আমি কেন আলিম মানব?
লিখেছেন: ' আবু আনাস' @ শুক্রবার, জানুয়ারি ১৫, ২০১০ (১২:৫১ অপরাহ্ণ)
আস-সালামু আলাইকুম, সকল প্রশংসা আল্লাহ’র জন্য, শান্তি অবতীর্ণ হোক মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি। পরম করুণাময়-দয়াশীল আল্লাহ’র নামে শুরু করছি -
আমাদের দেশের ফতোয়া দেয়া কাঠমোল্লা, মিলাদজীবি হুজুর আর মুরিদচোষা পীরদের আধিক্যে আমাদের একটা বিরাট ক্ষতি হয়ে গিয়েছে – তা হল আমরা পুরো আলিমজাতির উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। দেশের সাধারণ মাদ্রাসাগুলোতে যে অন্যায় হয় আর সেই অন্যায়ের যেই পরিমাণ ফলাও হয় (শয়তানের ফুয়েলে) তাতে খুব স্বাভাবিক যে সমাজের সবচেয়ে সম্মানী মানুষগুলোর সম্বন্ধে আমাদের কিছু ভাইয়েরা খুব নিচু ধারণা পোষণ করেন। (দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমিও আগে এই দলে ছিলাম এবং আল্লাহ আপন অনুগ্রহে আমাকে ঐ দল থেকে রক্ষা করেছেন) এখন একটু বলি কেন এই মানুষগুলোকে কেন আমাদের দরকার।
ইসলাম শিক্ষাটা একটা সিলসিলার মত ব্যাপার, রসুলুল্লাহ (সাঃ) যা বুঝেছেন, তাঁকে দেখে সাহাবিরা যা বুঝেছেন, তাবেয়িরা যা বুঝেছেন এই বুঝাটা আমরা মেনে নিব, কারণ রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর ২৩ বছর ধরে ক্বুরান নাযিল করা হল যাতে তিনি ক্বুরান জীবনে প্রতিফলন করে দেখান। আবার তিনি যা বুঝলেন এবং প্রচার করলেন তাই কিন্তু সাহাবিদের জীবনে প্রতিফলিত হল। তাই ক্বুরান তাফসির এর মূলনীতি বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে কাসির তার “আল তাফসির আল ক্বুরান আল আজিম”- এর ভূমিকায় লিখেছেন, ক্বুরানের ব্যখ্যা হবে নিম্নোক্ত ধারাবাহিকতায়, একটি না পেলে তবেই এর পরেরটিতে যাওয়া যাবে –
১। ক্বুরানের ব্যখ্যা ক্বুরান দ্বারা।
২। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণী/আদেশ/নিষেধ দ্বারা।
৩। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের দ্বারা।
৪। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর সাহাবিদের তাবেয়িদের দ্বারা।
৫। ক্বুরানের ব্যখ্যা রসুলুল্লাহ (সাঃ)এর তাবেয়িদের তাবেয়িনদের দ্বারা।
৬। ক্বুরানের ব্যখ্যা সাতটি ক্বিরাতের দ্বারা।
৭। আরবি ভাষার জ্ঞান দ্বারা।
যিনি শুধু ক্বুরান পড়লেন কিন্তু বাকি গুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখলেননা তিনি যখন ক্বুরান পড়তে গিয়ে কোন কিছু না বুঝবেন তখন তার সেই “নলেজ গ্যাপ” এর জন্য নিজের মত করে (বেশিভাগ ক্ষেত্রেই শয়তানের মতকরে) তাঁর একটা ব্যাখ্যা দাড়া করিয়ে নিবেন। এর উদাহরণ আমাদের এই ব্লগের কিছু ভাই।
আবার হাদিসের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার হতে পারে। কোন একটি বিষয় সম্পর্কে কেউ যদি একটি হাদিস জানেন এবং সেটা থেকে নিজে নিজে কোন সিদ্ধান্তে আসেন তবে সেটা বিভ্রান্তিকর হতে পারে।
যেমন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক শিশুসন্তানেরা আখিরাতে কি পরিণতি লাভ করবে?
প্রথম হাদিসঃ অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের রসুলুল্লাহ(সাঃ) মিরাজের সময় ইব্রাহিম (আঃ) এর সাথে জান্নাতে একটি গাছের কাছে থাকতে দেখেছিলেন।
দ্বিতীয় হাদিসঃ খাদিজা (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাঃ) কে তাঁর জাহিলিয়াতের সময়কার মৃত সন্তানদের ব্যপারে জিজ্ঞাসা করায় তিনি (সাঃ) বলেছিলেন যে তাঁরা জাহান্নামী।
যারা প্রথমটি জানেন তাঁরা অপ্রাপ্তবয়ষ্করা কি পরিণতি লাভ করবে – এর উত্তর দিবেন জান্নাত, যারা দ্বিতীয়টি জানেন তাঁরা বলবেন জাহান্নাম, যারা দুইটাই জানেন তাদের মনে শয়তান বিভ্রান্তি ঢুকায় বলবে দেখেছ রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কথা স্ববিরোধী, সুতরাং হাদিস মানার দরকার নাই।
তৃতীয় হাদিসঃ আনাস(রাঃ) বলেন, রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে কিয়ামাতের দিন অপ্রাপ্তবয়ষ্ক, পাগল এবং যারা দুই নবীর মাঝখানে এসেছে( আহ্লুল ফাত্রাহ) তাঁরা পরীক্ষিত হবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন দূত এসে তাদের আল্লাহর নির্দেশে আগুনে ঝাঁপ দিতে বলবেন – যারা এই আদেশ মানবে তাঁরা জান্নাতে যাবে, যারা অগ্রাহ্য করবে তারা জাহান্নামী।
যিনি তৃতীয় হাদিসটিও জানেন তিনি কিন্তু প্রশ্নটির একটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ইসলাম টোটালারিয়ান ভিউ সাপোর্ট করে ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ না। যেমন ধরুন একজন মানুষ একটি জানালা দিয়ে একটি রাস্তার কিছু অংশ দেখল যেখানে শুধু কাপড়ের দোকান আছে। এখন সে যদি দাবি করে ঐ রাস্তায় শুধু কাপড়ের দোকান আছে তা ঠিক কিন্তু সম্পুর্ণ ঠিক না। সে যদি ছাদে দাঁড়িয়ে ঐ রাস্তাটি দেখে তবে সে দেখতে পেত কাপড়ের দোকান ছাড়াও আরো অনেক কিছুই ঐ রাস্তায় আছে। জানালার দৃশ্যটি ফ্র্যাগমেন্টেড ভিউ কিন্তু ছাদের দৃশ্য টোটালারিয়ান ভিউ। এমনটি শুধু ইসলাম নয় অনেক অন্য ক্ষেত্রেও একই ভাবে কাজ করে। আমরা জিনোমিক্স নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে দেখেছি আগে যেখানে একটা জিন-এর কাজ নিয়ে গবেষণা হত; এখন হয় পুরো কোষের সব জিন নিয়ে। কারণ ঐ জিনের কাজ পুরো কোষের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই বদলে যায়। ঠিক তেমনি অনেক আয়াত বা হাদিস অন্যান্য সব আয়াত এবং হাদিসের সাহায্যে পুরো অর্থ নেয়, একাকি ভিন্ন অর্থ নেয়। পুরো অর্থ মানে রসুলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবিরা যে অর্থে নিয়েছিলেন এবং জীবনে আমল করেছিলেন সেই অর্থ।
বড় আলিমের সুবিধাটা হল এখানে যে তিনি একটি বিষয় সম্পর্কে সব আয়াতগুলো এবং তাঁর সম্পর্কিত হাদিসগুলো জানেন তাই তিনি একটা আয়াত বা একটি বিষয় ব্যখ্যার সময় আমাদের থেকে ভাল ব্যখ্যা করতে পারেন। তিনি যদি না জেনেও থাকেন তবে জানার চেষ্টা করে তবেই ব্যখ্যা করবেন তাঁর আগে করবেন না। আমি যদি সম্পুর্ণ জ্ঞান ছাড়াই আয়াতের অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে যাই বা কোন বিষয় ব্যাখ্যা করতে যাই তাহলে সমস্যা হবে আমার জ্ঞানের অভাবে আমি ভুল ব্যখ্যা করব, কিন্তু শয়তান আমাকে বুঝাবে যে ঐ অশিক্ষিত আলিমের থেকে আমিই ভাল জানি, বুঝি এবং আমার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে আমি তর্ক করব এবং ভুল পথে চলে যাব (নাউযুবিল্লাহ)।
কোন বিষয়ের কোন ব্যাখ্যা বড় কোন আলিম করেছেন, অন্য আলিমরা তাদের এই ব্যাখ্যাকে ঠিক বলেছেন তাদের পরিপুর্ণ জ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে, তারপরেই আমাদের উচিত সেটা মেনে নেয়া ও প্রচার করা। যে কেউ ইসলাম নিয়ে সিস্টেমেটিকালি পড়াশোনা করুক, এরপর একটা তাফসির করুক, এই তাফসিরটা বড় আলিমরা মেনে নিক, আল্লাহর কসম ঐটা মেনে নিতে আমার কোন আপত্তি নাই। কেউ একজন সারাজীবন ফ্লুইড মেকানিক্স পড়ল, পড়াল, রিটায়ার করে যখন দেখল আর কোন কাজ নাই, তখন ইসলামি ফাউন্ডেশন বা আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলির অনুবাদ পড়ে আমাকে বুঝাবে যে হাদিস দরকার নাই, ক্বুরানেই সব আছে তাহলে আমি এই লোকের ধারেকাছে নাই। ইসলাম পুরাটা না বুঝে খন্ডিত বুঝ নিয়ে অনেক মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হয়, অন্যদের বিভ্রান্ত করে ও সমস্ত মুসলিমদের বিপদে ফেলে। বিন লাদেনের জিহাদের আয়াতের ব্যখ্যার চোটে আফগানিস্তান আর ইরাক এক সাথে কাত হয়ে গেছে! উনি হয়ত আল্লাহকে খুশি করার জন্য সন্ত্রাসকে বেছে নিয়েছেন কিন্তু বিন বাযের মত আলিম কে কাফির ঘোষণা দিয়ে তাদের পরামর্শ না শুনে মুসলিম উম্মাহর অপরিমাণ ক্ষতি করেছেন। আল্লাহর রসুলের (সাঃ) সুন্নাত উপেক্ষা করায় এইকাজের জন্য তিনি পাপ কামাই করেছেন, পূণ্য না।
আমরা নিজেদেরকে অতি গুরুত্ব না দিয়ে অন্তত ইসলামের ক্ষেত্রে যোগ্য আলিমদের সম্মান করব ও তাদের মতামতটা মেনে নিব। তাদের মধ্যে মতের ভেদাভেদ থাকলে আমরা উভয় মত সম্পর্কে পড়ব, চিন্তা করব তারপর যেটা পছন্দ হবে (জীবনযাত্রার সুবিধার্থে না, ইসলাম মানার ক্ষেত্রে যেটা বেশি তাকওয়াপুর্ণ) সেটা মেনে নিব। যার মত মেনে নিলাম না তাকে হেয় করবনা বরং সম্মান করব। আমরা মনে রাখব আলিমরাই রসুলদের উত্তরাধিকারী।
কেউ ভুল বোঝার আগে বলে নেই, সবচেয়ে ভাল হয় আমরা নিজেরা নিয়মানুযায়ী পড়াশোনা করে আলিম হয়ে যাই এবং আমাদের সন্তানদের-ও তা বানাই। আমাদের কার বয়স হয়তো পনের কার পঞ্চান্ন। বয়স ইলম অর্জনের পথে কোন বাঁধা নয়। ইসলামিক অনলাইন ইউনিভার্সিটি তে অনলাইনে পড়াশোনা করা যায় এমনকি সার্টিফিকেট পর্যন্ত নেয়া যায়। যারা জানার উদ্দেশ্যে জানতে চান তাঁরা আরববিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষিত আলিমদের কাছে ফর্মাল ক্লাসের আয়োজন করতে পারেন, এতে নিজের শিক্ষা হল, আরো মানুষ দ্বীন শিখতে পারল।
প্রথমত অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা এভাবে গুছিয়ে বলার জন্য।
১০০% একমত।
দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমিও আগে এই দলে ছিলাম এবং আল্লাহ আপন অনুগ্রহে আমাকে ঐ দল থেকে রক্ষা করেছেন
স্বাগতম।
যিনি শুধু ক্বুরান পড়লেন কিন্তু বাকি গুলো সম্পর্কে জ্ঞান রাখলেননা তিনি যখন ক্বুরান পড়তে গিয়ে কোন কিছু না বুঝবেন তখন তার সেই “নলেজ গ্যাপ” এর জন্য নিজের মত করে (বেশিভাগ ক্ষেত্রেই শয়তানের মতকরে) তাঁর একটা ব্যাখ্যা দাড়া করিয়ে নিবেন। এর উদাহরণ আমাদের এই ব্লগের কিছু ভাই।
একমত। সুযোগ পেলে এরা আলিমদেরকে তিরস্কার পর্যন্ত করে থাকে।
আমি যদি সম্পুর্ণ জ্ঞান ছাড়াই আয়াতের অন্তর্নিহিত মানে বুঝতে যাই বা কোন বিষয় ব্যাখ্যা করতে যাই তাহলে সমস্যা হবে আমার জ্ঞানের অভাবে আমি ভুল ব্যখ্যা করব, কিন্তু শয়তান আমাকে বুঝাবে যে ঐ অশিক্ষিত আলিমের থেকে আমিই ভাল জানি, বুঝি এবং আমার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে আমি তর্ক করব এবং ভুল পথে চলে যাব (নাউযুবিল্লাহ)।
সহমত।
কেউ একজন সারাজীবন ফ্লুইড মেকানিক্স পড়ল, পড়াল, রিটায়ার করে যখন দেখল আর কোন কাজ নাই, তখন ইসলামি ফাউন্ডেশন বা আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলির অনুবাদ পড়ে আমাকে বুঝাবে যে হাদিস দরকার নাই, ক্বুরানেই সব আছে তাহলে আমি এই লোকের ধারেকাছে নাই। ইসলাম পুরাটা না বুঝে খন্ডিত বুঝ নিয়ে অনেক মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হয়, অন্যদের বিভ্রান্ত করে ও সমস্ত মুসলিমদের বিপদে ফেলে।
জটিল লিখছেন ভাই। আজ সারাদিনে এরচেয়ে অপ্রিয় সত্য কোন লিখা পড়েছি বলে মনে হয়না। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন। ধন্যবাদ
@দ্য মুসলিম, ঠিক বলেছেন ১০০% সঠিক কথা ।
আমি কেন আলিম মানব?
কারন আপনি কম বুঝেন আলিমগণদের থেকে, তাই আলিম মানবেন। তবে তা ১০০% হাদীস কুরান দ্বাড়া প্রমানিত হতে হবে।কারো মন গড়া কথা নয়, হোক সে যেকোন মহা আলিম। অন্ধ ভাবে আল্লাহ ও রাসুলদেরকেই বিশ্বাস করা উচিত।
@জ্ঞান পিপাষু, আলহামদুলিল্লাহ, এই কথাটি আমরা সব ক্ষেত্রেই মানবো ইনশাল্লাহ।
@ আব্দুল্লাহ , পুরা ফাটাফাটি পোষ্ট হইছে ।
@মালেক_০০১, @দ্য মুসলিম, ভাইয়েরা আমার জন্য দুআ করুন, আমার যে কোন লেখা অন্য খানে ব্যবহার করুন যদি প্রয়োজন হয়। প্রশংসা না করলে আরো ভাল হয়, দুর্বল ইমান তো – আল্লাহ মাফ করুক যদি অহংকার চলে আসে? খালি মন থেকে দু’আ চাই আর কিছু না।
@আব্দুল্লাহ,
আপনার লিখাটি এই খানে ব্যবহার করলাম। ধন্যবাদ।
ভাই পড়লাম যৌক্তিক কথা তার মানে ইসলমা বুঝা এত সহজ নয়! দেখুন আমি কত আহম্মক, কোরানে ঐ সব আয়াত গুলো পড়ে বুঝতাম ইসলাম বুঝা সহজ, কিন্তু আপনার পোষ্ট পড়ে ঘাবরে গিয়েছি ভাই না জানি কত পাপ করে ফেলেছি। আমার দূর্ভাগ্য আপনার শেষের নসিহত মত যেতে পারবনা কারণ বউ বাচ্চা কাজ কর্ম তো আছে। তবে আল্লাহ বলেছেন উনার রহমত থেকে নিরাশ না হবার জন্য এবং এও পড়েছি যে ‘তোমরা তোমাদের সাধ্যমত আমাকে ডাক’ ।
আচ্ছা আব্দুল্লাহ ভাই এই দ্বিতীয় হাদিসঃ খাদিজা (রাঃ) রসুলুল্লাহ (সাঃ) কে তাঁর জাহিলিয়াতের সময়কার মৃত সন্তানদের ব্যপারে জিজ্ঞাসা করায় তিনি (সাঃ) বলেছিলেন যে তাঁরা জাহান্নামী সিলসিলা টি বর্ণনা করবেন। কারণ এই হাদিসটি কোরানের বক্তব্যের সাথে কেমন যেন লাগছে? যে কোন মানুষের পাপ পূণ্য বর্তায় তার জ্ঞান আসার পর থেকে তাই জানতে চাই এই হাদিস কি সত্যি রাসুল সঃ হাদিশ কি? ভাই এই মূহুর্ত্যে বড় আলেমদের কাছে যেতে পারছিনা, আল্লাহ যখন আপনাকে আমাদের মাঝে নেয়ামত হিসাবে এনেছেন তো আল্লাহর ওয়াস্তে এই বিষয়ে বিশদ ব্যাখ্যা করবেন। মা আস সালাম।
@মুনিম ভাই, আমার ব্যর্থতা যে আমার লেখা পড়ে আপনার মনে হয়েছে ইসলাম বুঝা কঠিন। আল্লাহর কাছে চাইলে নিশ্চয় আল্লাহ সঠিক ভাবে বোঝার তৌফিক দেবেন, আমি খালি বলতে চেয়েছি যারা সিরাতাল মুস্তাকিম থেকে সরে গেছে ও যাবে, তাঁরা নিজদের বুঝটাকে বেশি গুরুত্ব দিত, রসুলুল্লাহ (সাঃ) এবং সাহাবাদের বুঝ অগ্রাহ্য করত।
ভাই, আমি যা সামান্য জানি তা থেকে দ্বিতীয় হাদিস এর দলিল দিতে সময় লাগবে, আমি জিজ্ঞেস করে আপনাদের জানাবো ইনশাল্লাহ। তবে আপনার খটকাটির জবাব নিচে পাবেন ইনশাল্লাহ -
http://www.islamqa.com/en/ref/6496/children
বউ-বাচ্চা পরিবার, কাজ কর্ম করার পরেও আপনি ইসলাম নিয়ে যা পড়াশোনা করছেন তাতে আল্লাহর শুকরিয়া, আপনার মত আল্লাহ আমাদের চারপাশের মানুষগুলোকেও আল্লাহর নিদর্শন নিয়ে ভাববার তৌফিক দিন, আমিন। ইনশাল্লাহ আল্লাহ আপনাকে একদিন ইসলাম নিয়ে সিস্টেমেটিক পড়াশোনার সুযোগ করে দিবেন। আল্লাহর কাছে মন থেকে এই দুআ করলাম।
@আব্দুল্লাহ ভাই,
অনেকে এই ব্যাপারটা নিয়ে বলেন । কোরান অনলিরাও বলেন ইসলাম বুঝা যদি সহজ হয় তাহলে তফসীর কেনো দরকার । এটা তাদের অনেকগুলো বিভ্রান্তির মধ্যে একটি বিভ্রান্তি । ইসলামের ব্যাসিক জিনিস যেগুলো দ্বারা একজন মুসলিম হতে পারে , যেমন তহহীদ , রেসালত, জাহান্মাম, জান্নাত , পরকাল , ফেরেশতা , কিয়ামত, পরকাল ইত্যাদি বোঝা সহজ । অন্য যেকোন ধর্মের সাথে এগুলোর পার্থক্য সুস্পষ্ট এবং শিক্ষিত , অশিক্ষিত সবাই বুঝতে পারে । এই হিসেবে ইসলাম সহজ ।
কিন্তু যেগুলো মাসআলা বা বলা যায় আপনি কিভাবে নামাজ, পড়বেন , রোজা রাখবেন , যাকাত দিবেন , উত্তরাধিকার আইন এগুলো বোঝার জন্য বা মাসআলা বের করার জন্য প্রচুর পড়াশুনা , তাকওয়া , ধৈর্য ইত্যাদি দরকার । এগুলো সহজ নয় , এবং অগাধ পান্ডিত্য না থাকলে এগুলো নিয়ে কেউ গবেষনা করতে পারে না , বা এগুলোর গভীরতা বুঝতে পারবে না । আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) সুরাহ বাকারার তাফসীর বা অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা বিশ্লেষন ১২ বছর ধরে শিখেছিলেন । তাহলে বুঝতেই পারছি আমরা , পানির মতো সহজ হলে উনার এত বছর লাগত না ।
ধন্যবাদ
আমি খালি বলতে চেয়েছি যারা সিরাতাল মুস্তাকিম থেকে সরে গেছে ও যাবে, তাঁরা নিজদের বুঝটাকে বেশি গুরুত্ব দিত, রসুলুল্লাহ (সাঃ) এবং সাহাবাদের বুঝ অগ্রাহ্য করত।
একমত।
এত কিছু বলে লাভ নেই, আমি আলিম মানি কিন্তু তার মানে এই না যে তারা দোষ করলে আমি তা বলব না, ভুল করলে তা ভুল বলব না , আমি আপনার সাথে আমার পার্থিক্য হল আমি সকল আলিমকে শ্রদ্ধা করি কিন্তু ভুল করলে তা যে ভুল তাও বলি। নিজের মতের উপর কড়া হবেন না দয়াকরে, মনে রাখুন কোন মানুষই ভুল ত্রুটির উর্ধে নন। ভুল করলে আমি তা ভুল বলবই। মনে রাখুন আমরা ইমান এনেছি আল্লাহ পাক এবং তার রাসূলের উপর। অন্য কারো উপর নয়।
“যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হও তবে তা ফিরিয়ে নাও আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের কাছে, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও আল্লাহ এবং পরকালের উপর” (সূরা নিসা: ৫৯)
“বলুন, আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর। আর তোমরা যদি মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রাখ যে আল্লাহ কাফিরদের ভালবাসেন না।” (আল-ইমরান, ৩:৩২)
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের কথার উপর কাউকে প্রাধান্য দিও না। আর আল্লাহকেই ভয় কর।” (সূরা হুজুরাতঃ ০১)
আবূ আইয়ূব (রা) থেকে বর্ণিত, এক বেদুঈন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মুখে এসে তাঁর উটের লাগাম ধরে ফেললো। এময় তিনি সফরে ছিলেন। সে বললোঃ হে আল্লাহর রাসূল অথবা হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমাকে এমন কিছু কাজের কথা বলুন যা আমাকে বেহেশতের নিকটবর্তী করে দিবে এবং আগুন (জাহান্নাম) থেকে দূরে রাখবে। তিনি সাহাবীদের দিকে তাকালেন, অতঃপর বললেন, নিশ্চয়ই তাকে অনুগ্রহ করা হয়েছে অথবা তিনি বললেন, তাকে হিদায়াত করা হয়েছে। তিনি বললেন, তুমি কি কি বলেছিলে? রাবী বলেন, লোকটি তার কথার পুনরাবৃত্তি করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর ইবাদত কর, তাঁর সাথে কোন কিছুর শরীক করো না, নামায কায়েম করো, যাকাত আদায় করো, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখ। উষ্ট্রীর লাগাম ছেড়ে দাও”। (মুসলিম)
আরো অনেক হাদিস আছে, যা আমি এখন-ই দিতে পারব না ।
জেনে রাখুন আমার কথাকেও মানার দরকার নেই , আমি ও ভুল করতে পারি । শুধু বোঝার চেষ্টা করুন ।
আলিম মানি বলে এই না যে, আমি আলিমের সকল কথা মানতে বাধ্য থাকব। আর এতজন মানুষ সব বিষয়ে পারফেক্ট হয় না বুঝতে পেরেছেন, কোন বিষয়ে এই ব্যাক্তি পারফেক্ট, আরেক বিষয়ে আরেক ব্যক্তি পারফেক্ট । আল্লাহ পাক আমাদের ক্ষমা করুন।
আসালামুয়ালাইকুম
ফি-আমানিল্লাহ ।
@ফুয়াদ,
অবশ্যই আলিমরা ভুল কিছু বললে আমরা মানবোনা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমি দা ছুরি নিয়ে আলিমদের পিছনে ছুটবো। যদি আপনারা নিজেকে আলেম মনে করেন, তবে নিজে ভুল ধরিয়ে দিতে পারেন এবং উপযুক্ত দলিল সহকারে সঠিক মাসআলা আমাদেরকে শেখাতে পারেন।
আর যদি আপনি আলিম না হয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই কোন আলিমের দলিল দিয়ে পূর্বোক্ত আলিমের কথা প্রমাণিত করতে হবে। ব্যপারটা এমনভাবে যেন আলিমদের কোন অসম্মান না হয়।
ধন্যবাদ।
@দ্য মুসলিম,ভাই আপনি এত নার্ভাস হয়ে যান কেন? আমরা কেউ আলেমগণকে অসম্মান করছিনা।কেউ দা কুড়াল নিয়েও তাদের পিছনে ছুটছি না। আলেমরা আমাদের সম্মানিয় । এরা দ্বিন ইসলামের মশাল নিয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন। কাজেই কেউ তাদের ঋণ অস্বীকার করতে পারবেনা। বুঝার চেষ্টা করেন এখন যেমন ঘোড়া দিয়ে আর যোদ্ধ হয়না তেমনি এখন আলেম সমাজরা হুজরা কিংবা মাদ্রাসায় বসে থাকবেন আর দরস দিবেন তার আর সময় নেই। সব জায়গায় প্রযুক্তির ছুয়া লেগেছে। জ্ঞান আহরণের পদ্ধতিতেও। তাই বিশ্বের এযাবত কালের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার এই ইন্টারনেট জগত। এখন আমাদের আলেম সাহেবদেরকে দ্বীনের খেদমতের জন্য প্রচলিত ধারার সাথে সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমেও আসা এখন ওয়াজিব বলে আমি মনে করি।
তাই আপনি আমি আব্দুল্লাহ মায় সবাই এইযে কিছু কিছু করে বরেণ্য আলেমদের জ্ঞানকে ভার্চুয়াল জগতে অন্তর্ভুক্ত করে চলছি একদিন তা মহা সমুদ্র ভান্ডারে পরিণত হবে। এই বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করা উচিত আলেম সাহেবদেরও এই নেটে আনার চেষ্টা করা। এখন আমার এই মতের উল্টো দর্শন আব্দুল্লাহ দিচ্ছেন যে ইন্টানেটে জ্ঞান আহরণ না করে আলেমদের কাছে যাবার জন্য। এখন আপনিই বলুন মানব সভ্যতা কি পিছনে পড়ে থাকবে।
আর হ্যাঁ আপনারা যারা ভয় ইন্টারনেটকে তাদের বলছি, রাসুল সঃ বলেছেন ইসলাম হলো এমন গাছে যতই ঝাকি দেন কেন তার একটি পাতা খষে পড়বেনা। যাদের পড়তে দেখতেছেন অপেক্ষা করুন একদিন ঠিক মূলে ফিরে আসবেই। ধন্যবাদ।
@মুনিম,
তাই আপনি আমি আব্দুল্লাহ মায় সবাই এইযে কিছু কিছু করে বরেণ্য আলেমদের জ্ঞানকে ভার্চুয়াল জগতে অন্তর্ভুক্ত করে চলছি একদিন তা মহা সমুদ্র ভান্ডারে পরিণত হবে। এই বিষয়ে আমাদের চেষ্টা করা উচিত আলেম সাহেবদেরও এই নেটে আনার চেষ্টা করা।
ঠিক বলেছেন । তারা ইন্টারনেটে আসলে সবারই লাভ । আর কেউ যে আসেনি তাও ঠিক না । এখন অনেক নামকরা মাদ্রাসার ওয়েব সাইট আছে যেখানে অনেক বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায় ।
এখন আমার এই মতের উল্টো দর্শন আব্দুল্লাহ দিচ্ছেন যে ইন্টানেটে জ্ঞান আহরণ না করে আলেমদের কাছে যাবার জন্য। এখন আপনিই বলুন মানব সভ্যতা কি পিছনে পড়ে থাকবে।
আব্দুল্লাহ ভাই , এটা বলেন নি । আলেমদের কাছে যাওয়া মানে এই নয় যে ইন্টারনেটে জ্ঞান আহরন করা যাবে না । আমরা আলেমদের কাছে যেয়ে তাদের থেকে জ্ঞান আহরন করে সেই জ্ঞানকে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতে পারি । এতে কোনো বিরোধ নেই ।
@দ্য মুসলিম, সহমত , ঠিক বলেছেন ।
@হাফিজ,আব্দুল্লাহ ভাই , এটা বলেন নি । আলেমদের কাছে যাওয়া মানে এই নয় যে ইন্টারনেটে জ্ঞান আহরন করা যাবে না । আমরা আলেমদের কাছে যেয়ে তাদের থেকে জ্ঞান আহরন করে সেই জ্ঞানকে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতে পারি । এতে কোনো বিরোধ নেই ।
হাফিজ সাহেব,আব্দুল্লাহ ভাইর এই পোষ্টে নয় আপনি অন্যান্য পোষ্টের কমেন্টে দেখেন উনি ইন্টারনেটকে ফিতনা ভাবেন। এবং আমার কমেন্টেও উনি এই সব বিষয় নিয়ে নেটে আলোচনা না করে বিজ্ঞ ওস্থাদের কাছে গিয়ে জানতে এডভাইজ দিয়েছেন। এতে করে কি মনে হতে পারে আপনিই বলুন?
।
@আবদুল্লাহ ভাই,
খুবই সুন্দর লিখেছেন । এই ব্যাপরাটা অনেকে না বোঝার কারনে বিভ্রান্ত হয়ে গেছেন । আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।
ইসলাম শিক্ষাটা একটা সিলসিলার মত ব্যাপার, রসুলুল্লাহ (সাঃ) যা বুঝেছেন, তাঁকে দেখে সাহাবিরা যা বুঝেছেন, তাবেয়িরা যা বুঝেছেন এই বুঝাটা আমরা মেনে নিব, কারণ রসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উপর ২৩ বছর ধরে ক্বুরান নাযিল করা হল যাতে তিনি ক্বুরান জীবনে প্রতিফলন করে দেখান।
সহমত ।
আলেমদেরকে যতটুকু জানি তারা খুব বেশি পিিয়ে আছেন বলে মনে হয় না। তবে ডিজিটাল উন্নয়নের গিয়ে বেসিক হারানোর ভয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে ছাত্রদের এটা সাজেস্ট করা হয় না। এবং আমি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে কোন তালেবে ইলমের জন্য কিতাব পত্রের মেহনত ছেড়ে প্রযুক্তিগত জেহাদে শামিল হওয়ার পক্ষপাতি নই। এটা আলাল কিফায়া বা প্রয়োজন পরিমানই রাখতে হবে।
এসি রুমে ল্যাপটপ আর ইন্টারনেট নিয়ে ফতোয়া দিতে আমারো মন চায় আর সেই সমর্থ্যা আছেও আলহামদু লিল্লাহ কিন্তু সেই সীরাত এবং নবী স: কষ্টার্জিত জীবনের প্রয়োজন যখণ অনুভব করি, যখন দেখি গ্রাম গঞ্জের হাজারো লক্ষ মানুষ এইসব ডিজিটাল প্রযুক্তির বাহিরে এবং আমার ওস্তাদগনের ছালার চটে বসে শেখানো আমানতের হক্ব তাদেরও আছে তখন আর ভালো লাগে না।
এই মূল্যবান পোস্টের জন্যে আবদুল্লাহ ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রকৃত আলেমদের সম্মান করা ব্যতীত মুসলমানদের ভাগ্য বদলাবে না এক হাজার বছরেও।
@তালহা তিতুমির,
ভাই, সহমত।ধন্যবাদ।