সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ-এর ১৮ তম বার্ষিক ইজতিমা
লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৯, ২০১২ (৪:৫৮ অপরাহ্ণ)
দু’দিন ব্যাপী মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ-এর ১৮তম বার্ষিক ইজতিমা দাওয়াতুল হক-এর মারকায জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী, ঢাকায় অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ২৩ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯টার পর কালামে পাকের তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে মজলিসের সূচনা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বয়ান চলতে থাকে। সকাল দশটার মধ্যেই ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে আত্মশুদ্ধি ও জীবনের সকল ক্ষেত্রে সুন্নতের অনুসরণের প্রেরণায় আগত উলামায়ে কেরাম ও দ্বীনদার মুসলমান ভাইদের অংশগ্রহণে মসজিদ ও মসজিদের সামনের বারান্দা, সামিয়ানা টাঙ্গানো চত্বরসহ মাদরাসার মাঠ ভরে যায়।
সকাল ৯টার পর কালামে পাকের তেলাওয়াত, তারানা ও আসমায়ে হুসনা পাঠের মাধ্যমে ১ম দিনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা, বাহ্মনবাড়িয়া, ভৈরব, মোমেনশাহী, জামালপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, নওগাঁ, যশোর, খুলনা, বগুড়া, গাজীপুর, নরসিংদী, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলার আমীর, নায়েবে আমীর, কর্মী তথা দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-উলামা ও ছাত্র শিক্ষক এবং মুহ্উিস সুন্নাহ হযরত মাওলানা আবরারুল হক সাহেব রহ. এর খুলাফাগণ উক্ত অনুষ্ঠানে তাশরীফ রাখেন। দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরামের পদভারে উক্ত দুটি দিন জামেয়া প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে ওঠে। কখনো গুরুত্বপূর্ণ বয়ান, কখনো আযান-ইকামতের আমলী মশক, কখনো নামাযের আমলী মশক, কখনো আত্মশুদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ইত্যাকার কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ইজতিমা চলতে থাকে। সত্যি একটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠান।
হাকীমুল উম্মাত হযরত থানবী রহ. এর সর্বশেষ খলীফা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লক্ষ কোটি মুসলমানের পরম শ্রদ্ধেয় আধ্যাত্মিক মুরব্বী, সুন্নতে নববীর মূর্ত প্রতীক, মুসলিহুল উলামা ওয়াল উম্মাহ, মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহেব হারদুয়ী রহ.-এর ইন্তেকালের পর তাঁরই মনোনীত সুযোগ্য আমীর মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেবের দিক-নির্দেশনায় পরিচালিত মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ-এর কাজকে যথাযথভাবে এগিয়ে নেয়া এবং হযরতওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর রেখে যাওয়া কর্মসূচী আরো মজবুত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে এই ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়। হযরতওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর সম্মানিত খুলাফায়ে কেরাম, মুরিদীন, মুহিব্বীন এবং দাওয়াতুল হকের সর্বস্তরের যিম্মাদার ও কর্মীদের ব্যাপক ও স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণে এ ইজতেমা দেশের শীর্ষ উলামা-মাশায়েখদের মিলনগাহে পরিণত হয়।
শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত ও তারানা পাঠের পর পরিচালক মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী সাহেব সুন্নতে নববীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে সংক্ষিপ্ত সারগর্ভ বক্তব্য রাখেন। অতঃপর মুহিউস সুন্নাহ হযরত আবরারুল হক রহ.-এর মালফুজাত পড়ে শোনান তাঁরই সুযোগ্য খলীফা, যাত্রাবাড়ী মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আনওয়ারুল হক সাহেব দা. বা.। এরপর সকাল ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত ইত্তেবায়ে সুন্নতে রাসূলের উপর অতি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন ধারাবাহিকভাবে মুহিউস সুন্নাহ হযরত ওয়ালা হারদুয়ী রহ. এর চারজন বিশিষ্ট খলীফা, যথাক্রমে বুয়েটের সাবেক প্রবীণ প্রফেসর, হযরত মাওলানা হামীদুর রহমান সাহেব, ঢাকা মুহাম্মাদপুর রহমানিয়া মাদরাসার প্রধান মুফতী মাওলানা মুফতী মনসুরুল হক সাহেব, ঢাকা বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুহাদ্দিস মুফতী সুহাইল সাহেব ও ঢাকা মুহাম্মাদপুর রহমানিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা হিফযুর রহমান সাহেব। বয়ান শেষে জোহরের আযানের আগ পর্যন্ত সুন্নত মোতাবেক আযানের সহী আমলী মশক করান মাওলানা মুফতী সুহাইল সাহেব দা. বা.। এরপর যোহরের আযান হয়। আযানের পর সুন্নত মোতাবেক নামাযের আমলী মশক করান মুফতী মনছুরুল হক সাহেব দা. বা.-।
জোহরের পর দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন আমীরুল উমারা মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান সাহেব দা. বা.। অতঃপর করাচীর হাকীম আখতার সাহেবের খলীফা দাওয়াতুল হকের খুলনা জেলা আমীর মুফতী নুরুল আমীন সাহেব এবং খুলনার মুফতী মুজিবুর রহমান সাহেব বয়ান করেন। এরপর বয়ান করেন শাহ আব্দুল গনী ফুলপুরী রহ.-এর দৌহিত্র মাওলানা আব্দুল্লাহ সাহেব (ভারত) । তারপর দাওয়াতুল হকের তত্তাবধানে পরিচালিত বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদরাসা থেকে আগত শিশু-কিশোর ছাত্ররা নামায, আযান-ইকামত ও অন্যান্য আমলের সুনান বর্ণনা করে এবং আসমায়ে হুসনা ও (মুনাজাতে মাকবুল কিতাবের প্রারম্ভে লিখিত) তারানা পাঠ করে শোনায়। তাদের একজন কুরআনে করীম তেলাওয়াতের আদব ও ফায়দা বর্ণনা-পূর্বক সুমধুর কণ্ঠে এক রুকু তেলাওয়াত করে শোনায়।
অতঃপর বয়ান করেন মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা আবরারুল হক রহ.-এর বিশিষ্ট খলীফা পটিয়া মাদরাসার মুফতী শামসুদ্দীন জিয়া সাহেব, তারপর হযরত শামছুল ফরিদপুরী রহ.-এর । এরপর আসরের নামাযের পূর্ব-পর্যন্ত দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের কতিপয় আঞ্চলিক আমির যথাক্রমে নরসিংদী জেলার মাওলানা শওকত সাহেব, পাবনার মুফতী ইব্রাহীম সাহেব, রাজশাহী জেলার রাজশাহী ইসলামিয়া মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল কাদের সাহেব, ভোলা জেলার আমীর মাওলানা আব্দুল খালেক সাহেব সংক্ষিপ্ত বয়ান করেন। এছাড়া আরো বয়ান করেন ঢাকা ধানমন্ডি ঈদগাহ মসজিদের খতীব মাওলানা মুজ্জাম্মিল হুসাইন সাহেব, নোয়াখালী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা নেজামুদ্দীন সাহেব, রাজশাহী জেলার নায়েবে আমীর মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাহেব, বগুড়া কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীব মাওলানা মুনাওয়ার হুসাইন সাহেব।
আসরের পর তৃতীয় অধিবেশনে মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা আবরারুল হক রহ.-এর বিশিষ্ট তিন খলীফা যথাক্রমে ঢাকা বাংলা কলেজের সাবেক প্রফেসর, শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক দা. বা.-এর বড় জামাতা মাওলানা গিয়াসুদ্দীন সাহেব, গাজীপুর দেওনা মাদরাসার মুহতামিম প্রিন্সিপ্যাল মিজানুর রহমান সাহেব, ঢাকা ফরিদাবাদ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতী উবাইদুলহ সাহেব সুন্নতে নববী সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তাকরীর পেশ করেন।
মাগরিবের পর চতুর্থ অধিবেশনের শুরুতে আমীরুল উমারা আল্লামা মাহমূদুল হাসান দা. বা. দিকনির্দেশনামূলক গুরুত্বপূর্ণ নছীহত পেশ করেন। এতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আলহাজ হুসাইন মুহাম্মাদ এরশাদসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বহু গণ্যমান্য লোক ও উলামায়ে কেরাম শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর বয়ান করেন মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান দা. বা.-এর খলীফা, মদীনা ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রফেসর ও বিভাগীয় ডিন শায়খ হাসান মূসা। তরজমা পেশ করেন মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরীদী সাহেব।
দ্বিতীয়দিন
দ্বিতীয় দিন ফজরের পর অধিবেশনের শুরুতে মামূলাত সম্পর্কে বয়ান রাখেন আমীরে দাওয়াতুল হক, মুহিউস সুন্নাহ মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেব দা. বা.। নাস্তার বিরতির পর আমীরুল উমারার মুজায এবং জামেয়া ইসলামিয়া যাত্রাবাড়ীর মুহাদ্দিস ও পেশ ইমাম মাওলানা আহমদ ঈসা সাহেব ইত্তেবায়ে সুন্নতের গুরুত্ব বর্ণনা পূর্বক নামায ও আযান ইকামতের প্রাক্টিক্যালি মশক করান। এরপর বয়ান রাখেন যথাক্রমে মাওলানা নুরুল ইসলাম গাজীপুরী সাহেব, কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা ইমদাদুল হক সাহেব, নুরানী ওয়াকফ এষ্টেটের পরিচালক ও নূরানী তালীমুল কুরআন বোর্ড-এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা রহমাতুল্লাহ সাহেব এবং তারা মসজিদের খতীব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের প্রফেসর মাওলানা রশীদ আহমাদ সাহেব।
অতঃপর জুমার পূর্ব পর্যন্ত বয়ান করেন মদীনা ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রফেসর শায়খ হাসান মুসা দা. বা.। তরজমা পেশ করেন মাওলানা আনওয়ারুল হক সাহেব। এরপর জুমার বয়ান, খুতবা ও নামায পড়ান অমীরে দাওয়াতুল হক মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেব দা. বা.।
জুমার পর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন করাচির জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া বিন্নুরী টাউনের মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক। বয়ানের তরজমা পেশ করেন দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক উবাইদুর রহমান খান নদভী সাহেব। এরপর সংÿিপ্ত বয়ান করেন বিবাড়িয়া বিজেস্বর মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা ফারুক আহমাদ এবং যাত্রাবাড়ী মাদরাসার আরবী সাহিত্য বিভাগের সনামধন্য উ¯Íাদ মাওলানা উবাইদুর রহমান খান নদভী সাহেব।
সমাপনী বয়ান ও আখেরী মোনাজাত
সমাপনী বয়ানের পূর্বে ইজতেমার সুদক্ষ পরিচালক মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী সাহেব দাওয়াতুল হকের কাজের গুরুত্ব ও উপকারিতা বর্ণনা করত : দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ কাজের কিছু চাক্ষুস ফলাফলের কথা উল্লেখ করেন। সবশেষে দাওয়াতুল হকের ভবিষ্যত কার্যক্রম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা সম্বলিত আখেরী বয়ান পেশ করেন হযরত ওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর একান্ত প্রিয় খলীফা, তাঁর নিজ হস্তে লিখিত পত্রের মাধ্যমে আজীবন বাংলাদেশের ইমারতের দায়িত্বে নিয়োজিত এবং তাঁর নিজ জবানে ‘আমীরুল উমারা’ খেতাবে ভূষিত মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেব।
ইজতিমার অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহাদ্দিস, ‘মাসিক আল-জামিয়া’-র সম্পাদক হযরত মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী সাহেব।
ইজতেমায় প্রদত্ত বয়ানে হযরতওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর খলীফা, মুরিদীন ও মজলিসে দাওয়াতুল হকের যিম্মাদারগণ সুন্নত যিন্দা করা এবং বেদআত দূর করে তদস্থলে সুন্নতের প্রচলন ঘটানোর জন্য দাওয়াতুল হকের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, আজ সুন্নতের অনুশীলন ও চর্চার কথা উঠলেই মানুষ বোঝে যে, এটা হযরতওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর কাজ, এটা দাওয়াতুল হকের কাজ। তিনি ছিলেন সুন্নত প্রতিষ্ঠার মূর্ত প্রতীক। ছোট-বড় সব সুন্নতের প্রতি তিনি গুরুত্বারোপ করে গেছেন। প্রত্যেকের বয়ানে সকলের মুরব্বী ও মুর্শিদ হযরতওয়ালা হারদুয়ী রহ.-এর দারাজত বুলন্দির জন্য যার যার অবস্থান থেকে দোয়া করে যাওয়া এবং তাঁর রেখে যাওয়া দাওয়াতুল হকের কাজে সর্বাত্মকভাবে আত্মনিয়োগ করতে উৎসাহিত করা হয় এবং আমীরুল উমারা হযরত মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেবের নেতৃত্বে আজীবন দাওয়াতুল হকের মাধ্যমে এহইয়ায়ে সুন্নতের কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত হয়। দাওয়াতুল হকের কাজে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ও অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে ইজতিমা সফলভাবে সমাপ্ত হয়।
ইজতেমার শেষে আছরের পূর্বে অত্যন্ত আবেগঘন পরিবেশে হৃদয় উজাড় করা আকুতি ঢেলে দিয়ে মুনাজাত পরিচালনা করেন- আমীরে দাওয়াতুল হক মুহিউস সুন্নাহ হযরত মাওলানা মাহমূদুল হাসান সাহেব দা. বা.। ইজতেমায় অংশ গ্রহণকারীদের পরিবেশ ভারী করা কান্নার রোল আর বুক ভাসানো অশ্রুর স্রোতে তখন ভাবগম্ভীর এক পবিত্র দৃশ্যের অবতারণা হয়।
www.dawatul-haq.com