লগইন রেজিস্ট্রেশন

রমযানের পরবর্তী সময়ে করণীয়

লিখেছেন: ' আবু আব্দুল্লাহ' @ রবিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১০ (১১:২৮ পূর্বাহ্ণ)

27

রমযানের মহত্তোম সময়ে বান্দা নিজেকে গড়ে নিবে তার রবের ইচ্ছানুসারে, রমযান মাসকে কেন্দ্র করে এটাই বান্দার সর্বোত্তম পাওনা। রমযান সংক্রান্ত বিস্তারিত জ্ঞান না থাকার দরুন সামাজিকভাবে বিশুদ্ধ উপায়ে রমযান মাস ও তার রোযা পালিত হয় না। ফলে রমযানের মূল-লক্ষ্য উদ্দেশ্যই বাধাপ্রাপ্ত হয়। আমরা শুধু রমযান মাসকেই ইবাদতের জন্য বেছে নেই, এবং করেও থাকি। সেই মাসটি দেখতে দেখতে চলে গেল, আমরা যতটুকু সম্ভব সে মাসটিতে আমল করেছি। কিন্তু রমযানের পরে আমরা সব ভুলে যাই।
রমযান অতিক্রান্ত হলে; আমরা বিদায় জানাচ্ছি মাহে রমযানকে। এই তো বিদায় দিচ্ছি কুরআন তিলাওয়াত, তাকওয়ার অনুশীলন, ধৈর্য, জিহাদ, রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তি লাভের মুবারক মাসটিকে। তাহলে কি আমরা প্রকৃত তাকওয়া অর্জন করতে পেরেছি? আমরা কি সর্ব-প্রকার জিহাদে নিজেদেরকে অভ্যস্ত করতে পেরেছি। রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তি লাভের উপযোগী আমল করার চেষ্টা করেছি? ঐ সময় প্রমাণিত হবে, যখন আমরা রমযানের পরেও রমযানের মত আমল চালু রাখবো। আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক দান করুন।
রমযানের শিক্ষা; মাহে রমযান একটি ঈমানী পাঠশালা, সারা বছরের পাথেয় উপার্জন, সারা জীবনের উদ্দেশ্যকে শানিত করার জন্য এটি একটি ট্রেনিং সেন্টার। যে ব্যক্তি মাহে রমযানে নিজেকে সংশোধন করতে পারল না সে আর কখন নিজের জীবন গঠন করবে ?
মাহে রমযানই এমন একটি প্রতিষ্ঠান যাতে আমরা নিজেদের আমল, শরিয়ত পরিপন্থী আচার-ব্যবহার পরিত্যাগ ও চরিত্র সংশোধন করে নিতে পারি। আল্লাহ তা’আলা বলেন : নিশ্চয়ই আল্লাহ ঐ পর্যন্ত কোন জাতির পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদেরকে পরিবর্তন করে নেয়। (সূরা রা’দ: ১১)
যদি আমি সত্যিকার অর্থে রমযান পেয়ে লাভবান হয়ে থাকি আর মুত্তাকীদের গুণাবলী অর্জন করে, রোযা তারাবীর নামায সম্পাদন করে থাকি, তাহলে আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করা উচিত। তার শোকর আদায় করা উচিত এবং তার কাছে মৃত্যু পর্যন্ত অটল থাকার তাওফীক কামনা করা উচিত।
সুহৃদয় পাঠক বর্গ ! আমরা রমযানে আল্লাহর সাথে যে ওয়াদা করেছি তা ভঙ্গ করার অনেক চিত্র সমাজে ফুটে উঠেছে। যেমন :
১। ঈদের দিনেই জামাতে নামায আদায় ছেড়ে দেয়া। তারাবীর মত সুন্নত নামাযে মসজিদ ভরা মুসল্লিথাকার পর এখন ফরয নামাযের সময়ই মুসল্লির সংখ্যা খুব কমে যাওয়া।
২। গান-বাদ্য ও নাকট , টিভি, সিনেমা নিয়ে ব্যস্ত থাকা।
৩। বেহায়া ও বেলেল্লাপনার সাথে হাট-বাজারে ও পার্কে ছেলে-মেয়েদের সহাবস্থান ইত্যাদি। তাহলে কি এভাবেই আমরা মাহে রমযানকে বিদায় জানাব? এত বড় নেয়ামতের এটাই কি শোকর আদায়! এটাই কি আমল কবুল হওয়ার নিদর্শন? নিশ্চয় নয়। বরং এটা আমল কবুল না হওয়ার আলামত! কেননা প্রকৃত রোযাদার ঈদের দিন রোযা ছেড়ে দিয়ে আনন্দিত হবে এবং রোযা পূর্ণ করার তাওফীক পাওয়ার দরুন তার প্রতিপালকের প্রশংসা করবে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। সাথে সাথে এই ভয়ে কাঁদবে যে, না জানি আমার রোযা কবুল হয়নি। আমল কবুল হওয়ার আলামত হল, পূর্ববর্তী অবস্থার চেয়ে বর্তমান অবস্থা উন্নত হওয়া। আল্লাহ তা’আলা বলেন;
মৃত্যু পর্যন্ত তোমার রবের এবাদত কর। (সূরা আল-হিজর:৯৯)
রাসূল (সঃ) বলেন; বল বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহর প্রতি, এবং অবিচল রইলাম। (মুসলিম হাদীস নং ৬২)
সত্যিকার মুমিন বান্দা সর্বদাই আল্লাহর এবাদত করবে। কোন নির্দিষ্ট মাস, জায়গা অথবা জাতির সাথে মিলে আমল করবে না। মুমিন বান্দা মনে করবে যিনি রমযানের প্রভু তিনি অন্যান্য সকল মাসেরও প্রভু। তিনি সকল কাল ও স্থানের প্রভু। রমযান শেষ হয়ে গেলেও শাওয়ালের ছয় রোযা, আশুরা, আরাফা, সোমবার, বৃহস্পতিবার আইয়ামে বীযের রোযা (চন্দ্র মাসের তের চৌদ্দ ও পরেন তারিখ) ইত্যাদি নফল রোযা রয়েছে। তারাবীহের নামায শেষ হয়ে গেলেও তাহাজ্জুদ নামায বাকি আছে সারা বছর। অতএব নেক আমল সব সময় সব জায়গাতেই করা যায়। হে ভাই সকল! আসুন আমরা নেক আমলে অলসতা না করে চেষ্টা চালিয়ে যাই।
যদি নফল আদায় করতে মন না চায়, তাহলে কমপক্ষে ফরয ওয়াজিব যেন ছেড়ে না দেই। যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে আদায় করা এবং গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে দ্বীনের উপর অটল থাকার তাওফীক দান করুন। আমিন \

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
১০৬ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৩.৬৭)