বর্তমান পরিস্থিতি এবং আমার অনুভূতি
লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ শুক্রবার, মে ১৩, ২০১১ (২:২৯ অপরাহ্ণ)
একসময় এমন ছিল যে কোন বিষয়ের উপর উপদেশ, পরামর্শ ও অনুভূতি প্রকাশে লিখতে-বলতে মনে যথেষ্ঠ আগ্রহ পেতাম। কিন্তু বর্তমানে পরামর্শের কোন মূল্যায়ন হয় না বিধায় কোন কিছু লিখতে বলতে ইচ্ছাও হয় না, আগ্রহ হয় না।
তবে বাংলাদেশে বর্তমানে বহুল আলোচিত কিছু বিষয়ে আমি ইতিপূর্বে কিছু পরামর্শ দিয়েছিলাম, যা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। কিছু বিষয় লিখিতভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করেছিলাম, যাতে বিশেষভাবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ সম্পর্কে পরামর্শ ছিল।
১। সেখানে বলেছিলাম জাতীয় শিক্ষানীতিতে সেক্যুলার শিক্ষানীতি কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে, যা মোটেই এদেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে শুভ পরিণতি বয়ে আনবে না। পরবর্তীতে সংশোধিত শিক্ষানীতিতে “সেক্যুলার শব্দটি সংযোজিত হয়নি, তবে এপর্যায়েও শাব্দিক পরিবর্তন ব্যতীত মৌলিক কোন পরিবর্তন আসেনি।
২। খসড়া শিক্ষানীতিমালা এক পর্যায় “ বাইবেলের আলোকে সমস্যার সমাধান করা হবে” উল্লেখ ছিল। এটাকে চরম বিভ্রান্তিকর বলে সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছিলাম। সংশোধিত নীতিমালায় “বাইবেলের আলোকে সমস্যার সমাধান” বাক্যটি বাদ পড়েছে, কিন্তু শাব্দিক পরিবর্তন ব্যতীত কোন মৌলিক পরিবর্তন করা হয় নাই।
৩। খসড়া শিক্ষানীতিমালায় “৮ বৎসর বাধ্যতামূলক” করার কারণে মাদ্রাসা ভিত্তিক শিশু শিক্ষা মারাত্মকভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হওয়ার দিকসমূহ তুলে ধরা হয়েছিল, বিশেষ করে পবিত্র কুরআন মুখস্থ করার বিষয়টি গোচরে আনা হয়েছিল, কিন্তু এ ব্যাপারে মোটেও ভ্রুক্ষেপ করা হয়নি।
৪। শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটিতে মাদ্রাসা শিক্ষা, বিশেষ করে বেসরকারী কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা-সম্পর্কে অভিজ্ঞ সদস্যের নিয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এই পরামর্শও গৃহিত হয়নি। এমতাবস্থায় জাতীয় শিক্ষানীতির ভবিষ্যৎ কী হবে,তা ভাবতেও গা শিউরে উঠে।
৫। ফাত্ওয়ার বিষয়টি নিয়ে বহুকাল ধরেই ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়ে রয়েছে। এ বিষয়েও যথাযথ পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এ ব্যাপারে সমাধানের পথ সুগম না করে কেবল এক তরফা পদক্ষেপ নেওয়ার পরিণামে ফাত্ওয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক কঠোর ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অথচ বিষয়টি নিতান্ত ধর্মীয় ব্যাপার। আর ধর্মীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ না করা এবং তা সংরক্ষণে সরকার জনগণের সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
৬। ফাত্ওয়া কোন বিচার অথবা গ্রাম্য সালিশ নয়, বরং ফাত্ওয়া হচ্ছে মুসলমানদের জীবন চলার পাথেয়। কোন বিষয়ে শরীয়তের দিকনির্দেশনাকে ফাত্ওয়া বলা হয়। পবিত্র কুরআন এবং হাদীসে পাকে মুসলমানদের ইসলামী জীবন অনুশীলনের জন্য ফাত্ওয়ার অনুসরণ-অনুকরণের অপরিসীম তাকীদ রয়েছে।
৭। মুসলিম জাতির মূল সংবিধান “পবিত্র কুরআনের পাঁচটি সূরায় ৯টি আয়াতে ১১বার ফাত্ওয়ার আবশ্যকতা বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা নিসা আয়াত ঃ ১২৭ ও ১৭৬, সূরা ইউসুফ আয়াত ঃ ৪১-৪৩-৪৬, সূরা কাহাফ আয়াত ঃ ২২, সূরা নমল আয়াত ঃ ৩২, সূরা সাফ্ফাত আয়াত ঃ ১১ ও ১৪৯, এই সমস্ত আয়াতে ফাত্ওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সুস্পষ্ট করা হয়েছে। সুতরাং এ ব্যাপারে সরকারের অথবা আদালতের কারো কোন এখতিয়ার নেই।
৮। একথা সবারই জানা যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে নারীনীতি নিয়ে কোন ধরণের জল্পনা-কল্পনা ছিলনা, কিন্তু ইয়াহুদী-খৃষ্টান, মুশরিক-নাস্তিক এবং ইউরোপ- আমেরিকার চিন্তাধারায় বিশ্বাসী দালালচক্রের তৎপরতায় ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিষয়টি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
২০০৮-এর নারীনীতিতে কুরআন বিরোধী ধারা ছিল সর্বমোট ৫৯টি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশের সর্বস্তরের উলামা-মাশায়েখ এবং মুসলিম জাতির দুর্বার আন্দোলনের মুখে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়।
৯। বর্তমান সরকার কুরআন বিরোধী কোন আইন পাশ না করার ব্যাপারে জনগণের নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ,কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো যে, ২০০৮ সালের নারীনীতির কুরআন বিরোধী কোন ধারা সংশোধন করা তো দূরের কথা, বরং আরো নতুন ৩৪টি ইসলাম ও কুরআন বিরোধী ধারা সংযোজন করে বর্তমান সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ননীতি ২০১১ অনুমোদন দেয়।
১০। এসব ধারাসমূহ- সূরা ফাতিহা আয়াত ঃ ৪, সূরা বাকারাহ আয়াত ঃ ১৮৭-২২৩-২২৮ ও ২৮২, সূরা নিসা আয়াত ঃ ১-৪-২৩-২৪-২৫ ও ৩৪, সূরা রাআদ আয়াত ঃ ২৬, সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত ঃ ৩০, সূরা হজ আয়াত ঃ ৫, সূরা নূর আয়াত ঃ ১ থেকে ২৬, ৩০ থেকে ৩৪ ও ৫৯, সূরা মুমিন আয়াত ঃ ১৪, সূরা কাছাছ আয়াত ঃ ৮২, সূরা আনকাবূত আয়াত ঃ ৬২, সূরা রূম আয়াত ঃ ২৭, সূরা আহযাব আয়াত ঃ ৩৩-৩৬-৫৩-৫৫ ও ৫৯, সূরা সাবা আয়াত ঃ ৩৬ ও ৩৯, সূরা জুমার আয়াত ঃ ৫২, সূরা শুরা আয়াত ঃ ১৩, সূরা তালাক আয়াত ঃ ১-৪-৬ ও ৭ এর সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। এতে আছে ইয়াহুদী-নাসারাদের প্রণীত “সিডও” বাস্তবায়নের কথা-(১৭.২ ও ৪২.১ (খ) (৪) এবং নাস্তিক-মুরতাদদের প্রণীত শিক্ষাণীতি ২০১০ অনুসরণের নির্দেশনা-(২১.১)
১১। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১তে কুরআন বিরোধী ধারাসমূহ হলো- ১, ২, ৪, ৪.১, ১০, ১৫, ১৬.১, ১৬.৩, ১৬.৫, ১৬.৮, ১৬.১২, ১৬.১৩, ১৬.১৫, ১৬.১৯, ১৬.২২, ১৭.১, ১৭.২, ১৭.৫, ১৭.৬, ১৮.১, ১৮.৪, ১৯.৫, ১৯.৬, ২০.৩, ২১.১, ২২.১, ২২.২, ২২.৩, ২২.৪, ২৩, ২৩.৫, ২৪, ২৫.১, ২৬.১, ২৭, ২৭.১, ২৭.২, ২৮, ২৯.১, ২৯.৩, ২৩, ২৩.১, ৩২.২, ৩২.৩, ৩২.৪, ৩২.৬, ৩২.৭, ৩২.৮, ৩২.৯, ৩৩.২, ৩৩.৩, ৩৩.৪, ৩৩.৫, ৩৩.৬, ৩৩.৭, ৩৪.৯, ৩৫.২, ৩৫.৩, ৩৬.১, ৩৬.২, ৩৬.৩, ৩৮.২, ৪০.১, ৪০.৩, ৪০.৪, ৪২.১, (ক)৪২.১(খ) (৪) ৪২.১ (ঘ) ৪২.২, ৪৪, ৪৬.১, ৪৬.৫, ৪৬.৬ (১)৪৬.৬ (২) ৪৭.৩, ৪৭.৭, ৪৯/ সংশয় নিরসনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়ের ওয়েব সাইট ভিজিট করা যেতে পারে।
১২। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর
(ক) ব্যাক্তিগত অনুশীলন,
(খ) বিসমিল্লাহর মাধ্যমে বক্তব্য শুরু করা,
(গ) বক্তব্যের মাঝে মাঝে ইন্শাআল্লাহ বলা,
(ঘ) ‘আমি একজন মুসলিম’ বলে নিজের পরিচয় তুলে ধরা।
(ঙ) জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিতে “কুরআন বিরোধী কোন কিছু নাই- বলে ভাষণ দেয়া” ইত্যাকার বিষয়গুলোই আমাকে এই প্রবন্ধটি লিখতে উৎসাহিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য কোন দৃষ্টিতে দিলেন তা ভাবতে হচ্ছে।
১৩। কারণ প্রধানমন্ত্রী “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১” স্বয়ং অধ্যয়ন করে, বুঝে শুনে স্বেচ্ছায় এই বক্তব্য দিয়েছেন? নাকি অধ্যয়ন না করে শুধু-শুধু কতিপয় লোকের প্ররোচনায় এরূপ অবাস্তব বক্তব্য দিয়েছেন? যেভাবেই দিন না কেন, এ বক্তব্য একজন বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে না।
১৪। প্রধানমন্ত্রী অন্য কারো দেয়া তথ্যের উপর বিশ্বাস করে এবক্তব্য দিয়েছেন। এটা অস্বাভাবিক নয়। কেননা একজন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দেশের খুঁটিনাটি সকল বিষয়ে খোঁজ- খবর নেওয়া সম্ভব হয় না। বরং প্রত্যেক বিষয়ের সচিব ও উপদেষ্টাদের প্রতি আস্থাশীল হতে হয়।
১৫। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তদুপরী ইতিপূর্বে এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জোরালো আন্দোলন হয়েছে, সেহেতু প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়টি স্বীয় তত্ত্বাবধানে সংশোধন করে নিলে ভালো হতো। কুরআন বিরোধী ধারাগুলো সংশোধন করে নেয়ার এখনও সুযোগ আছে। তাই আমি এবিষয়ে ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
১৬। “নারী উন্নয়ন নীতিতে “কুরআন বিরোধী কোন কিছু নাই” প্রধানমন্ত্রী তাঁর এই বক্তব্যের বাস্তবতা প্রমাণের প্রয়োজনে “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি” থেকে উল্লেখিত কুরআন বিরোধী ধারাসমূহ বাদ দিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন। পারেন স্বীয় ইমেজের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে।
১৭। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ৯৩টি কুরআন বিরোধী ধারা নারী নীতিতে সংযোজন করে যারা জনগণ ও সরকারকে মুখোমুখী করেছে, তাদেরকে খুঁজে বের করা এবং তাদের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে এমন দুঃখজনক পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোন দিন সৃষ্টি না হয়। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছে করলে সহজেই বর্তমান অবস্থার সমাধান হতে পারে।
১৮। অদূরদর্শী কতিপয় লোক ইতিপূর্বে নিম্নোক্ত বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান করেছিল । তারা বলেছিল-
(ক) ৭২-এর সংবিধান অবশ্যই হুবহু বাস্তবায়িত হবে। আর তা হলে-
(খ) সংবিধান থেকে “বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম” বাদ পড়বে
(গ) সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস বাদ পড়বে
(ঘ) রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ পড়বে
(ঙ) ইসলামী রাজনীতি বন্ধ হবে
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কঠোর ভূমিকা এবং সুস্পষ্ট ঘোষণার পর ষড়যন্ত্রকারীদের বুলি সহসাই বদলে গেছে। মূলত তাদের এ ধরনের লাগামহীন বক্তব্য কেবল মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার কারণ ছিলনা বরং দেশকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঠিক-সুন্দর ভূমিকার কারণে আপাতত সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি।
১৯। সংবিধানের বিষয় নিয়ে সৃষ্ট চরম অবস্থা নিরসনের মধ্যপথে হঠাৎ করে সেই অশুভ শক্তি “কুরআন বিরোধী “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি” দৃশ্যপটে নিয়ে এসেছে। মনে হয় একটি ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষী শক্তি সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার নেপথ্যে তৎপরতায় রত আছে। এ ব্যপারে প্রধান মন্ত্রীকেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
২০। বর্তমান সরকার নানা ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে দু’বৎসর অতিক্রম করে ৩য় বৎসরে পা রেখেছে। ইতিমধ্যে এমন কিছু বিষয়াদি কঠিন সমস্যার রূপ ধারণ করেছে যার পরিণাম কারো জন্য শুভ হতে পারে না। মানুষ সময়ের তাগীদে অনেক কিছুই মেনে নেয়, সমঝোতার পথ অবলম্বন করে থাকে। কিন্তু স্বীয় ধর্মীয় ভাবমূর্তি সংরক্ষণের প্রয়োজনে জীবন-মরণের পরোয়া করে না। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের মুসলমানদের খোদাভীরুতা, রাসূলের প্রতি শ্রদ্ধা, পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ-র অনুসরণ-অনুকরণে কঠোর অনুশীলন ও ইসলাম প্রীতি বিশ্ব জুড়ে প্রসিদ্ধ।
২১। এদেশে লক্ষ লক্ষ মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকাহ, সভা-সমিতি, ইসলামী সংস্থা, সংগঠন বিদ্যমান রয়েছে। জুমার দিন কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষ সিজদায় লুটিয়ে পড়ে। শবে বরাত, শবে কদর, ঈদের সময়ে দেশের ৯০ ভাগ মানূষ আল্লাহর দরবারে নতশীর হয়। তাবলীগের বিশ্ব এজতেমার সুবাদে সারা পৃথিবীর মানুষ এখানে জড়ো হয়। ইসলামের কেন্দ্রমূল মক্কা-মদীনাসহ সমগ্র বিশের¦ মুসলমানদের রয়েছে বিশ্ব নেটওয়ার্ক। বর্তমানে এর প্রাণকেন্দ্র মনে হচ্ছে বাংলাদেশ। সুতরাং বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধী আইন প্রণয়ন করার কোন অবকাশ নেই এ ধরনের যে কোন প্রচেষ্টা এখানে ব্যর্থ হতে বাধ্য।
২২। দেশ ও দেশবাসীর প্রয়োজনে সর্বক্ষেত্রে শৃংখলা প্রতিষ্ঠা এবং দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণœ রাখার তাগিদে সরকারকে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহে ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার-
(ক) সংবিধান সংশোধনের নামে অনৈসলামিক সংবিধান রচনা এবং কার্যকর করার প্রয়াস দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। বিধায় এধরণের মনোভাব বর্জনীয়।
(খ) জাতীয় শিক্ষানীতির কার্যকারিতা স্থগিত করে নির্ভরযোগ্য উলামা-মাশায়েখদের সমন্বয়ে নতুন শিক্ষা কমিটি গঠন করা এবং ইসলামী শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ণ ও কার্যকর করা।
(গ) কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাকে স্বতন্ত্র শিক্ষা হিসেবে মঞ্জুরী দেওয়া। এ বিষয়ে সর্বজন শ্রদ্ধেয় উলামা-মাশায়েখদের পরামর্শকে প্রাধান্য দেওয়া।
(ঘ) ফাত্ওয়া নিষিদ্ধ করে দেয়া রায়কে বাতিল ঘোষণা করা এবং নির্ভরযোগ্য মুফতীদের সমন্বয়ে মুফতী বোর্ড গঠনে উলামা-মাশায়েখদেরকে দায়িত্ব দেওয়া।
(ঙ) মদ, জুয়াসহ মানবতা ও ইসলাম-বিরোধী আইনসমূহে সংশোধনী আনা।
(চ) জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ ত্বরিৎ স্থগিত ঘোষণা করে কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক ধারাসমূহ বাতিল করে নতুন নারীনীতি রচনা করা।
মাওলানা মাহমূদুল হাসান
খতীব, গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
প্রিন্সিপাল, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
আমীর, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশ।
তারিখ, ৬ এপ্রিল ২০১১
আল্লাহ তায়ালা হযরতের হায়াতের মাঝে খুব বরকত দান করুন।