ইহুদী-খৃষ্টানরা সারাবিশ্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক ধর্মযুদ্ধে লিপ্ত
লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ শনিবার, এপ্রিল ৯, ২০১১ (১:১৩ অপরাহ্ণ)
পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইরাক, ফিলিস্তিন, লিবিয়া সর্বত্র ইহুদী-খৃষ্টানদের হাতে মুসলমানদের রক্ত ঝরছে। আল-কায়েদা ও তালিবান জঙ্গী দমনের অজুহাতে পাক-আফগান সীমান্তে মার্কিন বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিমান হামলা করে হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যা করছে। ইহুদী-খৃষ্টান যৌথবাহিনী ইরাকে হামলা চালিয়ে এ পর্যন্ত ১০ লাখ মুসলমানকে হত্যা করেছে। আমেরিকার লাঠিয়াল ইহুদী ইসরাইলী বাহিনী যখন তখন ফিলিস্তিনের উপর স্থল ও বিমান হামলা করে হাজার হাজার মুসলমানকে হত্যা করছে। সর্বশেষ ইউরো-মার্কিন খৃষ্টচক্র গৃহপালিত জাতিসংঘের কাঁধে সওয়ার হয়ে তেলসমৃদ্ধ মুসলিম দেশ লিবিয়ার উপর হাজার হাজার ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করে লাখ লাখ মুসলমানকে হত্যা করছে। পৃথিবীর যেখানে তাকাই সেখানেই চলছে মুসলমানদের উপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন, হত্যা-লুণ্ঠন। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, এসব মুসলিম নিধনে কোন কোন মুসলিম রাষ্ট্র এবং আগ্রাসন কবলিত দেশের আজ্ঞাবহ একটি শ্রেণী ইহুদী-খৃষ্টান আগ্রাসী বাহিনীর লাঠিয়াল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মুসলিম সমাজে বসবাসরত মুসলিম নামধারী এই দালালগোষ্ঠী ইসলামের প্রকাশ্য শত্র“ ইহুদী-খৃষ্টানদের সাথে নির্লজ্জভাবে হাত মিলিয়েছে।
ইরাক, আফগান ও লিবিয়ার উপর ইহুদী-খৃষ্টানদের আগ্রাসনের পটভূমি পর্যালোচনা করলে যে নির্মম সত্যটি স্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয় তা হচ্ছে, সাম্রাজ্যবাদী ইহুদী-খৃষ্টানরা বিভিন্ন মুসলিম দেশে আগ্রাসনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য প্রথমে একটি দালালগোষ্ঠী তৈরী করে। এই দালালগোষ্ঠী গাড়ি-বাড়ি ও ক্ষমতার নেশায় মীরজাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তারা সেকথাই প্রচার করে, যে কথায় পশ্চিমা প্রভুরা সন্তুষ্ট হয়। সেকাজই করতে থাকে যে কাজে পশ্চিমা প্রভুরা বাহবা দেয়। সেটা যতই দেশ ও জাতি বিরোধী হোক, যতই কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী হোক তাতে তাদের কিছু যায় আসে না। আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের ক্ষেত্র প্রস্তুতকারী রাব্বানী, ইরাকের মালিকি এবং লিবিয়ার মুস্তফা আব্দুল জলীলদের ভূমিকা মীরজাফরের থেকে আলাদা কিছু নয়। সুতরাং সাম্রাজ্যবাদী ইহুদী-খৃষ্টান ও আধিপত্যবাদী পৌত্তলিকগোষ্ঠীকে মোকাবেলা করতে হলে আগে তাদের আজ্ঞাবহ এ দালালগোষ্ঠীকে চিি হ্নত করতে হবে।
বিভিন্ন মুসলিম দেশের যে সকল নাগরিক আল্লাহ-রাসূল ও কুরআন-সুন্নাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যশীল, যে সকল মুসলিম বিশ্ব মানবতার শান্তি ও মুক্তির একমাত্র আদর্শরূপে ইসলামকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, তারাই প্রতিটি মুসলিম দেশের মূলশক্তি, দেশের স্বাধীনতা ও অখণ্ডতা রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী। তারাই বহিঃশক্তির আগ্রাসন মোকাবেলায় দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরাই মুসলিম জাতির অহংকার। সাম্রাজ্যবাদীগোষ্ঠী এদেরকে জমের মত ভয় করে। তাই এদেরকে দলে ভিড়ানোর কথা তারা কল্পনাও করে না। পক্ষান্তরে মুসলিম সমাজে বসবাসকারী ক্ষুদ্রতর একটি শ্রেণী আছে, যারা অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত নয়, একেবারে উচ্চ শিক্ষিত। বিভিন্ন উপলক্ষে তারা পশ্চিমা ইহুদী-খৃষ্টানদের সাথে ঘনিষ্টভাবে মেলামেশার সুযোগ লাভ করে ধীরে ধীরে পশ্চিমা ভোগবাদী যৌনতাসর্বস্ব জীবনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। অতঃপর লাখ লাখ ডলারের বিনিময়ে পশ্চিমা কালচার নিজ দেশে প্রচার-প্রসার করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে দেশে ফিরে আসে। অঢেল টাকা ও রঙ্গীন জীবনের প্রলোভনে এরা দেশের কার্যকরী একটি অংশকে হাত করে নেয়। তারপর শুরু হয় প্রচার-প্রসার, বক্তৃতা-বিবৃতি। এরাই মীরজাফরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশের কৃষ্টি-কালচার, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ইসলাম ও কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী তৎপরতায় মেতে ওঠে। ফতোয়া নিষিদ্ধ আইন, নারী-পুরুষের সমান উত্তরাধিকার নীতি, মদের লাইসেন্স, পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স, কুরআন বিরোধী শিক্ষানীতি প্রভৃতি সেই সংঘবদ্ধ প্রচারণা ও অপতৎপরতারই ফলশ্র“তি।
লিবিয়ার উপর পশ্চিমা আগ্রাসনকে রাশিয়া স্পষ্টভাবে ইহুদী-খৃষ্টানদের ধর্মযুদ্ধ বলে অভিহিত করেছে। বাস্তবেই এটা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদী-খৃষ্টানদের সর্বাত্মক ধর্মযুদ্ধ। কেননা একদিকে আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স যুদ্ধ বিমান নিয়ে লিবিয়ার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, অপরদিকে মার্কিন সেনাপ্রধান মাইক মুলেন ঘোষণা করেছে, “মুসলমানদের কুরআন পড়া যে কোন মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। কারণ যারা কুরআন পড়ে তারাই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়া চ্যালেঞ্জ।” পাশাপাশি আমেরিকার ফ্লোরিডা রাজ্যের খৃষ্টান ধর্মযাজক ওয়েইন সেপ পবিত্র কুরআনে অগ্নি সংযোগ করে পুড়িয়ে দিয়েছে। এ দিকে বৃটেন-আমেরিকা বলেছে, মাদরাসায় জঙ্গি তৈরী হয়। তাই মাদরাসার সিলেবাসে সংস্কার সাধন করতে হবে। অন্যদিকে খৃষ্টান মিশনারীর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ধর্মান্তর প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন পূর্বক ইন্দোনেশিয়া ও সুদানকে ভাগ করে সাম্রাজ্যবাদীরা দু’টি খৃষ্টান রাজ্য কায়েম করেছে। এমনকি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলকে খৃষ্টান রাজ্যে পরিণত করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ধর্মান্তর প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজি কোন রকম রাখ-ঢাক না রেখে ঘোষণা দিয়েছেন, লিবিয়ার পর অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে হামলা চালানো হবে। এহেন নাজুক পরিস্থিতিতে এখনো কি মুসলিমবিশ্ব ঘুরে দাঁড়াবে না? এখনো কি বোকারমত খৃষ্টান শাসকদের তাবেদারীতে ব্যস্ত থাকবে?
এ মুহুর্তে মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রনায়কদের দায়িত্ব হচ্ছে, সমস্ত জড়তা ঝেঁড়ে ফেলে ইসলামী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করা। ইসলাম বিরোধী সকল মত ও পথ পরিহার করা। দেশের অভ্যন্তরে ইসলাম বিরোধী সকল তৎপরতা কঠোর হস্তে দমন করা। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ইহুদী-খৃষ্টানসহ সকল কাফের শক্তি তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“। সুতরাং আল্লাহ যাদেরকে শত্র“ বলে ঘোষণা করেছেন তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না। ওহে মুসলিম শাসকগণ! তোমরা কি পারবে স্বধর্ম ত্যাগ করে খৃষ্টান হয়ে যেতে? যদি না পারো তাহলে খৃষ্টানদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য যদি দেশের সব মাদরাসাও বন্ধ করে দাও, সমস্ত আলেমদেরকে ফাঁসিতে ঝুলাও, তবু ওদেরকে খুশি করতে পারবে না। কারণ ওরা ইসলাম ত্যাগ না করা পর্যন্ত কারো উপর খুশি হয় না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা জানিয়ে দিয়েছেন- “ইহুদী-খৃষ্টানরা তোমার উপর কখনো খুশি হবে না, যে পর্যন্ত না তুমি তাদের ধর্ম গ্রহণ করবে।” কুরআনের এ আয়াত পড়ো আর সাদ্দাম, হোসনি মোবারক, বেন আলী ও গাদ্দাফীর পরিণতি দেখে শিক্ষা গ্রহণ করো।
মাসিক আল-জামিয়ার সম্পাদকীয়
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজি কোন রকম রাখ-ঢাক না রেখে ঘোষণা দিয়েছেন, লিবিয়ার পর অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে হামলা চালানো হবে। এহেন নাজুক পরিস্থিতিতে এখনো কি মুসলিমবিশ্ব ঘুরে দাঁড়াবে না? বক্তব্যটি কোন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে জানালে ভাল লাগত। আপনাকে ধন্যবাদ।
ইহুদী খৃষ্টানরা কখনো মুসলমানদের বন্ধু হতে পারেনা। এটা মহান আল্লাহর শ্বাশত বাণী আর এটাই চির সত্য।
@রাসেল আহমেদ, সহমত ।
লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ এমন গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়ে তার বক্তব্য উপস্হাপনের জন্য।