মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবনে তারুণ্যের আদর্শ
লিখেছেন: ' mukallidussunnah' @ সোমবার, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১২ (১১:৩২ পূর্বাহ্ণ)
জ্ঞানে প্রবীণ এবং মৃত্যু ভয়ে ভীত বয়োবৃদ্ধদের হৃদয়ে ধর্মের আবেদন গভীরতর। এটা তিন হাজার বছর আগে যেমন ছিল, আজো তেমনই আছে। নামাযের জামাতের পর যে কোনো মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে মুসল্লিদের দেখুন, এ সত্য দিবালোকের মতো প্রতিভাত হয়ে উঠবে। কিন্তু এর ব্যতিক্রম ছিল দুনিয়ার ইতিহাসের একটি ক্ষেত্রে। তা হলো মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রচারিত ধর্মের ইতিহাসে। আমরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রচারিত ধর্মকে কর্মে আঁকড়ে ধরে রাখতে ব্যর্থ হযেছি। আমাদের আচরণে এটা এখন তরুণ এবং নবীনদের নিকট আবেদন হারিয়ে আবার সেই সনাতন আদিধর্মসমূহের রুপ পরিগ্রহ করেছে বলা যেতে পারে।
জ্ঞান চর্চার প্রতি উপেক্ষা
মহানবীর আদর্শ বর্তমান তরুণ সমাজের মধ্যে অনুপস্থিত থাকার কারণ কী? কারণ অনেক। তবে মৌলিক কারণ হলো, কুরআন-সুৃন্নাহর প্রতি অনীহা এবং সামগ্রিক জীবন দর্শন হিসেবে মুসলমান কর্তৃক ইসলামের প্রতি উদাসীনতা। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দুটি উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। ঐ দুটি মূল্যবান বস্তু হলো, কুরআন এবং সুন্নাহ। কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে মসজিদ নির্মিত হ্েচ্ছ, কিন্তু আল্লাহর এই সব ঘরে এদুটো বস্তুর যথাযথভাবে চর্চা হচ্ছে বলে মনে হয় না।
আমরা কালেমা পাঠ করেছি বলে মাটি দিয়ে মূর্তি বানিয়ে পূজা করতে পারি না। কিন্তু অনমিত হয় যে, আমাদের অবচেতন মনে মাটির মায়া ঠিকই আছে। তাই আমরাও দামিদামি ইট, পাথর, সুরকি-চুন, টাইল্স্ দিয়ে মসজিদের ঝকঝকে দেয়াল-মেহরাব বানিয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করি, কিন্তু কুরআন-হাদীসের তরজমা তাফসীর কিনে ইসলামী সাহিত্য দিয়ে মসজিদকে সমৃদ্ধ ও সুসজ্জিত করতে চাই না। আমাদের কাছে হাদীস-কুরআান পাঠ করে আল্লাহর দ্বীনকে উপলব্ধি করা অপেক্ষা মোজাইক করা মেঝেতে সালাত আদায়ই যেন যথেষ্ট। অথচ আমাদের নবী শিক্ষা দিয়েছেন, “এক ঘণ্টা ইলমে দ্বীন চর্চা বছর বছর নফল ইবাদতের চেয়েও উৎকৃষ্ঠতর।”
পূর্ণাঙ্গা আদর্শ
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ ও সামগ্রিক জীবন-বিধান এবং মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি নিছক ধর্ম প্রচারক ছিলেন না। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রপ্রধান, সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক, দক্ষ প্রশাসক এবং ন্যায়বিচারক। তাঁর প্রথম খলীফা চতুষ্টয়ের প্রধান পরিচিতি রাষ্ট্র পরিচালক হিসেবে। রাজনীতি, রাষ্ট্র পরিচালনা রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের অধিবাসি, সবার কল্যাণ সাধন ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদর্শ। বর্তমান যুবশ্রেণীকে আমরা নববী-আদর্শ অনুকরণে সেভাবে অনুপ্রাণিত করতে পারছি না। তাই অতৃপ্ত মনের ক্ষুধা মেটানোর জন্য এবং রাষ্ট্র ও সমাজের সংস্কার ও পরিচালনার জন্য তারা ভিন্ন দর্শন চিন্তাধারা এবং আদর্শের অনুসারী হয়ে যাচ্ছে। এটা অস্বভাবিক নয়। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনিত ইসলামকে যদি জীবনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার প্রকৃষ্টতম পন্থা হিসেবে শিক্ষিত যুব শ্রেণীর কাছে ইসলামী সাহিত্যের মাধ্যমে তুলে ধরা না হয়, তাহলে তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।
বয়োকণিষ্ঠ সাহাবায়ে কেরাম
ইসলামের ইতিহাসে যারা অবদানের জন্যে অমর হয়ে আছে, তাদের প্রায় সবাই ছিলেন মহানবীর বয়োকনিষ্ঠ। বিবি খাদিজা রা. এবং বিবি সওদা ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠা। সাহাবীদের মধ্যে প্রথমেই আমরা পাই হযরত আবু বকর রা. কে। তিনি ছিলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তিন বছরের ছোট। ওমর রা.ও উসমান রা. ছিলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আরো ছোট। সাহাবীদের তালিকা নিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মক্কা বিঝয় পূর্বকালের সাহাবীদের শতকরা ৯৫ জনের বেশি ছিলেন তরুণ এবং যুবক অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর আদশের আবেদন মক্কার মধ্যবয়স অতিক্রান্ত বা মৃত্যুভয়ে ভীত বয়োবৃদ্ধ অপেক্ষা তরুণ ও যুবকরদের কাছেই ছিল গভীরতর। আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন তার পিতৃব্য আবু তালিব। আট বছর বয়স থেকে তাঁকে তিনি শুধু লালন-পালনই করেননি, চরম বিপদের দিনে ঢাল হিসেবে সব অত্যাচার নিজের পিঠে নিয়ে তাঁকে রক্ষা করতে চেষ্টা করেছেন। একমাত্র আবু তালিব ছাড়া মক্কার অন্য কোনো অমুসলিমের নামে কোনো মুসলিম শিশুর নামকরণ করতে দেখা যায় না। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদের্শর সত্যতায় আবু তালিবের ছিল দৃঢ় প্রত্যয়। কিন্তু সংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ইসলাম গ্রহণ করতে পারেননি। বরং আবু তালিবের পুত্র বালক আলী রা. এর হৃদয় সত্যের প্রথম আলোর ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে। পুত্র আলীর ইসলাম গ্রহণে আবু তালিব ক্ষুব্ধ হননি বরং খুশিই হয়েছিলেন।
শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রচারিত আদর্শের স্বরূপ ও বৈশিষ্ট্য কেমন ছিল, যা যুবকদের আকর্ষণ করত? যুবমন কল্পনাপ্রবণ, রোমান্টিক ও স্বপ্নাশ্রয়ী। তারা গ্লানিহীন সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে, শোষণমুক্ত সমাজের কল্পনা করে। তাদের সামনে থাকে একটি রঙিন পৃথিবীর স্বপ্ন, যেখানে থাকবে না কোনো অত্যচার অনচার, থাকবে না কোনো ধরনের শোষণ জুলুম। যেখানে মানুষ হবে মানুষের ভাই। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথম জীবনে ‘হিলফুল ফুযুল’ নামক সংস্থার মাধ্যমে সংস্কারমূলক কিছু কিছু কাজ করেছেন। কিন্তু তাতে তার বিক্ষুব্ধ আত্মা তৃপ্ত হতে পারেনি। তিনি আরবের মরু প্রান্তরে একাই ঘুরে বেড়াতেন। কিন্তু দিনের পৃথিবী, রাতের আকাশ কিছুই তার মনের ক্ষুধা মেটাতে পারত না। আশ্রয় নিতেন তিনি হেরা গুহার নির্জনতায়। তিনি ভাবতেন, কল্পনা করতেন, সত্য অনুসন্ধান করতেন। মানবতার অবমাননা দেখে বিক্ষুব্ধ চিত্তে এবং সুন্দরতর পৃথিবীর কল্পনায় তিনি ধ্যানমগ্ন হয়ে থাকবেন। অবশেষে তিনি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ওহীজ্ঞানের মাধ্যমে পেলেন শাশ্বত সত্যের সন্ধান। বিনা ক্লেশে সত্য তাঁর হৃদয়ের পর্দায় আপনাআপনিই প্রতিফলিত হয়নি। যুবক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সত্যের আহবান তৎকালীন আরবের যুবকদের মধ্যেই দাগ কেটেছিল বেশি।
সংগ্রামী চেতনা
মানুষের ওপর মানুষের জুলুম-অত্যাচার, পোষণ ও বীভৎসায় যুবক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মন বিক্ষুব্ধ ও বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। তদানীন্তর শোষণমূলক সমাজ ব্যবস্থা তিনি মেনে নিতে পারেননি। শুধু কন্যা শিশু নয়, আরব সমাজে কারো জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। সশস্ত্র আত্মরক্ষার প্রস্তুতি নিয়েও বাণিজ্য কাফেলা শত্র“র আক্রমণ থেকে নিস্তার পেতনা। আরবদের মধ্যে শতাব্দীর পর শতাব্দীর প্রচলিত অপরাধপ্রবণতা সমূলে উৎপাটিত হয়েছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর শিক্ষার গুণে।
অন্যায়ের প্রতিবাদ, মজলুমের পক্ষে জিহাদ, নিপীড়তের পক্ষে আত্মত্যাগ নবীনরা যতটুকু করতে পারে, প্রবীনরা ততটুকু পারে না। নির্যাতিত মজলুমের ব্যথায় তরুণরা ব্যথিত হয় বেশি। মহানবীর পুরো জীবনটাই ছিল সংগ্রামী জীবন। তিনি তৎকালীন প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একক সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। মহানবীর সংগ্রামী আদর্শ আরবের যুব সমাজকে তার প্রতি আকৃষ্ট করেছিল।
পুজিবাদ ও সামন্তবাদবিরোধী আদর্শ
কিষাণ ও মজদুর সমাজের দুটি মজলুম নিপীড়িত শ্রেণী। সামন্তবাদী এবং পুঁজিপতিদের শোষণের শিকার হয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করে থাকে। যুবমন মজলুম, অশিক্ষিত কৃষক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতি স্বভাবতই অগ্রণী, সহানুভূতিশীল। বিশ্বনবী যে আদর্শ প্রচার করেছিলেন, তা ছিল কৃষক-মজুরদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংরক্ষণের জীবনদর্শন। শ্রমিকদের অবস্থা দরিদ্র ক্ষেত-মজদুর এবং বর্গাচাষীদের চেয়েও খারাপ ছিল। অধিকাংশই দানসূলভ জীবনযাপন করত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করণে, মুনিব যে খাবার কাবে, কর্মচারীকেও সে খাবার দেিত হবে, মুনিব যে কাপড় পরবে, শ্রমিককেও তাই দিতে হবে। মুনিব যে ধরনের বিছানায় থাকবে, শ্রমিককেও তাই দিতে হবে।
সৌন্দর্য চেতনা
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চাল-চলন, কথাবার্তা ও প্রাত্যহিক জীবন-যাপন সব মানুষের জন্যই অনুকরণীয় আদর্শ ছিল। আল্লাহ সুন্দর তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুরুচিশীল। স্বল্প সময়ের জন্য কোথাও গেলে তার সঙ্গে থাকত চারটি জিনিস জায়নামায, মিসওয়াক, চিরুনী এবং আতর। চারটির মধ্যে তিনটি সৌন্দর্য চেতনার ও পরিচ্ছন্নতার পরিচায়ক।
তদানীন্তন আরবে যে সব কাফের, ইহুদী, খৃষ্টান তাঁর দ্বীন গ্রহণ করেনি, তারাও আচার-ব্যবহার পোশাক-পরিচ্ছদে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাহ অনুসরণ করতেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উন্নত রুচিশীল জীবন পদ্ধতি জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবারই অনুকরণীয়।
মানসেবার আদর্শ
ফেরাউন, নমরুদ, সাদ্দাদরা ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে আদম সন্তানের গলায় গোলামির জিঞ্জির পরিয়ে দেয়। ফেরাউন, নমরুদরা ভূমণ্ডলের বিভিন্ন দেশে বিভিন্নকালে বিভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়ে সাধারণ মানুষকে বিত্তশালী ও ক্ষমতাসীনদের তাবেদার ও সেবকে পরিণত করে থাকে। মানুষকে শুধু শোষণ নয়, মানুষের জন্য আল্লাহর দেয়া স্বাধীনতা খর্ব করে, তাদেরকে স্বীয় আরাম-আয়েশ ও ভোগ লিপ্সার সামগ্রীতে পরিণত করার প্রচেষ্টা সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অব্যহত গতিতে চলছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবতার জন্য যে আদর্শ নিয়ে এলেন তাতে বঞ্চিত, শোষিত, মজলুম মানবতা মুক্তির পয়গাম শুনতে পায়।
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন কাহিনী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, তিনি কর্মের মাধ্যমে কর্মী সৃষ্টি করতেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবকদের তাঁর প্রতি আকর্ষণ করতেন প্রধানত কাজের প্রোগ্রামের মাধ্যমে। কাজের মাধ্যমেই তিনি নিজ আদর্শের প্রতি যুবকদের মনে আনুগত্য সৃষ্টি করতেন। বিরাট মাহফিল করে হাওয়ায় কথা ছেড়ে দিলে শ্রোতাদের কান-সুখ হয়, কিন্তু অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে কুড়িয়ে নেয়া সহজ নয়। তা সহজ হয় সামনাসামনি আলোচনা, মাধ্যমে, বাস্তব দৃষ্টান্ত ও প্রাক্টিসের (মশকে আমলীর) মাধ্যমে।
শেষ কথা
কোনো একটি আদর্শের বাস্তবায়নের জন্যে বহু শর্তের মথ্যে তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটা হলো, নির্ভুল ও সঠিক আদর্শ। দ্বিতীয়টি হলো, আদর্শ বাস্তবায়নের জন্যে নিঃস্বার্থ আদর্শবাদী গতিশীল নেতৃত্ব এবং তৃতীয় শর্ত হলো, আদর্শে উজ্জীবিত কর্মবিাহিনী। আল্লাহর দেয়া শাশ্বত জীবন-বিধানের স্বার্থক রূপায়ণ মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পক্ষে সহজতর ছিল। তিনি মধ্যবয়সে দ্বীনের কাজ শুরু করেন এবং তাঁর বয়োকনিষ্ঠ যুবক ও তরুণ সাহাবীদের এ আদর্শ বাস্তবায়নের মহান সৈনিক হিসেবে গ্রহণ করেন। মক্কা বিজয়ের সময় মহানবীর বয়স ছিল ৬১ বছর। মক্কা বিজয়ের পরও নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইন, তায়েফের যুদ্ধে সেনাপতিত্ব করেন এবং আওতাজ গোত্রের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করেন। তাবুক অভিযানে ত্রিশ হাজার পদাতিক এবং দশ হাজার অশ্বারোহী মুজাহিদ অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটাই ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এর জীবন কালের সর্ববৃহৎ অভিযান।
অসাধারণ শারীরিক ও মানসিক শক্তির জন্যে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন আরব যুবকদের স্বপ্ন ও কল্পনার মহানয়াক। সমাজের নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, নবীন-প্রবীণ সবার সঙ্গে ইসলামের প্রধান ধারক এবং বাহক ছিল যুব সমাজ। তাদের আবেগ-উদ্দীপনা, উষ্ণ রক্ত ত্যাগ-তীতিক্ষা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মহান আদর্শ বাস্তবায়নে এককভাবে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছিল। যুব সমাজ কর্তৃক পুনরায় মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাদের জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণের মধ্যে নিহিত আছে ইসলামী পুনর্জাগরণের বীজ ও সম্ভাবনা।