লগইন রেজিস্ট্রেশন

***মুসলিম সমাজে শিয়া বিভ্রান্তিঃ শিয়া, একটি ইসলাম বহির্ভূত, পথভ্রষ্ট দল***

লিখেছেন: ' manwithamission' @ মঙ্গলবার, জুলাই ১৩, ২০১০ (১২:২৫ অপরাহ্ণ)

বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম
আলহামদুলিল্লাহ, ওয়াস্সালাতু ওয়াস্সালামু আনা নাবিয়্যিনা মুহাম্মদ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

ইসলাম একত্ববাদের উপর প্রতিষ্ঠিত, এই একত্ববাদের প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ পৃথিবীতে নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত এবং পূর্ণাঙ্গ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসলামের ব্যাখ্যাকারী। তিনি অতুলনীয়ভাবে আমাদের আল্লাহর একত্ববাদ বুঝিয়ে দিয়েছেন। আরব মুশরিকরা আল্লাহকে চিনতো কিন্তু তারা আল্লাহর একক কর্তৃত্ব মেনে নেয়নি। ইহুদীগণ অভিশপ্ত এবং খ্রিস্টানগণ পথভ্রষ্ট। মূর্তিপূজারীরা বহুত্ববাদের বিশ্বাসী। এরা কেউই আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দেয় নি। আল্লাহর কর্তৃত্ব, আল্লাহর বড়ত্ব, আল্লাহর ক্ষমতা, আল্লাহর গুণাবলী শুধু আল্লাহর জন্যে অন্য কারো জন্যে নয়।

“বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।”
(সূরা ইখলাসঃ ১-৪)

“কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।” (সূরা আশ-শুরাঃ ১১)

শিয়াদের নিয়ে আমাদের মুসলিম ভাইদের অনেকের মাঝেই পরিস্কার কোন ধারণা নেই, অনেকেই শিয়াকে একটা মাযহাব মনে করেন। ইমাম খোমেনীর ধূর্ততাপূর্ণ কূটনীতির কারণে সাধারণ মুসলমানদের অনেকেরই নিকট ইরান, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের একমাত্র দাবীদার হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। আমাদের মুসলিম সমাজে ইরানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্টিত করতে বাংলাদেশের একটি ইসলামী দল (বর্তমানে যারা সংকটকাল অতিক্রম করছে) তাদের মিডিয়া, ভাষণ বক্তব্যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছে। আবার অনেকেই মনে করেন শিয়ারা ‘মুতা’ বিবাহ চর্চা করে, নামাযের সময় হাত ছেড়ে দাড়ায়, আবু বকর সিদ্দীক (রা) ও উমর ইবনুল খাত্তাব (রা), উসমান (রা) আয়েশা (রা) তথা অধিকাংশ সাহাবীদের (রা) তারা অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ সহ কাফির সাব্যস্ত করে প্রভৃতি। কিন্তু এগুলোর কোনটাই ইসলাম থেকে শিয়াদের দূরে সরে যাওয়ার মুখ্য কারণ নয়! মুখ্য কারণ হচ্ছে, তারা তাদের ইমামকে আল্লাহ তাআলার গুণাবলী দিয়েছে। আমাদের যেমন বিশ্বাস স্থাপন করতে হলে আরকানুল ঈমানের উপর ঠিক তেমনি ইমামের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা শিয়াদের ঈমানের প্রথম স্তম্ভ। ইমামদের উপর বিশ্বাস না করলে সে মুসলিমই হবে না (তাদের বই অনুযায়ী)। নিম্নে তিনটি প্রধান করণ তুলে ধরছি ইনশাল্লাহ, এতেই বুঝা যাবে শিয়ারা কেন মুসলিম নয়।

প্রথমত, তারা বিশ্বাস করে,
We believe that, an Imam must be infallible, that is to say incapable of making errors or doing wrong, either inwardly or outwardly, from his birth to his death, either intentionally or unintentionally (Source: The Beliefs of Shia Islam By: Allamah Mohammad Rida al-Muzaffar, One of Shia’s scholar)

এর মানে হচ্ছে, ইমামগণ কোনভাবেই ভুল করতে পারেন না! ইচ্ছা করেও না অনিচ্ছা করেও না! জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তারা নির্ভুল! অর্থাৎ ভুল করার গুণটাই তাদের মধ্যে নেই!
আল্লাহ আকবর, এই গুণ শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যে Incapable of making error, অন্য কারোর জন্যে নয়! কারণ, রাসূল ﷺ বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তান ভুল করে। আর এই আদম সন্তানদের মাঝে শিয়াদের তথা-কথিত ইমামগণও অন্তর্ভূক্ত।

দ্বিতীয়ত,
By this means the Imam is able to understand information about anything, anywhere, and at any time, and he understands by means of this Divinely -given power at once, without recourse to methodological reasoning or guidance from a teacher. When he desires to know about some matter, it is reflected in his pure mind as if in a polished mirror. (Source: The Beliefs of Shia Islam By: Allamah Mohammad Rida al-Muzaffar, One of Shia’s scholar)
ইমামগণ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সম্পর্কে যে কোন জায়গা থেকে যে কোন মুহুর্তে সবকিছুই জানেন অর্থাৎ তাদের কাছে কোন কিছুই গোপন থাকে না। এখানে বলা হয়েছে, তারা এটা ঐশ্বরিকভাবে প্রাপ্ত হয়! যেভাবেই তারা বলে থাকুক না কেন, সবকিছু সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর “And Allah is the all knower of each and everything অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সবকিছু জানেন” (সূরা বাকারাঃ ২৮২)। সবকিছু সম্পর্কে জানা এই গুণটি শুধুমাত্র আল্লাহর, কারণ, “কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।” (সূরা আশ-শুরাঃ ১১)

ভবিষ্যতের জ্ঞান জানার দাবীর মাধ্যমে গায়েব সম্পর্কিত জ্ঞানের অধিকারী – এই দাবীও জানানো হচ্ছে। কিন্তু গায়েবের জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহর নিকট রয়েছে আর কারো নিকট নেই।
“গায়েবের চাবিগুলো সব তাঁর হাতেই নিবদ্ধ রয়েছে সে-ই (অদৃশ্য) খবর তো তিনি ছাড়া আর কারোই জানা নেই; জলে-স্থলে (যেখানে) যা কিছু আছে তা শধু তিনি ই জানেন”। (সূরা আনআমঃ ৫৯)

“(হে নবী) তুমি বলো, আল্লাহ তাআলা ছাড়া আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু আছে, এদের কেউই অদৃশ্য জগতের কিছু জানে না”। (সূরা নামলঃ ৬৫)

তৃতীয়ত, ইমাম খোমেনীর নিজের লেখা বই – আল হুকুমাতুল ইসলামিয়া থেকে নীচের অংশগুলো তুলে ধরা হলো।
“The Imam enjoys such power over the law of cause and effect, and place of worthiness and position of eminence that every particle of the universe bows before his power and authority and obeys his commands.” (Source: Al-Hukumat-ul-Islamia by Imam Khomeini, Page: 52)
ইমামের এতই যোগ্যতা আর ক্ষমতা রয়েছে যে, এই বিশ্বের সকল কিছু ইমামের নিকট সিজদা করে এবং তার আদেশ মান্য করে! আল্লাহ আকবর! এই সিজদা পাওয়া অধিকার একমাত্র আল্লাহর। আবার বলা হয়েছে এই বিশ্বের সকল কিছু ইমামের কথা মেনে চলে!
আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “তুমি কি এই বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য করনি, যতো (সৃষ্টি) আসমানসমূহে আছে, যতো আছে যমীনে- সবকিছুই আল্লাহ তাআলাকে সিজদা করছে, সিজদা করছে সূর্য চন্দ্র , তারকারাজি, পর্বতসমূহ, বৃক্ষলতা, যমীনের উপর বিচরণশীল সব জীবজন্ত, (সর্বপরি) মানুষদের মধ্যেও অনেকে”। (সূরা হাজ্জ্বঃ ১৮)

“যা কিছু আছে আসমানসমূহে এবং এ যমীনে বিচরণশীল যা কিছু আছে, আছে যতো ফেরেশতাকুল, তারা সবাই আল্লাহকে সিজদা করে যাচ্ছে, এদেও কেউই (নিজেদের) বড়াই (যাহির) করে না। (উপরন্তু) তারা ভয় করে তাদের মালিককে, যিনি (তাদের উপর) পরাক্রমশালী, তাঁর পক্ষ থেকে তাদের যা আদেশ করা হয় তা তারা (বিনীতভাবে) পালন করে”। (সূরা নাহলঃ ৪৯-৫০)

আল্লাহ তাআলার কর্তৃত্ব, তাঁর শাসনক্ষমতা শুধু আল্লাহর জন্যেই আর কারো জন্যে নয়। কাজেই কেউ যদি বলে এবং বিশ্বাস করে ইমামেরও যোগ্যতা রয়েছে মহাবিশ্বের সবকিছুর সিজদা পাওয়ার এবং মহাবিশ্বের সবকিছু ইমামের কথামতো চলে তাহলে সে ব্যক্তি যতই নামায পড়–ক, রোযা রাখুক, শত খানেক হজ্জ্ব করুক সে মুসলিম নয়! “কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।” (সূরা আশ-শুরাঃ ১১)

“Among the essential and fundamental beliefs of our religion (Shia Isna Ashariyya) is the belief that our Innocent Imams hold the station which could not be reached by any favourite Angel, Prophet or Messenger” (Source: Al-Hukumat-ul-Islamia by Imam Khomeini, Page: 52)
ইমামদের মর্যাদা ফেরেশতা, নবী-রাসূলদের চেয়েও উপরে! যে স্তরে কোন ফেরেশতা, নবী-রাসূল পৌছাতে পারেন না! সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট কথা, এমন কোন কথা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেননি। ফেরেশতাদের প্রতি, নবী-রাসূলদের উপর ঈমান আনা আরকানুল ঈমানের অঙ্গ। কাজেই ফেরেশতা এবং নবী-রাসূলদের চেয়ে বেশী মর্যাদাশালী করে ইমামের উপর বিশ্বাস স্থাপন করাকে ঈমান আনয়নের প্রথম স্তর বানানো কোরআন এবং হাদীসের উপর মিথ্যা আনয়ন করা ছাড়া আর কিছু নয়। আর এই মিথ্যা শয়তানী কথা বলেই তারা ইমামকে ফেরেশতা এবং নবী-রাসূলদের চেয়েও মর্যাদাশালী বানিয়েছে।

“The teachings of our Imams are like the teachings of the Quran. They are not meant for any particular section of the people or era. They are universal and eternal in character and meant for all people and for all times. To obey them is obligatory till the Doomsday” (Source: Al-Hukumat-ul-Islamia by Imam Khomeini, Page: 113)
ইমামদের শিক্ষা কোরআনের শিক্ষার মতো। ইমামগণ যাই বলুক ইমামদের কথা কিয়ামত পর্যন্ত মেনে চলতে হবে। এখানে ইমামের কথাকে আল্লাহর কালাম তথা কুরআনের সমান মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। একমাত্র কোরআনের শিক্ষাই কিয়ামত পর্যন্ত চলবে কারণ, কোরআন আল্লাহর কালাম! আর আল্লাহর কালামের সাথে আর কোন কিছুরই তুলনা হয় না। কোরআন পূর্ণাঙ্গ আল্লাহর কালাম, কোরআনের সমতূল্য আর কোন কিতাব নেই, কোরআন রদ-বদল করারও কেউ নেই।
“ন্যায় ও ইনসাফের (এর আলোকে) তোমার মালিকের কথাগুলো পরিপূর্ণ হয়ে গেছে এবং তাঁর কথা পরিবর্তন করার কেউ নেই, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”। (সূরা আনআমঃ ১১৫)

“(হে নবী) তোমার উপর তোমার মালিকের যে কিতাব নাযিল করা হয়েছে তা তুমি তিলাওয়াত করতে থাক, তাঁর (কিতাবে বর্ণিত) কথাবার্তা রদবদল করার কেউ নেই, তিনি ছাড়া তুমি আর কোনই আশ্রয়স্থল পাবে না”। (সূরা কাহফঃ ২৭)

কোরআন সংরক্ষিত এবং সুরক্ষিত আর এই সংরক্ষণ ও সুরক্ষার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহর।
“আমিই উপদেশ (সম্বলিত কোরআন) নাযিল করেছি এবং আমিই তার সংরক্ষণকারী”। (সূরা হিজরঃ ৯)

“এতে বাতিল কিছু (অনুপ্রবেশের আশংকা) নেই- তার সামনের দিক থেকেও নয়, তার পেছরে দিক থেকেও নয়, (কেননা) এটা বিজ্ঞা, কুশলী, প্রশংশিত সত্তার কাছ থেকে নাযিল করা হয়েছে”। (সূরা হা-মীম আস সাজদাঃ ৪২)

আল্লাহর একত্ববাদের সাথে কারো অংশীদারী নেই, কোরআনে বর্ণিত এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আমরা আল্লাহ তাআলার যতগুণ জানতে পেরেছি তা শুধুমাত্র, একমাত্র এবং কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যেই প্রযোজ্য আর কারো জন্যে প্রযোজ্য নয়। কেউ যদি বিশ্বাস করে আল্লাহর কোন একটা গুণাবলী কোন মানুষের মধ্যে রয়েছে তাহলে সে আর মুসলিম থাকবে না। কারণ, “কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।” (সূরা আশ-শুরাঃ ১১)

আমাদের পূর্ববর্তী জাতিগুলো পথভ্রষ্ট হয়েছে নবী-রাসূলদের শিক্ষা থেকে দূরে সরে গিয়ে আল্লাহর একত্ববাদকে অস্বীকার করে অন্য কোন প্রাণী বা বস্তুকে আল্লাহর গুণাবলীর যোগ্যতা দান করার মাধ্যমে অথবা প্রাণী বা বস্তুর গুণাবলী আল্লাহকে দেওয়ার মাধ্যমে। মানব জাতির ইতিহাসে সর্বপ্রথম শির্ক শুরু হয় নূহ (আ) এর সময় হতে, সে জাতির লোকগুলো শয়তানের প্ররোচনায় তাদের পূর্ববর্তী সৎলোকদের মূর্তি বানাতো আর তাদের পরবর্তী প্রজন্ম শয়তারে প্ররোচনায় সেই মূর্তিগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করতো।
“তারা বলে, তোমরা তোমাদের (সেসব) দেবতাদের কোন অবস্থায়ই পরিত্যাগ করো না- ‘ওয়াদ’ ‘সূয়া’ (নামক দেবতাদের) উপাসনা কিছুতেই ছেড়ে দিয়ো না, ‘ইয়াগুস’ ‘ইয়াউক’ ও ‘নাছর’ নামের দেব দেবীকেও (ছাড়বে) না”। (সূরা নূহঃ ২৩)
এই আয়াতের তাফসীরে বিখ্যাত তাফসীর কারক, বিখ্যাত সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, নূহ (আ) এর সম্প্রদায়ের কতিপয় নেক লোকের নাম ‘নাছর’ ছিল। তারা মারা গেলে, শয়তান তাদের কওমের লোকদের অন্তরে এ কথা) ঢেলে দিল যে. তারা যেখানে বসে মজলিশ করতো, সেখানে তোমরা কতিপয় মূর্তি স্থাপন কর এবং ঐ সমস্ত পূণ্যবান লোকের নামানুসারেই এগুলোর নামকরণ কর। সুতরাং তারা তাই করলো, কিন্তু তখনও ঐ সব মূর্তির পূজা করা হতো না। তবে মূর্তি স্থাপনকারী লোকগুলো মারা গেলে এবং মূর্তিগুলো সম্পর্কে সত্যিকারের জ্ঞান বিলুপ্ত হলে লোকজন তাদের পূজা করতে শুরু করে দেয়। (সহীহ বুখারী, তাফসীর অধ্যায়)

ইহুদীদের রাবাই আর খ্রিস্টানদের যাজকগণ আল্লাহর আইনকে পরিবর্তন করে তাগুতের অনুসরণ করতো। আল্লাহর একত্ববাদের পথকে বিকৃত করে মানুষদের ভুলপথে পরিচালিত করতো আর বর্তমানেও করে যাচ্ছে।

“এ লোকেরা (ইহুদী ও খ্রিস্টনাগণ) আল্লাহ তাআলাকে বাদ দিয়ে তাদের আলেম, তাদের পীর-দরবেশদের মাবুদ বানিয়ে নিয়েছে এবং মারইয়াম পুত্র মসীহকেও, অথচ এদের এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোই বন্দেগী করতে আদেশ দেয়া হয়নি, তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই; তারা যাদের আল্লাহর সাথে শরীক করে, তিনি এসব (কথাবার্তা) থেকে অনেক পবিত্র”। (সূরা তওবাঃ ৩১)
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন এই আয়াত তিলাওয়াত করছিলেন তখন আদি ইবনে হাতিম জিজ্ঞেস করলেন, ওহে আল্লাহর রাসূল! তারা(ইহুদী ও খ্রিস্টানগণ) তো তাদের(রাবাই ও যাযকদের) উপাসনা করতো না। আল্লাহর রাসূল বললেন: তারা অবশ্যই তাদের উপাসনা করতো। তারা (রাবাই ও যাযকগণ) হালালকে হারাম বানাতো এবং হারামকে হালাল বানাতো আর ইহুদী ও খ্রিস্টানগণ তাদের অনুসরণ করতো। এই অনুসরণ করার মাধ্যমেই তারা তাদের উপাসনা করতো। (আহমদ, তিরমিযী, ইবনে যারীর)

“হে ঈমানদার লোকেরা, (আহলে কিতাবদের) বহু পন্ডিত (রাবাই) ও ফকির-দরবেশ(যাজক) এমন আছে, যারা অন্যায়ভাবে সাধারণ মানুষের সম্পদ ভোগ করে, এরা (আল্লাহর বান্দাদের) আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়েও রাখে”। (সূরা তাওবাঃ ৩৪)

কাজেই পূর্ববর্তী জাতিগুলো যেভাবে আল্লাহর একত্ববাদকে অস্বীকার করে, আল্লাহ প্রদত্ত বিধানকে পরিবর্তন করে অভিশপ্ত, পথভ্রষ্ট হয়ে সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ থেকে সরে গেছে ঠিক একইভাবে পরবর্তীতেও যারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে তারাও ইসলাম থেকে সরে যাবে যদিও তারা দাবী করবে তারা ইসলামের অনুসারী। আর ঠিক এভাবে ইহুদী, খ্রিস্টানগণও দাবী করে তারা আল্লাহর উপাসনা করে। কিন্তু তারা যা করে, যা বলে সেগুলো সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা কোন কিছু নাযিল করেন নি। শিয়াগণও পূর্ববর্তী অভিশপ্ত, পথভ্রষ্ট জাতিদের অনুসারী। ইহুদী-খ্রিস্টানদের রাবাই-যাজকগণ যেভাবে যা বলতো তার অনুসরণ করতো তাদের অনুসারীরা আর ঠিক একইভাবে শিয়াদের তথাকথিত ইমামগণ যা বলে তাই অনুসরণ করে। আল্লাহর গুণাবলী তারা তাদের ইমামকে দিয়েছে। যার কারণেই তারা সত্য পথ তথা ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। তারা ইসলাম বহির্ভূত একটি দল।

ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহর একটি উদৃতি দ্বারা আমার লেখাটি শেষ করব।

শিয়াদের চক্রান্ত সম্পর্কে ইমাম ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমরা আহলুস্সুন্নাহ ও শিয়া রাফেদী উভয় দলের কাজের ফলাফল প্রত্যক্ষ করেছি এবং এই ফলাফলই প্রমাণ করে উভয় দলের মধ্যে কারা সত্যপন্থী। আমরা দেখেছি, আল্লাহর রাসূলের সাহাবাগণ কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে অনেক দেশ জয় করেছেন এবং অমুসলিম দেশগুলো ইসলামী দেশে পরিণত করেছেন। তারা আল কুরআনের জ্ঞান ও হিদায়াতের মশাল জেলে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন, তাদের এ সমস্ত কাজের ফলাফল প্রমাণ করে যে, তারাই ছিলেন সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত। অপরদিকে সর্বযুগে সব জায়গাতে শিয়া রাফেদীদেরকে দেখেছি এর সম্পূর্ণ উল্টো। আমরা দেখেছি, যখনই মুসলিমদের বিরুদ্ধে কোন শত্রু অস্ত্রধারণ করেছে শিয়া রাফেদীরা তাদের সহযোগী হয়ে ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এর ফলে তারা অনেক বিপদ টেনে এনেছে ইসলাম ও মুসলিমদের উপর। এদের কারণেই তো মূর্তি পূজারি মুশরিক, হালাকু খাঁ ও তার সৈন্যদের তলোয়ারের আঘাতের বিপর্যয় নেমে এসেছিল উম্মার উপর। তখন মসজিদ সমূহ ধ্বংস করা হয়েছে, কুরআন পোড়ানো হয়েছে, আলিমদেরকে, দ্বীনদার সাধারণ মুসলিমদেরকে, বিশেষ করে মুসলিম খলিফাদেরকে হত্যা করা হয়েছে একমাত্র এদের ষড়যন্ত্রের ফলেই, সর্বসাধারণের নিকট এ বিষয়গুলো সুস্পষ্ট। (মাদারিজুস সালেকীন বাইনা মানাযিল ইয়াকা না’বুদু ওয়া ইয়া’কা নাসতায়ীন, ইবনুল কায়্যিম, প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা ৭১। বৈরুত দারুল কিতাবুল আরাবী। প্রকাশকাল ১৩৯৩ হিজরী)

আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করি, তিনি যেন আমাদের সত্য বোঝার তৌফিক দান করেন, সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং শয়তানের চক্রান্তে যেন আমরা সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে না যাই। আমীন।

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
২,৫৪৬ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)

১৭ টি মন্তব্য

  1. (F)

    manwithamission

    @মুসলিম৫৫, আসসালামু আলাইকুম ভাই, আপনি কেমন আছেন?

  2. আমি ব্যক্তি জীবনে প্রথমত শিয়াদের ব্যাপারে এমনসব আপত্তিগুলো দেওবন্দী ঘরণা ওলামায়ে কেরামের লেখাতে পেতাম, ক্ষেত্রবিশেষ তারা এসব বিতর্কিত আকায়েদ পোষণকারী উপমহাদেশের স্থানীয় এজেন্টদেরও কড়া ভাষায় সমালোচনা করতেন তাই অনেক ক্ষেত্রে এসবকে একপেশে ভাবতাম।
    বাস্তব জীবনে কাগুজে জ্ঞানের বাইরেও অনেক শিয়া ব্যাক্তির সাথে চলাফেরার সুযোগ ঘটেছে, তাদের বিশ্বাস ও বক্তব্য অবাধে বর্ননা করার সুযোগ থেকেই তাদের ব্যাপারে যা জেনেছি তাতে ওলামাদের লেখা অনেক কিছু সংকলণ করেনি তা ষ্পষ্টই বুঝি।
    শিয়াদের বিশাল জনগোষ্ঠীর আজানে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসুলুল্লাহ এর পরিবর্তে অন্য কিছু পড়া হয়, লিভটুগেদার, তাকিয়্যা সহ আরো কতো শতো অন্যায়কে সে সমাজে সুন্নাহ ও হাদিস দিয়ে হালাল সাবেত করা হয় তা অনুধাবন করতে ইরান বা উপমহাদেশের শিয়া পল্লিগুলোতো কয়েকদিন কাটানোই যথেষ্ট হবে।

    manwithamission

    @বাংলা মৌলভী, আসসালামু আলাইকুম, পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।

  3. সুবহানাল্লাহ, সময়োপযোগী লেখা। শিয়াদের শিরক ফি তাওহিদ আর রুবুবিয়াহ যদিও প্রধান একটি কারণ তাদের ইসলাম ভঙ্গের ব্যাপারে তারপরেও সাহাবা, বিশেষত যাদের স্বয়ং আল্লাহ তার রাসুলের মাধ্যমে জান্নাতি হিসেবে জানিয়ে গেছেন, তাদেরকে কাফির প্রতিপন্ন করা ও গালমন্দ করা অবশ্যই ক্বুরানের আয়াত এবং অনেক হাদিসকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার সামিল।

    manwithamission

    @আবু আনাস, জ্বী ভাই, চমৎকার বলেছেন।

  4. শিয়াদের একটা গ্রুপকে নকল ক্বাবা সামনে রেখে নামাজ পড়তে দেখা যায়। যা শিরক বই কিছু নয়।

    manwithamission

    @হাসান আল বান্না, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী শিরক সংঘঠিত হয় ইরানে!

  5. আস সালামু আলাইকুম
    আশাকরি আপনারা কোন কিছু যাচাই বাছাই না করে সিদ্ধান্ত নিবেন না। কারণ, একটুখানি ভুলের কারণে কাউকে অপবাদ দিলে সে ব্যক্তির তো কোন পাপই হবে না বরং আপনার পাপের বোঝা হবে অত্যন্ত ভারী। তাই কাউকে কাফের বলার আগে তাদের সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নেওয়া দরকার। তারপর যদি প্রকৃতই তার আকিদায় সমস্যা থাকে তাহলে তাকে কাফের বা অন্য কিছু বলতে পারেন।

    manwithamission

    @shiamusalman, আল্লাহ তাআলার গুণের সাথে ইমামগণের তুলনা করা, বেশীরভাগ সাহাবীকে কাফির সাব্যস্ত করা, কুরআন ঠিক মতো সংগৃহীত হয়নি মনে করা মোটেও “এটকুখানি” ভুল নয়, চোখ খুলে বুঝতে চেষ্টা করুন। আল্লাহ তাআলা আমাদের হক বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।

  6. এর মানে হচ্ছে, ইমামগণ কোনভাবেই ভুল করতে পারেন না! ইচ্ছা করেও না অনিচ্ছা করেও না! জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তারা নির্ভুল! অর্থাৎ ভুল করার গুণটাই তাদের মধ্যে নেই!
    আল্লাহ আকবর, এই গুণ শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যে Incapable of making error, অন্য কারোর জন্যে নয়! কারণ, রাসূল ﷺ বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তান ভুল করে। আর এই আদম সন্তানদের মাঝে শিয়াদের তথা-কথিত ইমামগণও অন্তর্ভূক্ত।

    উক্ত কথা থেকে বুঝা যায় যে, এই লেখকের বিশ্বাস হচ্ছে রাসূল (সা) যেহেতু আদম সন্তান তাই তিনিও ভূল করতে পারেন। অথচ দেখেন শিয়ারা কখনো এ ধরনের বিশ্বাসকে প্রশ্রয় দেয় না।

    manwithamission

    @shiamusalman, //এই লেখকের বিশ্বাস হচ্ছে রাসূল (সা) যেহেতু আদম সন্তান তাই তিনিও ভূল করতে পারেন//
    রাসূল ﷺ অবশ্যই আদম সন্তান এবং প্রত্যেক আদম সন্তান ভুল করে। তবে নবী-রাসূলদের ভুল আমাদের ভুলের মতো না। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ভুলের মধ্যে পতিত থাকতে দেন না। আল্লাহ তাদের সকল ভুল সংশোধন করে ক্ষমা করে দিয়েছেন আর তাদের এই ভুল গুলো উম্মতের জন্যে রহমত স্বরুপ।

    একদিন রাসূল ﷺ কুরাইশদের বড় বড় নেতাদের ইসলাম সম্পর্কে বলছিলেন এবং তিনি আশা করছিলেন যে এতে করে তারা ইসলাম গ্রহণ করবে। যখন তিনি কুরাইশ নেতাদের সাথে কথা বলছিলেন, তখন ইবনে উম্মে মাকতুম (রা) রাসূল ﷺ এর নিকট আসল। ইবনে উম্মে মাকতুম (রা) শুরুর দিকের ইসলাম গ্রহণকারী। রাসূল ﷺ নিটক আশার পর পরই তিনি আল্লাহর রাসূলকে কোন একটা বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আর তিনি তার প্রশ্নের উত্তর জানার ক্ষেত্রে উদগ্রীব ছিলেন। রাসূল ﷺ আশা করেছিলেন যে কুরাইশগণ ইসলাম গ্রহণ করবে তাই তিনি ইবনে উম্মে মাকতুম (রা) অপেক্ষা করতে বলে ভ্রুকুটি করে মুখ ঘুরিয়ে কুরাইশ নেতাদের প্রতি মনোনিবেশ করলেন। যার পরেই আল্লাহ তাআলা নাযিল করলেন-

    তিনি ভ্রূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
    কারণ, তাঁর কাছে এক অন্ধ আগমন করল।
    আপনি কি জানেন, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হত,
    অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকার হত।
    পরন্তু যে বেপরোয়া,
    আপনি তার চিন্তায় মশগুল।
    সে শুদ্ধ না হলে আপনার কোন দোষ নেই।
    যে আপনার কাছে দৌড়ে আসলো
    এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে,
    আপনি তাকে অবজ্ঞা করলেন।
    কখনও এরূপ করবেন না, এটা উপদেশবানী।
    অতএব, যে ইচ্ছা করবে, সে একে গ্রহণ করবে।
    (সূরা আবাসা: ০১-১২)

    //আপনি তাকে অবজ্ঞা করলেন।
    কখনও এরূপ করবেন না, এটা উপদেশবানী// রাসূল ﷺ এর ভ্রুকুটি করে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া আল্লাহর নিকট পছন্দ হয়নি তাই আল্লাহ তাআলা তাকে এরুপ করতে নিষেধ করে দিলেন। রাসূল ﷺ যে ভুল হয়েছিল সেটা আল্লাহ তাআলা সংশোধন করে দিয়েছেন। আর এই শিক্ষা এই উম্মতের জন্যে কিয়ামত পর্যন্ত শিক্ষণীয়।

    ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদরে ৭০ জন যুদ্ধ বন্দী মুসলমানদের হস্তগত হয়। এই বন্দীদের নিয়ে কি করা যায় তা নিয়ে রাসূল ﷺ আবূ বকর (রা), উমর (রা), আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা) পরামর্শ করেছিলেন। আবু বকর (রা) রক্তপণ নিয়ে মুক্তি দেওয়ার কথা বলেন, উমর (রা) সবাইকে হত্যা করার কথা বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা) মাটি খনন করে তাতে কাঠ রেখে আগুণ ধরিয়ে সবাইকে পুড়িয়ে ফেলতে বলেন। রাসূল ﷺ আবু বকর (রা) এর মতামত গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে উমর (রা) রাসূল ﷺ এর নিকট এসে দেখলেন, রাসূল ﷺ এবং আবু বকর (রা) কাঁদছেন। উমর (রা) জিজ্ঞাসা করলেন, ওহে আল্লাহর রাসূল ﷺ আপনাদের কান্নার কারণ কি? আমাকে বলুন, যদি এটা আমাকে কাঁদায় আমিও কাঁদব আর না কাঁদালেও জোর করে আমি কাঁদব। আল্লাহর রাসূল ﷺ বললেন, আল্লাহ তাআলা আমাদের রক্তপণ নেওয়ার কারণে আযাবের কথা বলেছেন এরপর তিনি নিন্মোক্ত আয়াত দুটি পাঠ করেন।
    নবীর পক্ষে উচিত নয় বন্দীদিগকে নিজের কাছে রাখা, যতক্ষণ না দেশময় প্রচুর রক্তপাত ঘটাবে। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর, অথচ আল্লাহ চান আখেরাত। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা। যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেন, তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত। (সূরা আনফালঃ ৬৭-৬৮)
    আল্লাহ তাআলা নিজেই বলেছেন – যদি একটি বিষয় না হত যা পূর্ব থেকেই আল্লাহ লিখে রেখেছেন, তাহলে তোমরা যা গ্রহণ করছ সেজন্য বিরাট আযাব এসে পৌছাত অর্থাৎ পূর্বেই গণীমতের মাল এই উম্মতের জন্যে বৈধ করে দেওয়া হয়েছে, যদি তা হতো তাহলে আযাব এসে যেত। আল্লাহ তাআলা তাদের এই ভুল ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং উম্মতের জন্যে ঘটনাটিকে শিক্ষণীয় করেছেন।

    মুনফিকদের সর্দার আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই যখন মারা যান তখন রাসূল ﷺ তার জানাযা পড়েছিলেন, তার কবরের নিকট দাড়িয়ে তার নাযাতের জন্যে দোয়া করেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা নিন্মোক্ত আয়াতটি নাযিল করেন-
    আর তাদের মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনও নামায পড়বেন না এবং তার কবরে দাঁড়াবেন না। তারা তো আল্লাহর প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছে এবং রসূলের প্রতিও। বস্তুতঃ তারা না ফরমান অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে। (সূরা তওবাঃ ৮৪)

    কাজেই ইমামদের রাসূল ﷺ এর সাথে তুলনা করার কোন কারণই নেই। নবী-রাসূলগণ মাছুম। ইমামদেরও মাছুম মনে করার কোন কারণ নেই। কারণ, নবী-রাসূলদের যে মর্যাদা সেই মর্যাদায় কোন মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

  7. জরুরী লেখা। শিয়াদের সমপর্কে মারাত্বক খরাপ ধারণা পেলাম। আগে জানতাম যে তারা শূধু হযরত আলী (রাঃ) কে নবীজী (সাঃ) উপর প্রধান্য দিত। এখন দেখছি শিয়ারা মুসলিমদের কাছ থেকে মোশরেকের চেয়ে ও দূরে এবং আল্লাহর চরম শক্রু।

    shiamusalman

    @মুজিব৭, খুব ভাল বুঝেছেন। বিনা হিসাবে জান্নাত।

    manwithamission

    @মুজিব৭, “এখন দেখছি শিয়ারা মুসলিমদের কাছ থেকে মোশরেকের চেয়ে ও দূরে এবং আল্লাহর চরম শক্রু।” – সহমত।

  8. ইমামগণ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সম্পর্কে যে কোন জায়গা থেকে যে কোন মুহুর্তে সবকিছুই জানেন অর্থাৎ তাদের কাছে কোন কিছুই গোপন থাকে না। এখানে বলা হয়েছে, তারা এটা ঐশ্বরিকভাবে প্রাপ্ত হয়! যেভাবেই তারা বলে থাকুক না কেন, সবকিছু সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর “And Allah is the all knower of each and everything অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সবকিছু জানেন” (সূরা বাকারাঃ ২৮২)। সবকিছু সম্পর্কে জানা এই গুণটি শুধুমাত্র আল্লাহর, কারণ, “কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।” (সূরা আশ-শুরাঃ ১১)

    যদিও জানি না আমাদের লেখক ভাই কতখানি কোরআন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। তবে তার জানা উচিত যে কোরআনে এ কথা বলা হচ্ছে সে কোরআনেই আবার বলা হচ্ছে যে, তিনি আল্লাহ যাকে ঐ জ্ঞান দান করবেন সেও ঐ জ্ঞানের অধিকারী হবেন। কারণ, আমরা দেখেছি যে, রাসূল (সা) কারবালা, ইয়াজিদ, শেষ জামানা, শেষ ইমাম মাহদী ও অন্যান্য বিষয়াদি সম্পর্কে অনেকগুলো ভবিষ্যত বাণী করেছেন। এ ক্ষেত্রে আমার লেখক ভাই কি মন্তব্য করবেন! এক্ষেত্রেও কি তিনি বলবেন ‍”সবকিছু সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর”।?

  9. @shiamusalman, সবকিছু সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর। আল্লাহ তাআলা ঠিক ততটুকুই রাসূল ﷺ এর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন যতটুকু আমাদের জন্যে কল্যাণকর। রাসূল ﷺ নিজে থেকে ভবিষ্যত সম্পর্কে কোন কিছু বলতে পারতেন না। ঠিক ততটুকুই বলতে পারতেন যতটুকু আল্লাহ তাআলা তাকে জানিয়ে দিতেন।
    আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। (সূরা আরাফঃ ১৮৮)

    এখন যদি বলা হয়, ইমামগণ বা অন্যকেউ ভবিষ্যত সম্পর্কে অনেক কিছু জানে তাহলে তা মিথ্যা দাবী করা হবে। কারণ, ইমামগণ দাবী করেছেন, তারা কোন কিছু সম্পর্কে কোন কিছু জানতে চাইলে তা তাদের নিকট পরিস্কার আয়ানার মত হাজির হয়, তাহলে তো বলা যায়, তাদেরকে ভবিষ্যত জানানোর জন্যে আল্রাহ তাআলা বাধ্য (নাউযুবিল্লাহ)। কারণ, তারা যখন জানতে চায়, যেখান থেকে জানতে চায় তখনই জানতে পারে। অথচ এইভাবে রাসূল ﷺ নিজেও জানতে পারতেন না। রাসূল ﷺ ঠিক ততটুকুই জানতে পারতেন যতটুকু আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করতেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের হক বুঝার সুমতি দান করুন। আমীন।