শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ‘মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য’ নির্মাণ
লিখেছেন: ' মুসাফির' @ মঙ্গলবার, জানুয়ারি ২২, ২০১৩ (১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ)
এই পোস্ট পড়া শুরুর আগে দয়া করে (নিয়ন্ত্রণহীন)উত্তেজনাকে ঘণ্টাখানেকের জন্য ছুটি দিন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ‘মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য’ নির্মাণ ঠেকাতে আন্দোলন করছেন কওমি ঘরানার ইসলামী সংঘঠনের নেতাকর্মীরা।
এই সংগঠনগুলো ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামকে কায়েম করার স্বপ্ন দেখে। এ জন্যে তারা ভোটের রাজনীতিতে অংশও নেয়। কিন্তু নির্মম সত্য, আজো কোনো ইসলামি সংগঠন দেশের মানুষের স্বার্থে তেমন কোনো কর্মসূচি প্রণয়ন করেছে বলে শোনা যায়নি। মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা, দারিদ্র, বেকারত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য, এদেশের সংখ্যালঘু, নারী ও শিশু …- গণসমর্থন যোগাতে ও রাষ্ট্রপরিচালনায় জরুরি এমনসব হাজারো ইস্যু নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা-পরিকল্পনার কথা শোনা যায় না। কোনো আন্দোলনও না।
নামে ইসলামের লেবাস পড়ানোর কারণেই কি না, নিজেদের ডাকা সব ইস্যুতেই ইসলামকে ব্যবহার করছে। ঈমানকে জড়ানো হচ্ছে। কর্মসূচি ঘোষণা করেই বলছে, ‘ঈমান রক্ষার স্বার্থে …. সফল করুন।’ শুধু ঈমান রক্ষার কর্মসূচি কেনো? মানুষের জীবন রক্ষায়, তাদের নায্য অধিকার রক্ষায় কোনো কর্মসূচি নেওয়া যায় না!!!
প্রশ্ন হলো, ঈমান রক্ষার দলীয় কর্মসূচি সফল করতে যারা মাঠে নামেন না, তাদের ঈমান কি তখন অরক্ষিত হয়ে পড়ে? এ নিয়ে এখানে দীর্ঘ কথা নয়। ফিরে যাই শাবিতে।
শাবিতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ হবে। এতে কারা আপত্তি জানিয়েছেন? ইসলামি সংগঠনের নেতারা। সিলেটে প্রায় সবগুলো ইসলামী সংগঠন এখন ‘সর্বশক্তি’ নিয়োগ করেছে ভাস্কর্য (আন্দোলনকারীদের ভাষায় মূর্তি) নির্মাণ ঠেকাতা। শীতের রাজপথ এখন ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত।
শাবিতে ভাস্কর্য হবে এ নিয়ে এথন যারা এতো উত্তেজিত, প্রশ্ন যদি আসে- শাবির ভালো-মন্দ আর কোন বিষয়টি নিয়ে তারা খোঁজ-খবর রাখেন। উত্তরে নিজের কাছে লজ্জিতই হতে হবে। আন্দোলনকে চাঙা করতে কয়েকটি বিষয় তারা যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেছেন। দেখা যাক সেগুলো কী।
এক. সিলেট পূণ্যভুমি, শাহজালালের ভূমি
দুই. ভাস্কর্য’র নামে মূর্তি
তিন. ইসলাম এর অনুমোদন দেয় না
আন্দোলনকারীদের বক্তব্যের সার কথা এগুলোই। এবার আমরা তিনটি যুক্তি নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করি।
* ‘সিলেট পূণ্যভুমি, শাহজালালের ভূমি’। তবে কি ঢাকায় এই ভাস্কর্য নির্মাণ করা যাবে?
* ‘ভাস্কর্য’র নামে মূর্তি’ ভাস্কর্য মানেই কি মূর্তি। তবে কি ভাস্কর্য হলেই ইসলাম এর অনুমোদন দেবে?
* ইসলাম কি দেশের অন্য ভাস্কর্যগুলো বা খোদ শাবিতেই অপর যে ভাস্কর্য রয়েছে তার অনুমোদন দেয়?
আমরা এবার এই শেষ প্রসঙ্গটি নিয়ে কথার সমাপ্তে যাবো। দেশের কোথাও ভাস্কর্য বা খোদ মূর্তি নির্মাণই যদি হয়, তাহলে ইসলাম তাতে আপত্তি করবে কি। যারা ভাস্কর্য স্থাপন করেন বা মূর্তি তৈরি করেন তারা তো নিজেদের আদর্শ-বিশ্বাস থেকেই সেটি করেন। আমার সেখানে আপত্তি জানানোর কী? যদি বলেন, ঈমান রক্ষার স্বার্থে আপত্তি জানাতেই হবে। তবে বলবো, দয়া করে আমাকে অন্যকোনো দেশের সন্ধান দিন, যেখানে কোনো ভাস্কর্য বা মূর্তি নেই।
জগাখিচুরি কি লিখলেন কিছুই বুঝলাম না।মাথা শান্ত করে ভাবুন।আপনি কি নিজের ব্যাপারে নিজেই প্রশ্ন তুলেলেন????