লগইন রেজিস্ট্রেশন

শান্তি একমাত্র কুরআনের পথেই

লিখেছেন: ' মাসরুর হাসান' @ শনিবার, মে ২১, ২০১১ (৭:৪১ অপরাহ্ণ)

মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান
স্থান : গুলশান সেন্ট্রাল জামে মসজিদ, তারিখ : ০৮/০৪/১১ ইং(জুমার নামাযের পূর্বে)

হাদীসে পাকে উল্লেখ আছে যে, আল্লাহ জাল্লা শানুহু বান্দার প্রতি স্বীয় আচরণ প্রসঙ্গে বলেছেন, اناعند ظن عبدي بي অর্থাৎ বান্দা আমার ব্যাপারে যেমন ধারণা পোষণ করে, তার সাথে আমার ব্যবহার আচরণ সে রকমই হয়ে থাকে। উল্লেখিত হাদীসটিকে হাদীসে কুদসী বলা হয়। হাদীসে কুদসী ঐ হাদীসকে বলে যার শব্দ ও অর্থ আল্লাহর হলেও সেটা কুরআনের অংশ নয়। হাদীসে কুদসীর শব্দ ও অর্থ আল্লাহপাক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্তরে ঢেলে দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসে কুদসী বর্ণনা করার সময় বলতেন যে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাকে বলে দেয়া হয়েছে। সমগ্র হাদীসের মধ্যে হাদীসে কুদসীর মর্যাদা সবচেয়ে উপরে। এরূপ হাদীসের সংখ্যা দুশত সত্তর কিংবা বাহাত্তর হবে। মুহাদ্দিসগণ লক্ষ লক্ষ হাদীস থেকে বাছাই করে হাদীসে কুদসীর স্বতন্ত্র কিতাব রচনা করেছেন। সমস্ত হাদীসে কুদসীর মধ্যে বিশেষ দুটি হাদীস রয়েছে। একটি তো এইমাত্র উল্লেখ করলাম, অন্যটি হলো- رحمتي سبقت علي عضبي “আমার দয়া আমার ক্রোধকে পরাজিত করেছে।” অর্থাৎ আল্লাহর দয়া ও রহমত শক্তিমত্তার দিক দিয়ে ক্রোধের উপর প্রবল।

হাদীসের শিক্ষা
এই হাদীসের শিক্ষা কী? শিক্ষা হলো, আল্লাহর আযাবকে শত্র“র আযাবের ন্যায় মনে না করা। যেমন মাতা-পিতা আপন সন্তানকে, উস্তাদ স্বীয় ছাত্রকে, পীর তাঁর মুরীদকে সংশোধনমূলক যে শাস্তি দেয়, তাকে কখনো শত্র“তাবশত শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে মনে করা হয় না। একথা নিশ্চিত সত্য যে, মাতা-পিতা, উস্তাদ ও পীরের তুলনায় আল্লাহর দয়া বান্দার প্রতি শতগুণ বেশি।
কোন বান্দা যদি মনে করে, আল্লাহ তায়ালা জল্লাদ, তাঁর মধ্যে দয়া-মায়া নেই, তাহলে প্রথম হাদীস অনুযায়ী বলা যায় যে, আল্লাহ পাক উক্ত বান্দার সঙ্গে সেরকম আচরণই করবেন। দুনিয়ার জীবনেও দেখা যায় যে, মালিকের প্রতি যদি কর্মচারীরা খারাপ ধারণা পোষণ করে তাহলে মালিক অসন্তুষ্ট হয়ে ঐ কর্মচারীদের সাজা দেন কিংবা চাকরিচ্যুত করেন। আল্লাহপাক বান্দাকে সৃষ্টি করে কোনো আবেদন-নিবেদন ছাড়াই অসংখ্য নেয়ামত দিয়ে পৃথিবীতে বসবাস করতে দিয়েছেন। এরপরও যদি বান্দা আল্লাহর রহমতের ব্যাপারে বিরূপ ধারণা পোষণ করে তাহলে আল্লাহপাক বান্দার সঙ্গে ভিন্ন আচরণ করবেন কেন?
খারাপ ধারণার কারণে আনুগত্যহীনতা সৃষ্টি হয়, ফরমাবরদারী করতে মনে চায় না। মূলত মানুষের কাজ দুভাগে বিভক্ত। (১) ভালো কাজ, (২) মন্দ কাজ। এর বাইরে কোন কাজ নেই। তবে কোনো কাজ ভালো বা মন্দ হওয়ার মাপকাঠি হলো আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়ত। অতএব আল্লাহর অফুরন্ত নেয়ামতের মাঝে সন্তরণকারী বান্দার কর্তব্য হলো, প্রতিটি কাজ করার আগেই চিন্তা করা যে, এটা শরীয়তের নিকট ভালো না মন্দ।

জীবনে তিন কাল
আল্লাহ পাক মানব জীবনের জন্য তিনটি কাল সৃষ্টি করেছেন, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকাল। বুদ্ধিমান ঐ ব্যক্তি যে অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে বর্তমান কালে প্রস্তুতি নেয় যাতে ভবিষ্যতে সঠিক পথে থাকতে পারে। যারা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের প্রস্তুতি নেয় না তাদের জীবনে সফলতার দেখা মেলে না। আল্লাহপাকই মানুষকে এই বোধ দান করেছেন যে, পেছনের জীবনে ভুল হয়ে গেলে সে তা সংশোধন করে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য তৈরী হয়ে যায়।

মৃত্যু ও আখেরাতের স্মরণ
অতীত জীবনে অনেক মানুষ সম্পদশালী, ক্ষমতাশালী ছিল, তারা আজ কবরবাসী। অতীত জীবনে আমরা ছোট ছিলাম, বর্তমানে আমরা বৃদ্ধ, ভবিষ্যতে আমাদেরকেও কবর জগতের বাসিন্দা হতে হবে। এরপর রয়েছে অনন্তকালের এক মহা জীবন। কবর জীবন ও আখেরাতের জীবন সম্পর্কে ভাবনা চিন্তা যার মাথায় সর্বদা বিরাজমান থাকে সে সফলকাম হতে পারবে। আর যদি মরিচিকাময় এই পৃথিবীর পেছনে পড়ে মৃত্যু ও আখেরাতের জীবনের কথা ভুলে বসে থাকে, তাহলে তার জীবন হবে দুর্ভাগ্যে ভরা। পার্থিব জীবনের সাময়িক আনন্দের জন্য মানুষ কতই না পাগলপারা। হায়রে বুদ্ধি-বিবেকের অধিকারী মানুষ! তুমি কি মনে করেছো যে, পশু-পাখির মতো এই জীবনের পর আর কোনে জীবন নেই?
মৃত্যু ও আখেরাতের স্মরণই পারে মানুষকে প্রকৃত মানুষ বানাতে এবং পশু ও তার মধ্যকার ব্যবধান ফুটিয়ে তুলতে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বস্থানে, সবসময় মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ করো। যাতে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসে মত্ত না হয়ে পড়ো। মৃত্যুর স্মরণ এমন একটি বিষয় যা অন্তর থেকে দুনিয়ার ভোগ-বিলাসিতার চিন্তা দূর করে, আত্মীয়-স্বজন, সন্তান-সন্তুতি ও ধন-সম্পদের অযাচিত আসক্তি নষ্ট করে দেয়। সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ মাত্রই মৃত্যুর চিন্তায় বিভোর থাকে। যারা মৃত্যুর চিন্তা করে না, দুনিয়া নিয়ে পড়ে থাকে, তাদের বুদ্ধিকে সুস্থ বলা যায় কীভাবে? বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান কেউই কবরে সুওয়াল-জওয়াবের সময় পাশে থাকবে না। যারা আজ স্লোগান দিয়ে বলে, “ওমুক ভাই তুমি এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে” এদের কেউই কবরের সঙ্গী হবে না। এ বিষয়টি যার যত বেশি বুঝে আসবে, তার বুদ্ধিকে তত বেশি সুস্থ বলা যাবে।

অস্থায়ী সঙ্গী
যে বান্দা মৃত্যুকে স্মরণে রেখে এই আকীদা পোষণ করে যে, মৃত্যুর পর আল্লাহ ছাড়া কোনো সাহায্যকারী ও বন্ধু থাকবে না, সে দুনিয়ায় অর্থসম্পদ, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে অস্থায়ী সঙ্গীই মনে করে থাকে। নমরুদ, ফেরাউন, শাদ্দাদ, হামান, আবু জাহল প্রমুখ অর্থ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রতি বিশ্বাসী ছিল না। বর্তমান পৃথিবীতেও তাদের অসংখ্য-অগণিত অনুসারী রয়েছে যারা পুনর্জীবন সম্পর্কে বিশ্বাসী নয়। অথচ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, كل نفس ذائقةالموت প্রত্যেক মানুষকেই (একদিন না একদিন) মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতেই হবে। মানুষের মৃত্যুর নির্ধারিত সময় সম্পর্কে তাকে কখনো মিডিয়ার মাধ্যমে কিংবা টেলিফোন করে অগ্রিম জানানো হবে না। হঠাৎ করেই ফেরেশতা এসে আত্মা বের করে নিয়ে যাবে। নির্ধারিত সময় থেকে সামান্যতম বিলম্ব করা হবে না।
মৃত্যু একটি গোপন শক্তি। এর মোকাবেলা করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়। যার হুকুমে মৃত্যু অবধারিত হয়, যদি তাঁর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা যায়, তাঁর প্রতি ভালো ধারণা করা যায়,তাহলে আশা করা যায় কবরের পরবর্তী জীবনে দুর্ভোগের শিকার হতে হবে না।

প্রধান তিনটি কাজ
পার্থিব জীবনে মানুষ যদি তিনটি কাজ করতে পারে, তাহলে এই জীবন ও মৃত্যুর পরবর্তী জীবন সাফল্যময় হবেই। এই তিনটি কাজ পরিত্যাগ করলে সফলতা তো দূরের কথা মহা বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। কাজগুলো হলো- (১) পবিত্র কুরআনকে জীবনের পূর্ণাঙ্গ গাইড হিসেবে গ্রহণ করা। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে যুগে এসেছিলেন সে যুগের মানুষের মাঝে পৌত্তলিকতা, অর্থের লোভ, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, নারীর সম্ভ্রমহানী, মেয়ে সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়া, চুরি, খুন, ডাকাতি, রাহাজানি সবকিছুই ছিল। আল্লাহ পাক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পাঠিয়ে কুরআনের মাধ্যমে সেই বর্বর জাতিকে কেমন পরিশুদ্ধ করেছিলেন ইতিহাসের সোনালী পাতায় এর বিশদ বিবরণ লেখা আছে। মুসলমানের উচিত সেগুলো পড়ে শিক্ষা গ্রহণ করা। পবিত্র কুরআন আল্লাহর কিতাব। সমগ্র জগতবাসীর জন্য হেদায়েতের মাধ্যম। সমাজ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, ক্ষমতার লোভ, প্রতিহিংসা, অর্থের লোভ ইত্যাদি ছোট-বড় সব ধরনের অপরাধ নির্মূল করতে পারে এই কিতাবের বিধান। এই কুরআন মানুষকে অন্ধকার জগত হতে বের করে আলোর জগতে নিয়ে আসে। পবিত্র কুরআন নির্দেশিত পথ ছাড়া মানুষ যে পথেই চলবে সে পথ হবে আবু জাহ্ল, নমরূদ, হামান, ফেরাউন ও নাস্তিকের পথ। কুরআনের পথ ছাড়া ভিন্ন পথে শান্তি মিলবে না আদৌ। কুরআনের বিপক্ষে কথা বলে কত নাস্তিক আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, ইতিহাস তার সাক্ষী। (২) নামায কায়েম করা। নামায পড়তে হবে মনের আগ্রহে, আল্লাহর প্রাপ্য নির্দেশ পালনার্থে। মানুষকে দেখানোর জন্য নামাযকে নামায বলে না। হজ্ব, যাকাত এসব ইবাদত ধনাঢ্য ব্যক্তিদের পালনীয়। জীবনে একবার হজ্ব এবং বছরে একবার করে যাকাত আদায় করা সম্পদশালীদের জন্য ফরয। কিন্তু সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাযকে এরকম সীমিত করা হয়নি; বরং নামায সর্বশ্রেণীর লোকদের জন্য প্রতিদিন পাঁচ বার সঠিক সময়ে আদায় করা ফরয। মানুষ প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করলে যেমন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে, তেমনি পাঁচবার ঠিকমতো নামায আদায় করলে বান্দা সকল প্রকার পাপাচার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে সক্ষম হবে। যে মুসলিম নামায পড়ে না তার দ্বারা সমাজে সন্ত্রাস, রাহাজানী ও ইভটিজিংসহ সবধরনের গোনাহ ও অপরাধ সংঘটিত হওয়া স্বাভাবিক। এমন লোকের দ্বারা অন্যের কল্যাণ হওয়ার কথা তো চিন্তাই করা যায় না। সে যদি রাষ্ট্র বা সমাজের কোনো পর্যায়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়, তাহলে জাতির ভাগ্যে কী হবে তা বলাই বাহুল্য। যে নামায পড়ে না তার দ্বারা জাতির কল্যাণের আশা করা বোকামী বৈ কিছু নয়। এই বোকামি থেকে আমরা কেউ মুক্ত কি না তা ভেবে দেখা যেতে পারে। (৩) অন্তর পবিত্র রাখা। অন্তরকে পবিত্র রাখতে হলে দিলে আল্লাহর ভয় ও আখেরাতের স্মরণ সর্বদা জাগ্রত রাখতে হবে। যার মাঝে আল্লাহর ভয় ও আখেরাতের স্মরণ নেই, তার দ্বারা আল্লাহর নাফরমানীর সব স্তর অতিক্রম করা সম্ভব। আল্লাহপাক এই তিনটি কাজ আমাদের সবাইকে করার তাওফীক দান করুন।

খতীবদের জুমাপূর্ব আলোচনার বিষয়
যে আলোচনা করা হলো এটা আমাদের সবার জন্য জরুরী ও উপকারী। দ্বীনের এমন সব উপকারী বিষয়েই জুমার খতীবগণ আলোচনা করে থাকেন। কিন্তু দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, বর্তমানে অনেক মসজিদের খতীব সাহেবদেরকে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দিষ্ট বিষয়ে বয়ান করার ফরমায়েশ সম্বলিত চিঠি পাঠানো হচ্ছে। সমাজের সম্মানিত ইমাম ও খতীবদেরকে এভাবে ক্ষমতার গোলাম বানানোর চেষ্টাকে সমীচীন বলা যায় না। ইমাম ও খতীবের দায়িত্ব হলো উম্মতকে দ্বীনের পথে আহবান করা এবং সহীহভাবে নামায পড়ানো। একদিকে বলা হবে, মসজিদে রাজনৈতিক কথা বলা নিষেধ, আবার অপর দিকে বলা হবে, আমাদের নির্ধারণকৃত বক্তব্য অবশ্যই রাখতে হবেÑ সে বক্তব্য রাজনীতির সাথে সম্পর্ক রাখলেও, এটা তো দ্বিমুখী নীতি। কৃষি কলেজে যেমন কেবল কৃষি নিয়েই পড়া শোনা ও আলোচনা হয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন ঐ বিষয়েই জ্ঞান আদান-প্রদান করা হয়, ঠিক তেমনি আল্লাহর ঘর মসজিদে মানুষের চরিত্র সংশোধন, আল্লাহর ফরমাবরদারী ও কুরআনের অনুসরণ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। এখানে হস্তক্ষেপ করাটা অবাঞ্ছনীয়। যারা আমার নিকট চিঠি পাঠিয়েছেন আমি তাদেরকে লক্ষ্য করে বলছি, আপনারা আমার আজকের প্রস্তাবগুলো গ্রহণ করুন। আমরা মুসলমান,কুরআনের বাইরে কোন বক্তব্য মসজিদে দেয়া সম্ভব নয়। যারা চিঠি দিয়েছেন, দেশ পরিচালনা করেন, আপনারা সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পাবন্দী করুন, মসজিদের হক আদায় করুন। আগেও বারবার বলেছি যে,সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন বন্ধ,নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাকার সব ধরনের অন্যায় দূর করে ন্যায়-ইনসাফ কায়েম করতে হলে সর্বপ্রথম নামাযের গুরুত্ব দিতে হবে।যারা নামায পড়ে না তাদের মুখ দিয়ে সন্ত্রাস বন্ধ,নারীর অধিকার আদায় ও নির্যাতন বন্ধের শ্লোগান শোভা পায় না।
দিলের ইসলাহ তথা আত্মাকে পরিশুদ্ধ করুন। বাস্তবকে বাস্তব আর অবাস্তবকে অবাস্তব এবং সত্যকে সত্য বলার মানসিকতা তৈরি করতে না পারলে জীবনে অর্জন বলে কী রইলো?
সমস্যার সমাধান এভাবে সম্ভব হবে না। মসজিদকে মসজিদ হিসেবে রাখতে হবে। আজ এক সরকারের চিঠি তো কাল অন্য সরকারের চিঠি, আজ অমুক সচিবের নির্দেশ, তো কাল ওমুক সচিবের নির্দেশ; তাহলে ইমাম ও খতীব সাহেবের ব্যক্তিত্ব রইলো কোথায়? খতীব তো মানুষের কথা প্রচার করার জন্য খতীব হননি। খতীব প্রচার করবেন আল্লাহর তথা কুরআনের কথা। অতএব সবাই আসুন, কুরআনের সামনে নিজের মাথা নুয়ে দেই।

কুরআনের সাথে মুসলমানের সম্পর্ক
মুসলমান দাবী করলে কুরআনের আনুগত্যই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। মুসলমান কখনো কুরআনের বিপক্ষে যেতে পারে না। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই একজন মুসলিম নারী। মন্ত্রীপরিষদের প্রায় সবাই মুসলিম। তারা কুরআনের বিরুদ্ধে কিছু করতে চান একথা আমরা ভাবতে চাই না।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে ও পরে বারবার বলেছেন, কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন প্রণয়ন করা হবে না। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। তবে তাঁকে একটি জিজ্ঞাসাও করতে চাই যে, মানুষে যে বলে, এদেশে মদের লাইসেন্সের অনুমোদন, পতিতালয়ের অনুমোদনসহ কুরআন বিরোধী আরো অনেক বিষয়ের অনুমোদন পূর্ব থেকে দেয়া আছে, এ কথা কি সত্য? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনি এগুলোর সত্যতার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আল্লাহর গযব আসার এসব মাধ্যম বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন! এতে আপনার প্রতি মুসলমানদের আস্থা-বিশ্বাস ও ভালোবাসা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।

নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রসঙ্গে
বর্তমানে নারী উন্নয়ন নীতিমালা নিয়ে দেশে চরম বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে সরকার বলছে, এই নীতিমালায় ইসলাম বিরোধী কিছুই নেই, অথচ আলেমগণ বলছেন যে, এই নীতিমালার বহু ধারা কুরআন বিরোধী। সরকারের কথাতে ফাঁক আছে। তারা শুধু বলে, এতে কুরআন বিরোধী কিছু নেই। কিন্তু আলেমদের উদ্দেশ্যে একথা বলে না যে, আপনারা আসুন! এসে বলুন কিংবা লিখিত আকারে বিস্তারিতভাবে আমাদেরকে জানান যে, কোন্ কোন্ ধারা কীভাবে কুরআনবিরোধী। সরকার এমন উদ্যোগ নিলে বিষয়টি সহজেই সমাধান হয়ে যায়। সরকারের এই সদিচ্ছা আমরা দ্রুত কামনা করছি। নতুবা জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে। বিষয়টির সমাধান না করে এভাবে চলতে থাকলে এর পরিণতি যে দেশ ও সরকারের জন্য সুখকর হবে না তা সরকারের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
পরিশেষে দেশের কর্ণধারদেরকে বলতে চাই যে, কুরআন-সুন্নাহ সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা সামনে আসলে তার সমাধানের দায়িত্ব দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বজন গ্রহণযোগ্য আলেমদের উপর ছেড়ে দিবেন। কুরআন-হাদীসের সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী আলেমরাই তার সঠিক সমাধান দিতে সক্ষম। যার যে কাজ তাকেই সে কাজের জন্য মানায়। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন!

www.dawatul-haq.com

Processing your request, Please wait....
  • Print this article!
  • Digg
  • Sphinn
  • del.icio.us
  • Facebook
  • Mixx
  • Google Bookmarks
  • LinkaGoGo
  • MSN Reporter
  • Twitter
১১৮ বার পঠিত
1 Star2 Stars3 Stars4 Stars5 Stars (ভোট, গড়: ৫.০০)

২ টি মন্তব্য

  1. আল্লাহ পাক হযরতের হায়াতের মাঝে খুব বরকত দান করুন আমীন।

  2. ধন্যবাদ আপনাকে। লেখাটা অনেক লম্বা হয়ে গেছে। লিঙ্ক দিয়ে দুই বারে পোষ্ট করলে মনে হয় ভাল হত।