগজ সই করেছেন অর্থাত উনাদের দায়িত্বে যে সুদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে, তা থেকে মুক্তি পেয়েছেন? এ ব্যাপারে কবি ইকবালের বা অন্য কারো নিজস্ব মত ছাড়া কোরান-হাদীস থেকে কোন দলীল আপনি অথবা হান্নান সাহেব কি দিতে পারবেন?
We see Moulana Maududi, fifty years ago from now, in his book “Political theory of Islam” used the term “Theo-democracy” for Islamic state. He didn’t deny the term ‘democracy’. Rather he accepted democracy while this system will work under the sovereignty of Allah.
অথচ, মাওলানা মওদুদী (রঃ) বলেছিলেন, আপনি নিজেই চিন্তা করে দেখুন, এই তাওহীদি আক্বীদা বিশ্বাস নিয়ে আমরা কিভাবে এ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে পারি? ……একদিকে আমরা আল্লাহর বিধান হতে মুক্ত হয়ে আইন প্রণয়ন করাকে শিরক বলে ঘোষণা করছি, অপরদিকে আমাদের নিজেদের ভোটেই ঐ সমস্ত লোকদের আইন সভার সদস্য নির্বাচিত করবো যারা আল্লাহর ক্ষমতা এ ইখতিয়ারকে খেয়ানত ও পদদলিত করার জন্য পার্লামেন্টে যেতে চায়। এমনটি করা কি আমাদের জন্য বৈধ হতে পারে? আমরা যদি আমাদের ঈমান-আক্বীদার ব্যাপারে সত্যবাদি হই তাহলে এ ব্যাপারে আমাদের জন্য কেবল একটি পথই খোলা আছে। আর তা হচ্ছে, আমাদের সমস্ত শক্তি সামর্থ কেবল মাত্র এ মূল নীতির স্বীকৃতি লাভের জন্যই ব্যয় করবো যে, সার্বভৌমত্ব কেবল আল্লাহর জন্য নিদৃষ্ট এবং আইন প্রণিত হবে কেবল মাত্র আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে। (তরজুমাতুল কোরান, রমজান-শাওয়াল, ১৩৬৪ হিঃ, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৪৫) [উপমহদেশের স্বধীনতা আন্দোলন ও মুসলমান, পৃঃ ২২৫-২২৬, আধুনিক প্রকাশনী]
I did not feel like to go through the paper written by Mr Hannan any further. But, I appreciate his effort to make Islam victorious, but it should be done in the right track. May Allah guide us all.
@deshibhai007,
@deshibhai007,
একদিকে আমরা আল্লাহর বিধান হতে মুক্ত হয়ে আইন প্রণয়ন করাকে শিরক বলে ঘোষণা করছি, অপরদিকে আমাদের নিজেদের ভোটেই ঐ সমস্ত লোকদের আইন সভার সদস্য নির্বাচিত করবো যারা আল্লাহর ক্ষমতা এ ইখতিয়ারকে খেয়ানত ও পদদলিত করার জন্য পার্লামেন্টে যেতে চায়।
সহমত।
@deshibhai007, “সার্বভৌমত্ব কেবল আল্লাহর জন্য নিদৃষ্ট এবং আইন প্রণিত হবে কেবল মাত্র আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে। ” — এ কথাটা কি হান্নান সাহেব অস্বীকার করেছেন বা ভিন্ন কিছু বলেছেন ? আমার তো মনে হয় না। আপনি ঐ আর্টিকেলটা একটু কষ্ট করে সম্পূর্ণ পড়ে দেখুন তো। মনে হয় ভুলটা কেটে যাবে।
@নাজনীন,
আমি বলিনি যে, তিনি তা অস্বীকার করেছেন। আসলে শুধু মুখে দাবী করা আর বাস্তবে তা না মানা বা তার উল্টোটা করা উচিত নয়।
দেখুন, উনি দাবী করেন যে তারা অর্থাৎ বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের ভাইরা (জামায়াতে ইসলামী) আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানেন, শুধু মানেন ই না সেটার জন্যই তাদের এই সংগ্রাম। কিন্তু বাস্তবে তারা সংসদ সদস্য হয়ে আল্লাহর সার্বভোউমত্ব বিরোধী কাজে লিপ্ত। তারা আল্লাহর আইনের বিরোধী আইন পাশ করেছেন অথবা পূর্ববর্তী আল্লাহ বিরোধী আইনকে বলবত রেখে কাজ করেছেন। সেটা কি বাস্তবে উল্টা কাজ হলো না।
তিনি এবং তারা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এর জন্যই কাজ করছেন দাবী করছেন, কিন্তু বাস্তবে জামায়াত বা শিবিরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বি এন পি এর জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেরিয়েছেন। (অন্তত ৩৬০ আসনের মধ্যে ৩০০ আসনে (আনুমানিক)) । ঐ বিএনপি এর জন্য যাদের মূলনীতি গুলোর অন্যতম হলো, Pure গনতন্ত্র, কোন ইসলামী শুরা ভিত্তিক (অবাস্তব) গণতন্ত্র নয়। যা Purely কুফর।
তাহলে মুখে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানা বা না মানায় কি আসে যায়???
দয়া করে Witness-Pioneer অথবা জামাতে ইসলামীর সিলেবাসের বাইরের অন্য আলেমদের লেখা পড়ে দেখুন, আশা করি ভুলগুলো বুঝতে পারবেন।
আমি অস্বীকার করিনা, জামায়াতে ইসলামীর ভাইরা এদেশে কুর আন – সুন্নাহ এর প্রচার প্রসারে অনেক কাজ করেছেন, অনেক বই বের করেছেন, কিংবা দ্বীনের জন্য অনেক কষ্ট স্বীকার করেছেন, কিন্তু তাদের এই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ইসলাম প্রতিষ্টার প্রকল্পটা ভালো ভাবে কোরান-হাদীসের আলোকে যাচাই করা উচিত।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক পথ প্রদর্শন করুন।
আল্লাহ হাফেয।
@deshibhai007, সহমত।
আমাদের অবস্থা হলো ঐ রোগীর মতো যে, জ্বর সারাতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়, অতপর সেই ডায়রিয়া তার মৃত্যু ঘটে, ইসলামী শাষণ ব্যাব্স্থা কায়েম করতে আমরা গনতন্ত্রকে হালাল বানাচ্ছি, আর সেই গনতান্ত্রিক সুযোগে আমাদের নিধন করছে পশ্চিমারা।
@বাংলা মৌলভী, সহমত!
@বাংলা মৌলভী,
আমাদের অবস্থা হলো ঐ রোগীর মতো যে, জ্বর সারাতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়, অতপর সেই ডায়রিয়া তার মৃত্যু ঘটে।
সহমত!
রাষ্ট্র বিজ্ঞানী লেকি বলেছেন-‘গণতন্ত্র অজ্ঞ ও অযোগ্যদের শাসন’।
দেখুন নবম-দশম শ্রেণীর পৌরনীতি বইতে।
গণতন্ত্রের চরিত্র:
১. কূটচাল
২. অপপ্রচার
৩. মিথ্যা আশ্বাস
৪. মিথ্যার আশ্রয়
৫. আপোষকামিতা
৬. অবৈধ শক্তি প্রয়োগ
৭. কালো টাকার প্রভাব খাটানো
৮. নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা বা ক্ষমতার মোহ
৯. অপরাধ প্রবণতা , সুদ-ঘুষ এর প্রাদুর্ভাব
১০. মুসলিমেদর অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব ও দলাদলীর সৃষ্টি হওয়া
…………………………………………………………………
@সালাহউদ্দীন,
আমার মনে হয় এগুলো মুলত গণতন্ত্রের চরিত্র নয় বরং এগুলো বাংলাদেশের প্রচলিত গণতন্ত্রের চরিত্র।
অনেকে বলে থাকেন- সবকটি ইসলামী দল যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায় তাহলে গণতান্ত্রিক উপায়েই রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
আসলে কি তাই?
আচ্ছা, ঠিক আছে ধরলাম তারা ক্ষমতায় আসল কিন্তু তখন তাদের সামনে কী অপেক্ষা করছে? তারা কতসময় ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে? তখন ইসলামের শত্রু হয়ে সামনে দাড়াবে অন্তত ছয় প্রকারের লোক-
১. বদ্দীন আমলা, অর্থ্যাৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উচ্চস্তরের কর্মকর্তাগণ, যাদের কলমের খোচাঁয় দেশ চলে।
২. বদ্দীন জান্তা, অর্থ্যাৎ ভিন্ন রাষ্ট্রে গিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও মগজ ধোলাইকৃত সামরিক অফিসার, যারা সবসময়ই ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান করবে।
৩. বুর্জোয়া, অর্থ্যাৎ ঐ সমস্ত ধনাঢ্য ব্যক্তি, যারা অবৈধ পথে পাহাড় পরিমান সম্পদ সঞ্চয় করেছে-তারা ইসলামী সরকারের কাছে সম্পদের হিসাব দিতে চাইবে না। এজন্য তারা কখনো চাইবেনা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হোক।
৪. বাম দল ও তার উপদলগুলো, যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করতে দিবে না, প্রতিষ্ঠিত হলেও মেনে নেবে না। বিরোধী দল হিসাবে এবং বিরাট একটি অংশের জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে তাদেরও বড় একটি ক্ষমতা থাকবে। এরা ইসলামী বিলের বিরোধিতা করবে আর তখন তাদের উপর ধর্মান্তরের শাস্তি প্রদান করা ইসলামী সরকারের উপর অপরিহার্য হয়ে পড়বে। সৃষ্টি হবে বিশৃংখলা, ফিৎনা। সারাদেশে শুরু হয়ে যেতে পারে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ। এ পরিস্থতিতে ইসলামী হুকুমাত টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রপ্রধানকে সশস্ত্র পথ গ্রহন করা ছাড়া উপায় থাকবেনা।
৫. বিদেশী এজেন্ট
৬. নামধারী আলেম
যারা গণতন্ত্রের ইসলামের কাছাকাছিরূপে মানে সকল সার্বভৌমত্ব আল্লাহ্র এবং কোরআন ও হাদীসের বিরোধী কোন আইন হবে না , এরকম গণতন্ত্র চান না, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কিভাবে তারা এদেশে বা বিশ্বে খেলাফত কায়েম করতে চান?
কাকে তারা খলীফা বানাবেন? খলীফা নির্বাচন করার পদ্ধতি কি হবে? তখন সকল ধরণের আইন-কানুন কিভাবে তৈরী হবে। কোরআন-সুন্নাহ্র মূল আইন তো আছেই, কিন্তু অনেক আইন আছে বাস্তব বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে নিতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারে কিভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন?
রাষ্ট্রে অন্য ধর্মাবলম্বী যারা আছে বা যারা ইসলামী আইন চায় না, তাদের ক্ষেত্রে কি হবে?
@নাজনীন,
যারা গণতন্ত্রের ইসলামের কাছাকাছিরূপে মানে সকল সার্বভৌমত্ব আল্লাহ্র এবং কোরআন ও হাদীসের বিরোধী কোন আইন হবে না , এরকম গণতন্ত্র চান না, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন কিভাবে তারা এদেশে বা বিশ্বে খেলাফত কায়েম করতে চান?
আমার ধারনায়, গণতন্ত্র ইসলামের কাছাকাছি আসতেই পারে না। মদ আর দুধের মধ্যে কিভাবে ঐক্য সম্ভব। আমার পোষ্টে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছি, সেটি নিশ্চয়ই পড়ে থাকবেন।
সাধারনত চারটি পদ্ধতিতে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তিত হয়। ১. গণতান্ত্রিক নির্বাচন ২. সামরিক অভ্যুত্থান ৩. সসশ্ত্র বিপ্লব ও ৪. গণবিপ্লব।
প্রথমটির মাধ্যমে তো ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার আশা করাই যায়না, দ্বিতীয়টির মাধ্যমে হয়ত কদাচিৎ সম্ভব আর তৃতীয়টি সকল পরিবেশ-পরিস্থতিতে কার্যকর নয়, এটি চরমপন্থা। গণবিপ্লব সংঘটিত হওয়ার জন্য রয়েছে চারটি ধাপ; গণসংযোগ > গণচেতনা > গণদাবী > গণঅভ্যুত্থান। অর্থ্যাৎ গণসংযোগের দ্বারা ইসলামী রাষ্ট্রের সুফল এবং এর প্রয়োজনীয়তা সকলের সামনে তুলে ধরে গণচেতনা তৈরি করতে হবে। একে গণদাবীতে রুপান্তর করার চেষ্টা করতে হবে। যত বেশী গণচেতনা তৈরি করা যাবে তত শীঘ্রই তা গণদাবীতে পরিণত হবে। তবে এখানে অধিকাংশ সাধারন জনগণের দাবী শর্ত নয়; শিক্ষিত মহল, জ্ঞানী-গুণীদের অধিকাংশের সমর্থন থাকাই যথেষ্ট। আর এভাবেই সম্ভব ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সফল গণঅভ্যুত্থান। আশা করা যায় এটিই হবে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতি।
@সালাহউদ্দীন,
আপনার বর্ণিত এই পদ্ধতির সপক্ষে কোরআন-হাদীস থেকে কোন দলিল-প্রমান উপস্থাপন করবেন কি, দয়া করে?
@deshibhai007, আমার নীচের কমেন্টটি দেখতে পারেন। ধন্যবাদ।
মদীনা রাষ্ট্র গঠনের ইতিহাসটা আমরা একটু দেখি-
১. রাসুল স. নবুয়ত লাভের পর তিন বছর গোপনে নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন।
২. ইসলামের বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য রাসুল স. নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ মেনে নেয়নি, এ সভাতে একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, তিনি হলেন আলী রযি.। ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধূ আবু বকর রযি.। এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এই প্রচার ছিল সম্পূর্ণ গোপনে।
৩. তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর রাসুল স. প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন।
৪. এরপর যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ। আরব সমাজে উমার রযি.-এর বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে।
৫. এরপর একসময় নবীর চাচা হামযা রযি.ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়। মক্কায় মুসলিমদের উপর শুরু হয় কোরাইশ মুশরিকদের নির্যাতন।
৬. রাসুল স. মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপরে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফ যান । কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন।
৭. ইতোমধ্যে মদীনার বেশকিছু লোক ইসলামের প্রতি উৎসাহী হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। তারা মূলত হজ্জ্ব করতে এসে ইসলামে দাওয়াত পেয়েছিল।
৮. আকাবার শপথ অনুষ্ঠিত হয়।এর ফলেই মদীনায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয় এবং একসময় মদীনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে মুহাম্মাদ স. কে মদীনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়।
৯. এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ স. ও আবু বকর রযি. ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় হিজরত করেন।
১০. হযরত স. এর আগমনের পর মুসলমানেরা ক্রমান্বয়ে চারদিক থেকে এসে মদীনায় জমায়েত হচ্ছিল। পূর্বের মতোই দাওয়াত বা গণসংযোগের কাজ জোরদার গতিতে চলতে থাকে।
১১. মক্কা থেকে যারা হিজরত করেছিল এবং মদিনার মুসলিমগণের মধ্যে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেতনা সৃষ্টি হয়।
১২. রাসুল স. কে রাষ্ট্রনায়ক করে মদীনায় একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী ওঠে।
১৩. অত:পর মদীনার আনসার এবং মুহাজিরদের সমন্বয়ে একটি ক্ষুদ্রাকৃতির ইসলামী রাষ্ট্র গঠিত হয়। আর এটাকেই আমি ঐ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির বিপ্লব বলতে চেয়েছি।
@সালাহউদ্দীন,
আপনার ১ থেকে ৭ পর্যন্ত পয়েন্টে আমি একমত। কিন্তু ৮ এবং পরবর্তী পয়েন্টে আমি বলবোঃ
৮। আকাবার শপথ অনুষ্ঠিত হয়। মদীনার ১২ টি গোত্রের নেতারা একটি প্রতিনিধিদল প্রেরণের মাধ্যমে রাসুল(সাঃ) কে মদীনায় আসার আমন্ত্রণ জানায়। তারা রাসুল (সাঃ) কে নিরাপত্তা দানের প্রতিশ্রুতি দেন। ইবনে ইসহাক বর্ণিত, “লোকেরা বায়াতের জন্য সমবেত হওয়ার পর হজরত আব্বাস ইবনে ওবাদা ইব্নে নাযলা (রাঃ) বললেন, তোমারা জানো, তোমরা কিসের উপর বায়াত করছো? সবাই বললো, হ্যা জানি। তোমরা তাঁর হাতে কালো ও লাল লোকদের সাথে যুদ্ধ করার বায়াত করছো। যদি তোমরা মনে করে থাকো, যখন তোমাদের ধন-সম্পদ বিনষ্ট করা হবে, তোমাদের অভিজাত নেতৃস্থানীয় লোকদের হত্যা করা হবে, তখন তোমরা তাঁকে পরিত্যাগ করবে, তবে এখনই তাঁকে পরিত্যাগ করো। …”- [আর রাহীকুল মাখতুম, পৃষ্টাঃ ১৭৪,প্রকাশকঃ হাফিজ মুনির উদ্দিন আহমেদ]
দেখা যাচ্ছে, এ শপথ ইসলাম গ্রহন করার শপথ ছাড়াও যুদ্ধের সম্ভাবনা মাথায় নিয়েও রাসুল(সাঃ) কে মদীনা নিয়ে যাওয়ার শপথ ছিলো। দেখুন নীচের হাদিসটিঃ
হজরত জাবের (রাঃ) বর্ণিত, “সমবেত ৭০ জন লোক বায়াতের জন্য উঠলে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী আসয়াদ ইবনে যুরারা (রাঃ) রাসুল (সাঃ) এর হাত ধরে বললেন, ইয়াসরিববাসী একটু থামো। আমরা তাঁর কাছে উটের বুক শুকানো দূরত্ব অতিক্রম করে এই বিশ্বাস নিয়ে এসেছি যে, তিনি আল্লাহর রাসুল। আজ তাকে মক্কা থেকে নিয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে, সমগ্র আরবের সাথে শত্রুতা, তোমাদের বিশিষ্ট নেতাদের নিহত হওয়া ও তলোয়ারের ঝনঝনানি। কাজেই এসব যদি সহ্য করতে পারো তবেই তাঁকে নিয়ে যাও। তোমাদের এ কাজের বিনিময় আল্লাহর কাছে রয়েছে। আর যদি নিজের প্রাণ তোমাদের কাছে প্রিয় হয়ে থাকে, তবে তাঁকে এখানেই ছেড়ে যাও। এটা হবে আল্লাহর কাছে তোমাদের অধিক গ্রহণযোগ্য ওযর”। – মুসনাদে আহমদ।
৯. এই আমন্ত্রণে মুসলিমরা মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় চলে যায়। সবশেষে মুহাম্মাদ স. ও আবু বকর রযি. ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় হিজরত করেন। বর্ণিত আছেঃ “৫ম, ১২তম, ২৬ তম দিনের জুময়া বার তিনি আল্লাহর নির্দেশে সওয়ারীতে আরোহন করেন। তখন আবু বকর (রাঃ) তাঁর পিছনে ছিলেন। কোবা থেকে রওয়ানা হওয়ার আগে তিনি তাঁর মাতুল গোত্র বনু নাযযারকে খবর পাঠান। তারা তলোয়ার সহ হাজির হয়। তাদের সাথে নিয়ে তিনি মদীনা অভিমূখে রওয়ানা হন।” -[সহীহ বুখারী, ১ম খন্ড, পৃঃ ৫৫৫-৫৬০, যাদুল মায়াদ, ২য় খন্ড, পৃঃ ৫৫, ইবনে হিসাম, ১ম খন্ড, পৃঃ ৪৯৪;রাহীকুল মাখতুম,পৃষ্টাঃ ১৯৬,প্রকাশকঃ হাফিজ মুনির উদ্দিন আহমেদ]
তাই দেখা যাচ্ছে, রাসুল (সাঃ) এর মদীনায় গমন শুধুমাত্র এক বিশাল জন-নেতার (যাকে অধিকাংশ জনগণ পছন্দ করে) নিজ জণগনের কাছে গমন ছিলোনা, সেখানে Show of Power / Force ও ছিলো। যারা মনে করেন, দাওয়াত দানের পর অধিকাংশ জণগণকে মুসলিম বানিয়েই কেবল ইসলাম ক্ষমতায় যায়/গিয়েছিলো, তারা এই জায়গায় একটু আবার চিন্তা করবেন, please. সব যুগেই ইসলাম দুইটি জিনিসের সাহায্যে বিজয় লাভ করেছে। তা হচ্ছে, আল-কোরআন ও তলোয়ার।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “আমি আদৃষ্ট হয়েছি মানুষের সাথে যুদ্ধ করতে যতক্ষণ না তারা এই সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত ইলাহ নেই ও মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয়। তারা যদি এটা করে তবে ইসলামী আইনের ব্যাপার ছাড়া তাদের জীবন ও ধন-সমপদ আমার কাছে নিরাপদ, আর তাদের হিসাব আল্লাহর কাছে”। – সহীহ বুখারী, হাদিস নং ২৪, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩।
ইবনে তাইমিয়া (রঃ)“And We brought forth iron wherein is mighty power (in matters of war), as well as many benefits for mankind, that Allaah may test who it is that will help Him (His religion) and His Messengers in the unseen” [al-Hadeed 27:25] এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ So whoever deviates from the Book is to be brought back with iron, i.e. by force. Hence the soundness of the religion is based on the Qur’aan and the Sword. It was narrated that Jaabir ibn ‘Abd-Allaah (may Allaah be pleased with him) said: The Messenger of Allaah (peace and blessings of Allaah be upon him) commanded us to strike with this, meaning the sword, whoever turns away from this, meaning the Qur’aan. -Majmoo’ al-Fataawa, 28/263
ইবনুল কায়্যিম (রঃ) বলেন, “আল্লাহ কিয়ামতের পূর্বে, রাসুল (সাঃ) কে পাঠিয়েছেন – পথপ্রদর্শক কিতাব (আল-কুরআন) ও বিজয়ী তলোয়ার দিয়ে, যাতে কোন শরীক ছাড়া এক আল্লাহর ইবাদত হয় এবং তাঁর রিযক তলোয়ার ও ঢালের ছায়াতলে অবস্থিত। আল্লাহ দ্বীন ইসলামকে প্রতিষ্টিত / বিজয়ী করছেন দলীল-প্রমাণ এবং ঢাল-তলোয়ারের মাধ্যমে, দুটোই একত্রিত এবং পরস্পরের পরিপূরক- আল ফুরুসিয়া (পৃঃ ১৮)
১০. হযরত স. এর আগমনের পর মুসলমানেরা ক্রমান্বয়ে চারদিক থেকে এসে মদীনায় জমায়েত হচ্ছিল। পূর্বের মতোই দাওয়াত বা গণসংযোগের কাজ জোরদার গতিতে চলতে থাকে।
১১. নবী (সাঃ) মুসলিমদের মধ্যে বিশেষ ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। অতঃপর শুধু মুসলিমদের মধ্যে আলাদা সহযোগিতার অংগীকার করান, এবং তাদেরকে “অন্য সকল মানুষ থেকে এক ভিন্ন উম্মতে” আবদ্ধ করেন। [আর রাহীকুল মাখতুম, ১ম সংস্করণ, পৃষ্টাঃ ২১১, প্রকাশকঃ হাফিজ মুনির উদ্দিন আহমেদ] তাছাড়াও তিনি ইহুদীদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হন। যাতে এটাও উল্লেখ ছিলো যে, (এক) বনু আওফের ইহুদীরা মুসলিমদের সাথে মিলিত হয়ে একই উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবে। ইহুদী ও মুসলিম নিজ নিজ দ্বীনের উপর আমল করবে। … বনু আওফ ছাড়াও তাই অন্য ইহুদীরাও একই অধিকার ভোগ করবে। তাছাড়াও (নয়) এ চুক্তির অন্তর্ভূক্তদের মধ্যে কোন সমস্যা দেখা দিলে বা ঝগড়া-বিবাদ হলে আল্লাহর আইন অনুযায়ী রাসুল (সাঃ) তার মীমাংসা করবেন। [ইবনে হিসাম, ১ম খন্ড, পৃঃ ৫০৩-৫০৪; আর রাহীকুল মাখতুম, ১ম সংস্করণ, পৃষ্টাঃ ২১৬-২১৭, প্রকাশকঃ হাফিজ মুনির উদ্দিন আহমেদ]
অর্থাৎ মদীনা মুসলিমদের আয়ত্বে আসার পর রাসুল (সাঃ) সেটাকে ইসলাম অনুযায়ী পরিচালনা করেন। জনগণের কোন প্রাণের দাবীর জন্য তিনি অপেক্ষা করেন নি । ইহুদীরাও মদীনার খিলাফতের অন্তর্ভূক্ত ছিলো। আর ইহুদীদের সাথে রাসুল (সাঃ) এর চুক্তিতে বর্তমানের অনেক আপোষকামী ইসলামপন্থীদের বিভিন্ন চুক্তির সমর্থন পাওয়া যায়না। কারণ রাসুল (সাঃ) এর চুক্তি অনুযায়ী তিনি ছিলেন সর্বে সর্বা, ইসলাম ছিলো বিজয়ী, যে কোন ব্যাপারে মতভেদ-বিবাদ হলে আল্লাহর আইন অনুযায়ী তা মীমাংসা হতো আর বর্তমানে যে সব চুক্তি-সনদ সাক্ষরিত হয় তাতে ইসলামের/ আল্লাহর আইনের কোন অংশ থাকে না বরং অপর পক্ষের দয়ার উপর ইসলাম পন্থীরা টিকে থাকেন। এবং অধিকাংশ / সকল যৌথ সিদ্ধান্ত হয় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুযায়ী দ্বীন ইসলামের দিকে ভ্রুক্ষেপ ও না করে অথবা নিজেদের খেয়াল-খুশী অনুযায়ী, যার কোন বৈধতা ইসলামে নেই।
১২. রাসুল স. মদীনায় আসা এটাই প্রমাণ করে যে, মুসলিমরা মদীনার নেতৃত্ব নিয়ে নিয়েছেন। এতে শুধুমাত্র জণগণের প্রাণের দাবী থাকলে রাসুল (সাঃ) তলোয়ারসহ বনু নাযযার কে মদীনায় প্রবেশ করার সময় সাথে রাখতেন না। তাঁর এ ধরনের প্রবেশ এটাই প্রমাণ করে যে, জণগণের প্রাণের দাবীর পাশাপাশি (অধিকাংশ জণগণ বলতে চাইলে যে কাউকে দলীল-প্রমাণ হাজির করতে হবে) শক্তি-সামর্থের মাধ্যমে মুসলিমরা মদীনার কর্তৃত্বে আসেন। স্বভাবতই রাসুল (সাঃ) হন, তাদের নেতা / আমীর / খলিফা।
১৩. অত:পর মদীনার সকল স্তরের জণগণকে নিয়ে একটি ইসলামী খিলাফত গঠিত হয়। (রাস্ট্র বলছিনা কারণ এই শব্দের অনেক Side effect আছে, যা খিলাফত আর ইসলামী রাস্ট্রকে বেশ আলাদা করে দেয়) এই খিলাফতে শুধু মুসলিমরা ছিলেন না, মদীনার অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও ছিলো। আর এটাকে হয়তো ঐ ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির বিপ্লব বলা যায় যার মাঝে জনসমর্থন ও সশস্ত্র শক্তির সমন্বয় ছিলো। বিপ্লব শব্দটি ব্যবহার করা বা না করায় কিছু যায় আসে না।
আস্সালামু আলাইকুম।
@deshibhai007, চমৎকার, ভাল বলেছেন।
তবে আমার মনে হয় বর্তমান প্রেক্ষাপটে খিলাফাত প্রতিষ্ঠার উপায়, পথ-পদ্ধতি নিয়ে আমাদের আরো গবেষণা করা দরকার। এবং এটা সময়ের দাবী।
@সালাহউদ্দীন,সহমত।
@নাজনীন,
কাকে তারা খলীফা বানাবেন? খলীফা নির্বাচন করার পদ্ধতি কি হবে?
রাষ্ট্রের জ্ঞানীজন, ইসলামী আইনশাস্ত্র ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ, তাকওয়াবান এরুপ ব্যাক্তিবর্গকে নিয়ে মজলিশে শুরা থাকবে। মজলিশে শুরায় অধিকাংশের সমর্থনে যিনি নির্বাচিত হবেন তিনি হবেন খলীফা।
@নাজনীন,
তখন সকল ধরণের আইন-কানুন কিভাবে তৈরী হবে। কোরআন-সুন্নাহ্র মূল আইন তো আছেই, কিন্তু অনেক আইন আছে বাস্তব বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে নিতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারে কিভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন?
রাষ্ট্রে অন্য ধর্মাবলম্বী যারা আছে বা যারা ইসলামী আইন চায় না, তাদের ক্ষেত্রে কি হবে?
তখন আইন-কানুন হবে কোরআন-সুন্নাহ্ভিত্তিক। আর যে সিদ্ধান্তগুলো বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে নিতে হয়, সেগুলোর ব্যাপারে অভিজ্ঞ ইসলামী আইনশাস্ত্রবিদদের ঐক্যমতে মজলিশে শুরা অথবা খলিফা সিদ্ধান্ত নিবেন।
অন্য ধর্মাবলম্বীরা ইসলামী রাষ্ট্রে ইসলামী আইনমতেই সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করবে। যেকোন মত-পথের চেয়ে ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের বেশী অধিকার দিয়েছে। তারা থাকবে ইসলামী রাষ্ট্রে আমানতস্বরুপ।
@সালাহউদ্দীন, আপনি যে গণজাগরণ বা গণসচেতনতার কথা বলেছেন, এটা অবশ্যই প্রয়োজনীয়। এটা বর্তমানে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু আছে তার জন্যও প্রয়োজন। আমরা যে মার্কা দেখে ভোট দিয়ে আবার চোর-বাটপারকেই নির্বাচিত করি, এটা আসলে আমাদের ভোটারদের অসচেতনতার কারণেই হয়। যদি মানুষ সচেতন থাকতো তাহলে মার্কা দেখে নয়, সত ও ভাল মানুষদেরকেই নির্বাচন করতো। তখন আপনি গণতন্ত্রের সত্যিকার ভাল চেহারাটাই দেখতে পেতেন।
যাই হোক আপনি যে বললেন, “রাষ্ট্রের জ্ঞানীজন, ইসলামী আইনশাস্ত্র ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ, তাকওয়াবান এরুপ ব্যাক্তিবর্গকে নিয়ে মজলিশে শুরা থাকবে” – এসব ব্যক্তিবর্গকে কারা নির্বাচিত করবেন বা সাক্ষ্য দিবেন যে হ্যাঁ উনারা যথেষ্ট তাকওয়াসম্পন্নন ব্যক্তি। আইনশাস্ত্রে ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ? আপনি তো আমাদের বর্তমান বিচারব্যবস্থা দেখছেনই। সবার মধ্যেই একটা দলীয় চেহারা। নিজ দলের হলে যোগ্য, না হলে যোগ্য নয়। এ অবস্থার পরিবর্তন তখনই সম্ভব যখন জনগণ সচেতন হবে। আর এটা গণতান্ত্রিক পন্থাই।
আবার মজলিশে শূরার সদস্যরা যে খলীফা বা আমি যদি বলি রাষ্ট্রনেতা নির্বাচন করবেন সেটাও কিন্তু গণতন্ত্র। সেই নির্বাচনই কিন্তু হলো। নাকি আপনি সিলেকশানের বা মনোয়নের কথা বলছেন? এখানে আসলে ক্ষুদ্রাকারের নির্বাচনই হচ্ছে একরকম।
হ্যাঁ, আমাদের একটা জাতীয় শূরা কাউন্সিল গঠন করা দরকার, আপনি যেমন বললেন, তেমনই। তবে সেটাই সব ক্ষমতার অধিকারী হবে এমন যদি হয়, এটাও আসলে এক অর্থে এক ধরণের হাউস অফ কাউন্সিলই হবে মানে আমাদের সংসদের মতো। এ সংসদে ভাল আইন জানা, রাজনীতি জানা, ইসলামী জ্ঞান্সম্পন্ন লোককে সদস্য হিসেবে নির্বাচন করতে হলে জনগণকে অবশ্যই সেরকম সচেতন এবং একই ভাবে ইসলামী শাসন চাচ্ছে এমন মনোভাবাপন্ন হতে হবে।
আর যদি বলেন জনগণ নয়, অল্প কিছু শিক্ষিত লোক মিলে মজলিসে শূরার সদস্য নির্বাচন করবে, তাহলে যেটা হবে তা হলো এরা জনগণের আশা-আকাংখার কোন প্রতিফলন ঘটাতে পারবে না। তারা হয়তো আল্লাহ্র আইন বাস্তবায়নে যথেষ্ট সচেষ্ট থাকবেন, কিন্তু হয়ে পড়বেন জনবিচ্ছিন্ন। মানুষের সুখ-দুঃখ শোনার পর্যায়ে তারা থাকবেন না, শুনতে পাবেন না। এতে করে জনগণ খুব বেশিদিন তাদের পছন্দ করবে না। ইরানের শাসন ব্যবস্থাকে পর্যালোচনা করলে এর বাস্তবতা অনেকটা বোঝা যাবে, আহমেদিনেজাদ মানুষ ভাল, হয়তো অনেক তাক্ওয়াসম্পন্নও, কিন্তু অনেকে তাকে পছন্দ করেন না। কেন? কারণ, তিনি জনগণের কাছাকাছি নন। সে তুলনায় খাতামিকে অনেকে পছন্দ করে।
আসলে আল্লাহ্র ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে বান্দার ইচ্ছাকে ধর্মের সীমার মধ্যে এনে নেতৃত্ব দেয়া এবং জনগণকে আপন করে নেয়ার চর্চাটা এতো সহজ নয়, এর জন্য অনেক সাবধানী পদক্ষেপ দরকার। তাই জনগণকে অবহেলা করার যেন কোন চেষ্টা না করা হয়।
@সালাহউদ্দীন, আপনি শিক্ষিত ও জ্ঞানী-গুণী সমাজের গণবিপ্লব বা অভ্যুত্থানের কথা বলছেন, আমাদের বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় এরাই কিন্তু সমাজভাবনায় মূল ভূমিকা রাখেন। বাকী সাধারণ জনগণ শুধু একটা ভোট দেয় পাঁচ বছরে একবার। তাদের শুধু একবেলা পেট ভরে খেতে পারার নিশ্চয়তা থাকলেই চলে, দেশ কি গণতান্ত্রিক নাকি স্বৈরতান্ত্রিক নাকি ইসলামতান্ত্রিক – এসব নিয়ে আসলেই তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। সব মাথাব্যাথা তাদেরই, যাদের পেটে যথেষ্ট খাবার আছে, সেটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না, বাড়তি সময় আছে সমাজ,দেশ নিয়ে ভাববার। এবং এরাই ঠিক করে আমাদের রাজনীতি কি হবে। তাহলে এই শিক্ষিত সমাজ যদি ইসলাম চায়, তাহলে আসলে বর্তমান ভোটাভুটির ব্যবস্থাতেই ভাল মানুষগুলো নির্বাচিত হয়ে আসবে। কিন্তু আমাদের শিক্ষিত বা বুদ্ধিজীবি সমাজেই তো ঘাপলা আছে।
এক ইসলাম নিয়েই আমাদের কত দল, কত মত, কত পথ!!! রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কথা বাদই রাখলাম। এগুলো কিভাবে দূর করবেন? কেমনে মজলিশে শূরা কোন ব্যাপারে একটা ঐক্যমত্যে পৌঁছাবেন? আমরা কি বর্তমানে সেরকম কিছু অবস্থায় আছি? কে কার কত দোষ ধরবো, কাকে কাকে ছোট করে নিজেকে বড় জাহির করবো, কে কাকে বাতিল করবো, কাফের বা মুরতাদ ঘোষণা করবো — এসব করতে করতেই তো সময় শেষ! আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য আগে দরকার। এটা কিভাবে হবে সেটা নিয়েই আসলে সবার আগে ভাবা দরকার।
@নাজনীন,
আমি আপনার সাথে সহমত।
ঐক্য দরকার সত্যি, কিন্তু তা কি যাকে হাতের কাছে পাই তার সাথে ঐক্য নাকি কুরান-সুন্নাহ ভিত্তিক ঐক্য?
এখন যদি তাব্লীগ-জামাত/জামায়াতে ইসলামী/অন্য কোন দল সবাইকে তাদের দলে শরীক হয়ে ঐক্য স্থাপন করতে বলে, তাহলে সবাই কি রাজী হবে? মনে হয় না।
এখন সবাই যদি বলে, আমরা আলাদা আলাদা দলে থেকেও ঐক্য বজায় রাখতে পারি, তবে সেটার জন্য একটা মূলনীতি থাকা দরকার। সেই মূলনীতি কিসের ভিত্তিতে তৈরী হবে? অবশ্যই কুরান-সুন্নাহর আলোকে।
এখন যারা কুরান-সুন্নাহ আলোকে না চলে তার বিপরীত দিকে চলছে (এখানে দলীয় নীতির কথা বলছি, কারো ব্যক্তিগত ভুল-ত্রুটির কথা বলছি না), তাদের সাথে কি ঐক্য সম্ভব?
আপনিই বলুন, যদি আপনাকে বলা হয়, আপনি মাজারে সিজদা দেয়, এরকম এক লোকের সাথে ঐক্য করুন, তাহলে কি আপনি তার সাথে ঐক্য করবেন? যদি আপনি তার সাথে ঐক্য করেন, তবে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের (সাঃ) সাথে অনৈক্য করলেন।
তাই ঐক্যের স্বরুপটা আমাদের সবার কাছে পরিস্কার থাকা প্রয়োজন। আর সেটা হলো কোরান-সুন্নাহ।
@deshibhai007, সহমত
যারা বলছেন খিলাফত প্রতিষ্ঠা গনতন্ত্র ছাড়া সম্ভব না তাদের জন্য
আল-কুরআনঃ “যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য ” [২:১৬৫]
গনতন্ত্রঃ জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস ।
“আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। ” [১২:৪০]
গনতন্ত্রঃ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা জনগন, সংসদ, মন্ত্রী-এমপির
গনতন্ত্রের অন্যতম পুরোধা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন “Democracy is of the people from the people by the people”
#আল-কুরআনঃ আল্লাহ তাআলা সার্বভৌমত্বের মালিক। [৩:২৬]
গনতন্ত্রঃ সার্বভৌমত্বের মালিক জনগন।
গনতন্ত্র হল সেক্যুলারিসম এর রাজনৈতিক ধারনা , যেখানে সেক্যুলারিসমের মূল কথা হল ধর্ম ধর্মের জায়গায় , জিবনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই … এটা ইসলামের সাথে সাঙ্ঘর্ষিক ।। গনতন্ত্র হালাল হবার কোন প্রশ্নই আসে না …
আর খিলাফাত প্রতিষ্ঠা কিভাবে করতে হবে সেটা মুহাম্মাদ(স) -ই আমাদের দেখিয়েছেন মদীনায় খিলাফত প্রতিষ্ঠা করে .নবীজী(স)- এর শুদ্ধ সীরাত গ্রন্থে খুজলেই পাবেন ….. সেটাই ইসলামি তরিকা …