ইসলামী আকীদা ২
লিখেছেন: ' মুসাফির' @ শুক্রবার, জানুয়ারি ১৪, ২০১১ (১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ)
২৫। আমরা সমস্ত নবী ও রাসূলের প্রতি ঈমান রাখি।
২৬। আমরা সমস্ত নবীগণকে নিষ্পাপ মনে করি।
২৭। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহ তায়ালার বান্দা ও রাসূল।
২৮। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সঃ) সমস্ত মানুষ ও জ্বীনের প্রতি প্রেরিত।
২৯। তিনি সকল রাসূল গণের সর্দার ও শেষ নবী।
৩০। নবী করীম (সঃ) এর জাগ্রত অবস্থায় স্বশরীরে মি’রাজে যাওয়া সত্য।
৩১। তার পর কোন নবী নেই, না মূল নবী না ছায়া নবী।
৩২। তাঁর পরে নবুওয়াতের দাবীদার, ও তার অনুসারী সকলেই কাফের।
৩৩। হযরত ঈসা (আঃ) এর জীবিত থাকা এবং তাঁকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া সত্য।
৩৪। হযরত ঈসা (আঃ) আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর শরীয়তের অনুসারী হয়ে কিয়ামতের পূর্বে আকাশ থেকে অবতরণ করবেন।
৩৫। হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে আল্লাহর ছেলে হওয়ার ও তিন খোদার এক খোদা হওয়ার বিশ্বাসী ব্যক্তি কাফের।
৩৬। কুরআন ও হাদীস শরীফকে অস্বীকার করা, নবী করীম (সঃ) এর প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা, শরীয়তকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা কুফুরী।
৩৭। নবীগণের মু’জিযা সত্য।
৩৮। নবীগণ নিজ নিজ কবরে জীবিত।
৩৯। সাহাবায়ে কেরাম উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।
৪০। আমরা সমস্ত সাহাবায়ে কেরামকে ন্যায়পরায়ণ মনে করি।
৪১। আমরা সাক্ষ্য দেই, সাহাবায়ে কিরাম আল্লাহর তায়ালার পছন্দনীয় বান্দা, তাঁরা জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত।
৪২। সাহাবায়ে কিরামের মুহাব্বত ঈমানের অংশ।
৪৩। সাহাবায়ে কিরামের সাথে দুশমনী রাখা, তাদেরকে দোষারোপ করা মুনাফেকী।
৪৪। খোলাফায়ে রাশেদীনের মর্যাদা তাদের খেলাফতের ধারাবাহিকতা হিসেবে।
৪৫। সাহাবায়ে কিরাম পরস্পর যুদ্ধে ও মত-বিরোধে সত্যের উপর ছিলেন। (চলবে)
আসসালামু আলাইকুম ভাই, জাজাকাল্লাহ।
“নবীগণ নিজ নিজ কবরে জীবিত” – এই বিষয়ে যদি একটু বুঝিয়ে কুরআন এবং সহীহ হাদীসের দলীল সহাকারে বলেন তাহলে উপকৃত হতাম।
@manwithamission, নবীগণ কবরে স্বশীরে জীবিত, তা ছহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। কুরআনে এ সম্পর্কে সরাসরি এমন কোন আয়াত নেই, তবে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। নিম্নে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
১। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন।
وَلاَ تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُواْ فِي سَبِيلِ اللّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاء عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ সুরা আল ইমরান আয়াত: ১৬৯
আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত।
وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ
সুরা বাকারা আয়াত: ১৫৪
আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।
আর নবীগণ যেহেতু শহীদগণ থেকে আরো উচ্চ মর্যাদার অধিকারী সেহেতু এই আয়াত দ্বারা নবীগণও জীবিত থাকা সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হয়।
তাকমেলা শরহে মুসলিম খন্ড নং৫ পৃষ্টা: ২৮।
নাইলুল আওতার খন্ড ৩ পৃষ্টা: ৮০।
বরং বরযখের এই জীবিত থাকার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা শক্তি সম্পন্ন হলো নবীগণ অত:পর শহীদগণ।
মাআরেফুল কোরআন পৃষ্ঠা: ৮০।
২। হাদীসে বর্ণিত আছে,
عن أنس رض قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الانباء احياء في قبورهم
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণীত হুজুর সাঃ ইরশাদ করেন নবীগণ নিজ নিজ কবরে জীবিত।
মুসনাদে আবু ইয়ালা খন্ড:৩ পৃষ্ঠা৩৭৯ হাদীস নং ৩৪১২ (ছহীহ) হাইছামী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ খন্ড ৮ পৃষ্ঠা ২১১।
৩। হযরত আওছ ইবনে আওছ রা: সূত্রে বর্ণীত রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন তোমরা বেশী বেশী আমার উপর দরূদ পাঠ কর কেননা তোরাদের দরূদ আমার কিট পেশ করা হয়। ছাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন: হে আল্লাহর রাসূল আমাদের দরূদ আপনার কিভাবে পেশ করা হবে? আপনিতো (দুনিয়া থেকে বিদায় নেবার পর) মাটির সাথে মিশে যাবেন। অতপর রাসূল সাঃ উত্তরে বললেন: আল্লাহ তায়ালা মাটির জন্য নবীগণের শরীর হারাম করে দিয়েছেন।
ইবনে মাযাহ শরীফ খন্ড: ২ পৃষ্ঠা ২৯১ হাদীস নং ১৬৩৭
৪। হযরত আবু দারদা রাঃ থেকে বর্ণীত রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন যে কেহ আমার উপর দরূদ পাঠ করে, সে তার দরূদ পাঠ করা থেকে ফারেগ হওয়ার সাথে সাথেই আমার কিট পেশ করা হয়। আবু দারদা রাঃ বলেন: আমি হুজুর সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম: মৃত্যুর পরেও? হুজুর সাঃ বললেন মৃত্যুর পরেও, কেননা আল্লাহ তায়ালা মাটির জন্য নবীগনের শরীর ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং আল্লাহর নবীগণ জীবিত ও রিযিক প্রাপ্ত।
মুছনাদে আহমদ খন্ড: ৪ পৃষ্ঠা ৮ হাদীস নং ১৬১৬২
৫। হযরত আবু হুরায়রা রাঃ সূত্রে বর্ণীত রাসূল সাঃ বলেন: যে কেহ আমার উপর সালাম পাঠ করে আমি তার সালামের উত্তর দেই। কেননা আমি জীবিত, সালামের প্রতিউত্তর দিতে সক্ষম। আবু দাউদ শরীফ, খন্ড: ১ পৃষ্ঠা৩৯১ হাদীস:২০৪১।
৬। হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণীত রাসূল সাঃ বলেন: মেরাজের রাত্রিতে আমি মুসা আঃ এর কবরের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন মুছা আঃ নিজের কবরে নামাজ রত ছিলেন।
মুসলিম শরীফ খন্ড: ৪ পৃষ্ঠা: ১৮৪৫ হাদীস নং ২৩৭৫
উপরোক্ত আয়াত ও হাদীস দ্বারা একথা প্রমানিত হয় যে নবীগণ কবরে স্বশরীরে জীবিত। সালাম শুনা সালামের উত্তর দেয়া সহ অন্যান্য ইবাদত করতে তারা সক্ষম। তবে তাদের এ জীবিত থাকা সর্বক্ষেত্রে দুনিয়ার জীবনের মত নয়। দুনিয়ার যিন্দেগীর মত খানা পিনার প্রয়োজন হয়না। বরং আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে কুদরতী রিযিকের ব্যবস্তা করা হয়।
তাকমেলা শরহে মুসলিম খন্ড ৫ পৃষ্ঠা নং৩০
আওনুল মাবুদ খন্ড: ৩ পৃষ্ঠা: ২৩১
মেরকাত খন্ড:৩ পৃষ্ঠা ৪১৫।
الله أعلم بالصواب