লগইন রেজিস্ট্রেশন

অভিশপ্ত ইহুদী জাতির সীমালংঘন

লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২৫, ২০১১ (৩:১২ অপরাহ্ণ)

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান-এর বয়ান

اللهم صل على محمد وعلى اله وسلم تسليما ـ استغفر الله ربى من كل ذنب واتوب اليه لاحول ولاقوة الا بالله العلي العظي ـ رب زدني علما ـ أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ أُوتُواْ نَصِيباً مِّنَ ٱلْكِتَابِ يُدْعَوْنَ إِلَىٰ كِتَابِ ٱللَّهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ وَهُمْ مُّعْرِضُونَ ـ
ইহুদী-খৃষ্টানরা তাদের বদ আমলের কারণে বরবাদ হয়েছে, তাই আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। আখেরাত ও দুনিয়ার শান্তির জন্য বিধর্মীদের কাজ আমাদের অবশ্যই পরিহার করতে হবে। আল্লাহপাক বলেন
أَلَمْ تَرَ إِلَى ٱلَّذِينَ أُوتُواْ نَصِيباً مِّنَ ٱلْكِتَابِ يُدْعَوْنَ إِلَىٰ كِتَابِ ٱللَّهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ يَتَوَلَّىٰ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ وَهُمْ مُّعْرِضُونَ
“তুমি কি ঐ সকল লোকদেরকে দেখনি, যাদেরকে কিতাবের (তাওরাতের) কিছু অংশ দান করা হয়েছে। তাদেরকে আহবান করা হচ্ছে, আল্লাহর কিতাবের প্রতি যাতে উক্ত কিতাব তাদের মধ্যে মিমাংশা করে দেয়। অতঃপর তাদের মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক লোক বিমুখ হয়ে ফিরে যায়।”
পূর্ববর্তী উম্মতের কথা
হে নবী আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, আপনার পূর্বে যাদের প্রতি কিতাব নাযিল করা হয়েছে?” আমাদের নবীর উপর যেমন কুরআন নাযিল হয়েছে? আমাদের নবীর উপর যেমন কুরআন নাযিল হয়েছে, পূর্ববর্তী জাতির কাছে যে সকল নবী এসেছিলেন, তাদেরকেও আল্লাহ কিতাব দান করেছিলেন। এজন্য তাদেরকে আহলে কিতাব বলা হয়। যেমন, হযরত ঈসা আ. এর প্রতি ইঞ্জিল হযরত মূসা আ. এর প্রতি তাওরাত গ্রন্থ নাযিল করা হয়েছিল। কিতাব নাযিল হওয়া সত্ত্বেও নবীদ্বয়ের উম্মতেরা কিতাবের সাথে ও নবীদের সাথে বিয়াদবী করেছে। অনেকে নবীকেই মানেনি, কিতাব মানার তো প্রশ্নই আসে না। আবার অনেকে অন্তরে নবীকে স্বীকার করেনি কিন্তু মুখে প্রকাশ করেছে, অন্তরের বিপরীতটা। এটাই মুনাফেকী, আবার অনেকেই মনে প্রাণে নবীকে বিশ্বাস করেছিল কিন্তু কর্মে সে বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেনি। তাওরাত বা ইঞ্চিল এর বিধানানুযায়ী আমল করেনি নবীর কথামত জীবন পরিচালনা করেনি, এতে বাধা ছিল দুনিয়ার মান সম্মানের অভিলাষ ও অর্থসম্পদের লিপ্সা। এ সমস্ত হীন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তারা এতবড় নবী পাওয়া সত্ত্বেও উপকৃত হতে পারেনি। তাই আল্লাহপাক আমাদের নবী মুহাম্মাদ সা. কে পূর্ববর্তী জাতীর অবস্থা আলোচনা করে জানিয়েছেন যে, বড় উদাসীন আমরা এরকম কিতাব ও নসীহত পাওয়া সত্ত্বেও নিজেদের তৈরী করতে পারছি না। হে নবী তাদের কথা শুনুন, যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল। তারা তাওরাত ও ইঞ্জিলের আহকামকে বিকৃত করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করছে। এটা গোনাহ ও অন্যায় এ উপলব্ধি থাকা সত্ত্বেও তা বর্জন করত না। মিথ্যা ব্যাখ্যা, অপব্যাখ্যা করত। এটা যারা তাওরাত ও ইঞ্চিলের আলেম ছিল তারাই করত। কারণ সাধারণ লোক কিতাব পাঠ করতে পারত না। এটা আমাদের নবী সা. কে জানানোর উদ্দেশ্য হলো, এ উম্মতের মধ্যেও এক প্রকার আলেম থাকবে এমন।
যে জাতির আলেম শ্রেণী শঠ হয়, তাদের কল্যাণের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। দুনিয়ার বস্তু-শৃংখলার শান্তি নির্ভরশীল অর্থের উপর, আর আখেরাতের কল্যান ও দুনিয়াতে ধর্মীয় শান্তি শৃংখলা নির্ভরশীল উলামাদের উপর। তাই ঐ জাতি বড়ই দুর্ভাগা যে জাতির উলামায়ে কেরাম স্বার্থপর এবং যে জাতির অর্থনীতি স্বার্থের সাথে জড়িয়ে পড়েছে।
একটি অত্যন্ত মূল্যবান হাদীস
আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সা. বলেছেন, আমার উম্মতের ধ্বংস দুটি শ্রেণীর দ্বারা হবে। ১. উলামা দ্বারা, ২. আমীর উমারা দ্বারা।
আলেম যদি কুরআন হাদীসের মনগড়া ব্যাখ্যা করে জনগণ তা বুঝবে না, আলেমরা যা বলবে তারা তাই করবে, আমাদের সমাজে ধর্মের ব্যাপারে বিরোধ দেখা যায় কারণ সবাই কোন না কোন আলেমের অনুসরণ করে। যাকে যে আলেম যেভাবে বোঝায়, সেভাবেই সে বোঝে, তাই বলা হয়েছে-شرارالخلق شرار العلماء منهم تخرج الفتنة ومنهم تعود পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঐ আলেম যারা স্বার্থপর, সকল ফেতনার উৎপত্তি এদের থেকেই হবে এবং এদের মধ্যেই থাকবে। কোন আলেম নিকৃষ্ট তা বোঝার আলামত হলো, নবী করীম সা. বলেছেন, আলেমরা আমার প্রতিনিধি, তারা আমার প্রতিনিধিত্ব করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা অর্থশালী ও ক্ষতাধর ব্যক্তিবর্গের সাথে সম্পর্ক না রাখবে। সুতরাং যখন তারা বিত্তশালি নেতাবর্গের সাথে ওঠা বসা শুরু করবে ও ক্ষমতার লোভে ঘুরবে, তখন তাদের কাছে যেয়ো না, তাদের থেকে দূরে থেকো।” (আহমাদ)
তাহলে বোঝা যায়, ধর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব কাজ হবে। রাজনীতিকে মূল লক্ষ্য বানাবে না। ক্ষমতাধর হতে চাইবে না। এটা ইসলাম জিন্দা করার উপায়। ইসলামের বাতানো রাজনীতি সম্ভব হলে ভালো, অন্যথায় তার দরকার নেই। রাজনীতি ছাড়া ইসলাম প্রতিষ্ঠা কর। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি একটি উপায়মাত্র। যে রকম নামাযের জন্য মসজিদ ও জায়নামায একটা উপায় মসজিদ। জায়নামায না থাকলেও নামায পড়া যাবে, তবে থাকলে ভালো। ইসলামের বিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনা সম্ভব হলে আলহামদুলিল্লাহ, না হলে কাফের বে দ্বীনের তরীকায় করার দরকার নেই।
আলেমদের প্রতি সতর্কতা
উক্ত হাদীসে আলেমদেরকেই সতর্ক করা হয়েছে যে, তোমরা দ্বীনকে বিক্রি করো না। যেমন অনেকে অন্যায় কোন কাজকে কুরআন ও হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত করে, যে জিনিস শরীয়ত হারাম করেছে, তা জায়েয করা নিকৃষ্ট উলামার কাজ। কিছুদিন পূর্বে এক পত্রিকায় দেখলাম এক ব্যক্তি লিখেছে যে, যে সুদ বর্তমানে চলছে, তা রাসূলে পাক সা. নিষেধ করেননি। নবী সা. এর যুগে যে সুদ হারাম ছিল তা রিবায়ে ফযল। আর আমাদের দেশে যা হয় তা রিবায়ে নাসীয়া এটা নিষেধ নয়। অথচ নবী সা. সুদের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সাহাবা হতে তাবেয়ীগণ মুজতাহিদগণ যে ব্যাখ্যা করেছেন, তাতে বোঝা যায়, আমাদের সামাজে প্রচলিত ব্যাংকিং পদ্ধতির সুদ সবাই হারাম।
এমনি আরো অনেক মাসআলা রয়েছে, যে ব্যাপারে অনেকের মত হলো, ইসলামের জন্য খারাপ পথে গেলে কোন অসুবিধা নেই।
আলেমদের রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ
আমি বলি খারাপ পথে ইসলামের উন্নতি অসম্ভব। এই যে, আলেমরা রাজনীতি করছে আমার কাছে প্রস্তাব নিয়ে আসলে বলি, রাজনীতিতে আলেমদের অংশগ্রহণ করা ইসলামের জন্য বিরাট ক্ষতি। কেননা ইসলামী রাজনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য যে নিয়ম আছে তা এখানে অনুপস্থিত। ইসলামী পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় না, তাই কোনও আলেমের এতে প্রার্থী হওয়া অনুচিত। তারা বলে ইসলামী পদ্ধতিতে যেহেতু বর্তমানে সম্ভব হচ্ছে না, সেহেত প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন না করে উপায় কোথায়? প্রার্থী না হওয়ার চেয়ে হওয়াতেই তো মঙ্গল। হ্যা মঙ্গল এটাই হয়েছে যে, বিদেশে সবাই ধারণা করছে যে, বাংলাদেশের মুসলমানরা ইসলাম চায় না যে, নিয়মে কাজ করলে এই পরিণাম হয়। যদি আলেমরা অংশগ্রহণ না করত, তাহলে মানুষ বলত আলেমরা বেরই হননি। বের হলে দেখিয়ে দিত। মুসলমানরা ইসলাম চায় না কথাটা কত বড় জঘন্য ও লজ্জাজনক বাংলাদেশী মুসলমানদের জন্য। অথচ বাস্তবে এদেশের সকল প্রশাসন, ইসলাম বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও এদেশের জনগণ ইসলাম টিকিয়ে রেখেছে। এই মসজিদ ও মাদরাসার প্রচেষ্টায় ইসলাম টিকে আছে এবং থাকবে, যদিও সকল প্রশাসন ইসলামের বিরোধী, শিক্ষা ব্যবস্থা, ইসলাম বিরোধী, সমস্ত আইন ইসলাম বিরোধী, পক্ষে কেবল এদেশর জনগণ। সেই জনগণ সম্পর্কে সারা দুনিয়ার মন্তর্ব হচ্ছে যে, এরা ইসলাম চায় না। এটা আমাদের আলেমদের মত কিছু মানুষের অদূরদর্শীতার ভয়াবহ পরিণাম। তাই সব মানুষের দ্বীনী বুঝ হওয়া দরকার। তাবলীগ জামাতের দলটি এদেশের লাভবান হচ্ছে, কারণ তারা ইখলাসের সাথে দাওয়াত এর কাজ করে যাচ্ছে। তাদের মূলনীতিতে এখলাস রয়েছে, আল্লাহপাক তাদের সকলকে আরো উন্নতি করার তাওফীক দান করুন!
আলেমের প্রকারভেদ
আলেম দুই প্রকার। এক হলো, বড় আলেম লেখা-পড়া করে কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে প্রচুর জ্ঞান লাভ করেছে, দ্বিতীয় প্রকারের আলেমের সংখ্যা অসংখ্যা। কেননা, সাধারণ মানুষ যে যতটুকু মাসআলা, আহকাম জানেন সে ততটুকুর আলেম। পরিভাষাগত আলেম না হলেও অভিধানগত আলেম তারা।
যে সকল মাসআলা আপনাদের জানা আছে সে সমস্ত মাসআলা বিক্রি করা ঠিক নয়। যে মাসআলা জানেন, দুনিয়ার স্বার্থ অর্জনের জন্য সে মাসআলার বিরুদ্ধে কথা বলা বা কাজ করা কিংবা সমর্থন দেয়া ঠিক হবে না, আপনার আমার দায়িত্ব হলো, দ্বীনি মাসআলা যতটুকু জানি এবং জ্ঞান প্রাণ থাকতে তার বিরদ্ধে কাজ করব না অপরকেও করতে দেব না।
মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহ.-এর ঘটনা
হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানীকে ততকালীন বাদশা চিনতেন না, যে কোন অভিযোগের কারণে তাকে গ্রেফতার করে রাজদরবারে হাজির করা হলো। তিনি রাজ প্রসাদে মাথা উচু করে ঢুকে পড়লেন। মাথা ঝুঁকিয়ে প্রবেশ করার নিযম পালন করলেন না বাদশহকে এটা বলা হলে বাদশাহ মুজাদ্দিদে আলফেসানী রহ. কে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন, তিনি উত্তরে বললেন, “আমি গ্রাম্য ব্যক্তি তাই আপনাদের নিয়ম আমার জানা ছিল না।”: পরে বাদশাহ বললেন, তাহলে এখন করো তিনি উত্তরে বললেন, জীবনে কখনো এ মাথা আল্লাহ ছাড়া আর কারো সামনে নত হয়নি, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এ মাথা ঝুকানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। বাদশাহ বললেন, এ হুকুম লংঘন করার পরিণতি কত ভয়াবহ তুমি জান? তিনি বললেন, আল্লাহর হুকুমের বাইরে কোন হুকুম থাকতে পারে না। আল্লাহর বিধান লঘনের চেয়ে বড় অপরাধ আর নেই আর আল্লাহর শাস্তির চেয়ে বড় শাস্তিও আর হবে না। আপনার হুকুম হবে না যতক্ষণ না আল্লাহর হুকুম হয়। বাদশাহ আর কিছু বললেন না।
এটা বলার উদ্দেশ্য হল, আল্লাহ ওয়ালারা হিম্মত করলে পাহাড় সম বিপদ ও শক্তিহীন হয়ে যায়। আমাদের অবস্থা এমন যে, সত্য বললে বিপদে পড়তে হবে বলে, সত্যই বলতে নারাজ আমরা।
কাফেরদের অভ্যাস
কাফের অভ্যাস ছিল, তারা গোমরাহী ক্রয় করতে আর হেদায়াতকে বিক্রয় করে দিত, মাসআলার ক্ষেত্রে ও দুনিয়ার ক্ষেত্রেও। সর্ব বিসয়ে স্বার্থকে প্রাধান্য দিত। যে কারণে তাদের আলেমদের অবসস্থা ছিল এরূপ। তাই আল্লাহ বলেন, হে নবী! আপনার উম্মতকে জানিয়ে দিন তারা যেন এমনটি না করে। তোমাদের আসল শত্রু কারা তা আল্লাহ ভালো জানেন, তাই আল্লাহকে অভিভাবক মানা আল্লাহই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। কুরআনে পাকে ইরশাদ হয়েছে
مِّنَ ٱلَّذِينَ هَادُواْ يُحَرِّفُونَ ٱلْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِ وَيَقُولُونَ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَٱسْمَعْ غَيْرَ مُسْمَعٍ وَرَاعِنَا لَيّاً بِأَلْسِنَتِهِمْ وَطَعْناً فِي ٱلدِّينِ
কোন কোন ইয়াহুদী কালাম (তাওরাত) কে তার স্থান থেকে (শব্দ ও অর্থের দিক থেকে) অন্য দিকে ফিরিয়ে দেয়, আর (রাসূলের সঙ্গে) এ বাক্যে ব্যবহার করে “আমরা শুনলাম, মানলাম না” মোনো, শোনানো না হোক এবং বলে রায়িনা তার জিব্বা বাকিয়ে এবং অন্তরে ধর্মের দোষারেপের ইচ্ছায়।
তাদের আরেকটা দোষ ছিল, তারা এক হুকুমের জায়গায় অন্য হুকুম লাগিয়ে দিত। এতে করে হুকুম নষ্ট হয়ে যেত। বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে, তাওরাত কিতাবে যিনাকারীর শাস্তি নির্ধারিত ছিল। রাসূল সা. এর যুগেও তারা মানত না। নবুওত প্রাপ্তির পূর্বে তো বিচারক হিসেবে সকলেই এক বাক্যে রাসূল সা. কে মানত, নবী হওয়ার পরও তারা বিচারের জন্য রাসূল সা. এর কাছে আসত, তারা জানত যে রাসূল সা. ন্যায়বিচারক। যদিও হুযুর সা. এর সাথে দুশমনী ছিল, কিন্তু রাসূল সা. এর সততা, ভদ্রতা আমানতদারির ব্যাপারে তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। তাই ব্যক্তিগত ও সামাজিক সকল সমস্যায় তারা নবী সা. এর কাছে আসত।
রাসূল সা. এর দরবারে ইহুদীদের আগমন
একবার তারা যিনার শাস্তির নির্ধারনের জন্য নবী সা. এর কাছে আসল। তাওরাত কিাতবে যিনার শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু হঠাৎ তাদের বড় বংশের বড় নেতার মেয়ে এ অপরাধ করে ফেলেছে তাই ইহুদীদের টাকা খোর আলেমরা এ হুকুমে শিথিলতার অবকাশ রয়েছে বলে ফতোয়া দিয়েছে। বিচর পেশ করা হল নবী সা. এর নিকট। আল্লাহমে পর্থক্য হতে পারে না। আইন সবার জন্য সমান। ঐ সমস্ত আলেম মনে করেছে নবী সা. তো আর তাওরাতের হুকুম জানেন না, সে তার কুরআন অনুযয়ী আমল করবে, তখন আমর তা মানব না। এদিকে তাওরাতের আসল হুকুম যে নবী সা. জানতেন তা তারা বুঝতে পারেনি। রাসূল সা. বললেন এ ব্যাপারে কুরআনের হুকুম এক ও অভিন্ন। রাসূল বললেন, পড়ো তোমাদের হুকুম। তখন তারা কিতাবের মূর জায়গাটা আঙ্গুল দ্বার ঢেকে বাকী টুকু পড়ল। ঘটনাক্রমে সেখানে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম নামে একজন বড় ইহুদী আলেম ছিল, যে কিছুদিন পূর্বে মুসলমান হয়েছিল। সে তাদের চালাকি ধরে ফেলল। এদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ইহুদীদের একটি বড় দল রয়েছে, যারা তাদের কিতাবের শব্দ পরিবর্তন করে ফেলে। যেমন আল্লাহ বলেছিলেন, সপ্তাহের শনিবার তোমরা কোন কাজ করতে পারবে না এই দিন তোমরা কেবল এবাদত করবে। তাদের প্রধান ব্যবসা ছিল মাছের, তাই তার শনিবারের ব্যপারে আলেমদের কাছে একটা ব্যবস্থা চাইলে তারা সবাইকে কুবুদ্ধি শিক্ষা দিয়ে বলে যে, নদীর পাশে গর্ত তৈরি করো এবং নালা কেটে নদীর সাথে সংযুক্ত করো। সেখানে মাছ গিয়ে থাকবে, পরে মাছ না ধরে গর্তের মুখ আটকিয়ে দিবে। মাছ আর যেতে পারবে না। পরের দিন তা ধরবে। তারা তাই কত। ফলে তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
ইহুদীদের অভ্যাস
ইহুদীদের অভ্যাস ছিল শব্দ পরিবর্তন করা ও হুকুমকে কলাকৌশলে নিজের মনগড়া করে নেয়া। তাদের আরেকটা দোষ ছিল وَيَقُولُونَ سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا وَٱسْمَعْ غَيْرَ مُسْمَعٍ وَرَاعِنَا অনেক শব্দের দুটি করে অর্থ হয়, কোনটা খারাপ, কোনটা ভালো, ইহুদীরা রাসূল সা. ও ইসলামের ব্যাপারে দ্বিঅর্থবোধক শব্দ বেশি ব্যবহার করত। যদি গোলমালে লেগে যেতে বলত, আমরা ভালোটা উদ্দেশ্য করেছি। তারা ওগুলো দিয়ে মুসলমানদের সাথে ঠাট্টা করত। যেমন আরবী ভাষায় راعنا ‘রাঈনা’ শব্দটির দুটি অর্থ (১) আমাদের সম্মানিত অভিভাবক। (২) আমাদের রাখাল। এরা রাসূল সা. কে দখেতে راعنا বলে ডাকত দিত, আর খুব মত হাসা হাসি করত। এতে সাধারণ মুসলমানরাও না বুঝে তা বলে ডাকত। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য ভালো থাকত। তারপর তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বাইছিল। আল্লাহ তাআলা ওহীর মাধ্যমে মুসলমানদের উক্ত শব্দ বলতে নিষেধ করে দিলেন।
তাদের সীমালংঘন
ইহুদীরা রাসূল সা. এর কথা শোনার পর বলতো আমরা শুনলাম কিন্তু মানলাম না এর ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলে বলে যে, আমরা এর উদ্দেশ্য করি আমরা আপনার কথা শুনলাম আর বাকি দেরটা মানলাম না। চিন্তা করুন, এদের ভেতরটা কত খারাপ ছিল। আল্লাহ বলেন, ইহুদীরা দ্বিমুখী শব্দ বলে। উদ্দেশ্য থাকে বিদ্রুপ করা। যদি তাদের দিল ভালে থাকতো তাদের বলা উচিত ছিল যে, আমরা যা শুনলাম তা মানলাম আনুগত্য স্বীকার করলাম, আল্লাহ যেন আপনাকে সব সময় যেমন কথাবার্তা শোনাতে চান তেমনই শোনায়। আপনি আমাদের প্রতি বিশেষ দয়র দৃষ্টি দেিবন। তাহলে নবী সা. ও ইসলামের প্রতি সম্মান প্রদর্শণ করা হত। কিন্তু তার যে পথ অবলম্বন করেছে তাতে তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তাদের কুফুরীর কারণে তাদের অন্তরে সীলমহর এটে দেয়া হয়েছে। ফলে তারা নবীর সম্মান না করে দ্বিমুখী শব্দ বলে ঠাট্টা করছে। আল্লাহ তাদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তারা স্বীয় কর্মফল ভোগ করবে। আল্লাহপাক আমাদের সকলকে ইহুদী খৃষ্টানদের আখলাক থেকে মাহফুয রাখুন।

www.dawatul-haq.com

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
৫৩৮ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars ( ভোট, গড়:০.০০)

৫ টি মন্তব্য

  1. ইহুদীদের ক্ষমতা গ্রহণের আরও একটি কারণ মুসলিমদের আমল ঠিক নেই ।
    লেখার জন্য ধন্যবাদ ।

  2. Allah amader sobai ke dener shothik pothy chalar taufiq dan korun. (Amin)

  3. সুন্নাহ মুহিউস সুন্নাহ

    দুইবার সুন্নাহ ব্যাপারটা বোঝা গেলো না । টাইপো ?

  4. بارك الله تعالى في حياة محي السنة ـ مرحبا لك يا أخي

  5. আল্লাহ পাক হযরত মহিউস সুন্নাহ এর হায়াতের মধ্যে বরকত দিন । এই মহান সাধক কে কবুল করুন । আমিন