***যে দশটি কাজ একজনকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়***
লিখেছেন: ' manwithamission' @ সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১০ (১:০৭ পূর্বাহ্ণ)
“যে দশটি কাজ একজনকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়”
শায়খ মুহাম্মাদ
প্রথম, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে ইবাদত করলে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“আল্লাহ তাআলা (এ বিষয়টি) ক্ষমা করবেন না যে, তাঁর সাথে (কোন রকম) শরীক করা হবে, এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন” (সূরা নিসাঃ ১১৬)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
“মূলত যে কেউই আল্লাহর সাথে শরীক করবে, আল্লাহ তাআলা তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন, আর তার (স্থায়ী) ঠিকানা হবে জাহান্নাম; এ জালেমদের (সেদিন) কোন সাহায্যকারীই থাকবে না”। (সূরা মায়িদাঃ৭২)
যারা প্রাণী কুরবানী করে কোন জ্বিন বা কবরে শায়িত মৃত মানুষের উদ্দেশ্য করে সেও এই প্রকার শিরকে লিপ্ত হবে।
দ্বিতীয়, যে কেউ তার নিজের এবং আল্লাহর মধ্যে কোন মাধ্যম ঠিক করে নিবে, সেই মাধ্যমের নিকট প্রার্থনা করবে, সেই মধ্যমের উপর ভরসা করবে যেভাবে ভরসা একমাত্র আল্লাহ তাআলার উপর করা উচিত তাহলে সে আল্লাহর বিরুদ্ধে নিন্দা করল(আলেমদের ঐক্যমত অনুযায়ী)।
তৃতীয়, বহু গডের অনুসারীদের(ইহুদী, খ্রিস্টান, মূর্তিপূজারী অর্থাৎ যারাই একত্ববাদে অবিশ্বাসী) অবিশ্বাসীরুপে মনে না করলে অথবা তারা সত্যিই অবিশ্বাসী কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তাদের এই বহু গডের বিশ্বাসকে সঠিক বলে যে কেউ মনে করবে তাহলে সে নিজেই কুফরী করল বা অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল।
চতুর্থ, যদি কেউ আল্লাহ কর্তৃক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অর্পিত দেখানো জীবন ব্যবস্থার চেয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা বেশী সঠিক বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত বিচার ব্যবস্থার চেয়ে অন্যান্য বিচার ব্যবস্থাকে উত্তম বলে মনে করল তাহলে সে অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল। এই বিষয়টাকে এভাবেও বলা যায় যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাযিলকৃত নিয়ম ও আইন-কানুন থেকে মিথ্যা গড কর্তৃক বা মানুষের বানানো নিয়ম ও আইন-কানুনকে বেশী পছন্দ করা। এই রকম ধারণা অবিশ্বাসীদের ধারণার সামিল।
পঞ্চম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু নিয়ে এসেছেন যদি কেউ তা অপছন্দ করে তাহলে সে অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল যদিও সে কাজটি করে থাকুক না কেন।
ষষ্ঠ, কেউ যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত জীবন ব্যবস্থা তথা ইসলামে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা কোন পুরস্কার ও শাস্তি নিয়ে হাসি-তামাশা করল, কৌতুক পূর্ণ কথা বললো তাহলে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করল।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তুমি তাদের বলো, তোমরা কি আল্লাহ তাআলা, তাঁর আয়াত সমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে? তোমরা দোষ ছাড়ানোর চেষ্টা করো না, একবার ঈমান আনার পর তোমরা পুনরায় কাফের হয়ে গিয়েছ” (সূরা তওবাঃ ৬৫-৬৬)
সপ্তম, যাদুর চর্চা করা হচ্ছে অবিশ্বাসীদের কাজ। এই প্রকার যাদুমন্ত্র মানুষের মধ্যে একে অপরের প্রতি হয় ঘৃণা কিংবা ভালোবাসা তৈরী করে দেয়। যে কেউ এই ধরণের যাদু চর্চা করবে বা এই রকম যাদুর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করল।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“সেই দু’জন ফেরেশতা (কাউকে) ততোক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে শিক্ষা দিতো না, যতোক্ষণ পর্যন্ত তারা (এ কথাটা) তাদের বলে না দিতো, আমরা তো হচ্ছি (আল্লাহর) পরীক্ষামাত্র, অতএব (কোন অবস্থায়ই) তুমি (এ বিদ্যা দিয়ে আল্লাহ তাআলাকে) অস্বীকার করো না” (সূরা বাকারাঃ১০২)
অষ্টম, মুসলিমদের বিরুদ্ধে বহু গডে বিশ্বাসীদের সাহায্য এবং সহযোগীতা করা অবিশ্বাসীদের কাজ। যে কেউ তা করবে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদের(ইহুদী ও খ্রিস্টানদের) কে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে। আল্লাহ কখনো জালিম সম্প্রদায়কে হিদায়েত দান করেন না” (সূরা মায়িদাঃ ৫১)
নবম, যদি কেউ বিশ্বাস করে কিছু ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত জীবন বিধান তথা আইন কানুন থেকে মুক্ত যেমনটি মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় খিজির এর ক্ষেত্রে ঘটেছিল, তাহলে সে ব্যক্তি একজন অবিশ্বাসী।
দশম, আল্লাহর দ্বীন থেকে দূরে সরে যাওয়া, ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ না করা বা তা জীবনে বাস্তবায়ন না করা অবিশ্বাসীদের কাজ।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তার চাইতে বড় যালেম আর কে হতে পারে যে ব্যক্তিকে তার মালিকের আয়াতসমূহ দ্বারা নসীহত করা হয়, অতপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, অবশ্যই আমি নাফরমানদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিবো” ( সূরা আস-সাজদাঃ২২)
এই উপরোক্ত কাজগুলো কৌতুক করে, মজা করে, সিরিয়াসভাবে বা ভয় বিহীন অবস্থায় করা হোক না কেন তাতে কোন পার্থক্য নেই। অর্থাৎ সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করবে তবে শুধুমাত্র তাদের ছাড়া যাদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে করানো হবে। উপরোক্ত সব কাজগুলো খুবই বিপদজনক কাজ যা আল্লাহকে অসন্তষ্ট করে দেয় আর আমাদের মুসলিমদের মাঝে অনেককেই প্রায়ই উপরোক্ত কাজগুলো করতে দেখা যায়। একজন মুসলিমকে অবশ্যই এসব কাজ থেকে সতর্ক হতে হবে।
আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সে সকল কাজ থেকে, যেসকল কাজ আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে দেয় এবং যে কাজগুলোর ফলে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন।
Processing your request, Please wait....












আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সে সকল কাজ থেকে, যেসকল কাজ আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে দেয় এবং যে কাজগুলোর ফলে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন।
আমিন। ধন্যবাদ।
আমি এই অংশের কাহিনী বুঝলাম না। আপনি আল্লাহ পাকের আয়াতের উলটা ব্যাক্ষা করেছেন। আল্লাহ বলেছেন এক কথা, আপনি বলেছেন আরেক কথা। আল্লাহ বলেছেন, শজ ভাবে, তাদের কে যেন আমরা সাহায্যকারী কিংবা প্রতিরক্ষাকারী হিসাবে গ্রহন না করি। কিন্তু আপনি তাদের সাহায্য করতে না করলেন। আমি তো রাসূল সঃ এমন বিচারের কথাও শুনেছি মুঘস্ত নেই বলতে পারব না, যে মসুলমান লোকটি আসল দোষী তাই রাসূল সঃ নিজে ইহুদীর পক্ষে রায় দিয়েছেন। কেউ বিপদে পড়লে তাদের সাহায্য করতেই হয়, আর যদি কোন মুসলিম অন্যায় করে, সে ক্ষেত্রে মজলুম যদি অ-মুসলিম হয়, আপনার মতে তাকে সাজায্য করা আর অ-অবিশ্বাসী হওয়া একই কথা।
@ফুয়াদ,একমত
@ফুয়াদ, আসসালামু আলাইকুম,
মুসলিমদের বিরুদ্ধে, বিষয়টি হলো, ধরুন অবিশ্বাসী সম্প্রদায় একটি মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর আক্রমন চালালো আর কোন মুসলমান সেই অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সাহায্য করলো, তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করলো। তাহলে প্রকারন্তরে সেই মুসলিম অবিশ্বাসীদের দলেই শামিল হবে। (সাহায্যকারী ও প্রতিরক্ষাকারী = বন্ধু, ইনশাল্লাহ এখন বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হবে)
যেসব অবিশ্বাসীর মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন বিদ্বেষ নেই তাদের বিরুদ্ধে মুসলিমদেরও কোন বিদ্বেষ নেই। মদীনাতে অনেক অবিশ্বাসী ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময়, খুলাফায়ে রাশেদীনের সময়। আর মদীনা সনদে তো উল্লেখ ছিলই, বিষয়টা অনেকটা এরকম, যে সকল অবিশ্বাসী মুসলিমদের সাথে থাকবে, মুসলিমরা বিপদে পড়লে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে; তারা যদি বিপদে পড়ে তাহলে মুসলিমরাও তাদের সাথে যুদ্ধ করবে।
@manwithamission,
আমার মনে হইতেছে, এদের কে সাহায্যকারী হিসাবে না নিতে বলা হয়েছে। যাইহোক, আপনি যেহেতু এই বিষয়ে লিখতে গিয়েছেন সেহেতু আপনার ক্লিয়ার করার দায়িত্ত ছিল। আপনি যেভাবে লিখেছেন যেন মনে হইতেছে তাদেরকেই সাহায্য করা যাবে না। আসলে তাদের দূঃখ কষ্টে সাহায্য না করলে ইসলামের মহত্ত কই? তারপর কয়েকটি কাহীনি শুনুন। বহু আগে ইউরোপের কয়েকটি দেশে কিছু মসুলমান আশ্রয় চেয়েছিল, লাটভিয়ে ইউক্রেইন এর আশে পাশের অঞ্জলে, তৈমুর লংগ এর মার খেয়ে। ঐখান কার বুদ্ধিমান খ্রিস্টান ডিউওক তাদের আশ্রয় দিলেন। কিছুদিন পর তার্কিরা ভিয়েনা অবোরোধ করল। তারা কিছুতেই তার্কিদের সাথে পারত না। সাহায্যে এগিয়ে এল ঐ আশ্রিত মুসলিম গুলি, তাদের কারনেই ভেস্তেগেল তার্কির অভিজান। আপনি এদের কি বলবেন জানি না।
@ফুয়াদ, আসসালামু আলাইকুম,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় কতগুলো মুসলমান আবিসিনিয়ার খ্রিস্টান রাজার নিকট আশ্রয় নিয়েছিল। পরবর্তীতে আবু সুফিয়ান উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন যাতে করে খ্রিস্টান রাজা মুসলামনদের তার রাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেয় কিন্তু মুসলামনদের নিকট থেকে তাদের বক্তব্য শোনার পর তিনি মুসলামানদের নিরাপদে থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন।
আমি আগেই বলেছি, যেসব অমুসলিমের ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ নেই, তাদের প্রতি মুসলামানদেরও বিদ্বেষ নেই।
ভাই ফুয়াদ, আপনি আমাকে চিনতে পেরেছেন কিনা?
আমিই আপনাকে সামুতে পিস ইন ইসলামের কথা বলেছিলাম।
@manwithamission,
আমাদের উমর ভাই।
@ manwithamission “তৃতীয়, বহু গডের অনুসারীদের(ইহুদী, খ্রিস্টান, মূর্তিপূজারী অর্থাৎ যারাই একত্ববাদে অবিশ্বাসী) অবিশ্বাসীরুপে মনে না করলে অথবা তারা সত্যিই অবিশ্বাসী কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তাদের এই বহু গডের বিশ্বাসকে সঠিক বলে যে কেউ মনে করবে তাহলে সে নিজেই কুফরী করল বা অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল।”
“তাদের এই বহু গডের বিশ্বাসকে সঠিক বলে যে কেউ মনে করবে” ছাড়া পুরোটা মনে হয় সঠিক নয় কারন তাদের মাঝে কেউ কেউ আছেন যারা হয়তো আল্লাহকে মানেন।আল্লাহ বলেছেনঃ
সূরা আল-ইমরান
১১৩। তারা সকলে এরকম নয়। কিতাবীদের মধ্যে একদল আছে যারা [ন্যায়ের প্রতি] অবিচলিত। তারা রাত্রিতে দীর্ঘ সময় আয়াতসমূহ তিলায়াত করে এবং ভক্তিভরে সিজ্দা করে।
১১৪। তারা আল্লাহ্ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে। তারা ন্যায় কাজে নির্দেশ দান করে এবং পাপ কাজে নিষেধ করে। তারা কল্যাণকর কাজে [সমকক্ষ হওয়ার জন্য] প্রতিযোগিতা করে। তারাই পূণ্যাত্মাদের শ্রেণীভুক্ত।
১১৫। তারা যা কিছু উত্তম কাজ করে তার কিছুই হারিয়ে যাবে না। যারা মুত্তাকী [পূণ্য কাজ করে] আল্লাহ্ তাদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।
১১৬। যারা ঈমানকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের ধনৈশ্বর্য ও [অগণিত] সন্তান-সন্তুতি আল্লাহ্র বিরুদ্ধে কখনও কোন কাজে আসবে না। তারা হবে আগুনের অধিবাসী সেখানেই তারা চিরস্থায়ী হবে।
আসলে আল্লাহই ভালো জানেন।
@মোহাম্মদ রাসেল, আসসালামু আলাইকুম,
এখানে ঐসকল কিতাবীদের কথা বলা হয়েছে যারা একত্ববাদে বিশ্বাসী। আয়াতগুলো ভালো করে দেখুন, ইনশাল্লাহ বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে।
@manwithamission,ভাই আমি আসলে তাই বোঝাতে চেয়েছি।ইহুদী, খ্রিস্টান, মূর্তিপূজারীর মাঝে আল্লাহ’র একত্ববাদে বিশ্বাসী কিছু লোক ও থাকতে পারে।আসলে আল্লাহই ভালো জানেন।