যে কোন মূল্যে দেশের কওমী মাদরাসাসমূহ সংরক্ষণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থাকতে হবে :মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান
লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ সোমবার, জুলাই ১১, ২০১১ (৭:৩৭ অপরাহ্ণ)
মজলিসে দাওয়াতুল হক- এর আমীর মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান বলেছেন,পবিত্র কুরআন হলো সর্বশ্রেষ্ঠ ও সবচেয়ে অধিক মর্যাদাসম্পন্ন আসমানী কিতাব, যার পুরোটাই আল্লাহ জাল্লাশানুহু এর পবিত্র কালাম। আর এর পরেই এ উম্মতের জন্য সবচাইতে বিশুদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ কিতাব হলো বুখারী শরীফ। যার পুরোটাই সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী।
বুযুর্গানে দ্বীনের অভিজ্ঞতা থেকে একথা প্রমাণিত যে, বুখারী শরীফ খতম করার পর যে কোন দু’আ করা হোক আল্লাহ পাক তা কবূল করেন। শুধু তাই নয়, বুখারী শরীফের খতমের উসীলায় আল্লাহপাক দেশ জাতি ও রাষ্ট্রের হেফাযত করে থাকেন, দুশমনের হাত থেকে রক্ষা করে থাকেন, দুশমনকে পরাজিত ও পরাভূত করে থাকেন। ইতিহাসের পাতায় তার অগণিত দৃষ্টান্ত বিদ্যমান রয়েছে। সে মতে আজকে ঝঞ্ঝাবিধ্বস্ত বাংলাদেশে বুখারী শরীফের খতম হওয়া প্রয়োজন অনেক বেশি। বাংলাদেশ সরকার যদি খতমে বুখারীর গুরুত্ব অনুধাবন করতো তাহলে এটা কেবল দেশের বিভিন্ন মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হতো না বরং এ খতমে বুখারী অনুষ্ঠিত হতো বাংলাদেশের পার্লামেন্ট হাউজে, সচিবালয়ে ও বঙ্গভবনে। সরকার এর গুরুত্ব অনুধাবন না করলেও এদেশের আলেম-উলামারা অনুধাবন করেছেন এবং এদেশের ধর্মপ্রাণ জনসাধারণ খতমে বুখারীর মাহফিলে শরীক হচ্ছেন।
আমি আপনাদের সামনে পরিষ্কার ভাষায় বলছি, খুব ভাল করে শুনে রাখুন যে, বুখারী শরীফের এক একটি হাদীসের এত মূল্য যে, এর একটি হাদীস সারা পৃথিবী-জোড়া সম্পদের চাইতেও দামী। তাই যারা বুখারী শরীফের ছাত্র হতে পারে তাদের ভাগ্য অত্যন্ত সৌভাগ্যশালী। তারা গরীব নয় বরং তারা অনেক মূল্যবান সম্পদের মালিক।
আজ আপনারা যারা খতমে বুখারীর দরসে উপস্থিত হয়েছেন আপনারাও সৌভাগ্যশালী, এ মূল্যবান গ্রন্থের ছাত্ররাও মূল্যবান হয়ে থাকে বিধায় তাদেরকে নিজ নিজ সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে চলতে হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বেয়াদবী হয়, রাসূলে পাকের মনে কষ্ট হতে পারে, এমন কোন কাজ বা কোন কথা বলা বা করা উচিত নয়।
তিনি আরো বলেন, দ্বীনী মাহফিলের ফায়দা হলো, এর দ্বারা মানুষ ইসলামকে বুঝতে পারে, দ্বীন বুঝার সুযোগ লাভ ধরে। অনেক এমন মাহফিলেও আমি বয়ান করেছি যেখানে দ্বীন ও শরীয়তের পরিচয় তুলে ধরার কারণে অনেক বিধর্মী মাহফিলের শেষে আমার কাছে এসে আমার হাতে ইসলাম কবূল করেছে।
মনে রাখতে হবে, যারা অমুসলিম তারাও কিন্তু আল্লাহপাকের বান্দা এবং তারাও জনাব রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত। আর আল্লাহপাকের বান্দা আর রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মতের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। তাই অমুসলিমদের প্রতি সদয় হতে হবে, তাদের প্রতি অনুরাগ-অনুকম্পা প্রদর্শন করতে হবে। তাদের প্রতি সদয় হওয়ার একটি অন্যতম দিক হলো, যাতে তারা হেদায়েতের পথে আসতে পারে ইসলামের কাফেলায় শরীক হতে পারে তার ব্যবস্থা করবে।
দ্বীন শুধু পালন করলে চলবে না বরং এ দ্বীনের যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রসারে সচেষ্ট থাকতে হবে। এ দ্বীনকে পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য হযরত সাহাবয়ে কেরাম রা.-এর ন্যয় প্রাণপনে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। দ্বীন হেফাযতের এ মহৎ কাজটি সম্পন্ন করতে সর্বপ্রথম দ্বীনের ইলমকে হিফাযত করতে হবে। এ কাজটি যথার্থভাবে আঞ্জাম দিচ্ছে এদেশের হাজার হাজার কওমী মাদরাসা। দ্বীনের হিফাযতের জন্যই দেশের কওমী মাদরাসাসমূহ হিফাযত করা দরকার।
তাই যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন মূল্যে দেশের কওমী মাদরাসাসমূহ সংরক্ষণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থাকতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পূরণে এগিয়ে আসতে হবে এবং এ পবিত্র প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে সব রকম ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত সংঘবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি সম্প্রতি বিভিন্ন মাদরাসার
খতমে কুরআন ও খতমে বুখারী উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে এসব কথা বলেন।মাহফিল গুলো হচ্ছে,
০৪/০৬/১১ইং শনিবার কুষ্টিয়া আল্লাহর দরগা মাদরাসা,
২০/০৬/১১ ইং রোজ সোমবার, দারুর রাশাদ, মিরপুর , ঢাকা।
২১/০৬/১১ ইং রোজ মঙ্গলবার, আহমদজান মদীনাতুল উলূম হুসাইনিয়া, মাসুমপুর, সিরাজগঞ্জ।
২২/০৬/১১ রোজ বুধবার জামিয়াতুস সুন্নাহ, বিবাড়ীয়া।
২৪/০৬/১১ ইং রোজ শুক্রবার বাড্ডা মিফতাহুল উলূম মাদরাসা, ঢাকা।
২৫/০৬/১১ ইং রোজ শনিবার, মাদরাসা দারুল উলূম কাপাসিয়া , লতিফপুর মাদ রাসা গাজীপুর এবং দারুল উলূম দত্তপাড়া, নরসিংদী।
২৮/৬/১১ ইং রোজ মঙ্গলবার তাতীবাজার ইসলামিয়া মাদরাসা ঢাকা।
www.dawatul haq.com
আল্লাহ তায়ালা হযরতের হায়াতের মাঝে খুব বরকত দান করুন। আপনাকে ধন্যবাদ।