কাজী নজরুল ইসলাম প্রসঙ্গে
লিখেছেন: ' আবু আনাস' @ মঙ্গলবার, জুলাই ৬, ২০১০ (৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ)
আস সালামু আলাইকুম,
বিদ্রোহি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে অনেকেরই একটা মোহের মত আছে। এ প্রবন্ধটা কিছুটা হলেও সেই মোহ ভাঙ্গাবে আশা করি। আল্লাহ আমাদের এমন ঈমানি দৈন্যতা থেকে রক্ষা করুন যার ফলে যে কোন নামমাত্র মুসলিম নামধারীকে নিয়ে আমরা অতিরিক্ত গর্ববোধ না করি। আর লেখাটা আমার না, একজন হিন্দু মুক্তমনার লেখা। তাই আমরা (যাদের ব্যন-মডারেশনে রাখা হয়েছে) সবাইকে জোর করে কাফিরদের দলে ঠেলে দেই এ অভিযোগ আসবেনা আশা করি। আই কেবল কিছু বাক্য হাইলাইট করে দিলাম –
কালের কণ্ঠ ঢাকা, সোমবার, ২১ আষাঢ় ১৪১৭, ২২ রজব ১৪৩১, ৫ জুলাই ২০১০
প্রমীলার মৃত্যুবার্ষিকী এবং বিয়ে প্রসঙ্গ
সৌমিত্র শেখর
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পত্নী প্রমীলার স্মৃতি রক্ষার্থে গঠিত ‘প্রমীলা নজরুল পরিষদ’ গত ৩০ জুন প্রমীলার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ১১টায় মানিকগঞ্জের তেওতা গ্রামে প্রমীলার পৈতৃক ভিটায় ‘আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে’র আয়োজন করে। ঢাকা থেকে অনেক কবি-সাহিত্যিকের এ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’র মাধ্যমে জানানো হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি দীর্ঘ হলেও পত্রিকায় তা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় কবির প্রিয়তমা পত্নীর স্মৃতি রক্ষার্থে যেকোনো উদ্যোগকেই মিডিয়া জগৎ অকাতরে পৃষ্ঠপোষকতা করে, প্রমীলার ফটোসহ এই দীর্ঘ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ সে সদিচ্ছার প্রকাশমাত্র। এ সদিচ্ছা প্রকাশের জন্য মিডিয়া জগৎকে সাধুবাদ দিই এবং প্রমীলার স্মৃতি রক্ষার্থে যাঁরা ‘প্রমীলা নজরুল পরিষদ’ গঠন করেছেন তাঁদের জানাই ধন্যবাদ। দীর্ঘ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির কিছু কথা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং এসব বক্তব্য নজরুলচেতনার সম্পূরক নয় বিবেচনা করে এ প্রসঙ্গে ‘প্রমীলা নজরুল পরিষদ’ এবং পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’তে উল্লেখ করা হয়েছে : ‘১৯২১ সালের চৈত্র মাসের এক সন্ধ্যায় ইন্দ্রবাবুর বাসায় আশালতার সঙ্গে নজরুলের পরিচয় হয়। ১৯২২ সালে আশালতার সঙ্গে নজরুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর ১৯২৪ সালের ২৫ এপ্রিল শুক্রবার নজরুল আশালতার সঙ্গে মুসলমান রীতি অনুসারে কলকাতায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তখন আশালতার নাম হয় প্রমীলা নজরুল ইসলাম।’ এ বক্তব্যে কিছু তথ্যবিভ্রাট আছে এবং নজরুলচেতনাকে দলন করা হয়েছে। আমি জানি না, কে বা কারা এ ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’ লিখে পত্রিকায় পাঠিয়েছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকেই সাধারণত ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’ মিডিয়ায় পাঠানো হয়।
প্রথম কথা, নজরুল-প্রমীলার বিয়ে হয় ১৯২৪ সালের ২৪ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল নয়। দ্বিতীয় কথা, তাঁদের বিয়ে স্বাভাবিকভাবে ‘মুসলমান রীতি’ অনুসারে হয়েছে_এটা ঠিক নয়। তৃতীয় কথা, বিয়ের কারণে আশালতার নাম ‘প্রমীলা নজরুল ইসলাম’ হয়েছে_এ তথ্যটিও প্রামাণিক নয়। আমাদের দেশে নজরুলচর্চার একটি বড় সমস্যা, নজরুলকে আমরা নিজের পক্ষে টেনে আনতে চাই, নজরুল কী করেছিলেন বা তাঁর চেতনা কী তা বুঝে তাঁর দিকে নিজেকে নিয়ে যেতে চাই না। পাকিস্তানি আমলে নজরুলকে সাম্প্রদায়িকতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা হয়েছে_এ যুগেও তা যে থেমে আছে, তা বলা যাবে না। অথচ নজরুলের জীবন পাঠ (’জীবনী’ পাঠ নয়) করলে বোঝা যায়, প্রচলিত অর্থের বাইরে ছিল তাঁর ধর্মবোধ। নজরুলের বিয়ে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো আগ্রহ যথেষ্ট। ব্রাহ্মকন্যা আশালতাকে নজরুল কিভাবে বিয়ে করেছেন জীবনীকাররা এ ব্যাপারটি জনসম্মুখে ঠিকভাবে তুলে ধরেননি (নিজেদের পক্ষপাতিত্বের কারণে?) বা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এতটা বিভ্রান্তি। এ প্রসঙ্গে আমি নজরুলের অকৃত্রিম বন্ধু ও কক্ষসহচর মুজফ্ফর আহমদের (১৮৮৯_১৯৭৩) শরণাপন্ন হব। মুজফ্ফর আহমদ বাংলাদেশের সন্দ্বীপে জন্মেছিলেন, পরে গণমানুষের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের সিপিআই (এম)-এর প্রাদেশিক কার্যালয় ভবন তাঁর নামে নামকৃত হয়েছে। মুজফ্ফর আহমদ আজও সর্বজন শ্রদ্ধেয়। প্রথম জীবনে তিনি ‘বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সমিতি’র (১৯১১) সহকারী সম্পাদক ছিলেন এবং সমিতির মুখপত্র ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’র (১৯১৮) সম্পাদনাকর্মে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এ সময় তিনি থাকতেন সমিতির কার্যালয়ের (৩২ কলেজ স্ট্রিট, কলকাতা) একটি কক্ষে। এই কক্ষেই মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে কাজী নজরুল ইসলাম বাস করতেন। ফলে যৌবনকাল থেকেই একে অপরের ব্যক্তিগত অনেক কথা গভীরভাবে জানার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই দুই তরুণ পরে রাজনীতি ও সাহিত্যের দিকপালে পরিণত হন। মুজফ্ফর আহমদ ও কাজী নজরুল ইসলামের যুগ্ম-সম্পাদনায় সান্ধ্য দৈনিক ‘নবযুগ’ প্রকাশ (১২ জুলাই, ১৯২০) পায়। তা ছাড়া নজরুল সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ (১৯২২) পত্রিকায় নিয়মিত উপসম্পাদকীয় লিখতেন মুজফ্ফর আহমদ। এ দুই মহারথীর পারস্পরিক সম্পর্ক ছিল আত্দার এবং আদর্শের। ১৯৫৯ সালে ‘কাজী নজরুল প্রসঙ্গে : স্মৃতিকথা’ নামে মুজফ্ফর আহমদ একটি গ্রন্থ লিখলে নজরুল-জীবনের অনেক অজ্ঞাত বিষয় জানা যায়। ১৯৬৫ সালে তিনি ‘কাজী নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা’ নাম দিয়ে সে বইয়ের আদ্যোপান্ত পুনর্লিখন করেন। এ বইটি নজরুলজীবনীর জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও প্রামাণিক গ্রন্থ হিসেবে দেশ-বিদেশে গবেষক-আলোচকদের কাছে গৃহীত। এ গ্রন্থে ‘প্রমীলা ও নজরুলের বিবাহ’ নামে একটি অধ্যায়ে আছে : আশালতার সঙ্গে নজরুলের বিয়ে নিয়ে আশালতার মা’র আপত্তি না থাকলেও সমাজ ও আশালতার কিছু নিকটাত্দীয়ের আপত্তি ছিল। মুজফ্ফর আহমদ লিখেছেন : ‘বিয়েতে কন্যাপক্ষের যে অমত ছিল সে কথা বলেছি, কিন্তু বরের পক্ষেও কিঞ্চিৎ অসুবিধা ছিল। নজরুলের উপন্যাসের নায়ক ছিল বাঁধনহারা। নিজের জীবনেও সে বাঁধন মানত না_ধর্মের নয়, সমাজেও নয়। তবুও সে যে বিয়ের বাঁধনে ধরা দিতে যাচ্ছে তাকে তো সমাজের কোনো একটা কাঠামোর সঙ্গে বাঁধতে হবে। তা না হলে বিয়ে আইনসম্মত হয় না। কিন্তু প্রমীলাকে ধর্মান্তর গ্রহণ করিয়ে, অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করে বিয়ে করার কথা নজরুল চিন্তাও করতে পারত না। গিরিবালা দেবী [প্রমীলার মা] আর প্রমীলাও বা রাজি হবেন কেন?’
নজরুল ও আশালতার (প্রমীলা) বিয়ে ১৮৭২ সালের সিভিল ম্যারেজ অ্যাক্ট অনুসারে রেজিস্ট্রি করানোর চিন্তা হয়েছিল। এ নিয়মে বিয়ে করতে হলে কনের বয়স নূ্যনপক্ষে ১৮ বছর হতে হয়। কিন্তু তখন প্রমীলার বয়স মাত্র ১৬ বছর। মুজফ্ফর আহমদ আবার লিখেছেন : ‘মোট কথা, প্রমীলার বিয়ে ১৮৭২ সালের ৩ নম্বর আইন অনুসারে রেজিস্ট্রি করানোর উপায় ছিল না। কিন্তু উপায় তো একটা বার করতে হবে। যাঁরা আহলুল কিতাব অর্থাৎ কিতাবওয়ালা তাঁদের মেয়েদের মুসলমানরা ধর্মান্তর গ্রহণ না করিয়ে, অর্থাৎ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত না করে বিয়ে করতে পারেন। স্ত্রীরা আপন আপন ধর্ম পালন করতে থাকবেন। স্ত্রীরা যদি গির্জায় যেতে চান তবে স্বামীদের কর্তব্য হবে তাঁদের গির্জায় পেঁৗছিয়ে দেওয়া এবং গির্জা থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। কিন্তু গোঁড়া মুসলমানরা শুধু ইহুদি, খ্রিস্টান ও মুসলমানকে কিতাবওয়ালা মনে করেন_তাঁদের মতে এই তিনজনের নিকটই শুধু পরে পরে আল্লার কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে। যাঁরা গোঁড়া নন তাঁরা বলেন, ভারতবর্ষ এত বড় একটি দেশ, তার ওপরে আবার প্রাচীন সভ্যতার দেশ, এই দেশে আল্লাহর কোনো কিতাব অবতীর্ণ হলো না, এটা কী করে সম্ভব? মুসলিম মুঘল সম্রাটগণের হিন্দু বেগমরা ছিলেন। তাঁরা কোনো দিন মুসলমান হননি। অন্দরমহলে আপন ধর্মকর্ম তাঁরা পালন করেছেন। সুতরাং, হিন্দুরাও আহলুল কিতাব (কিতাবওয়ালা), এই মত অনুসারেই কাজী নজরুল ইসলাম ও কুমারী প্রমীলা সেনগুপ্তার বিয়ে হয়েছিল কলকাতার ৬ নম্বর হাজী লেনের বাড়িতে ১৯২৪ সালের ২৪ এপ্রিল তারিখে।’ নজরুলের ইচ্ছার কারণেই আশালতা সেনগুপ্তাকে বিয়ের পরে আরবি-ফারসি কোনো নাম গ্রহণ, এমনকি প্রমীলার নামের শেষে লিখিতভাবে ‘নজরুল ইসলাম’ও যোগ করতে হয়নি। এ যুগের নারীবাদীরা নারীর স্বতন্ত্র পরিচয়ের স্বার্থে নারীর নামের সঙ্গে বাবা বা স্বামীর নাম যোগ করার বিরোধিতা করেন। নজরুল স্ত্রীর নামের সঙ্গে নিজের নাম বা নামাংশ যোগ করাননি। এ প্রসঙ্গেও মুজফ্ফর আহমদের লেখার দুটি বাক্য উল্লেখযোগ্য : ‘এই সময় (বিয়ের সময়) প্রমীলার আশালতা সেন নামও প্রচারিত হয়েছিল। অনেকের লেখাতেই তা দেখতে পাই।’ তবে এ কথা ঠিক, পরবর্তীকালে পেনশন বা অন্য কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার সময় প্রমীলা সংস্কারবশত নিজের নাম ‘প্রমীলা নজরুল ইসলাম’ হিসেবেই লিখতেন। আসলে আশালতা সেনগুপ্তার ডাকনাম ছিল ‘দুলি’, কেউ কেউ তাঁকে ‘দুলুু’ বলেও ডাকতেন। নজরুল প্রণয়কালে ডেকেছেন ‘দোলন’ বলে (নজরুলের একটি কাব্যগ্রন্থের নাম ‘দোলনচাঁপা’), পরে ডেকেছেন ‘প্রমীলা’। প্রমীলা তাঁর বিয়ে-পরবর্তী নাম নয়। মুজফ্ফর আহমদ উল্লেখ করেছেন : ‘১৯২১ সালের প্রথম পরিচয়ের সময় হতে তাকে প্রমীলা বলেই তো জানি।’ (সূত্র : এটিসহ লেখার সব উদ্ধৃতি মুজফ্ফর আহমদ-এর ‘কাজী নজরুল ইসলাম : স্মৃতিকথা’ গ্রন্থের কলকাতা ন্যাশনাল বুক এজেন্সি প্রা. লি. থেকে প্রকাশিত চতুর্থ মুদ্রণ, ১৯৭৫ থেকে গৃহীত)। শুধু স্ত্রীর নাম নয়, নজরুল তাঁর সন্তানদের নামকরণেও উদার ও সমন্বয়চেতনার পরিচয় দিয়েছিলেন। নজরুল-প্রমীলার প্রথম (ছেলে) সন্তানের নাম ছিল কৃষ্ণ মোহাম্মদ, দ্বিতীয় (ছেলে) সন্তানের নাম অরিন্দম খালেদ। আসলে নজরুলচেতনার মূলে ছিল সমন্বয় এবং অগ্রগতি। নজরুলকে পাঠ ও চর্চা করার সময় এই সমন্বয় ও অগ্রগতির ধারণা ভুলে গেলে সবই ব্যর্থ হবে। মৃত্যুবার্ষিকীই হোক বা হোক অন্য সময়, প্রমীলা বা নজরুলকে নিয়ে যেকোনো আলোচনায় মনে রাখতে হবে এই সমন্বয়-অগ্রগতি চেতনা।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
@মনপবন,
লেখাটা হয়ত আমাকে উদ্দেশ্য করে লেখা, বা না হলেও আমি যেহেতু নজরুল বিষয়ে কিছু লেখা এই ব্লগে দিয়েছিলাম তাই উত্তর দেবার প্রয়োজন মনে করছি:
বিদ্রোহি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে অনেকেরই একটা মোহের মত আছে। এ প্রবন্ধটা কিছুটা হলেও সেই মোহ ভাঙ্গাবে আশা করি।
নজরুল ভালো মুসলিম কিংবা নজরুল যে কাজগুলো করেছে ( যেমন হিন্দুকে বিয়ে করা ) সেগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক , সেটা কোনোসময় আমি প্রচার করিনি । কিংবা নজরুলের হিন্দু ধর্ম বিষয়ক লেখা এই ব্লগে প্রচার করিনি । নজরুলের শুধু যে লেখাগুলো ইসলাম সম্মত সেগুলোই আমি এই ব্লগে পোস্ট আকারে দিয়েছি । এবং এটা প্রচার, প্রসার করাতে কোন দোষ আছে বলে আমি মনে করি না । ইসলামের দৃষ্টিতে এটা নিষেধ নয় ।
আল্লাহ আমাদের এমন ঈমানি দৈন্যতা থেকে রক্ষা করুন যার ফলে যে কোন নামমাত্র মুসলিম নামধারীকে নিয়ে আমরা অতিরিক্ত গর্ববোধ না করি।
এটা নির্ভর করছে কি বিষয়ে গর্ববোধ করব সেটার ওপরে । নজরুলের ব্যক্তিগত ধর্মীয় আচার আচরনের উপর না হলেও , নজরুলের সাহিত্য বিষয়ে গর্ববোধ করার মতো অনেক কিছু আছে ।
আর লেখাটা আমার না, একজন হিন্দু মুক্তমনার লেখা।
একজন হিন্দু মুক্তমনার লেখা পড়ে সরাসরি বিশ্বাস করবার চেয়ে , সাথে অন্য মুসলিমরা কি বলে সেটাও যাচাই করে নিবেন ।
তাই আমরা (যাদের ব্যন-মডারেশনে রাখা হয়েছে) সবাইকে জোর করে কাফিরদের দলে ঠেলে দেই এ অভিযোগ আসবেনা আশা করি।
আপনাদের প্রতি এই অভিযোগ আসবে । এটাই স্বাভাবিক । আপনারা নজরুলকে নিচে নামিয়ে দেন সেটা সমস্যা নয়, কেননা নজরুল আমাদের আদর্শ নয় । কিন্তু সাথে সাথে অনেক সম্মানিত আলেমদের এক কথায় “সর্বেশ্বরবাদী” বলে প্রচার করেন ,তাদের আমলকে ধুলোয় মিশিয়ে দেন । “নজরুল” এবং “দেওবন্দের সমস্ত আলেম” দুটোকে এক করে দেখার কোনো উপায় নেই ।
”যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ নয়”-আল-হাদিস
যৌবনের তাড়নায় মানুষ কতই না ভুল ভ্রান্তি করে ।তাই বলে তওবা করে পরবর্তীতে তার ভাল কাজের প্রসংশা করা যাবে না ?নজরুল তার পুর্বের ভুলের কথা চিন্তা করে প্রচুর ইসলামী গান রচনা করেছেন।তার হামদ ও নাত বড় বড় আলেমের মুখেও আমরা শুনতে পাই।নিঃশ্চই আল্লাহ ক্ষমাশীল।দোয়া করি আল্লাহ পাক আমাদের সবার ভুল ভ্রান্তি গুলি ক্ষমা করে আমাদের সবাইকে ইমানদার হিসেবে কবুল করুন।আমিন।
@দেশী৪৩২,
নজরুলের কথা দিয়েই তাদের লেখার জবাব:
উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ
আমরা বলিব “সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ” ।
@দেশী৪৩২,আমিন
@দেশী৪৩২, আমিন।
বাংলা ভাষায় সাহিত্য চর্চা করতে গেলে এবং তাতে সুসাহিত্য ও কুসাহিত্যের দুটি সীমারেখা টানতে গেলে নজরুলের সাহিত্যকে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয় এটা বাচ্চারাও বলবে।
নজরুলকে আমি বাংলার ইকবাল বলবো, হ্যা অন্তত তার স্বাধীনচেতা দৃষ্টিভংঙ্গীর জন্য, আজ যেখানে আজাদীয় সাহিত্য- ঠাকুরের পর্নৌ সাহিত্য, বাবুদের নীল ভাবধারার সাহিত্যে তারুন্য ছেয়ে পড়েছে অলক্ষ্যে নীল সংষ্কৃতির দিকে সেখানে নজরুলের মুল্যবোধকে ইকবালের দর্শনের সাথে মিলিয়ে দেখার অনেক যৌক্তিকতা আছে।
হিন্দুবাবুরা নজরুলের সাহিত্যে ভগবানের আশীর্বাদ দেখবেন আর আমরা আল্লাহ নবীর প্রতি ইমানি জযবা দেখবো না এটা কেমন সেল্ফ ডেসট্রাশন মনে হয়।
ব্যক্তি জীবনে মানুষ মাত্রেই ভূল, কেবল কয়েকটি স্তরের মানুষের সেই ভূলকে এড়িয়ে যেতে হবে, তার ভাল গুনগুলো দেখে তা থেকে ফায়দা নিতে হবে এটাই হলো বিবেক সম্পন্নদের কথা।