মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ২
লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১০ (৪:১৪ অপরাহ্ণ)
মজলিসে উমারার কার্যক্রম
আরবী মাসের ২য় ও ৪র্থ শুক্রবার সর্বমোট প্রতি মাসে দুবার সকাল ৮টায় এই মজলিস অনুষ্ঠিত হয়। কার্যক্রম নিম্নরূপ :
ক. মালফূজাত এবং বুজুর্গানে দীনের জীবনী পড়ে শুনানো হয়।
খ. সূরা, আযান-ইকামাত, নামায ইত্যাদি সুন্নতের মুশকে আমলী।
গ. বিভিন্ন হালকা সমূহের পেশকৃত লিখিত রিপোর্ট সংগ্রহ ও পর্যালোচনা।
ঘ. প্রয়োজনীয় মাসলা-মাসায়েলের উপর আলোচনা, প্রশ্নোত্তর।
ঙ. বিগত কার্য বিবরণী পঠন, অনুমোদন।
চ. দাওয়াতুল হকের কর্মসূচী বাস্তবায়ন পরামর্শ এবং দিক নির্দেশনা।
হালকাওয়ারী কার্যক্রম
ক. প্রত্যেক হালকায় ১৫দিন অন্তরে একটি মজলিসে আম, একটি কর্মী মজলিস, কমপক্ষে চারটি গাশতি মজলিস।
খ. সমস্ত কার্যক্রম লিপিবদ্ধকরণ এবং ১৫দিন অন্তর লিপিবদ্ধ ভাবে মজলিসে উমারার মজলিসে পেশ করণ।
গ. দাওয়াতুল হকের কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এলাকার মাদরাসা-মসজিদ, উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষানুরাগী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন।
ঘ. বয়স্কদের তালীম তরবিয়তের জন্য সম্ভব্য ব্যবস্থা গ্রহণ।
ঙ. সুন্নতের প্রচার প্রসার এবং বিদআত ও মুনকারাত দমনের উদ্দেশ্যে ওয়াজ নসীহতের ব্যবস্থা করা।
মজলিসে আম
স্থানীয় হালকার তত্ত্বাবধানে মাসে অন্তত ২টি মজলিসে আম অনুষ্ঠিত হয়। এই মজলিসের লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে মসজিদ মাদরাসা এবং বিভিন্ন স্থানে হালকার কর্মীদের সহযোগিতায় এলাকার মুসলমানদের মধ্যে দ্বীনি চেতনা সৃষ্টি করা এবং দাওয়াতুল হকের কর্মসূচী বাস্তবায়ন মেহনত করা।
কর্মী মজলিস
এই মজলিসের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে হালকার কর্মীদেরকে নিয়ে কর্মসূচী বাস্তবায়নের পরামর্শ, বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং দিক নির্দেশনা ও কর্মী বৃদ্ধিকরণের প্রচেষ্টা করা। এই মজলিস মাসে অন্তত:পক্ষে দুবার অনুষ্ঠিত হয়।
গাশতী মজলিস
প্রতি হালকায় কম পক্ষে মাসে চারটি গাশতী মজলিস অনুষ্ঠিত হয়। মাদরাসা, মসজিদ এবং যেকোন উপযুক্ত স্থানে এই মজলিস অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই মজলিসের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ওয়াজ নসীহত এবং আলোচনার মাধ্যমে মানুষকে দ্বীনি তালমি ও তরবিয়াত করা এবং ‘দাওয়াতুল হকের’ কর্মসূচী বাস্তবায়নে সহযোগিতা লাভ ও ক্ষেত্র তৈরী করা।
এসলাহী মজলিস
প্রতি মাসে কম পক্ষে একবার এই মজলিস অনুষ্ঠিত হয়। এই মজলিসের উদ্দেশ্য জাহেরী-বাতেনী পরিশুদ্ধি এবং ইসলাহের উদ্দেশ্যে সবগুজারী, দুয়া, দরূদ, ইস্তেগফার, জিকির-আজকার, অজীফা-মামূলাত আদায় করা। এক্ষেত্রে শরীয়ত এবং সুন্নতের অনুকরণ ও অনুসরণ করা।
তরবিয়াতুল মুআল্লিমীন
ক. দাওয়াতুল হকের কর্মসূচী প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সার্বক্ষণিক এই ব্যবস্থা কেন্দ্রীয়ভাবে চালু করা হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত মুআল্লিমীনগণ প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকেন।
খ. মজলিসে দাওয়াতুল হকের তত্ত্বাবধনে বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে কেন্দ্রীয় ভাবে এবং স্থানীয় হলকার তত্ত্বাবধানে সাময়িক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
গ. পবিত্র রমযান মাসব্যাপী এতেকাফ এবং ইসলাহী মজলিস সহ ‘দাওয়াতুল হক’ কর্মসূচীর উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
মজলিসুল ইফতা
এই মজলিস ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার বিশিষ্ট মুফতিয়ানে কেরামের সমন্বয় প্রতি মাসে একবার অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত মুফতিয়ানে কেরাম জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ মাসলা মাসায়েলের উপর গবেষণা করে সঠিক ফাতওয়া গ্রহণ মজলিসুল উলামার প্রশ্নোত্তর সমূহের উত্তর প্রণয়ন এবং মজলিসুল উলামায় পেশ করা হয় এবং তা ক্রমশ: মাসিক আল-জামিয়াতে প্রকাশ করা হয়, সংরক্ষণ করা হয়।
মজলিসুল উলামা ওয়াল আইম্মা
এই মজলিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মজলিস। প্রত্যেক আরবী মাসের প্রথম শুক্রবার বাদ ফজর কতাবাজার আল মুইন মাদরাসায় এই মজলিস অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা এবং য়াকার বাহির থেকে উলামা মাশায়েখ, ইমাম, মুয়াজ্জেন, শিক্ষানুরাগী ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং বিভিন্ন স্তরের লোকজন এই মজলিসে উপস্থিত হয়ে থাকেন। দুইটি পর্বে এই মজলিসের কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং এর কার্যক্রম নিম্নরূপ :
ক. প্রথম পর্বে পরিশুদ্ধি আধ্যাত্মিক সাধনার দিক নির্দেশনা স্বরূপ বুজুর্গানে মালফুজাত এবং জীবনী পড়ে শুনান হয়।
খ. দ্বিতীয় পর্বে পবিত্র কুরআনের তেলাওয়াত-ফায়দা উপকারিতা এবং আদব বর্ণনা করার পর উলামা-মাশায়েখ ইমাম মুয়াজ্জেনদের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং বিদআত মুনকারাত দমনে দিক নির্দেশনা স্বরূপ সংক্ষিপ্ত বয়ান হয়।
গ. সুন্নতের আমলী মশক, আযান, ইকামত, নামায এবং সূরার মশকে আমলী হয়।
ঘ. প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে জরুরী মাসলা মাসায়েলের উপর আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ মুজাকারা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
ঙ. ‘এক মিনিটের মাদরাসা’ পড়ার পর দরুদ এবং মুনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
মাজালিসে মুজাকারা
আল হামদুলিল্লাহ অনুরূপ আলোচনার মজলিস আরবী মাসের ৩য় শুক্রবার বাদ ফজর জামেয়া রহমানিয়া আলী নুর মুহাম্মাদপুর, প্রতি আরবী মাসের ১ম শুক্রবার বাদ ফজর আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ, প্রতি ইংরেজী মাসের ২য় বৃস্পতিবার বাদ ফজর গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদ, আরবী মাসের তৃতীয় শুক্রবার বাদ ফজর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী ও জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, টাঙ্গাইল, যশোর, খুলনা, লোহাগাড়া, চট্টগ্রাম, বরিশাল, মাহমুদিয়া ইত্যাদি স্থানেও অনুষ্ঠিত হয়।
বাৎসরিক ইজতেমা
দাওয়াতুল হকের কর্মসূচীর বাস্তব প্রশিক্ষণ, প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে প্রতি বৎসর কেন্দ্রীয়ভাবে বাৎসরিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উলামা মাশায়েখ, ইমাম, মুআজ্জেন এবং ধর্ম প্রাণ মুসলমানগণ এই এজতেমার শরীক হয়ে থাকেন। দুইদিন ব্যাপী এই গুরুত্বপূর্ণ ইজতেমার কর্মসূচী ছাপা হয়, সে অনুপাতে ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
http://www.dawatul-haq.com/